ফার্সি ভাষা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
RockyMasum (আলোচনা | অবদান) অনুলিপি সম্পাদনা (অনুল্লেখ্য) |
WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান) অ বট বানান ঠিক করছে, কোনো সমস্যায় তানভিরের আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন |
||
৬৩ নং লাইন: | ৬৩ নং লাইন: | ||
}} |
}} |
||
'''ফার্সি ভাষা''' বা '''পারসিক ভাষা''' হল [[মধ্য এশিয়া|মধ্য এশিয়ায়]] প্রচলিত [[ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবার|ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের]] ইরানীয় শাখার অন্তর্ভুক্ত একটি [[ভাষা]]। [[পারস্য|পারস্যের]] প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ভাষা থেকে ফার্সি ভাষার উদ্ভব হয়েছে। বর্তমানে ভাষাটির তিনটি সরকারী রূপ প্রচলিত: [[ইরান|ইরানে]] এটি ''ফ়র্সী'' (فارسی [[আ-ধ্ব-ব|[fɒːɾˈsiː]]]) বা ''পর্সী'' নামে পরিচিত। [[আফগানিস্তান|আফগানিস্তানেও]] এটি বহুল প্রচলিত; সেখানে এটি ''দ্যারী'' (دری [[আ-ধ্ব-ব|[dæˈɾi]]]) নামে পরিচিত। ভাষাটির আরেকটি রূপ তাজিকিস্তান এবং পামির মালভূমি অঞ্চলে প্রচলিত। [[তাজিকিস্তান|তাজিকিস্তানে]] এর |
'''ফার্সি ভাষা''' বা '''পারসিক ভাষা''' হল [[মধ্য এশিয়া|মধ্য এশিয়ায়]] প্রচলিত [[ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবার|ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের]] ইরানীয় শাখার অন্তর্ভুক্ত একটি [[ভাষা]]। [[পারস্য|পারস্যের]] প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ভাষা থেকে ফার্সি ভাষার উদ্ভব হয়েছে। বর্তমানে ভাষাটির তিনটি সরকারী রূপ প্রচলিত: [[ইরান|ইরানে]] এটি ''ফ়র্সী'' (فارسی [[আ-ধ্ব-ব|[fɒːɾˈsiː]]]) বা ''পর্সী'' নামে পরিচিত। [[আফগানিস্তান|আফগানিস্তানেও]] এটি বহুল প্রচলিত; সেখানে এটি ''দ্যারী'' (دری [[আ-ধ্ব-ব|[dæˈɾi]]]) নামে পরিচিত। ভাষাটির আরেকটি রূপ তাজিকিস্তান এবং পামির মালভূমি অঞ্চলে প্রচলিত। [[তাজিকিস্তান|তাজিকিস্তানে]] এর সরকারি নাম ''তজিকী'' (Тоҷикӣ / Toçikī / تاجيكی [[আ-ধ্ব-ব|[tɔːdʒɪˈkiː]]])। এছাড়া [[উজবেকিস্তান]], [[তুর্কমেনিস্তান]], [[আজারবাইজান]], [[বাহরাইন]], [[কাতার]] এবং [[কুয়েত|কুয়েতেও]] অনেক ফার্সিভাষী লোক বাস করে। |
||
ইরানীয় ভাষাগুলির বিকাশ তিনটি পর্বে বিভক্ত করা যায় --- প্রাচীন, মধ্য এবং আধুনিক। [[অবেস্তান ভাষা]] এবং [[প্রাচীন ফার্সি ভাষা]] প্রাচীন ইরানীয় ভাষার নিদর্শন। অবেস্তান ভাষা সম্ভবত প্রাচীন পারস্যের উত্তর-পূর্ব অংশে প্রচলিত ছিল। এই ভাষাতে [[জরথুষ্ট্রবাদ|জরথুষ্ট্রবাদের]] পবিত্র গ্রন্থ [[অবেস্তা]] লেখা হয়। এই ধর্মীয় স্তোত্রমূলক ব্যবহার ছাড়া অবেস্তা ভাষা পারস্যে [[ইসলাম|ইসলামের]] আগমনের অনেক আগেই মৃত ভাষায় পরিণত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষাটি পারস্য সাম্রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমের [[কিউনিফর্ম]] শিলালিপিতে ধারণ করা আছে। এগুলি মূলত [[সম্রাট প্রথম দরিউশ]] এবং [[প্রথম খাশইয়র|প্রথম খাশইয়রের]] আমলে লিখিত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষা ও অবেস্তান ভাষার সাথে [[সংস্কৃত ভাষা|সংস্কৃত ভাষার]] ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। সংস্কৃত, [[গ্রিক ভাষা|গ্রিক]] ও [[লাতিন ভাষা|লাতিন ভাষার]] মতো এগুলিও অত্যন্ত [[বিভক্তিমূলক ভাষা]]। |
