উয়েফা ইউরোপা লিগ
প্রতিষ্ঠিত | ১৯৭১ (২০০৯ সালে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত) |
---|---|
অঞ্চল | ইউরোপ (উয়েফা) |
দলের সংখ্যা | ৪৮ (গ্রুপ পর্ব) ৮টি দল চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব হতে[ক] ১৬০ (সর্বমোট) |
উন্নীত | উয়েফা সুপার কাপ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ |
সম্পর্কিত প্রতিযোগিতা | উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ (১ম স্তর) উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগ (৩য় স্তর) |
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন | আতালান্তা (১ম শিরোপা) |
সবচেয়ে সফল দল | সেভিয়া (৭টি শিরোপা) |
টেলিভিশন সম্প্রচারক | সম্প্রচারকের তালিকা |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
উয়েফা ইউরোপা লিগ (সংক্ষেপে ইউইএল নামে সুপরিচিত) হচ্ছে ইউরোপীয় ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যে ১৯৭১ সাল থেকে ইউনিয়ন অব ইউরোপিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত একটি বার্ষিক ফুটবল ক্লাব প্রতিযোগিতা। ক্লাবগুলো তাদের ঘরোয়া লিগ এবং কাপ প্রতিযোগিতার ফলাফলের ভিত্তিতে এই প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করে। এটি ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের দ্বিতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের নিচের এবং উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগের উপরের স্তরের লিগ।[১]
পূর্বে উয়েফা কাপ নামে পরিচিত এই প্রতিযোগিতাটি ২০০৯–১০ মৌসুমে উয়েফা ইউরোপা লিগ নামে নামকরণ করা হয়েছে,[২][৩] একই মৌসুমের এই প্রতিযোগিতার বিন্যাসও পরিবর্তন করা হয়েছে। উয়েফা ফুটবল প্রতিযোগিতার রেকর্ডের উদ্দেশ্যে, উয়েফা কাপ এবং উয়েফা ইউরোপা লিগকে একই প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে নামের পরিবর্তনটি শুধু পুনঃনামকরণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।[৪]
১৯৯৯ সালে, উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ বিলুপ্ত হয়ে উয়েফা কাপের সাথে একীভূত হয়।[৫] ২০০৪–০৫ মৌসুমের আসরের জন্য নকআউট পর্বের পূর্বে একটি গ্রুপ পর্ব সংযুক্ত করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উয়েফা ইন্টারটোটো কাপের সাথে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে এটি একটি বর্ধিত প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে, যেখানে গ্রুপ পর্ব সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি বাছাইপর্বের মানদণ্ডেও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। উয়েফা ইউরোপা লিগের বিজয়ী দল উয়েফা সুপার কাপে একই মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের বিজয়ী দলের মুখোমুখি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে এবং ২০১৪–১৫ মৌসুমের পর থেকে পরবর্তী মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে খেলার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তীর্ণ হয়।
এপর্যন্ত এই প্রতিযোগিতার শিরোপাটি ৩০টি ক্লাব জয়লাভ করেছে, যার মধ্যে ১৩টি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। এই প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সফল ক্লাবটি হচ্ছে স্পেনীয় ফুটবল ক্লাব সেভিয়া, যারা এপর্যন্ত রেকর্ড ৭ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে। এই প্রতিযোগিতার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে ইতালীয় ক্লাব আতালান্তা, যারা ২০২৪ সালের ২২শে মে তারিখে আয়োজিত ফাইনালে জার্মান ক্লাব বায়ার লেভারকুজেনকে ৩–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ক্লাবের ইতিহাসে রেকর্ড প্রথমবারের মতো উয়েফা ইউরোপা লিগের শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।[৬][৭]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]উয়েফা কাপের পূর্বে ইন্টার-সিটিস ফেয়ার্স কাপ অনুষ্ঠিত হতো, যা ১৯৫৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার অংশ ছিল। এই প্রতিযোগিতাটির ১৯৫৫–৫৮-এ আয়োজিত প্রথম সংস্করণে ১১টি দল অংশগ্রহণ করেছিল, যা বেড়ে গিয়ে ১৯৭০–৭১ মৌসুমে আয়োজিত সর্বশেষ সংস্করণে ৬৪টি দল অংশগ্রহণ করেছিল। এটি ইউরোপীয় ফুটবলের প্রেক্ষাপটে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল যে শেষ পর্যন্ত উয়েফা এটি নিজের অধীনে নিয়ে এসেছিল এবং পরবর্তী মৌসুমে এই প্রতিযোগিতাকে উয়েফা কাপ হিসেবে পুনরায় চালু করে।
১৯৭১–৭২ মৌসুমে আয়োজিত প্রথম উয়েফা কাপ প্রতিযোগিতার ফাইনালে টটেনহ্যাম হটস্পার উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের মুখোমুখি হয়েছিল; যেখানে টটেনহ্যাম দুই লেগ শেষে সামগ্রিকভাবে ৩–২ গোলে (প্রথম লেগে ২–১ এবং দ্বিতীয় লেগে ১–১) উলভারহ্যাম্পটনকে পরাজিত করে শিরোপা জয়লাভ করেছিল। ১৯৭৩ সালে অন্য আরেক ইংরেজ ফুটবল ক্লাব লিভারপুল এই প্রতিযোগিতা জয়লাভের মাধ্যমে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইংরেজ ক্লাব শিরোপা জয়লাভ করে, উক্ত আসরের ফাইনালে লিভারপুল জার্মান ক্লাব বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে দুই লেগ শেষে সামগ্রিকভাবে ৩–২ গোলে (প্রথম লেগে ৩–০ এবং দ্বিতীয় লেগে ০–২) পরাজিত করেছিল। পরবর্তীতে মনশেনগ্লাডবাখ ১৯৭৫ এবং ১৯৭৯ সালে শিরোপা জয়লাভ করেছিল এবং ১৯৮০ সালে পুনরায় রানার-আপ হয়েছিল। ১৯৭৪ সালে ফেইয়ানর্ট টটেনহ্যাম হটস্পারকে সামগ্রিকভাবে ৪–২ গোলে (প্রথম লেগে ২–২ এবং দ্বিতীয় লেগে ২–০) পরাজিত করে শিরোপা জয়লাভ করেছিল। ১৯৭৬ সালে লিভারপুল ফাইনালে ক্লাব ব্রুজকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকে, আইএফকে