মানব পরিপাকতন্ত্র
এই নিবন্ধে একাধিক সমস্যা রয়েছে। অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির মান উন্নয়ন করুন অথবা আলাপ পাতায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
|
Human gastrointestinal tract (Digestive System) | |
---|---|
শনাক্তকারী | |
মে-এসএইচ | D004064 |
টিএ৯৮ | A05.0.00.000 |
টিএ২ | 2773 |
টিএইচ | H3.04 |
এফএমএ | FMA:7152 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
মুখ থেকে মলদ্বার পর্যন্ত খাদ্যনালী এবং সংশ্লিষ্ট অঙ্গ সমবায়ে মানব পরিপাকতন্ত্র গঠিত যার মূল কাজ খাদ্য পরিপাক করা। একে পাচনতন্ত্র (digestive system) বা পৌষ্টিকতন্ত্রও বলা হয়ে থাকে। অথবা, যে তন্ত্রের মাধ্যমে পরিপাক ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাই পরিপাকতন্ত্র বা পৌষ্টিকতন্ত্র। খাদ্য পাচন বা পরিপাক বা হজম একটি শারীরিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে খাদ্যকে প্রথমে ছোট ছোট টুকরো করে তার পর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন উৎসেচক দ্বারা বিগলিত করে দেহে আত্তীকরণের উপযোগী করা হয়। পাচন প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত অঙ্গতন্ত্রকে পাচনতন্ত্র বলে।
পাচন প্রক্রিয়াকে অবস্থান অনুযায়ী দুটিভাগে ভাগ করা যায়:
- অন্তঃকোষীয় (Intracellular digestion): আদিম প্রাণী যেমন প্রোটোজোয়ার পাচনতন্ত্র পুরোপুরি অন্তঃকোষীয়। উদাহরণ প্যরামেশিয়ামের পাচনতন্ত্র।
- বহিঃকোষীয়:(Extracellular digestion): উন্নত প্রাণী এবং পতঙ্গভুক উদ্ভিদদের খাদ্য ভক্ষণ ও এপ্রাথমিক পাচনের জন্য খুব বিশদ বৈশিষ্টপূর্ণ পাকনালীতে প্রাথমিক পাচন সমপন্ন হয়।
পাকনালীকে অন্ননালী বা খাদ্যনালী বলা হয় । ইংরাজী: Gut, gastrointestinal tract(GIT), digestive tract, alimentary canal. স্তন্যপায়ী পাকনালীর অংশগুলি যথাক্রমে:
শিরঃপাকনালী (Head gut)
[সম্পাদনা]তালু (মুখগহ্বর) (palate)
[সম্পাদনা]কঠিন তালু (hard palate)
[সম্পাদনা]নমনীয় বা কোমল তালু (soft palate)
[সম্পাদনা]জিহ্বা
[সম্পাদনা]স্বাদকোরক
[সম্পাদনা]ওরো-ফ্যারিঙ্স (oro-pharynx)
[সম্পাদনা]পুরোঃপাকনালী (Fore gut)
[সম্পাদনা]মধ্যপাকনালী (mid gut) বা ক্ষুদ্রান্ত্র (small intestine)
[সম্পাদনা]ইলিয়াম(অন্ত্র) (ileum)
[সম্পাদনা]পশ্চাৎপাকনালী (hind gut) বৃহদন্ত্র (large intestine)
[সম্পাদনা]সিকাম (আমাদের ভার্মিফর্ম অ্যাপেন্ডিক্স)
[সম্পাদনা]মলাধার (রেক্টাম)
[সম্পাদনা]ক্লোয়াকা
[সম্পাদনা]আনুসঙ্গিক পাচক গ্রন্থি