ইরানীয় ভাষাগুলির বিকাশ তিনটি পর্বে বিভক্ত করা যায় --- প্রাচীন, মধ্য এবং আধুনিক। [[অবেস্তান ভাষা]] এবং [[প্রাচীন ফার্সি ভাষা]] প্রাচীন ইরানীয় ভাষার নিদর্শন। অবেস্তান ভাষা সম্ভবত প্রাচীন পারস্যের উত্তর-পূর্ব অংশে প্রচলিত ছিল। এই ভাষাতে [[জরথুষ্ট্রবাদ|জরথুষ্ট্রবাদের]] পবিত্র গ্রন্থ [[অবেস্তা]] লেখা হয়। এই ধর্মীয় স্তোত্রমূলক ব্যবহার ছাড়া অবেস্তা ভাষা পারস্যে [[ইসলাম|ইসলামের]] আগমনের অনেক আগেই মৃত ভাষায় পরিণত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষাটি পারস্য সাম্রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমের [[কিউনিফর্ম]] শিলালিপিতে ধারণ করা আছে। এগুলি মূলত [[সম্রাট প্রথম দরিউশ]] এবং [[প্রথম খাশইয়র|প্রথম খাশইয়রের]] আমলে লিখিত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষা ও অবেস্তান ভাষার সাথে [[সংস্কৃত ভাষা|সংস্কৃত ভাষার]] ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। সংস্কৃত, [[গ্রিক ভাষা|গ্রিক]] ও [[লাতিন ভাষা|লাতিন ভাষার]] মতো এগুলিও অত্যন্ত [[বিভক্তিমূলক ভাষা]]। |
||
৬৯ নং লাইন: | ৬৯ নং লাইন: | ||
[[মধ্য ফার্সি ভাষা]] এবং ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত [[পার্থীয় ভাষা]] ছাড়াও বেশ কিছু মধ্য এশীয় ভাষা মধ্য ইরানীয় ভাষার মধ্যে পড়ে। পার্থীয় ভাষা ছিল আর্সাসিদ বা [[পার্থীয় সাম্রাজ্য|পার্থীয় সাম্রাজ্যের]] ভাষা, যে সাম্রাজ্যটি ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২২৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। [[সাসানীয় সাম্রাজ্য|সাসানীয়]] পর্বের পরবর্তী রাজাদের খোদাইলিপি থেকে পার্থীয় ভাষার নমুনা পাওয়া যায়। তবে সাসানীয়দের ক্ষমতায় আসার পর এই ভাষার অবনতি ঘটে। আর্সাসিদ পর্বে এটি ফার্সি ভাষার উপর প্রভাব ফেলেছিল। সাসানীয় সাম্রাজ্যের (২২৪-৬৫১) সময় সরকারী ভাষা ছিল মধ্য ফার্সি ভাষা বা [[পাহলভী ভাষা]]। মধ্য ফার্সি ভাষার ব্যাকরণ প্রাচীণ ফার্সি ভাষার চেয়ে সরল ছিল। [[আরামীয় লিপি]] থেকে উদ্ভূত একটি লিপিতে এটি লেখা হত। ৭ম শতকে [[আরব জাতি|আরবদের]] পারস্য বিজয়ের পর ভাষাটির অবনতি ঘটে। যদিও বহু মধ্য ফার্সি সাহিত্য [[আরবি ভাষা|আরবিতে]] অনুবাদ করা হয়েছিল, এতে রচিত বেশির ভাগ সাহিত্যই [[ইসলামী পারস্য|ইসলামী যুগে]] হারিয়ে যায়। সাসানীয় সাম্রাজ্যে ও মধ্য এশিয়াতে অন্য আরও মধ্য ইরানীয় ভাষা প্রচলিত ছিল। যেমন [[কিভা|খিভাতে]] [[খোয়ারাজমীয় ভাষা]], [[বাকত্রিয়া|বাকত্রিয়াতে]] [[বাকত্রীয় ভাষা]], [[সগদিয়ানা|সগদিয়ানাতে]] [[সগদীয় ভাষা]] এবং [[পূর্ব