ইউরেনিয়াম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
৯২ প্রোটেক্টিনিয়ামইউরেনিয়ামনেপচুনিয়াম
Nd

U

(Uqb)
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
নাম, প্রতীক, পারমাণবিক সংখ্যা ইউরেনিয়াম, U, ৯২
রাসায়নিক শ্রেণী অ্যাক্টিনাইড
Group, Period, Block n/a, 7, f
Appearance রূপালী ধূসর ধাতব;;
বাতাসে বড় কালো
অক্সাইড আবরণ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়
Uranium
পারমাণবিক ভর 238.02891(3) g/mol
ইলেক্ট্রন বিন্যাস [Rn] 5f3 6d1 7s2
প্রতি শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা 2, 8, 18, 32, 21, 9, 2
ভৌত বৈশিষ্ট্য
দশা solid
ঘনত্ব (সাধারণ তাপ ও চাপে) 19.1 g/cm³
গলনাংকে তরল ঘনত্ব 17.3 গ্রাম/সেমি³
গলনাঙ্ক 1405.3 K
(1132.2 °C, 2070 °F)
স্ফুটনাঙ্ক 4404 K
(4131 °C, 7468 °F)
গলনের লীন তাপ 9.14 kJ/mol
বাষ্পীভবনের লীন তাপ 417.1 kJ/mol
তাপধারণ ক্ষমতা (২৫ °সে) 27.665 জুল/(মোল·কে)
বাষ্প চাপ
P/প্যাসকেল ১০ ১০০ ১ কে ১০ কে ১০০ কে
T/কেলভিন তাপমাত্রায় 2325 2564 2859 3234 3727 4402
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
কেলাসীয় গঠন orthorhombic
জারণ অবস্থা 4, 6
(weakly basic oxide)
তড়িৎ ঋণাত্মকতা 1.38 (পাউলিং স্কেল)
Ionization energies 1st: 597.6 kJ/mol
2nd: 1420 kJ/mol
পারমাণবিক ব্যাসার্ধ 175 pm
Van der Waals radius 186 pm
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য
Magnetic ordering paramagnetic
Electrical resistivity (0 °C) 0.280 µΩ·m
তাপ পরিবাহিতা (300 K) 27.5 W/(m·K)
Thermal expansion (25 °C) 13.9 µm/(m·K)
Speed of sound (thin rod) (20 °C) 3155 m/s
ইয়ং এর গুণাঙ্ক 208 GPa
Shear modulus 111 GPa
Bulk modulus 100 GPa
Poisson ratio 0.23
Mohs hardness 6.0
Vickers hardness 1960 MPa
Brinell hardness 2400 MPa
সি এ এস নিবন্ধন সংখ্যা 7440-61-1
কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সমস্থানিক
প্রধান নিবন্ধ: uraniumের সমস্থানিক
iso NA half-life DM DE (MeV) DP
232U syn 68.9 y α & SF 5.414 228Th
233U syn 159,200 y SF & α 4.909 229Th
234U 0.0058% 245,500 y SF & α 4.859 230Th
235U 0.72% 7.038×108 y SF & α 4.679 231Th
236U syn 2.342×107 y SF & α 4.572 232Th
238U 99.275% 4.468×109 y SF & α 4.270 234Th
References
ইউরেনিয়ামের ইলেক্ট্রন বিন্যাস

