বিষয়বস্তুতে চলুন

সিরিল ওয়াল্টার্স

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা AishikBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৪:১৯, ২৮ জুলাই ২০২১ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (বানান সংশোধন)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

সিরিল ওয়াল্টার্স
১৯৩৩ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে সিরিল ওয়াল্টার্স
ক্রিকেট তথ্য
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাঅধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১ ২৪৫
রানের সংখ্যা ৭৮৪ ১২১৪৫
ব্যাটিং গড় ৫২.২৬ ৩০.৭৪
১০০/৫০ ১/৭ ২১/৫৫
সর্বোচ্চ রান ১০২ ২২৬
বল করেছে ৪২৪
উইকেট
বোলিং গড় - ৭৬.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং - ২/২২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬/০ ১০২/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

সিরিল ফ্রেডরিক ওয়াল্টার্স (ইংরেজি: Cyril Walters; জন্ম: ২৮ আগস্ট, ১৯০৫ - মৃত্যু: ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৯২) ওয়েলসের গ্ল্যামারগনের বেডলিনগ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন ও ওরচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সিরিল ওয়াল্টার্স। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে গ্ল্যামারগনের পক্ষে অভিষেক ঘটে সিরিল ওয়াল্টার্সের। তবে, গ্ল্যামারগন ত্যাগ করার পর ওরচেস্টারশায়ারের অধিনায়ক ও সাচিবিক দায়িত্ব পালনকালেই সর্বাধিক সফলতা পান তিনি। এ দায়িত্ব পালনের সময়কালে তার ব্যাটিংয়েরও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সবিশেষ লক্ষ্যণীয় ছিল। ফলশ্রুতিতে সংক্ষিপ্তকালের জন্য ইংল্যান্ড দলের নিয়মিত সদস্য হন। এক পর্যায়ে নিয়মিত অধিনায়ক বব ওয়াটের সহকারী অধিনায়কের দায়িত্বে থাকাকালে এক খেলায় ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কত্ব লাভ করেন। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে কিছুদিন পর ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেন।

কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ

নিথ গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি। ১৯২৩ সালে সতেরো বছর বয়সে গ্ল্যামারগনের পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন। তবে তিনটি পূর্ণাঙ্গ মৌসুমে তিনি মাত্র একবার পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলার সৌভাগ্য লাভ করেন। গ্ল্যামারগনের ব্যাটিংয়ের মানদণ্ডে তাকে প্রথম একাদশের বাইরে থাকতে হয়নি। তার প্রাণোচ্ছল ফিল্ডিং সকলের নজর কুড়ায়।

পরের বছর জরিপকারক ও স্থপতি হিসেবে ব্যস্ততম সময় পার করেন। এরফলে মৌসুমের অর্ধেক সময় দলের বাইরে ছিলেন। তবে, দলে ফিরে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ১১৬ রান ও লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১১৪ রানের মনোজ্ঞ ইনিংস উপহার দেন। ঐ ইনিংসগুলোয় তার ধ্রুপদী ব্যাটিং অনেকগুলো স্ট্রোকের সমন্বয়ে গঠিত ছিল। এক পর্যায়ে তাকে ইংল্যান্ডের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনায় প্রতিভারূপে বিবেচনা করা হতো।

তবে, ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে মে, ১৯২৭ সালের পর সিরিল ওয়াল্টার্স খেলার বাইরে ছিলেন। ওরচেস্টারশায়ার কর্তৃপক্ষ ১৯২৮ সালে স্থায়ীভাবে সচিব হিসেবে তাকে মনোনীত করে। ঐ বছর কয়েকটি খেলায় গ্ল্যামারগনের পক্ষে কোন সফলতা পাননি। ওরচেস্টারশায়ারে খেলার জন্য যোগ্যতা লাভের সূচনাকাল শুরু হয়। ১৯২৯ সালে ওয়েলসের পক্ষে এমসিসির বিপক্ষে একটিমাত্র প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন তিনি। ১৯৩০ সালে ওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলার যোগ্যতা লাভ করেন। ওয়াল্টার্স তার ব্যাটিং দিয়ে দলকে মাঝামাঝি নিয়ে আসেন।

পরের বছর সিরিল ওয়াল্টার্সকে ওরচেস্টারশায়ারের অধিনায়ক মনোনীত করা হয়। দলের অবস্থা নিম্নতর পর্যায়ের দিকে যেতে থাকলেও দুইটি খুবই উত্তপ্ত গ্রীষ্ম মৌসুম অতিবাহিত করেন নিজস্ব মানদণ্ড বজায় রেখে। ১৯৩২ সালে দেড় হাজারেরও বেশি রান তুলেন। তন্মধ্যে, ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ১৯০ রান তুলেন। ১৯৩৩ সালে ওয়াল্টার্স সম্মুখসারির ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় আবির্ভূত হন। ওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে প্রথম তিন মৌসুমের প্রত্যেকটিতে একটি করে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু ঐ মৌসুমে নয়টি সেঞ্চুরি করে নতুন কাউন্টি রেকর্ড গড়েন।

