সিকাম
পাচনতন্ত্রে বৃহদন্ত্রের প্রথম ভাগ। ক্ষুদ্রান্ত্র আসলে বৃহদন্ত্রের একদম গোড়াতে প্রবেশ করে না। ক্ষুদ্রান্ত্রের পরেই খাদ্য বৃহদন্ত্রের অ্যাসেন্ডিং কোলন অংশে সম্মুখচালিত হয়। কিন্তু ক্ষুদ্রান্ত্র আর বৃহদন্ত্রের সংযোগস্থল থেকে বিপরীত গামী অন্ধ-গলি (ব্লাইন্ড পাউচ) হল সিকাম। মানুষের সিকাম খুব ক্ষুদ্র এবং ভার্মিফর্ম অ্যাপেন্ডিক্সে পরিণত হয়েছে।
পশ্চাত-জঠর-পাচী (haind gut fermenting) প্রাণীদের সিকাম খুব লম্বা হয়। যেমন কোয়ালার সিকাম ২ মিটার লম্বা - বাকী পরিপাক নালীর প্রায় সমান। ক্ষুদ্র তৃণভোজী প্রাণীরা অধিকাংশই পশ্চাত-জঠর-পাচী। এদের খাদ্য অ্যান্টি-পেরিস্টলসিস দ্বারা সিকামে প্রবেশ করে। জল থেকে ডাঙায় প্রাণীদের বিবর্তনের (উভচর থেকে অ্যামনিয়োট উদ্ভবের) সময় ক্লোয়াকাযুক্ত কোলনের কাজই ছিল জল অপচয় রোধ। যতদিন নেফ্রনে হেনলীর লুপ বিবর্তিত না হয়েছে, প্রস্রাবকে জল-শোষণের জন্য ক্লোয়াকা থেকে কোলনে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অ্যান্টি-পেরিস্টলসিসের উদ্ভব হয়। কিন্তু পরে কোলনের এই অংশ সেলুলোজ পাচনকারী ব্যাক্টেরিয়ার আবাসস্থল হয়ে দাঁড়ায়। খুব ছোটো স্তন্যপায়ী তৃণভোজী যেমন খরগোশদের পরিপাকনালী যথেষ্ট লম্বা নয় বলে খাদ্য একবারে পুরো হজম হয় না। এরা নিজের প্রথমবার অর্ধপাচিত মল দ্বিতীয় বার ভক্ষণ করে। এই আচরণকে মলভক্ষণ (coprophagy) বলে। এরকম ছোটো স্তন্যপায়ীদের অনেকে কেবল সিকামের মধ্যেকার ব্যাক্টেরিয়া পাচিত অংশ পান করে যাকে সিকোট্রফি (cecotrophy) বলে।