[সম্পাদনা]স্তন্যপায়ী ছাড়া অন্যান্য মরুদণ্ডীদের পাকনালী প্রায় একই রকম তবে ক্ষুদ্রান্ত্রে তিনটির বদলে দুটি ভাগ (জেজুনাম নাই)। বৃহদন্ত্র প্রায় নাই এবং অন্ত্রের এই শেষভাগে মূত্রনালী ও জননাঙ্গ উন্মুক্ত হয়, তাই পাকনালীর এই অংশের নাম ক্লোয়াকা যার কাজ মল ও মূত্র থেকে জল শুষে নিয়ে স্থলচরদের জল অপচয় রোধ।
পাচন প্রক্রিয়ার পর্যায়ক্রমিক স্তর
[সম্পাদনা]বহিঃকোষীয় পাচন প্রক্রিয়ার পর্যায়ক্রমিক ধাপে হয়। প্রথম দুটি ধাপ হয় শিরপাকনালীতে
- খাদ্য আহরণ:
- খাদ্য সংগ্রহ
- হস্তগতকরণ (prehension)
- ভক্ষণ:
পেরিস্টলসিস
[সম্পাদনা]খাদ্য হজমের স্বার্থে পাকস্থলী গাত্রের যে আন্দোলন তাকে পেরিস্টলসিস বলা হয়। এই আন্দোলনের ফলে খাদ্য দ্রব্য সহজে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় এবং হাইড্রোক্লোরিক এসিড, পানি এবং অন্যান্য এনজাইমের সঙ্গে মিশে।
স্ফিঙ্কটারের কাজ
[সম্পাদনা]পাকস্থলীর পাইলোরিক প্রান্তে অবস্থিত স্ফিংক্টার (sphincter= পেশির বেড়ী যা ছিদ্রপথকে বেস্টন করে থাকে) পাকস্থলী থেকে ডিওডেনামে খাদ্যের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।
অ্যাসিডের কাজ
[সম্পাদনা]পাকস্থলীতে খাদ্য পরিপাক হওয়ার জন্য অম্লীয় পরিবেশের প্রয়োজন হয়। তাছড়া পাকস্থলীতে নিঃসৃত হাইড্রোক্লোরিক এসিড খাদ্যদ্রব্যকে নরম করে সহজপাচ্য করে তোলে।
আন্ত্রিক গ্রন্থি
[সম্পাদনা]অন্ত্রপ্রাচীরের মিউকোসা স্তরে কতগুলো এককোষী গ্রন্থি খাদ্য পরিপাককারী এনজাইম ক্ষরণ করে।এগুলো হচ্ছেঃ ব্রাশকোষ,গবলেট কোষ,প্যানেথ কোষ,আর্জেন্টাইন কোষ,লিবারক্যুন এর গ্রন্থি এবং ব্রুনার এর গ্রন্থি।এসব গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রসকে আন্ত্রিক রস বা সাক্কাস ইন্টেরিকাস বলে।
আন্ত্রিক রসের উপাদান ১.পানি ৯৮.৫% ২.অজৈব পদার্থ ০.৮% ৷৷ ৷ যেমনঃNa,K,Ca,Mg এর লবণ ৩.জৈব পদার্থঃ০.৭% সক্রিয়ক-এন্টারোকাইনেজ এনজাইম-ট্রিপসিনোজেন,পেপ্টাইডেজ, এমাইলেজ,মল্টেজ,ল্যাক্টেজ,সুক্রেজ লাইপেজ ইত্যাদি
তথ্যসূত্রঃউচ্চমাধ্যমিক জীববিজ্ঞান,২য় পত্র,গাজী আজমল ও গাজী আসমত।
পাকনালীতে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা
[সম্পাদনা]পাকনালীতে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা প্রায় ১০০,০০,০০,০০,০০,০০০ যা আমাদের পুরো দেহের কোষ সংখ্যার থেকে কমপক্ষে ১০ গুণ। ভালো ভূমিকা: প্রাণীদের সেলুলেজ নেই (একমাত্র ব্যতিক্রম "টিউনিক"-ধারী অ্যাসিডিয়া)।
তাই উইপোকা থেকে গরু সবার সেলুলোজ হজম করতে ব্যাকটেরিয়া লাগে।
তৃণভোজী পাকনালী
[সম্পাদনা]এদের দুভাগে ভাগ করা যায়:
- যারা পুরোঃপাকনালীতে ফারমেন্ট করে বা গাঁজায় (Foregut fermenter) যেমন গরু।
- যারা পশ্চাৎপাকনালীতে ফারমেন্ট করে বা গাঁজায় (hindgut fermenter) যেমন ঘোড়া।