গেতেবার্গ (১৯৮২ এবং ১৯৮৭) এবং রিয়াল মাদ্রিদ (১৯৮৫ এবং ১৯৮৬) উভয় ক্লাবই দুই বার করে শিরোপা জয়লাভ করেছিল। অন্যদিকে, আন্ডারলেখট টানা দুইবার ফাইনালে উঠেছিল, যার মধ্যে প্রথমবার অর্থাৎ ১৯৮৩ সালে তারা শিরোপা জয়লাভ করেছিল এবং দ্বিতীয়বার টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে পরাজিত হয়েছিল। ১৯৮৯ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতায় ইতালীয় ক্লাবগুলোর আধিপত্য শুরু হয়েছিল, উক্ত আসরে দিয়েগো মারাদোনার নাপোলি ভিএফবি স্টুটগার্টকে পরাজিত করেছিল। টানা দুটি ইতালীয় ক্লাব সংবলিত ফাইনালের মধ্য দিয়ে ১৯৯০-এর দশক শুরু হয়েছিল; যার মধ্যে ১৯৯২ সালে তোরিনো আয়াক্সের কাছে অ্যাওয়ে গোল নিয়মের মাধ্যমে ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল। ১৯৯৩ সালে ইয়ুভেন্তুস তৃতীয়বারের মতো এই প্রতিযোগিতা জয়লাভ করেছিল এবং পরবর্তী বছর ইন্টার মিলান শিরোপা জয়লাভের মাধ্যমে ইতালিতেই কাপটি ধরে রেখেছিল। ১৯৯৫ সালে পর পর দুই বার উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ ফাইনালের পর পারমা তাদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে তৃতীয় বারের মতো সর্ব-ইতালীয় ফাইনালের মঞ্চ প্রস্তুত করেছিল। উক্ত দশকে কোন ইতালীয় দল ছাড়া একমাত্র ফাইনালটি ছিল ১৯৯৬ সালের ফাইনাল; উক্ত ম্যাচে জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ফরাসি ক্লাব বর্দোকে দুই লেগ শেষে সামগ্রিকভাবে ৫–১ গোলে (প্রথম লেগে ২–০ এবং দ্বিতীয় লেগে ৩–১) পরাজিত করেছিল। ইন্টার মিলান পরের দুই বছরে ফাইনালে পৌঁছেছিল; যার মধ্যে ১৯৯৭ সালে শালকের কাছে পেনাল্টির মাধ্যমে পরাজিত হলেও ১৯৯৯ সালে অন্য এক ইতালীয় ক্লাব লাৎসিয়োকে ৩–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে পারমা দ্বিতীয়বারের মতো জয়লাভ করেছিল, যার পর এই প্রতিযোগিতায় ইতালীয় আধিপত্যের অবসান হয়েছিল।
লিভারপুল ২০০১ সালে তৃতীয়বারের মতো এই প্রতিযোগিতা জয়লাভ করেছিল। ২০০২ সালে, রটার্ডামের ডে কুইপে তাদের নিজস্ব স্টেডিয়ামে আয়োজিত ফাইনাল ম্যাচে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ৩–২ গোলে হারিয়ে ফেইয়ানর্ট ক্লাবের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছিল। পরবর্তীতে পর্তুগিজ দল পোর্তু ২০০৩ এবং ২০১১ সালের আসরে শিরোপা জয়লাভ করেছিল; যার মধ্যে দ্বিতীয়বার পোর্তু তাদের ঘরোয়া লিগের দল ব্রাগাকে হারিয়ে জয়লাভ করেছিল। ২০০৪ সালে, ভালেনসিয়া এই প্রতিযোগিতা জয়লাভের মাধ্যমে প্রায় ১৮ বছর পর স্পেনে শিরোপা আনতে সক্ষম হিয়েছিল এবং পরবর্তীতে সেভিয়া ২০০৬ এবং ২০০৭ সালে টানা দুইবার এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জয়লাভ করেছিল; যার মধ্যে ২০০৭ সালে সেভিয়া অন্য এক স্পেনীয় ক্লাব এস্পানিওলকে পরাজিত করেছিল। সেভিয়ার সাফল্যের মতো, দুই রুশ দল (২০০৫ সালে সিএসকেএ মস্কো এবং ২০০৮ সালে জিনিত সেন্ট পিটার্সবার্গ) শিরোপা জয়ের গৌরব অর্জন করেছিল। অন্যদিকে ২০০৯ সালে প্রথম ইউক্রেনীয় দল হিসেবে শাখতার দোনেৎস্ক শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল। ২০০৯–১০ মৌসুমে, উয়েফা ইউরোপা লিগে নামকরণ করার পর আয়োজিত প্রথম তিন মৌসুমের দুটিতেই স্পেনীয় ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদ শিরোপা জয়লাভ করেছিল; যার মধ্যে দ্বিতীয়বার তারা তাদের ঘরোয়া লিগের অন্য এক ক্লাব অ্যাথলেটিক বিলবাওকে ৩–০ গোলে হারিয়েছিল। ২০১৩ সালে, চেলসি প্রথম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাধারী হিসেবে পরবর্তী বছর উয়েফা কাপ অথবা ইউরোপা লিগ শিরোপা জয়লাভ করেছিল। ২০১৪ সালে, সেভিয়া পেনাল্টিতে বেনফিকাকে পরাজিত করে আট বছরে তাদের তৃতীয় কাপ জয়লাভ করেছিল। এর এক বছর পরে, ২০১৫ সালে, সেভিয়া তাদের চতুর্থ উয়েফা কাপ অথবা ইউরোপা লিগ শিরোপা জয়লাভ করে এবং অভূতপূর্ব এক কৃতিত্বের গড়ার মাধ্যমে তারা ২০১৬ সালের ফাইনালে লিভারপুলকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জয়ের পাশাপাশি এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে পঞ্চম শিরোপা জয়ের মাধ্যমে সবচেয়ে সফল দলে পরিণত হয়েছে।
২০০৯–১০ মৌসুমের পর থেকে এই প্রতিযোগিতাটি উয়েফা ইউরোপা লিগ নামে পরিচিত লাভ করেছে।[২][৩] একই সময়ে, উয়েফা ইন্টারটোটো কাপ (যা উয়েফার তৃতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা ছিল) বন্ধ করে নতুন বিন্যাসে গড়া ইউরোপা লিগে একীভূত করা হয়েছিল।
উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগ
[সম্পাদনা]উয়েফা ২০১৫ সাল থেকে ইউরোপীয় ফুটবলের জন্য তৃতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা আয়োজন করার কথা বলে আসছিল। নিম্ন স্তরের এই প্রতিযোগিতাটি উয়েফার নিম্ন স্তরের সদস্য দেশগুলোর ক্লাবগুলোকে (যারা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ইউরোপা লিগের একটি নির্দিষ্ট পর্যায় হতে বাদ পড়েছে) উয়েফা প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করার আরেকটি সুযোগ হিসেবে কাজ করতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।[৮] ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে, এক ঘোষণায় এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের কথা আরও তীব্রভাবে জানানো হয়েছিল, একটি সংবাদ সূত্র দাবি করেছিল যে এই প্রতিযোগিতাটি চালু হওয়ার জন্য ইতোমধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং এর ফলে ৪৮ দলের ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বটি দুটি ভাগে বিভক্ত হবে, নিম্নার্ধটি এই নতুন প্রতিযোগিতার মূল গঠন করবে।[৯]
