নবীগণের জীবন কাহিনী (কাসাসুল আম্বিয়া)
![]() ইসলামের একটি সিরিজের অংশ ইসলামের নবিগণ |
---|
![]() |
ইসলামী নাম, বাইবেলের নাম এবং আরবি অনুযায়ী তালিকাভুক্ত। ছয়টি নামের পাশে * চিহ্নিত যা প্রধান নবি হিসেবে বিবেচিত করে।
|
![]() |
কুরআন |
---|
ধারাবাহিক নিবন্ধশ্রেণীর অংশ |
![]() |
অনুবাদ |
কাসাসুল আম্বিয়া (আরবি: قصص الأنبياء) বা নবীগণের জীবন কাহিনী কুরআন ও অন্যান্য ইসলামী সাহিত্য থেকে গৃহীত বিভিন্ন কাহিনী সংকলন যা তাফসীরসমূহের সাথে বেশ সম্পর্কিত। প্রচলিত মতে এই গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন, দ্বাদশ শতাব্দীতে (হিজরি পঞ্চম শতক) নিশাপুরের (উত্তরপূর্ব ইরানের খোরাসান প্রদেশের একটি শহর) ফার্সি লেখক, আবু ইশহাক ইব্রাহিম বিন মনসুর বিন খালাফ। আরেকটি প্রচলিত মতনুসারে, মুহাম্মদ আল-কিসাই খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে (হিজরি দ্বিতীয় শতাব্দী) এটি রচনা করেন। অন্যান্যগুলোর মধ্যে রয়েছে আল-তালাবি (মৃত্যু ১০৩৫ খ্রি., হিজরি ৪২৭) রচিত আরাইস আল-মাজালিস এবং ইবনে কাসিরের (মৃত্যু ১৩৭২ খ্রি., হিজরি ৭৭৪) কাসাস আল-আম্বিয়া। কাসাসুল আম্বিয়ায় বর্ণিত বিবরণগুলি ঐতিহাসিক নির্ভুল তথ্য দেয়ার বিষয়ে নয়, বরং জ্ঞান এবং নৈতিক শিক্ষার বিষয়ে।[১]
সংক্ষিপ্ত বিবরণ[সম্পাদনা]
বাইবেলে উল্লেখিত মুসলিম নবী বা بنبياء আম্বিয়াদের জীবনী কুরআনে সংক্ষিপ্তভাবে বিবৃত হয়েছে, তাই পণ্ডিত, কবি, ঐতিহাসিক এবং গল্পকাররা খালি হাড়কে রক্ত-মাংস সহকারে আচ্ছাদন করে বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। এই গ্রন্থগুলির লেখকরা মধ্যযুগীয় ইসলামী সভ্যতা যেমন এশিয়া, আফ্রিকা, চীন এবং ইউরোপের মতো প্রচলিত ঐতিহ্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। এই বিদ্বানদের মধ্যে অনেকেই কুরআনের তাফসীরকারও আছেন; কুরআন তাফসীরের মত নয়, যা নিজেই কুরআনের শৃঙ্খলা ও কাঠামো অনুসরণ করে, কিসাসে তাদের নবীদের জীবন কাহিনী কালানুক্রমিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে - যা তাদের বাইবেলের ইহুদি ও খ্রিস্টান সংস্করণের অনুরূপ।
কিসাস সাধারণত পৃথিবী এবং ফেরেশতা সহ এর বিভিন্ন জীবের সৃষ্টি কাহিনী দিয়ে শুরু হয়েছে এবং আদমের মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। হযরত আদম ও তাঁর পরিবারের কাহিনী অনুসরণ করে ইদ্রিস, নূহ, সাম, হুদ, সালেহ, ইব্রাহিম, ইসমাইল এবং তাঁর মা হাজেরা, লুত, ইসহাক, ইয়াকুব এবং ঈছ, ইউসুফ, আইয়ুব, শুয়াইব, মুসা এবং তাঁর ভাই হারুন, খিজির, যোশুয়া, জোসেফাস, ইলিয়াজার, ইলিয়াস, স্যামুয়েল, শৌল, দাউদ, সুলায়মান, ইউনুস, যুল-কিফ'ল এবং জুলকারনাইন হয়ে ইয়াহিয়া ও মরিয়মের পুত্র ঈসা সহ পুরো পথ পর্যন্ত কাহিনী বর্ণীত হয়েছে। কখনও কখনও লেখক এ সম্পর্কিত স্থানীয় লোককাহিনী বা মৌখিক ঐতিহ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং কাসাসুল আম্বিয়ার অনেক কাহিনী মধ্যযুগীয় খ্রিস্টান এবং ইহুদি কাহিনীগুলির অনুকরণ করেছে।
ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, উসমানীয় সাম্রাজ্যের অজ্ঞাতনামা চিত্রশিল্পীরা কাসাসুল আম্বিয়ার কাহিনী অবলম্বনে বেশ কয়েকটি চমকপ্রদ কাহিনীচিত্র সংস্করণ তৈরি করেছেন। মিলস্টেইন এট আল-এর মতে, "আইকনোগ্রাফিক্যাল স্টাডি [গ্রন্থগুলির] ইরানের শিয়া প্রতিদ্বন্দ্বী এবং পশ্চিমে খ্রিস্টান প্রতিবেশীদের সাথে আদর্শিক কর্মসূচী এবং উসমানীয় বিতর্কমূলক আলোচনার বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করেছে।"[২]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
- তারিখুল রসুল ওয়াল মুলুক
- কুরআনের ইতিহাস
- ইসলামী ইতিকথা
- কুরআনের কাহিনীর তালিকা
- মুহাম্মদের জীবনীগ্রন্থের তালিকা
- ইসলামের পয়গম্বর
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Itzchak Weismann, Mark Sedgwick, Ulrika Mårtensson Islamic Myths and Memories: Mediators of Globalization Routledge, 06.05.2016 আইএসবিএন ৯৭৮-১-৩১৭-১১২২১-১ পৃষ্ঠা ১৯৪ (ইংরেজি ভাষায়)
- ↑ "Stories of the Prophets"। জুলাই ৩, ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১৩, ২০২০।
উৎস[সম্পাদনা]
- ব্র্যানন হুইলার। নবীদের কাহিনী—কাহিনীচিত্র পাণ্ডুলিপির পৃষ্ঠাসমূহ
- মিলস্টেইন, রাসেল, কারিন রুরদান্জ এবং বারবারা স্মিটজ (১৯৯৯)। নবীদের কাহিনী: কাসাসুল আম্বিয়ার সচিত্র পুঁথি (ইসলামিক শিল্প ও স্থাপত [১] ্যকর্ম সিরিজ, নং ৮) মাজদা পাবলিশার্স, ইনকোর্পোরেটেড।
- [২]কাসাসুল আম্বিয়ার—ইজিইসলাম
- কাজী পাবলিকেশনস ইনকোর্পোরেটেড: নবীদের কাহিনী (কিসাস আল-আম্বিয়া)
- নবীদের কাহিনী—ওয়ার্ল্ড ডিজিটাল লাইব্রেরি