টেমপ্লেট:Infobox uranium ইউরেনিয়াম একটি মৌলিক পদার্থ। এর রাসায়নিক প্রতীক U এবং পারমাণবিক সংখ্যা ৯২। এটি পর্যায় সারণীর অ্যাক্টিনাইড সিরিজের একটি রূপালী-ধূসর বর্ণের ধাতু। একটি ইউরেনিয়াম পরমাণুতে ৯২টি প্রোটন এবং ৯২টি ইলেকট্রন রয়েছে, এরমধ্যে ৬টি যোজ্যতা ইলেকট্রন। ইউরেনিয়াম দুর্বলভাবে তেজস্ক্রিয় কারণ ইউরেনিয়ামের সকল আইসোটোপ পরিবর্তনশীল; এর প্রাকৃতিকভাবে ঘটা আইসোটোপের অর্ধায়ু ১,৫৯,২০০ বছর থেকে ৪৫০ কোটি বছরের মধ্যে। প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামের সবচেয়ে সাধারণ আইসোটোপগুলি হল ইউরেনিয়াম-২৩৮ (যার মধ্যে ১৪৬ নিউট্রন রয়েছে এবং পৃথিবীর ইউরেনিয়ামের ৯৯% এর বেশি এই আইসোটোপ) এবং ইউরেনিয়াম-২৩৫ (যাতে ১৪৩ নিউট্রন রয়েছে)। প্রাথমিকভাবে উদ্ভূত পদার্থগুলির মধ্যে ইউরেনিয়ামের পারমাণবিক ওজন সবচেয়ে বেশি। এর ঘনত্ব সীসার তুলনায় প্রায় ৭০% বেশি এবং সোনা বা টাংস্টেনের তুলনায় কিছুটা কম। এটি প্রাকৃতিকভাবে মাটি, শিলা এবং পানিতে প্রতি মিলিয়নে কয়েক অংশের কম ঘনত্বে পাওয়া যায় এবং বাণিজ্যিকভাবে ইউরেনিয়াম-যুক্ত খনিজ যেমন ইউরেনাইট থেকে নিষ্কাষণ করা হয়।[১]

ইউরেনিয়ামের অনন্য পারমাণবিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এর অনেক সমকালীন ব্যবহার রয়েছে। ইউরেনিয়াম-২৩৫ হল একমাত্র প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ফিসাইল আইসোটোপ যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পারমাণবিক অস্ত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যাইহোক প্রকৃতিতে এটি খুবই কম পরিমাণে পাওয়ার কারণে ইউরেনিয়ামকে সমৃদ্ধকরণের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমানে ইউরেনিয়াম-২৩৫ আহরণ করা হয়। ইউরেনিয়াম-২৩৮ দ্রুত নিউট্রন দ্বারা বিদারণযোগ্য এবং এটি ফলপ্রসূ, যার অর্থ এটি একটি পারমাণবিক চুল্লীতে ফিসাইল প্লুটোনিয়াম-২৩৯-এ পরিবর্তিত হতে পারে। আরেকটি ফিসাইল আইসোটোপ হলো ইউরেনিয়াম-২৩৩, এটি প্রাকৃতিক থোরিয়াম থেকে উৎপাদন করা যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে পারমাণবিক প্রযুক্তিতে শিল্প ব্যবহারের জন্য গভেষণা করা হচ্ছে।

ইউরেনিয়াম-২৩৮ এর স্বতঃস্ফূর্ত ফিশন বা এমনকি দ্রুত নিউট্রনের সাথে প্ররোচিত ফিশনের একটি ছোট সম্ভাবনা রয়েছে; ইউরেনিয়াম-২৩৫ এবং একটি কম মাত্রার ইউরেনিয়াম-২৩৩ ধীর নিউট্রনের জন্য অনেক বেশি ফিশন প্রস্থচ্ছেদ রয়েছে। পর্যাপ্ত ঘনত্বে এই আইসোটোপগুলি একটি স্থায়ী নিউক্লিয় শৃঙ্খল বিক্রিয়া বজায় রাখে। এটি পারমাণবিক শক্তি চুল্লিতে তাপ উৎপন্ন করে এবং পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য ফিসাইল উপাদান তৈরি করে। ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম (২৩৮U) কাইনেটিক এনার্জি পেনেট্রেটর এবং আর্মার প্লেটিং এ ব্যবহৃত হয়।[২][৩]