তুর্কিস্তান|পূর্ব তুর্কিস্তানে]] [[শক ভাষা]]। সগদীয় ভাষাতে [[খ্রিস্ট ধর্ম|খ্রিস্টান]], [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধ]] এবং ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য রচিত হয়। শক ভাষার [[খোতানীয় উপভাষা|খোতানীয় উপভাষাতে]] গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ সাহিত্য রচিত হয়। বেশির ভাগ [[কোয়ারিজমীয় সাহিত্য]] ইসলাম-পরবর্তী পর্বের। অন্যদিকে অতি সম্প্রতি আফগানিস্তানে বাকত্রীয় ভাষায় লেখা শিলালিপির সন্ধান পাওয়া গেছে। |
[[মধ্য ফার্সি ভাষা]] এবং ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত [[পার্থীয় ভাষা]] ছাড়াও বেশ কিছু মধ্য এশীয় ভাষা মধ্য ইরানীয় ভাষার মধ্যে পড়ে। পার্থীয় ভাষা ছিল আর্সাসিদ বা [[পার্থীয় সাম্রাজ্য|পার্থীয় সাম্রাজ্যের]] ভাষা, যে সাম্রাজ্যটি ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২২৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। [[সাসানীয় সাম্রাজ্য|সাসানীয়]] পর্বের পরবর্তী রাজাদের খোদাইলিপি থেকে পার্থীয় ভাষার নমুনা পাওয়া যায়। তবে সাসানীয়দের ক্ষমতায় আসার পর এই ভাষার অবনতি ঘটে। আর্সাসিদ পর্বে এটি ফার্সি ভাষার উপর প্রভাব ফেলেছিল। সাসানীয় সাম্রাজ্যের (২২৪-৬৫১) সময় সরকারী ভাষা ছিল মধ্য ফার্সি ভাষা বা [[পাহলভী ভাষা]]। মধ্য ফার্সি ভাষার ব্যাকরণ প্রাচীণ ফার্সি ভাষার চেয়ে সরল ছিল। [[আরামীয় লিপি]] থেকে উদ্ভূত একটি লিপিতে এটি লেখা হত। ৭ম শতকে [[আরব জাতি|আরবদের]] পারস্য বিজয়ের পর ভাষাটির অবনতি ঘটে। যদিও বহু মধ্য ফার্সি সাহিত্য [[আরবি ভাষা|আরবিতে]] অনুবাদ করা হয়েছিল, এতে রচিত বেশির ভাগ সাহিত্যই [[ইসলামী পারস্য|ইসলামী যুগে]] হারিয়ে যায়। সাসানীয় সাম্রাজ্যে ও মধ্য এশিয়াতে অন্য আরও মধ্য ইরানীয় ভাষা প্রচলিত ছিল। যেমন [[কিভা|খিভাতে]] [[খোয়ারাজমীয় ভাষা]], [[বাকত্রিয়া|বাকত্রিয়াতে]] [[বাকত্রীয় ভাষা]], [[সগদিয়ানা|সগদিয়ানাতে]] [[সগদীয় ভাষা]] এবং [[পূর্ব তুর্কিস্তান|পূর্ব তুর্কিস্তানে]] [[শক ভাষা]]। সগদীয় ভাষাতে [[খ্রিস্ট ধর্ম|খ্রিস্টান]], [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধ]] এবং ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য রচিত হয়। শক ভাষার [[খোতানীয় উপভাষা|খোতানীয় উপভাষাতে]] গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ সাহিত্য রচিত হয়। বেশির ভাগ [[কোয়ারিজমীয় সাহিত্য]] ইসলাম-পরবর্তী পর্বের। অন্যদিকে অতি সম্প্রতি আফগানিস্তানে বাকত্রীয় ভাষায় লেখা শিলালিপির সন্ধান পাওয়া গেছে। |
||
আধুনিক ফার্সি ভাষাটি ৯ম শতকের মধ্যেই বিকাশ লাভ করে। ভাষাটিতে পার্থীয় ও মধ্য ফার্সি ভাষার বহু উপাদান আছে এবং অন্যান্য ইরানীয় ভাষাগুলিও একে প্রভাবিত করেছে। ভাষাটি [[আরবি লিপি|পারসিক-আরবি লিপিতে]] লেখা হয়। ভাষাটির ব্যাকরণ মধ্য ফার্সির চেয়েও সরল এবং এটি [[আরবি ভাষা]] থেকে বিপুল পরিমাণ শব্দ [[শব্দ আত্মীকরণ|আত্মীকৃত]] করেছে। শুরু থেকেই আধুনিক ফার্সি ভাষাটি পারস্যের |