২০১৮ সালের ২রা ডিসেম্বর তারিখে, উয়েফা এক ঘোষণায় জানায় যে, এই প্রতিযোগিতাটি অস্থায়ীভাবে "ইউরোপা লিগ ২" অথবা শুধু "ইউইএল ২" নামক পরিচিতি লাভ করবে। এই প্রতিযোগিতা উয়েফা কর্তৃক প্রদত্ত ২০২১–২৪ তিন বছরের প্রতিযোগিতা চক্রের অংশ হিসেবে উদ্বোধন করা হবে। উয়েফা আরও জানায় যে, নতুন এই প্রতিযোগিতাটি "সদস্য দেশের আরও বেশি ক্লাবের জন্য আরও বেশি ম্যাচ"-এর আয়োজন করতে সহায়তা করবে।[১০]
২০১৯ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর তারিখে, এক ঘোষণায় জানানো হয়েছে যে, এই প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক নাম হবে "উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগ"।[১১]
শিরোপা
[সম্পাদনা]উয়েফা কাপ (যা কুপ উয়েফা নামে পরিচিত) নামক উয়েফা ইউরোপা লিগের শিরোপাটি প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ফুটবল ক্লাবকে উয়েফা কর্তৃক প্রদান করা হয়। ২০০৯–১০ উয়েফা ইউরোপা লিগের পূর্বে, এই প্রতিযোগিতা এবং শিরোপা উভয়ই 'উয়েফা কাপ' নামে পরিচিত ছিল।
২০০৯–১০ মৌসুমে এই প্রতিযোগিতার নাম উয়েফা ইউরোপা লিগে নামকরণ করার পূর্বে, উয়েফা বিধিমালায় উল্লেখ ছিল যে কোনও ক্লাব উয়েফাকে শিরোপা ফেরত দেওয়ার পূর্বে মূল শিরোপাটি এক বছরের জন্য নিজেদের কাছে রাখতে পারে। শিরোপাটি ফেরত দেওয়ার পর, ক্লাবটি মূল ট্রফির চার-পঞ্চমাংশ স্কেলের একটি প্রতিলিপি রাখতে পারে। অন্যদিকে পরপর তৃতীয় জয় অথবা সামগ্রিকভাবে পঞ্চম জয়ের পরে, যেকোন ক্লাব স্থায়ীভাবে শিরোপাটি নিজেদের দখলে রাখতে পারে।[১২] অতঃপর নতুন নিয়মের অধীনে এই শিরোপাটি সর্বদাই উয়েফার রক্ষণাবেক্ষণে থাকবে। এই প্রতিযোগিতার প্রতিটি বিজয়ীকে একটি পূর্ণ আকারের প্রতিরূপ শিরোপা প্রদান করা হয়। তদুপরি, একটি ক্লাব পরপর তিনবার বা সামগ্রিকভাবে পাঁচ বার জয়লাভ করলে একাধিক বিজয়ীর চিহ্নযুক্ত ব্যাজ অর্জন করবে।[১৩] ২০১৬–১৭ মৌসুম অনুযায়ী, শুধু সেভিয়া একাধিকবার বিজয়ীর চিহ্ন হিসেবে ব্যাজ পরিধান করার সম্মান অর্জন করেছে।[১৪]
শিরোপাটি ১৯৭২ উয়েফা কাপ ফাইনালের জন্য জিডিই বের্তোনি নকশা এবং তৈরি করেছিলেন। এটির ওজন প্রায় ১৫ কেজি (৩৩ পা) এবং এটি হলুদ রঙের মার্বেল খচিত।[১৫]
সংগীত
[সম্পাদনা]এই প্রতিযোগিতার একটি সংগীত রয়েছে, যা ইউরোপা লিগের প্রতিটি ম্যাচের পূর্বে স্টেডিয়ামে এবং প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান প্রচার শুরুর ইঙ্গিত হিসেবে ইউরোপা লিগ সম্প্রচারকৃত প্রতিটি টেলিভিশন চ্যানেলে বাজানো হয়।[১৬]
এই প্রতিযোগিতার প্রথম সংগীতটি ইয়োহান জভিগ রচনা করেছিলেন এবং ২০০৯ সালের প্রথম দিকে প্যারিস অপেরা দ্বারা রেকর্ড করেছিলেন। উয়েফা কাপ প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত সুরটির পরিবর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৯ সালের ২৮শে আগস্ট তারিখে অনুষ্ঠিত গ্রিমালদি ফোরামে আয়োজিত ২০০৯–১০ উয়েফা ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বে ম্যাচ সর্বপ্রথম বাজানো হয়েছিল। মাইকেল কাডেলবাখ একটি নতুন সংগীত রচনা করেছিলেন এবং বার্লিনে রেকর্ড করেছিলেন। ২০১৫–১৬ উয়েফা ইউরোপা লিগের শুরুতে এই প্রতিযোগিতার পুনর্নির্মাণের অংশ হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছিল।[১৭]
ম্যাসিভমিউজিক দ্বারা নির্মিত একটি নতুন সংগীত ২০১৮–১৯ উয়েফা ইউরোপা লিগের শুরুতে রচনা করা হয়েছে।[১৮]
বিন্যাস
[সম্পাদনা]বাছাইপর্ব
[সম্পাদনা]উয়েফা গুণাঙ্কের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিযোগিতার বাছাইপর্বের দল নির্ধারণ করা হয়, যেখানে গুণাঙ্ক তালিকার উপরের দিকের দলগুলো তুলনামূলকভাবে কম পর্বে অংশগ্রহণ করে থাকে। সাধারণত প্রতিটি অ্যাসোসিয়েশনের জন্য তিনটি স্থান বরাদ্দ রয়েছে, কিন্তু নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে:
- অ্যাসোসিয়েশন ৫২ এবং ৫৩ হতে ২টি করে দল খেলার যোগ্যতা লাভ করবে
- অ্যাসোসিয়েশন ৫৪ হতে ১টি দল খেলার যোগ্যতা লাভ করবে
- লিচটেনস্টাইন, যাদের শুধু কাপ বিজয়ীই যোগ্যতা লাভ করবে
সাধারণত, প্রতিটি দেশের স্থান এমন দলকে পুরস্কৃত করা হয় যারা বিভিন্ন শীর্ষ-স্তরের লিগে রানার-আপ এবং কাপ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে। সাধারণত ঘরোয়া লিগে যেসকল দল মূলত উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য যোগ্য নয় এমন উচ্চতম স্থানে থেকে লিগ শেষ করে তারা এই প্রতিযোগিতার জন্য উত্তীর্ণ হয়; তবে, বেলজিয়াম লিগ বেলজীয় প্রথম বিভাগ এ এবং বেলজীয় প্রথম বিভাগ বি-এর দলের মধ্যে একটি প্লে অফের মাধ্যমে একটি স্থান প্রদান করা হয়। বেশ কয়েকটি দেশে মাধ্যমিক কাপ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়, তবে শুধু ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মাধ্যমিক কাপ বিজয়ীদের উয়েফা ইউরোপা লিগে স্থান প্রদান করা হয়।
একটি দল একাধিক পথ দিয়ে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার জন্য উত্তীর্ণ হতে পারে। সব ক্ষেত্রেই, কোনও ক্লাব যদি [[উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ|উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রবেশের যোগ্য হয় তবে সে ক্লাবটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চ্যাম্পিয়ন লিগের স্থানটি গ্রহণ করে, যার ফলে ক্লাবটি উয়েফা ইউরোপা লিগে প্রবেশ করে না। উয়েফা ইউরোপা লিগের স্থানটি অন্য ক্লাবকে প্রদান করা হয় বা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া দল সংখ্যা ছাড়িয়ে গেলে খালি রাখা হয়। যদি কোনও দল কাপ এবং লিগ উভয় শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার জন্য উত্তীর্ণ হয় তবে উয়েফা ইউরোপা লিগের জন্য বরাদ্দ "অতিরিক্ত" স্থানটি জাতীয় অ্যাসোসিয়েশনের নিয়মের উপর নির্ভর করে ইতোমধ্যে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী দলের ঘরোয়া লিগের পয়েন্ট তালিকায় উচ্চ স্থান অর্জনকারী দলকে প্রদান করা হয় অথবা অংশ নেওয়া দল সংখ্যা অতিক্রম করলে শূন্য ঘোষণা করা হয়।
চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ইউরোপা লিগ উভয় প্রতিযোগিতার বিজয়ী দল যদি একই অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তারা তাদের ঘরোয়া লিগে ফলাফলের মাধ্যমে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ না হয়, তবে শীর্ষ তিন অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষেত্রে উক্ত দল লিগের পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থান অর্জনকারী দলের পরিবর্তে চ্যাম্পিয়নস লিগে অংশগ্রহণ করবে। সেক্ষেত্রে উক্ত অ্যাসোসিয়েশনের চতুর্থ স্থান অধিকারী দল তাদের অন্যান্য বাছাইপর্বের দল ছাড়াও চ্যাম্পিয়নস লিগের পরিবর্তে ইউরোপা লিগে যোগদান করবে।
সম্প্রতি, যে সকল ক্লাব চ্যাম্পিয়ন লিগের বাছাইপর্ব অথবা গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যায়, সে সকল ক্লাব উয়েফা ইউরোপা লিগের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগদান করে থাকে। পূর্বে, পূর্ববর্তী চ্যাম্পিয়ন দল তাদের শিরোপা রক্ষার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তীর্ণ হতো, তবে ২০১৫ সাল থেকে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চ্যাম্পিয়ন লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ১৯৯৫ সাল হতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনটি লিগ উয়েফা রেস্পেক্ট ফেয়ার প্লে র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে একটি অতিরিক্ত স্থান অর্জন করেছে।
পটভূমি
[সম্পাদনা]১৯৮০ সালে, উয়েফা গুণাঙ্ক প্রবর্তিত হয়েছে এবং এটি ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত উয়েফা কাপে সফল দেশগুলোকে আরও বেশি সংখ্যক স্থান প্রদান করেছে। এই গুণাঙ্কের ভিত্তিতে ৩টি অ্যাসোসিয়েশনের জন্য ৪টি, ৫টি অ্যাসোসিয়েশনের জন্য ৩টি স্থান, ১৩টি অ্যাসোসিয়েশনের জন্য ২টি এবং ১১টি অ্যাসোসিয়েশনের জন্য শুধু একটি স্থান বরাদ্দ ছিল। ১৯৯৯ সাল থেকে, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের অনুরূপ একটি পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯৮০ সালের পূর্বে, সর্বশেষ ফেয়ার্স কাপে ব্যবহৃত মাপদণ্ড ব্যবহার করা হতো।
ঐতিহাসিক বিন্যাস
[সম্পাদনা]এই প্রতিযোগিতাটি গতানুগতিকভাবে খাঁটি নকআউট প্রতিযোগিতা ছিল। ফাইনালসহ সকল খেলা দুই লেগে আয়োজিত হতো। ১৯৯৭–৯৮ মৌসুমে, এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচটি এক লেগের ম্যাচে পরিণত করা হয়, তবে অন্য সকল ক্ষেত্রে দুই লেগের ম্যাচই আয়োজন করা হয়।
২০০৪–০৫ মৌসুমের পূর্বে এই প্রতিযোগিতার জন্য কেবলমাত্র একটি বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হতো, অতঃপর নকআউট পর্বের খেলা আয়োজিত হতো। চ্যাম্পিয়নস লিগের চূড়ান্ত বাছাইপর্বে অনুত্তীর্ণ ১৬টি দল প্রথম বাছাইপর্বে প্রবেশ করে; পরবর্তীতে এই পর্বে উত্তীর্ণ দলগুলো চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে তৃতীয় স্থান অধিকারী দলগুলোর সাথে যোগদান করে।
২০০৪–০৫ মৌসুম থেকে, জুলাই ও আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত দুটি নকআউট বাছাইপর্বের মধ্যে দিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ১৮ এবং এর নিচের অ্যাসোসিয়েশনের দলগুলো প্রথম বাছাইপর্বে প্রবেশ করেছিল। অতঃপর এই পর্বে বিজয়ী দলগুলো ৯–১৮ নম্বর অ্যাসোসিয়েশনের দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় বাছাইপর্বে যোগদান করতো। এছাড়াও, প্রথম বাছাইপর্বের ৩টি স্থান উয়েফা ফেয়ার প্লে র্যাঙ্কিংয়ের বিজয়ীদের জন্য (২০১৫–১৬ পর্যন্ত) এবং দ্বিতীয় বাছাইপর্বে ১১টি স্থান উয়েফা ইন্টারটোটো কাপের বিজয়ীদের জন্য বরাদ্দ ছিল।
বাছাইপর্বের বিজয়ী দলগুলো পরবর্তীতে ১–১৩ নম্বর অ্যাসোসিয়েশনের দলগুলোর সাথে প্রথম পর্বে যোগদান করতো। তদতিরিক্ত, চ্যাম্পিয়নস লিগের তৃতীয় বাছাইপর্ব হতে ছিটকে যাওয়া দলগুলো প্রতিযোগিতার এই পর্বে অংশ নিতো, একই সাথে পূর্ববর্তী আসরের বিজয়ী দলও (যদি তারা তাদের ঘরোয়া লিগের চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য উত্তীর্ণ না হয়ে থাকে) অংশগ্রহণ করতো। এর ফলে প্রথম পর্বে সর্বমোট ৮০টি দল অংশগ্রহণ করতো।
প্রথম নকআউট পর্বের পরে, ৪০টি দল পরবর্তী পর্বের অর্থাৎ গ্রুপ পর্বের জন্য উত্তীর্ণ হতো। উক্ত ক্লাবগুলো ৫টি দল করে সর্বমোট ৮টি গ্রুপে বিভক্ত হতো। চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের বিপরীতে, উয়েফা কাপের গ্রুপ পর্বটি একক রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে আয়োজন করা হতো, যেখানে প্রতিটি ক্লাব দুটি হোম এবং দুটি অ্যাওয়ে ম্যাচে অংশ নিতো। চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে আটটি তৃতীয় স্থান অধিকারী দলের পাশাপাশি আট গ্রুপের প্রত্যেকটির শীর্ষ তিনটি দল মূল নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতো। এরপর থেকে দুই লেগের নকআউট পর্বের সকল ম্যাচ শেষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত ঐতিহ্যগতভাবে মে মাসের কোন এক বুধবারে একক লেগ ফাইনাল ম্যাচের আয়োজন করা হতো।
বর্তমান বিন্যাস