১৭৮৯ সালে খনিজ পিচব্লেন্ডে ইউরেনিয়াম আবিষ্কারের কৃতিত্ব মার্টিন হেনরিক ক্ল্যাপ্রোথকে দেওয়া হয়, তিনি সম্প্রতি আবিষ্কৃত গ্রহ ইউরেনাসের নামানুসারে নতুন উপাদানটির নামকরণ করেন। ইউজিন-মেলচিওর পেলিগট প্রথম ধাতুটিকে পৃথক করেন এবং ১৮৯৬ সালে হেনরি বেকারেল এর তেজস্ক্রিয় বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেন। অটো হান, লিজে মাইটনার, এনরিকো ফের্মি এবং অন্যান্যদের গবেষণা, যেমন জে. রবার্ট ওপেনহাইমার ১৯৩৪ সালে শুরু করে পারমাণবিক শক্তি শিল্পে জ্বালানী হিসাবে এর ব্যবহার শুরু করেন এবং যুদ্ধে ব্যবহৃত প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র লিটল বয় এ এর ব্যবহার করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময় একটি পরবর্তী অস্ত্র প্রতিযোগিতার ফলে হাজার হাজার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে যাতে ইউরেনিয়াম ধাতু এবং ইউরেনিয়াম থেকে প্রাপ্ত প্লুটোনিয়াম-২৩৯ ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ কর্মসূচির মধ্যে এই অস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ভেঙে ফেলা হয় এবং এর জন্য লক্ষ কোটি ডলার খরচ হয়। পারমাণবিক অস্ত্র থেকে প্রাপ্ত অস্ত্র-মানের ইউরেনিয়ামকে ইউরেনিয়াম-২৩৮ এ মিশ্রিত করা হয় এবং পারমাণবিক চুল্লির জন্য জ্বালানী হিসাবে পুনরায় ব্যবহার করা হয়। এই পারমাণবিক চুল্লীর উন্নয়ন এবং বিস্তার বিশ্বব্যাপী চলতে থাকে কারণ এগুলি কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2)-মুক্ত শক্তির শক্তিশালী উৎস। ব্যয়িত পারমাণবিক জ্বালানী তেজস্ক্রিয় বর্জ্য গঠন করে যার বেশিরভাগই ইউরেনিয়াম-২৩৮ এবং তা উল্লেখযোগ্যভাবে স্বাস্থ্যের জন্য হুমকির সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

A diagram showing a chain transformation of uranium-235 to uranium-236 to barium-141 and krypton-92
ইউরেনিয়াম-২৩৫ ঘটিত একটি নিউট্রন-প্ররোচিত পারমাণবিক বিভাজন ঘটনা

পরিশোধনের পর ইউরেনিয়াম রূপালী সাদা বর্ণের এবং দুর্বলভাবে তেজস্ক্রিয় ধাতু। এটির কাঠিন্য মাত্রা ৬, যা গ্লাস স্ক্র্যাচ করার জন্য যথেষ্ট এবং এটি টাইটানিয়াম, রোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং নিওবিয়ামের প্রায় সমান। এটি নমনীয়, প্রসারণীয়, সামান্য প্যারাচৌম্বক পদার্থ, শক্তিশালী ইলেক্ট্রোপজিটিভ এবং দুর্বল বৈদ্যুতিক পরিবাহী।[৪][৫] ইউরেনিয়াম ধাতুর ঘনত্ব ১৯.১ গ্রাম/ঘন সে.মি.,[৬] এটি সীসার চেয়ে ঘন (১১.৩ গ্রাম/ঘন সে.মি.),[৭] কিন্তু টাংস্টেন এবং সোনার (১৯.৩ গ্রাম/ঘন সে.মি.) থেকে সামান্য কম ঘনত্বের পদার্থ।[৮][৯]

আইসোটপ[সম্পাদনা]

ইউরেনিয়ামের দুইটি আইসোটোপ আছে ৷ যথাঃ

১# ইউরেনিয়াম ২৩৫ ২# ইউরেনিয়াম ২৩৮

ইউরেনিয়াম সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নঃ[সম্পাদনা]

১)ইউরেনিয়াম কি?এটি কি একটি খনিজ সম্পদ?