আধুনিক ফার্সি ভাষাটি ৯ম শতকের মধ্যেই বিকাশ লাভ করে। ভাষাটিতে পার্থীয় ও মধ্য ফার্সি ভাষার বহু উপাদান আছে এবং অন্যান্য ইরানীয় ভাষাগুলিও একে প্রভাবিত করেছে। ভাষাটি [[আরবি লিপি|পারসিক-আরবি লিপিতে]] লেখা হয়। ভাষাটির ব্যাকরণ মধ্য ফার্সির চেয়েও সরল এবং এটি [[আরবি ভাষা]] থেকে বিপুল পরিমাণ শব্দ [[শব্দ আত্মীকরণ|আত্মীকৃত]] করেছে। শুরু থেকেই আধুনিক ফার্সি ভাষাটি পারস্যের সরকারি ও সাংস্কৃতিক ভাষা। |
||
== আরও দেখুন == |
== আরও দেখুন == |
১১:৫১, ৩ মে ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
পারসিক | |
---|---|
ফার্সি | |
fa | |
উচ্চারণ | [fɒːɾˈsiː] |
দেশোদ্ভব | ইরান[১] আফগানিস্তান[১](as Dari) |
মাতৃভাষী | ৬০ মিলিয়ন (২০০৯)[২] (মোট ১১০ মিলিয়ন ভাষাভাষী)[২] |
পূর্বসূরী | |
উপভাষা | |
ফার্সি বর্ণমালা (আরবি লিপি) Tajik alphabet (Cyrillic script) হিব্রু বর্ণমালা | |
সরকারি অবস্থা | |
সরকারি ভাষা | ইরান আফগানিস্তান তাজিকিস্তান |
নিয়ন্ত্রক সংস্থা | পারসিক ভাষা ও সাহিত্য অ্যাকাডেমি (ইরান) আফগানিস্তানের বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-১ | fa |
আইএসও ৬৩৯-২ | per (বি) fas (টি) |
আইএসও ৬৩৯-৩ | fas – সমেত কোডপৃথক কোডসমূহ: pes – Western Persianprs – Eastern Persiantgk – Tajikiaiq – Aimaqbhh – Bukharichaz – Hazaragijpr – Dzhidiphv – Pahlavanideh – Dehwarijdt – Juhurittt – Caucasian Tat |
লিঙ্গুয়াস্ফেরা | 58-AAC (বৃহত্তর পারসিক) > 58-AAC-c (মধ্য পারসিক) |
বিশ্বে ফার্সি ভাষার বিস্তার। মানচিত্রে সমস্ত পারসিকের তিনটি উপভাষা রয়েছে। | |
ফার্সি ভাষা বা পারসিক ভাষা হল মধ্য এশিয়ায় প্রচলিত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের ইরানীয় শাখার অন্তর্ভুক্ত একটি ভাষা। পারস্যের প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ভাষা থেকে ফার্সি ভাষার উদ্ভব হয়েছে। বর্তমানে ভাষাটির তিনটি সরকারী রূপ প্রচলিত: ইরানে এটি ফ়র্সী (فارسی [fɒːɾˈsiː]) বা পর্সী নামে পরিচিত। আফগানিস্তানেও এটি বহুল প্রচলিত; সেখানে এটি দ্যারী (دری [dæˈɾi]) নামে পরিচিত। ভাষাটির আরেকটি রূপ তাজিকিস্তান এবং পামির মালভূমি অঞ্চলে প্রচলিত। তাজিকিস্তানে এর সরকারি নাম তজিকী (Тоҷикӣ / Toçikī / تاجيكی [tɔːdʒɪˈkiː])। এছাড়া উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, কাতার এবং কুয়েতেও অনেক ফার্সিভাষী লোক বাস করে।
ইরানীয় ভাষাগুলির বিকাশ তিনটি পর্বে বিভক্ত করা যায় --- প্রাচীন, মধ্য এবং আধুনিক। অবেস্তান ভাষা এবং প্রাচীন ফার্সি ভাষা প্রাচীন ইরানীয় ভাষার নিদর্শন। অবেস্তান ভাষা সম্ভবত প্রাচীন পারস্যের উত্তর-পূর্ব অংশে প্রচলিত ছিল। এই ভাষাতে জরথুষ্ট্রবাদের পবিত্র গ্রন্থ অবেস্তা লেখা হয়। এই ধর্মীয় স্তোত্রমূলক ব্যবহার ছাড়া অবেস্তা ভাষা পারস্যে ইসলামের আগমনের অনেক আগেই মৃত ভাষায় পরিণত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষাটি পারস্য সাম্রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমের কিউনিফর্ম শিলালিপিতে ধারণ করা আছে। এগুলি মূলত সম্রাট প্রথম দরিউশ এবং প্রথম খাশইয়রের আমলে লিখিত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষা ও অবেস্তান ভাষার সাথে সংস্কৃত ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। সংস্কৃত, গ্রিক ও লাতিন ভাষার মতো এগুলিও অত্যন্ত বিভক্তিমূলক ভাষা।