[সম্পাদনা]২০০৯–১০ মৌসুমে, এই প্রতিযোগিতার আকার বাড়ানোর জন্য উয়েফা ইউরোপা লিগ হিসেবে এর নামকরণ হয়েছে।[২] অতিরিক্ত ৮টি দল বর্তমানে চার দল বিশিষ্ট (দ্বৈত রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে) ১২টি গ্রুপে গ্রুপ পর্বে খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করে এবং প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় দুটি দল পরবর্তী পর্বে অগ্রসর হয়, অতঃপর এই প্রতিযোগিতাটি আগের বিন্যাসের মতো একইভাবে অগ্রসর হয়; যেখানে চার পর্বের দুই লেগের নকআউট পর্ব এবং একটি নিরপেক্ষ মাঠে (যা উয়েফার স্টেডিয়াম ৪টি স্টেডিয়াম শর্ত পূরণ করে) এক লেগের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের দশ দিন পূর্বে মে মাসে কোন এক বুধবার এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়।
বাছাইপর্বের বিন্যাস বিগত বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। উয়েফা গুণাঙ্কের ওপর ভিত্তি করে ৭–৯ নম্বরে অবস্থানরত অ্যাসোসিয়েশন হতে ঘরোয়া কাপ বিজয়ী এবং তিনটি (২০১৫–১৬ মৌসুমের পর থেকে দুটি) অন্যান্য দলকে উয়েফা ইউরোপা লিগের বাছাইপর্বে প্রেরণ করে, অন্য সকল দেশ একটি কাপ বিজয়ী এবং অন্য দুটি দলকে প্রেরণ করে, শুধু অ্যান্ডোরা এবং সান মারিনো ব্যতীত যারা কেবলমাত্র একটি কাপ বিজয়ী এবং রানার-আপ দলকে প্রেরণ করে। অন্যদিকে, লিচটেনস্টাইন শুধু তাদের কাপ বিজয়ী দলকে প্রেরণ করে। ২০১৩ সালের ২৪শে মে তারিখে লন্ডনে অনুষ্ঠিত উয়েফা কংগ্রেসে জিব্রাল্টার উয়েফার সম্পূর্ণ সদস্য হিসেবে গৃহীত হওয়ার পর তারা তাদের কাপ বিজয়ী দলকে ইউরোপা লিগের জন্য প্রেরণ করে। সাধারণত, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য উত্তীর্ণ দলগুলোর পরে প্রতিটি ঘরোয়া লিগের পরবর্তী সর্বোচ্চ স্থান অধিকারী দলগুলো এই প্রতিযোগিতার জন্য উত্তীর্ণ হয়, তবে ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের ক্ষেত্রে তাদের মাধ্যমিক ঘরোয়া কাপ বিজয়ীদের জন্য একটি স্থান বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উয়েফা ইন্টারটোটো কাপ বিলুপ্তির সাথে সাথে ইউরোপা লিগের সকল অংশগ্রহণকারী ঘরোয়া পথে অংশগ্রহণের জন্য উত্তীর্ণ হয়। সাধারণত, উয়েফা গুণাঙ্কে উচ্চতর অবস্থানে বিদ্যমান অ্যাসোসিয়েশনের ক্লাবগুলো বাছাইপর্বের পরবর্তী স্তরগুলোতে অংশগ্রহণ করে থাকে। যাহোক, শিরোপাধারী ক্লাব ব্যতীত সকল দল (২০১৪–১৫ মৌসুম পর্যন্ত) এবং প্রতিটি অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষস্থানীয় দল (সাধারণত কাপ বিজয়ী এবং / অথবা ইউরোপা লিগের জন্য উত্তীর্ণ দল; ২০১২–১৫ পর্যন্ত ৫টি এবং ২০১৫–১৬ মৌসুম থেকে ১২টি দল) বাছাইপর্বে কমপক্ষে একটি পর্বে অংশ নিয়ে থাকে।
উল্লিখিত দলগুলো ছাড়াও, চ্যাম্পিয়নস লিগের তৃতীয় বাছাইপর্বে অনুত্তীর্ণ ১৫টি দল ইউরোপা লিগের প্লে-অফ পর্বে স্থানান্তরিত হয় এবং চ্যাম্পিয়নস লিগের প্লে-অফ পর্বে অনুত্তীর্ণ ১০টি দল ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বে স্থানান্তরিত হয়। চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব শেষে প্রতিটি গ্রুপে তৃতীয় স্থান অধিকারী আটটি দল ১২টি গ্রুপ বিজয়ী এবং ১২টি গ্রুপ রানার-আপ দলের সাথে নকআউট পর্বে প্রবেশ করে।
২০১৪ সালে, প্রতিযোগিতার পরিধিকে আরও বিস্তৃত করার জন্য এই প্রতিযোগিতার বিন্যাস পরিবর্তন করা হয়েছিল, যেখানে ইউরোপা লিগের বিজয়ী দল চ্যাম্পিয়ন লিগের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং একই বছর হতে তা কার্যকর হচ্ছে। এর ফলে আরও অধিক দল গ্রুপ পর্বের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তীর্ণ হয়। কাপের বিজয়ী দলগুলো যদি ইতোমধ্যে তাদের ঘরোয়া লিগের ফলাফলের ভিত্তিতে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার জন্য উত্তীর্ণ হয়ে থাকে, তবে তাদের স্থানটি খালি ঘোষণা করা হয় এবং ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার জন্য যোগ্য নয় এমন সেরা দলগুলোকে প্রদান করা হয়। এর অর্থ হচ্ছে পূর্বের মতো ঘরোয়া কাপের রানার-আপ দল ইউরোপা লিগে খেলার জন্য উত্তীর্ণ হতে পারে না।[১৯] এই নিয়মগুলো ২০১৫–১৬ মৌসুমে কার্যকর হয়েছিল।
বণ্টন (২০১৫–১৬ হতে ২০১৭–১৮)
[সম্পাদনা]পর্বসমূহ | যেসকল দল এই পর্বে প্রবেশ করে | যেসকল দল পূর্ববর্তী পর্ব হতে প্রবেশ করে | যেসকল দল চ্যাম্পিয়নস লিগ হতে স্থানান্তরিত হবে |
---|---|---|---|
প্রথম বাছাইপর্ব (১০৪টি দল) |
|
||
দ্বিতীয় বাছাইপর্ব (৬৬টি দল) |
|
|
|
তৃতীয় বাছাইপর্ব (৫৮টি দল) |
|
|
|
প্লে-অফ (৪৪টি দল) |
|
| |
গ্রুপ পর্ব (৪৮টি দল) |
|
|
|
নকআউট পর্ব (৩২টি দল) |
|
|
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে উপরের উল্লেখিত প্রবেশাধিকার তালিকাটি পরিবর্তন হতে পারে:
- যদি চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাধারী দল অথবা ইউরোপা লিগের শিরোপাধারী দল তাদের ঘরোয়া লিগে ফলাফলের ভিত্তিতে ইউরোপা লিগের জন্য উত্তীর্ণ হয়ে থাকে, তবে ইউরোপা লিগে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত স্থানটি শূন্য হয়ে যায় (একই অ্যাসোসিয়েশন থেকে অন্য দল দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় না) এবং সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থানরত অ্যাসোসিয়েশনের ঘরোয়া কাপ বিজয়ী দল পরবর্তী পর্বে স্থানান্তরিত হয়।[২০]
- কিছু ক্ষেত্রে যখন চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রবেশাধিকার তালিকার পরিবর্তন করা হয়, তখন চ্যাম্পিয়নস লিগের তৃতীয় বাছাইপর্বের অনুত্তীর্ণ দলের সংখ্যা (যারা ইউরোপা লিগে স্থানান্তরিত হয়) পূর্বনির্ধারিত ১৫ হতে বৃদ্ধি অথবা হ্রাস পায়, যার অর্থ হচ্ছে ইউরোপা লিগের প্রবেশাধিকার তালিকাও পরিবর্তিত হয়।[২১]
- একটি অ্যাসোসিয়েশন থেকে সর্বোচ্চ ৫টি দল উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রবেশ করতে পারার কারণে যদি চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাধারী দল এবং ইউরোপা লিগের শিরোপাধারী দল উভয়ই শীর্ষ তিনটি অ্যাসোসিয়েশনের যেকোনো একটিতে অবস্থান করে থাকে এবং তাদের ঘরোয়া লিগে শীর্ষ চারের বাইরে থেকে লিগ সম্পন্ন করে, তবে তাদের ঘরোয়া লিগের পয়েন্ট তালিকায় চতুর্থ স্থানে অবস্থানরত দলটি ইউরোপা লিগে স্থানান্তরিত হয় এবং গ্রুপ পর্বে প্রবেশ করে, যার অর্থ হচ্ছে ইউরোপা লিগের প্রবেশাধিকার তালিকাও পরিবর্তিত হয়।[২২]
