বিষয়বস্তুতে চলুন

রাখাইন ভাষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাখাইন
ရခိုင်ဘာသာ
উচ্চারণআইপিএ: [ɹəkʰàɪɴbàθà]
দেশোদ্ভববার্মা, বাংলাদেশ, ভারত
অঞ্চল
মাতৃভাষী
১ মিলিয়ন (২০১১-২০১৩)[]
১ মিলিয়ন দ্বিতীয় ভাষা মায়ানমারের ভাষা-ভাষী (২০১৩)
উপভাষা
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩দুইয়ের মধ্যে এক:
rki – Rakhine
rmz – Marma

রাখাইন ভাষা অত্যন্ত প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। এটি মূলত মারমার বা মারমাগ্রী বা বড়ুয়া একটি উপভাষা। রাখাইন ভাষায় দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্য রচিত হচ্ছে।[] প্রমিত বর্মী ভাষার সঙ্গে এর মিল রইলেও স্বতন্ত্র আঞ্চলিক বৈচিত্র রয়েছে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

মনিরুজ্জামান রাখাইনদের দুটি প্রধান উপভাষা বা ভাষিক বৈচিত্র্যের কথা জানিয়েছেন। এগুলোর একটি হচ্ছে ‘র‌্যামর্য’ এবং অন্যটি ‘মারৌও’। মুস্তাফা মজিদ রাখাইন ভাষার ভিন্নতা বোঝাতে গিয়ে লিখেছেন, ‘এই ভাষা ইন্দো-আর্য বা দ্রাবিড়ীয় ভাষা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ফলে, বাংলা, সংস্কৃত, হিন্দি ও দক্ষিণ ভারতের ভাষার সঙ্গে এই ভাষার খুব একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।’[]

আদি ব্রাহ্মীলিপিতে পালি ভাষায় ‘আরাখা’ অর্থাৎ রক্ষিতা বা রক্ষক শব্দ থেকে রাখাইন শব্দের উৎপত্তি।

ভৌগোলিক বিস্তার

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের পটুয়াখালী, কক্সবাজার, বরগুনা, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় ১৭ হাজার লোক রাখাইন ভাষায় কথা বলে।[] প্রধানত রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে ও তার আশপাশের শহরে ভাষাটির প্রচলন আছে।

ধ্বনিব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

রাখাইনদের নিজস্ব বর্ণমালা আছে। রাখাইন ভাষার বর্ণমালার উৎস উত্তর ব্রাহ্মী লিপি। খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতকে আরাকানে ব্রাহ্মী ও দেবনাগরী লিপির বিবর্তনে যে নতুন লিপি গড়ে ওঠে, তাই আজ রাখাইন বর্ণমালা হিসেবে পরিচিত। রাখাইন বর্ণমালায় স্বরবর্ণ বা ‘ছারা’ ১২টি এবং ব্যঞ্জনবর্ণ বা ‘ব্যেঃ’ ৩৩টি। রাখাইন বা মারমা ভাষায় লুসাই প্রভৃতি ভাষার মতো শব্দের শেষ ধ্বনিতে প্রায়শ আন্তঃস্বরযন্ত্রীয় রুদ্ধ-হ ধ্বনির প্রকাশ ঘটে এবং একইভাবে দ্বৈতস্বর যুক্ত হলে তা দ্বি-ওষ্ঠ্য নাসিক্য ব্যঞ্জনে রূপ পায়। এই ধ্বনি দুটিকে অনেক ভাষাতাত্ত্বিক ব্যঞ্জনধর্মিতা বলেছেন। বাংলা ভাষার শেষ স্বরধ্বনির মতো তা উচ্চারিত হয় না, বা উচ্চারণ মুক্তি পায় না।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. এথ্‌নোলগে Rakhine (১৮তম সংস্করণ, ২০১৫)
    এথ্‌নোলগে Marma (১৮তম সংস্করণ, ২০১৫)
  2. রাখাইন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ],মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৮-০২-২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।