মধ্য ফার্সি ভাষা এবং ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত পার্থীয় ভাষা ছাড়াও বেশ কিছু মধ্য এশীয় ভাষা মধ্য ইরানীয় ভাষার মধ্যে পড়ে। পার্থীয় ভাষা ছিল আর্সাসিদ বা পার্থীয় সাম্রাজ্যের ভাষা, যে সাম্রাজ্যটি ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২২৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। সাসানীয় পর্বের পরবর্তী রাজাদের খোদাইলিপি থেকে পার্থীয় ভাষার নমুনা পাওয়া যায়। তবে সাসানীয়দের ক্ষমতায় আসার পর এই ভাষার অবনতি ঘটে। আর্সাসিদ পর্বে এটি ফার্সি ভাষার উপর প্রভাব ফেলেছিল। সাসানীয় সাম্রাজ্যের (২২৪-৬৫১) সময় সরকারী ভাষা ছিল মধ্য ফার্সি ভাষা বা পাহলভী ভাষা। মধ্য ফার্সি ভাষার ব্যাকরণ প্রাচীণ ফার্সি ভাষার চেয়ে সরল ছিল। আরামীয় লিপি থেকে উদ্ভূত একটি লিপিতে এটি লেখা হত। ৭ম শতকে আরবদের পারস্য বিজয়ের পর ভাষাটির অবনতি ঘটে। যদিও বহু মধ্য ফার্সি সাহিত্য আরবিতে অনুবাদ করা হয়েছিল, এতে রচিত বেশির ভাগ সাহিত্যই ইসলামী যুগে হারিয়ে যায়। সাসানীয় সাম্রাজ্যে ও মধ্য এশিয়াতে অন্য আরও মধ্য ইরানীয় ভাষা প্রচলিত ছিল। যেমন খিভাতে খোয়ারাজমীয় ভাষা, বাকত্রিয়াতে বাকত্রীয় ভাষা, সগদিয়ানাতে সগদীয় ভাষা এবং পূর্ব তুর্কিস্তানে শক ভাষা। সগদীয় ভাষাতে খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য রচিত হয়। শক ভাষার খোতানীয় উপভাষাতে গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ সাহিত্য রচিত হয়। বেশির ভাগ কোয়ারিজমীয় সাহিত্য ইসলাম-পরবর্তী পর্বের। অন্যদিকে অতি সম্প্রতি আফগানিস্তানে বাকত্রীয় ভাষায় লেখা শিলালিপির সন্ধান পাওয়া গেছে।
আধুনিক ফার্সি ভাষাটি ৯ম শতকের মধ্যেই বিকাশ লাভ করে। ভাষাটিতে পার্থীয় ও মধ্য ফার্সি ভাষার বহু উপাদান আছে এবং অন্যান্য ইরানীয় ভাষাগুলিও একে প্রভাবিত করেছে। ভাষাটি পারসিক-আরবি লিপিতে লেখা হয়। ভাষাটির ব্যাকরণ মধ্য ফার্সির চেয়েও সরল এবং এটি আরবি ভাষা থেকে বিপুল পরিমাণ শব্দ আত্মীকৃত করেছে। শুরু থেকেই আধুনিক ফার্সি ভাষাটি পারস্যের সরকারি ও সাংস্কৃতিক ভাষা।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ ঘ Samadi, Habibeh (২০১২)। Martin Ball, David Crystal, Paul Fletcher, সম্পাদক। Assessing Grammar: The Languages of Lars। Multilingual Matters। পৃষ্ঠা 169। আইএসবিএন 978-1-84769-637-3। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) - ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Windfuhr, Gernot. The Iranian Languages. Routledge. 2009. p. 418.