বণ্টন (২০১৮–১৯ হতে ২০২০–২১)
[সম্পাদনা]২০১৮–১৯ মৌসুম হতে, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের বাছাইপর্বে অনুত্তীর্ণ ঘরোয়া লিগের সকল চ্যাম্পিয়ন দল তৃতীয় বাছাইপর্ব অথবা প্লে-অফ পর্বে একটি সাধারণ দল হিসেবে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে ইউরোপা লিগে স্থানান্তরিত হয়। ইউরোপা লিগের বাছাইপর্বে অংশগ্রহণকারী এই দলগুলো একটি পৃথক চ্যাম্পিয়ন পথ অনুসরণ করে, যেখানে ঘরোয়া লিগ চ্যাম্পিয়ন দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পায়।[২৩]
পর্বসমূহ | যেসকল দল এই পর্বে প্রবেশ করে | যেসকল দল পূর্ববর্তী পর্ব হতে প্রবেশ করে | যেসকল দল চ্যাম্পিয়নস লিগ হতে স্থানান্তরিত হবে | |
---|---|---|---|---|
প্রাথমিক পর্ব (১৬টি দল) |
|
|||
প্রথম বাছাইপর্ব (৯৪টি দল) |
|
|
||
দ্বিতীয় বাছাইপর্ব (৯৪টি দল) |
চ্যাম্পিয়ন (২০টি দল) |
| ||
লিগ (৭৪টি দল) |
|
|
||
তৃতীয় বাছাইপর্ব (৭২টি দল) |
চ্যাম্পিয়ন (২০টি দল) |
|
| |
লিগ (৫২টি দল) |
|
|
| |
প্লে-অফ (৪২টি দল) |
চ্যাম্পিয়ন (১৬টি দল) |
|
| |
লিগ (২৬টি দল) |
|
|||
গ্রুপ পর্ব (৪৮টি দল) |
|
|
| |
নকআউট পর্ব (৩২টি দল) |
|
|
বণ্টন (২০২১–২২ হতে ২০২৩–২৪)
[সম্পাদনা]উয়েফার এক সভায় ইউরোপীয় ফুটবলের জন্য উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগ নামে তৃতীয় একটি প্রতিযোগিতা (যা ইউরোপা লিগের নিম্ন-স্তর হিসেবে কাজ করবে) আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর ফলে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় ইউরোপের দলগুলোকে অংশগ্রহণ করার আরও বেশি সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে, একই সাথে ২০২১–২২ থেকে ইউরোপা লিগের বাছাইপর্বের জন্য নতুন একটি প্রবেশাধিকার তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে।[১০] ইউরোপা লিগে পূর্বে অংশগ্রহণকারী বেশিরভাগ দল এখন সম্পূর্ণরূপে উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগে অংশ নেওয়ার ফলে ইউরোপা লিগের পূর্বে বিদ্যমান বিন্যাসটি সঙ্কুচিত করা হয়েছে, যেখানে মূলত ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বের দিকে মনোনিবেশ করা হবে।[২৪] নকআউট পর্ব আয়োজনের পূর্বে একটি অতিরিক্ত নকআউট পর্বের আয়োজন করা হবে, যেখানে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের তৃতীয় স্থান অধিকারী দলগুলো ইউরোপা লিগে অংশগ্রহণ করবে, কিন্তু নকআউট পর্বে অংশগ্রহণকারী মোট দলের সংখ্যা বৃদ্ধি না করে ১৬টি-ই রাখা হয়েছে।[১০]
পর্বসমূহ | যেসকল দল এই পর্বে প্রবেশ করে | যেসকল দল পূর্ববর্তী পর্ব হতে প্রবেশ করে | যেসকল দল চ্যাম্পিয়নস লিগ হতে স্থানান্তরিত হবে | |
---|---|---|---|---|
তৃতীয় বাছাইপর্ব (১৬টি দল) |
চ্যাম্পিয়ন (১০টি দল) |
| ||
লিগ (৬টি দল) |
|
| ||
প্লে-অফ (২০টি দল) |
|
|
| |
গ্রুপ পর্ব (৩২টি দল) |
|
|
| |
প্রাথমিক নকআউট পর্ব (১৬টি দল) |
|
| ||
নকআউট পর্ব (১৬টি দল) |
|
পুরস্কারের অর্থমূল্য
[সম্পাদনা]উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো, উয়েফা ইউরোপা লিগের ক্লাবগুলো অংশগ্রহণ এবং ফলাফলের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করে থাকে। এই প্রদানকৃত অর্থের পরিমাণ বিভিন্ন পর্যায়ের বিভক্ত, যার ওপর তাদের টেলিভিশন বাজারের মূল্য নির্ভর করে।[২৫]
২০১৯–২০ মৌসুমের জন্য, ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বের অংশগ্রহণের জন্য প্রতিটি দল €২৯,২০,০০০ অর্থ লাভ করে। গ্রুপ পর্বে একটি জয়ের জন্য €৫,৭০,০০০ এবং একটি ড্রয়ের জন্য €১,৯০,০০০ প্রদান করা হয়। এছাড়াও, প্রত্যেক গ্রুপ বিজয়ী €১০,০০,০০০ এবং প্রত্যেক গ্রুপের রানার-আপ দল €৫,০০,০০০ অর্জন করে। নকআউট পর্বে পৌঁছানোর ফলে অতিরিক্ত বোনাস প্রদান করা হয়: ৩২ দলের পর্বের জন্য €৫,০০,০০০, ১৬ দলের পর্বের জন্য €১১,০০,০০০, কোয়ার্টার-ফাইনালের জন্য €১৫,০০,০০০ এবং সেমি-ফাইনালের জন্য €২৪,০০,০০০। একই সাথে রানার-আপ দল €৪৫,০০,০০০ এবং বিজয়ী দল €৮৫,০০,০০০ অর্জন করে।[২৬]
অবস্থান | প্রতি দল |
---|---|
চ্যাম্পিয়ন | ৮৫ লক্ষ |
রানার-আপ | ৪৫ লক্ষ |
সেমি-ফাইনালের অংশগ্রহণকারী | ২৪ লক্ষ |
কোয়ার্টার-ফাইনালে অংশগ্রহণকারী | ১৫ লক্ষ |
১৬ দলের পর্বে অংশগ্রহণকারী | ১১ লক্ষ |
গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণকারী | ২৯ লক্ষ ২০ হাজার |
প্রতি গ্রুপের বিজয়ী | ১০ লক্ষ |
প্রতি গ্রুপের রানার-আপ | ৫ লক্ষ |
প্রতি জয়ের জন্য | ৫৭ লক্ষ |
প্রতি ড্রয়ের জন্য | ১৯ লক্ষ |
৩২ দলের পর্বে অংশগ্রহণকারী | ৫ লক্ষ |
প্লে-অফে বাদ পড়া দল | ৩ লক্ষ |
তৃতীয় বাছাইপর্বে বাদ পড়া দল | ২ লক্ষ ৮০ হাজার |
দ্বিতীয় বাছাইপর্বে বাদ পড়া দল | ২ লক্ষ ৬০ হাজার |
প্রথম বাছাইপর্বে বাদ পড়া দল | ২ লক্ষ ৪০ হাজার |
প্রাথমিক পর্বে বাদ পড়া দল | ২ লক্ষ ২০ হাজার |
পৃষ্ঠপোষক
[সম্পাদনা]৫টি বহুজাতিক কর্পোরেশন উয়েফা ইউরোপা লিগের পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করেছে; বর্তমান আসরের পৃষ্ঠপোষক হলো:
- ফেডএক্স
- হাইনেকেন আন্তর্জাতিক (স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি আমস্টেল হচ্ছে প্রধান প্রতিষ্ঠান)[২৭]
- কিয়া মোটরস[২৮]
- এন্টারপ্রাইজ রেন্ট-এ-কার[২৯]
- হ্যানকুক টায়ার[৩০]