ইউরেনিয়াম তেজস্ক্রিয় একটি ধাতু। ইউ (U) প্রতীকের এই ধাতুটি পর্যায় সারণির সপ্তম পর্যায়ের তৃতীয় শ্রেণির B উপশ্রেণিতে অবস্থিত এবং এটি সারণির ৯২তম মৌল। উচ্চ ঘনত্বের ইউরেনিয়াম মৌলটি লেড থেকে ৭০ শতাংশ বেশি ঘনত্বের। এর ইউরেনিয়াম-২৩৫ ও ইউরেনিয়াম-২৩৮ নামের দুটি আইসোটোপ আছে। ইউরেনিয়াম একটি মৌলিক পদার্থ। এর রাসায়নিক প্রতীক U এবং পারমাণবিক সংখ্যা ৯২। এটি পর্যায় সারণীর অ্যাক্টিনাইড সিরিজের একটি রূপালী-ধূসর বর্ণের ধাতু। একটি ইউরেনিয়াম পরমাণুতে ৯২টি প্রোটন এবং ৯২টি ইলেকট্রন রয়েছে, এরমধ্যে ৬টি যোজ্যতা ইলেকট্রন। ইউরেনিয়াম দুর্বলভাবে তেজস্ক্রিয় কারণ ইউরেনিয়ামের সকল আইসোটোপ পরিবর্তনশীল; এর প্রাকৃতিকভাবে ঘটা আইসোটোপের অর্ধায়ু ১,৫৯,২০০ বছর থেকে ৪৫০ কোটি বছরের মধ্যে। প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামের সবচেয়ে সাধারণ আইসোটোপগুলি হল ইউরেনিয়াম-২৩৮ (যার মধ্যে ১৪৬ নিউট্রন রয়েছে এবং পৃথিবীর ইউরেনিয়ামের ৯৯% এর বেশি এই আইসোটোপ) এবং ইউরেনিয়াম-২৩৫ (যাতে ১৪৩ নিউট্রন রয়েছে)। প্রাথমিকভাবে উদ্ভূত পদার্থগুলির মধ্যে ইউরেনিয়ামের পারমাণবিক ওজন সবচেয়ে বেশি। এর ঘনত্ব সীসার তুলনায় প্রায় ৭০% বেশি এবং সোনা বা টাংস্টেনের তুলনায় কিছুটা কম।


এটি প্রাকৃতিকভাবে মাটি, শিলা এবং পানিতে প্রতি মিলিয়নে কয়েক অংশের কম ঘনত্বে পাওয়া যায় এবং বাণিজ্যিকভাবে ইউরেনিয়াম-যুক্ত খনিজ যেমন ইউরেনাইট থেকে নিষ্কাষণ করা হয়।

ইউরেনিয়ামের ইলেক্ট্রন বিন্যাস ইউরেনিয়ামের অনন্য পারমাণবিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এর অনেক সমকালীন ব্যবহার রয়েছে। ইউরেনিয়াম-২৩৫ হল একমাত্র প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ফিসাইল আইসোটোপ যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পারমাণবিক অস্ত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যাইহোক প্রকৃতিতে এটি খুবই কম পরিমাণে পাওয়ার কারণে ইউরেনিয়ামকে সমৃদ্ধকরণের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমানে ইউরেনিয়াম-২৩৫ আহরণ করা হয়। ইউরেনিয়াম-২৩৮ দ্রুত নিউট্রন দ্বারা বিদারণযোগ্য এবং এটি ফলপ্রসূ, যার অর্থ এটি একটি পারমাণবিক চুল্লীতে ফিসাইল প্লুটোনিয়াম-২৩৯-এ পরিবর্তিত হতে পারে। আরেকটি ফিসাইল আইসোটোপ হলো ইউরেনিয়াম-২৩৩, এটি প্রাকৃতিক থোরিয়াম থেকে উৎপাদন করা যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে পারমাণবিক প্রযুক্তিতে শিল্প ব্যবহারের জন্য গবেষণা করা হচ্ছে।

২)বিশ্বের কোথায় কোথায় ইউরেনিয়াম পাওয়া যায় ? ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী সর্ববৃহৎ ইউরেনিয়াম উৎপাদনকারী দেশ কাজাখস্তান। এর পরই আছে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। ইউরেনিয়াম একপ্রকার খনিজ পদার্থ। কাজাখিস্তান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিজার, নামিবিয়া এবং রাশিয়ায় ইউরেনিয়াম বাণিজ্যিক ভিত্তিকে উত্তোলিত হয়।

৩)ইউরেনিয়াম কি আকরিক হিসেবে পাওয়া যায়?

ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগে এ পদার্থের পরিমাণ শতকরা ০.০০৪% ভাগ। আকরিক থেকে শোধন করে ইউরেনিয়াম আইসোটোপ পাওয়া যায়। যেমন-ইউরেনিয়াম-২৩৮, যার পারমাণবিক ওজন ২৩৮ অর্থাৎ এর নিউক্লিয়াসে আছে ৯২টি প্রোটন এবং ১৪৬টি নিউট্রন। প্রকৃতিতে এ ধরনের আইসোটোপ বেশিমাত্রায় পাওয়া যায়। এক হিসাবে দেখা গেছে শতকরা ৯৯.৩% ভাগই এ জাতীয় ইউরেনিয়াম। দ্বিতীয় আইসোটোপটির নাম ইউরেনিয়াম-২৩৫ অর্থাৎ এর নিউক্লিয়াসে আছে ৯২টি প্রোটন এবং ১৪৩টি নিউট্রন। প্রকৃতিতে এদের পরিমাণ শতকরা মাত্র ০.৭% ভাগ। তৃতীয় প্রকারের আইসোটোপের পরিমাণ একেবারেই নগণ্য, যা প্রায় হিসাবের মধ্যেই ধরা হয় না।

উত্তর:হ্যাঁ ৷

৪)ইউরেনিয়ামের কি কি ব্যবহার রয়েছে?

ইউরেনিয়াম বেশি ব্যবহৃত হয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে।

ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কলকারখানা চালনাসহ নগর-বন্দর আলোকিত করা হয়। ভয়াবহ মারণাস্ত্র পারমাণবিক বোমা ও হাইড্রোজেন বোমা তৈরির অন্যতম উপকরণ এই ইউরেনিয়াম। পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় ইউরেনিয়াম-২৩৫। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে লিটল বয় ও ফ্যাট ম্যান নামে দুটি বোমা নিক্ষেপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই দুটি বোমা তৈরিতে ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হয়েছে।

ইউরেনিয়ামের খনি ও কারখানায় কাজ করলে এর তেজস্ক্রিয়ায় যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মানুষের কিডনি, মস্তিষ্ক, যকৃত, হৃৎপিণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়ার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ সময় ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়ার কারণে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া চিকিৎসা ক্ষেত্রে কখনো কখনো ইউরেনিয়ামের আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে বিশেষত ক্যান্সার চিকিৎসায় ৷

৫)ইউরেনিয়াম উত্তোলনের ফলে কি পরিবেশের উপর কোন বিরূপ প্রভাব পড়ে?

ইউরেনিয়ামের খনি রেডন গ্যাস নির্গত করে বলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়ু চলাচল ব্যবস্থা বিদ্যমান না থাকলে এটি অন্যান্য উত্তোলনের তুলনায় ইউরেনিয়াম উত্তোলন অনেক বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। ১৯৫০ এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাভাজো জনগোষ্ঠীর অনেকেই ইউরেনিয়াম উত্তোলনের কাজে যোগদান করে, কারণ নাভাজোদের জন্য সংরক্ষিত অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ইউরেনিয়ামের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছিল। পরবর্তীকালে পরিসংখ্যানগতভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উত্তোলন শ্রমিকদের মধ্যে স্মল সেল কারসিনোমা (একরকম ক্যান্সার) দেখা যায়, যার কারণ ছিল ইউরেনিয়াম খনির প্রভাব।[১৫] রেডন ২২২ হল ইউরেনিয়ামের একটি প্রাকৃতিক ক্ষয়মুলক উৎপাদ, যা একই সাথে একটি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এজেন্ট।[১৬] যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯০ সালে এই ক্ষয়ক্ষতির জন্য রেডন এক্সপোজার কম্পেনসেশন অ্যাক্ট ( radiation exposure compensation act) নামক আইনটি পাশ হয়। ইউরেনিয়াম উত্তোলনে কাজ করেছিলেন কিন্তু এখনও বেঁচে আছেন, যুক্তরাষ্ট্রীর এমন কিছু ব্যক্তি এবং তাদের বংশধরগণ এই আইনের আওতায় ক্ষতিপূরণ লাভ করেন, এবং ২০১৬ সালে তারা পদক গ্রহণের অধিকারও অর্জন করেন। এর সফল দাবীদারদের মধ্যে ইউরেনিয়াম উত্তোলন শ্রমিক, এই কারখানার শ্রমিক এবং আকরিকের পরিবহনকারীগণ ছিলেন।