পতৌদির নবাব, মরিস নিকোল ও হ্যারল্ড গিবন্স সাথে তিনি একত্রে পঁচিশটি সেঞ্চুরি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন। কিন্তু, বোলিং দূর্বলতার কারণে দলটি মাত্র দুই খেলায় জয় পেয়েছিল।

টেস্ট ক্রিকেট

২৪ জুন, ১৯৩৩ তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে সিরিল ওয়াল্টার্সের। হার্বার্ট সাটক্লিফের ব্যাট থেকে রান না আসায় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন টেস্টের সবকটিতেই ব্যাটিং করতে হয়। প্রথম দুই টেস্টে ৫১ ও ৪৬ রান করেন। ১৯৩৪ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।[]

ভারতে অনুষ্ঠিত পরবর্তী সিরিজে সিরিল ওয়াল্টার্স নিজেকে ইংল্যান্ডের প্রথম পছন্দের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ছয় ইনিংসে ৭১ গড়ে রান তুলেন তিনি।

১৯৩৪ সালে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করলেও সফলতা লাভে ব্যর্থ হন। তবে ব্যাটসম্যান হিসেবে ঠিকই সফলতা পেয়েছিলেন। উপর্যুপরী দুই মৌসুমে দুই সহস্রাধিক রান তুলেন তিনি। পাঁচ টেস্টে চার শতাধিক রান তুলেন। ১৯৩৫ সালের শুরুতে বেশ চমৎকার সময় কাটান। কিন্তু মাসখানেক পর থেকেই তার স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতি ঘটতে থাকে। দীর্ঘ বিশ্রামের উপদেশ দেয়া হয়। তবে, দুই খেলায় ২৭১ রান তোলায় কেনিংটন ওভালের শেষ টেস্টে খেলার জন্য তাকে মনোনীত করা হয়। কিন্তু, পুনরায় ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে তাকে দলের বাইরে যেতে হয়।

সর্বোপরি আঠারো ইনিংসের ১২টিতেই ৪০ ঊর্ধ্ব রান নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে স্মরণীয় রেকর্ড গড়েন।

অবসর

১৯৩৫ সালের শেষদিকে সিরিল ওয়াল্টার্স ওরচেস্টারশায়ারের সাচিবিক দায়িত্ব ও অধিনায়কত্ব করা থেকে নিজ নামকে প্রত্যাহার করে নেন। তবে, তিনি আশাবাদী ছিলেন যে, সুযোগ পেলে তিনি পুনরায় কাউন্টি দলের পক্ষে খেলতে আসবেন।[] কিন্তু, স্বাস্থ্যের উন্নতি হলেও তার খেলোয়াড়ী জীবন নিম্নমূখী হতে থাকে। তিনি বৈবাহিক বন্ধনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৩৬ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ না করলেও ওরচেস্টারশায়ার কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করতো যে, তিনি ১৯৩৭ সালে দলে নিয়মিতভাবে খেলবেন।[]

বছর শেষে কর্তৃপক্ষ জানতে পারে যে, তিনি আর ক্রিকেট মাঠে আর নামবেন না। তিনি বৈবাহিক জীবন সুন্দরভাবে কাটাচ্ছেন ও স্ত্রীর ব্যক্তিগত আয়ে বেশ ভালোভাবেই কেটে যাবে। ১৯৭৪ সালে পেজির মৃত্যু হলে তিনি নিথে ফিরে যান ও সেখানেই তার দেহাবসান ঘটে। জীবনের শেষদিকে সিরিল ওয়াল্টার্স ক্রিকেট খেলা দেখতেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, ক্রিকেটের দিকে নজর দিলে ব্যবসায়িক দায়িত্ব থেকে দূরে সরে থাকবেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Wisden Cricketers of the Year" (English ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  2. Brookes, Wilfrid H. (editor); John Wisden's Cricketers' Almanack for 1936; part II, page 336. Published by John Wisden & Co. Ltd
  3. Brookes, Wilfrid H. (editor); John Wisden's Cricketers' Almanack for 1937; part II, pages 329–330. Published by John Wisden & Co. Ltd

বহিঃসংযোগ

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
ওরচেস্টারশায়ার ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৩১-১৯৩৫
উত্তরসূরী
চার্লস লিটলটন