মল্টেন একটি মাধ্যমিক পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি অফিসিয়াল ম্যাচ বল সরবরাহ করে।[৩১] ইউরোপা লিগের সূচনার পরে, এই প্রতিযোগিতাটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো নিজস্ব হোর্ডিং ব্যবহার শুরু করে (সেই বছরে এটি ৩২ দলের পর্বে সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয়েছে)। এলইডি হোর্ডিং ২০১২–১৩ মৌসুমের ফাইনালে সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয়েছে এবং ২০১৫–১৬ মৌসুম থেকে ১৬ দলের পর্ব হতে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে ব্যবহার করা হয়; একই মৌসুমে, গ্রুপ পর্ব থেকেই, দলগুলোকে তাদের পৃষ্ঠপোষক প্রদর্শন করা অনুমতি প্রদান করা হয়নি।[৩২] এটি ২০১৮–১৯ মৌসুমের গ্রুপ পর্ব এবং ৩২ দলের পর্বের কিছু নির্ধারিত ম্যাচের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।[৩৩] পৃথক ক্লাবগুলো বিজ্ঞাপন সমৃদ্ধ জার্সি পরিধান করতে পারে, এমনকি সেসকল পৃষ্ঠপোষক সমৃদ্ধও যারা ইউরোপা লিগের সাথে সম্পৃক্ত নয়। তবে প্রতি দলের জন্য জার্সিতে শুধু একটি পৃষ্ঠপোষক প্রদর্শন করার অনুমতি রয়েছে যদি না এটি অলাভজনক পৃষ্ঠপোষক (অথবা উক্ত জার্সি প্রস্তুতকারক) হয় এবং যদি ক্লাবগুলো এমন একটি দেশে ম্যাচ খেলে যেখানে উক্ত পৃষ্ঠপোষকটি নিষিদ্ধ থাকে (যেমন ফ্রান্সের ক্ষেত্রে মদজাতীয় পৃষ্ঠপোষক), উক্ত পরিস্থিতিতে ক্লাবকে অবশ্যই তাদের জার্সি থেকে উক্ত পৃষ্ঠপোষকের লোগো সরিয়ে ফেলতে হবে।
সারাংশ
[সম্পাদনা]- ২০২৩–২৪ মৌসুম পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
অতিরিক্ত সময়ে ফলাফল নির্ধারণ | |
পেনাল্টি শুট-আউটের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ | |
গোল্ডেন গোলের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ |
পরিসংখ্যান
[সম্পাদনা]১৯৯৭ সাল পর্যন্ত উয়েফা কাপের ফাইনাল দুই লেগের ম্যাচ হিসেবে আয়োজন করা হতো। এই প্রতিযোগিতার প্রথম ফাইনালের প্রথম লেগটি ১৯৭২ সালের ৩রা মে তারিখে উলভারহ্যাম্পটনে এবং দ্বিতীয় লেগটি ১৯৭২ সালের ১৭ই মে তারিখে লন্ডনে আয়োজিত হয়েছিল। উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স এবং টটেনহ্যাম হটস্পারের মধ্যকার প্রথম লেগটি ২–১ গোলে সফরকারী দল জয়লাভ করেছিল এবং দ্বিতীয় লেগটি ১–১ গোলে ড্র হয়েছিল, যার ফলে টটেনহ্যাম হটস্পার প্রথম উয়েফা কাপের বিজয়ী হয়েছিল।
১৯৯৮ সালে, প্রাক-নির্বাচিত মাঠে এক লেগের ফাইনাল ম্যাচ আয়োজন করা শুরু হয়। উয়েফা কাপের ফাইনাল আয়োজন করার জন্য সকল মাঠকে অবশ্যই উয়েফা বিভাগের তিনটি শর্ত পূরণ করতে বা অতিক্রম করতে হয়। দুই বার ফাইনাল ম্যাচটি ফাইনালে অংশগ্রহণকারী দলের মাঠে আয়োজন করা হয়েছিল; একটি হচ্ছে ২০০২ সালে রটার্ডামের ডে কুইপে আয়োজিত স্বাগতিক দল ফেইয়ানর্ট এবং বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মধ্যকার ফাইনাল (যেখানে ফেইয়ানর্ট জয়লাভ করেছিল) এবং অন্যটি হচ্ছে ২০০৫ সালে লিসবনে আয়োজিত স্বাগতিক দল স্পোর্টিং সিপি এবং পিএফসি সিএসকেএ মস্কোর মধ্যকার ফাইনাল (যেখানে সফরকারী দল মস্কো জয়লাভ করেছিল)।
সর্বশেষ উয়েফা কাপ ফাইনালের বিজয়ী (প্রতিযোগিতাটি উয়েফা ইউরোপা লিগ হিসেবে পরিচিত হওয়ার পূর্বে) হচ্ছে ইউক্রেনীয় ক্লাব শাখতার দোনেৎস্ক, যারা ২০০৯ সালের ২০শে মে তারিখে ইস্তাম্বুলের শুক্রু সারাকোয়লু স্টেডিয়ামে জার্মান ক্লাব ভেয়ার্ডার ব্রেমেনকে ২–১ গোলে পরাজিত করেছিল।
অতিরিক্ত সময়ের পরে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ফুলহ্যামকে ২–১ গোলে পরাজিত করে পুনঃনামকরণ করার পর প্রথমবারের মতো আয়োজিত ইউরোপা লিগের শিরোপা জয়লাভ করেছে স্পেনীয় ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদ।
ক্লাব
[সম্পাদনা]দেশ
[সম্পাদনা]দেশ | বিজয়ী | রানার-আপ | সর্বমোট |
---|---|---|---|
স্পেন | ১৪ | ৫ | ১৯ |
ইতালি | ১০ | ৮ | ১৮ |
ইংল্যান্ড | ৯ | ৮ | ১৭ |
জার্মানি[ক] | ৭ | ৯ | ১৬ |
নেদারল্যান্ডস | ৪ | ৩ | ৭ |
পর্তুগাল | ২ | ৫ | ৭ |
রাশিয়া | ২ | ০ | ২ |
সুইডেন | ২ | ০ | ২ |
বেলজিয়াম | ১ | ২ | ৩ |
ইউক্রেন | ১ | ১ | ২ |
তুরস্ক | ১ | ০ | ১ |
ফ্রান্স | ০ | ৫ | ৫ |
স্কটল্যান্ড | ০ | ৪ | ৪ |
অস্ট্রিয়া | ০ | ১ | ১ |
হাঙ্গেরি | ০ | ১ | ১ |
সার্বিয়া[খ] | ০ | ১ | ১ |
সর্বমোট | ৫৩ | ৫৩ | ১০৬ |
- টীকা
- ক ^ – পশ্চিম জার্মানির ক্লাবের ফলাফল অন্তর্ভুক্ত, কোনও পূর্ব জার্মানির ক্লাব কখনোই ফাইনালে পৌঁছাতে পারেনি।
- খ ^ – সাবেক সমাজতান্ত্রিক ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যুগোস্লাভিয়ার (১৯৪৫ সাল হতে ১৯৯২ সালে এর ভাঙ্গনের পূর্ব পর্যন্ত) প্রতিনিধিত্বকারী ক্লাবের ফলাফল অন্তর্ভুক্ত।
টীকা
[সম্পাদনা]- ↑ প্রতিটি গ্রুপে শীর্ষ দুই দল ৩২ দলের পর্বের জন্য এগিয়ে যাবে, যেখানে তারা চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে আটটি তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দলের মুখোমুখি হবে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Nakrani, Sachin (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "The Europa League is back and more than ever is a competition to savour"। ২৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২০ – www.theguardian.com-এর মাধ্যমে।
- ↑ ক খ গ "UEFA Cup gets new name in revamp"। BBC Sport (British Broadcasting Corporation)। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮। ৯ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮।
- ↑ ক খ "UEFA Cup to become UEFA Europa League"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮।
- ↑ "New format provides fresh impetus"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ১৪ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১০।
- ↑ "UEFA Europa League History"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ২৫ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০০৮।
- ↑ "Atalanta 3-0 Leverkusen: Lookman treble brings UEFA Europa League glory to Bergamo"। UEFA.com। ২২ মে ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০২৪।
- ↑ "Atalanta win UEFA Europa League after beating Bayer Leverkusen 3-0"। France 24। ২২ মে ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০২৪।
- ↑ "Uefa ponders third competition beneath Champions League and Europa League" [উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ইউরোপা লিগের নিচে তৃতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা আয়োজনের বিবেচনা]। দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫। ২৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Uefa set to introduce third European club competition from 2021–22" [উয়েফা ২০২১–২২ মৌসুমে তৃতীয় ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতা প্রবর্তনে প্রস্তুত]। দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮। ২৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০২০।
- ↑ ক খ গ "UEFA Executive Committee approves new club competition" [উয়েফার নির্বাহী কমিটি নতুন ক্লাব প্রতিযোগিতা অনুমোদন দিয়েছে]। উয়েফা (ইংরেজি ভাষায়)। ২ ডিসেম্বর ২০১৮। ১৩ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Format change for 2020/21 UEFA Nations League" [২০২০–২১ উয়েফা নেশনস লিগের বিন্যাস পরিবর্তন]। উয়েফা (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Regulations of the UEFA Cup 2007/08, page 6, II Cup and Medals, Article 4, Cup" (পিডিএফ)। Union of European Football Associations। ২৯ জুন ২০০৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০০৯।
- ↑ "Regulations of the UEFA Europa League 2009/10, page 7, III Trophies and medals, Article 5, Trophy" (পিডিএফ)। Union of European Football Associations। ২৩ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০০৯।
- ↑ "Sevilla make it three in row at Liverpool's expense"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ২৭ মে ২০১৫। ৩ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১৫।
- ↑ "UEFA Europa League trophy"। Union of European Football Associations। ১২ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০২০।
- ↑ "UEFA Europa League anthem makes debut"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ২৮ আগস্ট ২০০৯। ৩ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "UEFA Europa League anthem"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫।
- ↑ "UEFA Europa League launches edgier brand identity"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ৩০ মে ২০১৮। ২ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৮।
- ↑ "New approach broadens Europa League appeal"। UEFA। ২৯ আগস্ট ২০১৪। ১৬ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Distribution details"। UEFA.org। ২৩ মার্চ ২০১৫। ১০ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২০।
- ↑ "UEFA Access List 2015/18 with explanations" (পিডিএফ)। Bert Kassies। ৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২০।
- ↑ "How the Europa League winners will enter the Champions League"। UEFA.com। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২০।
- ↑ "UEFA club competitions rights sales process for 2018-21 cycle kicks off"। UEFA.com। ১২ ডিসেম্বর ২০১৬। ৯ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২০।
- ↑ "UEL2 Access List 2021–24" (পিডিএফ)। UEFA। ২ ডিসেম্বর ২০১৮। ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ uefadirect 7/09 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ আগস্ট ২০২০ তারিখে p.7
- ↑ "2019/20 UEFA club competitions revenue distribution system"। UEFA.com। Union of European Football Associations। ১১ জুলাই ২০১৯। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "HEINEKEN extends UEFA club competition sponsorship"। UEFA.com। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৮।
- ↑ "Kia Motors and UEFA celebrate UEFA Europa League sponsorship agreement"। UEFA.com। ২৯ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৮।
- ↑ "Europa League retains Enterprise backing until 2021"। SportsPro Media। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। ১৮ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৮।
- ↑ "Hankook Tire renews UEFA Europa League partnership"। UEFA.org। UEFA। ১৬ মে ২০১৮। ২৯ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৮।
- ↑ "Molten becomes UEFA Europa League match ball supplier"। UEFA.com। ২৩ অক্টোবর ২০১৭। ১৩ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৮।
- ↑ http://it.uefa.org/MultimediaFiles/Download/Regulations/uefaorg/Regulations/02/23/69/59/2236959_DOWNLOAD.pdf ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে (Page 53)
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ১৬ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২০।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (ইংরেজি)
- উয়েফা ওয়েবসাইট (আর্কাইভকৃত) (ইংরেজি)