ইউরেনিয়াম প্রস্তুতকরণের অবশিষ্টাংশ হিসেবে রেডন থেকে যায়। এই রেডন এর কারণে ইউরেনিয়াম উত্তোলনের ঢাকনাবিহীন বর্জ্য পদার্থে ও ট্যালিং পন্ডে উচ্চমাত্রায় রেডিয়াম এর উপস্থিতি দেখা যায়। এসব জায়গা থেকে সহজেই বায়ুমন্ডলে এই পদার্থ নির্গত হতে পারে।

এছাড়াও লিচিং প্রক্রিয়ার কারণে ভূগর্ভস্থ জল এবং ভূপৃষ্ঠের জলে দূষণ ঘটতে পারে। ২০১১ সালের জুলাইয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) খাবার জলের মান নিয়ে চতুর্থ নীতিমালা প্রণয়ন করে। এক্ষেত্রে খাবার জলে ইউরেনিয়াম এর সীমা বাড়িয়ে ৩০ μg/L করা হয়। কারখানার ট্যালিং অথবা অথবা উত্তোলনের স্থানের আশেপাশের পরিবেশে ইউরেনিয়াম এর মাত্রা এই সীমাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।

2008 সালে জানুয়ারি মাসে আরেভা নামের একটি ফ্রান্সের সরকারের অধিকৃত কোম্পানি অ্যান্টি অস্কার পদকের জন্য মনোনীত হয়।এই কোম্পানিটি উত্তর নাইজার অঞ্চলে ইউরেনিয়াম উত্তোলন করে যেখানে এর উত্তোলক শ্রমিকগণ ইউরেনিয়াম এর স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন নন। সেই অঞ্চলটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেখানকার বায়ু, জল এবং মাটিতে তেজস্ক্রিয় দূষণ ঘটেছে। শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী স্থানীয় সংগঠন শ্রমিকদের সন্দেহজনক মৃত্যু সম্পর্কে জানায়। এই মৃত্যুর কারণ ছিল তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা এবং দূষিত ভূগর্ভস্থ জলের কারণে ঘটে।

৬)ইউরেনিয়াম ব্যবহারের ফলে পরিবেশের কি কোন ক্ষতি হয় ?( উত্তর হ্যাঁ হলে ক্ষতিগুলো কি)

ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা যেকোনো প্রাণীর জন্যই ক্ষতিকর। পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াও ইউরেনিয়ামের খনি ও কারখানায় কাজ করার মাধ্যমে যে কেউ ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসতে পারে। এই ধাতুর তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে মানুষের কিডনি, মস্তিষ্ক, যকৃত, হৃৎপিণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। দীর্ঘ সময় ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে।

৭)বাংলাদেশে কি ইউরেনিয়াম ব্যবহারের কোন ক্ষেত্র রয়েছে?(থাকলে সেটি কি)

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে ২.৪ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পরিকল্পিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যা বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর নামক স্থানে নির্মীত হচ্ছে। এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যার প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে।[১][২] এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রাশিয়ার রোসাটোম স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্মিত হচ্ছে।

৮)বাংলাদেশে কি এ সম্পদ খনিজরূপে পাওয়া যায়? হ্যাঁ,পাওয়া যায় ৷বাংলাদেশের মাটিতে উন্নতমানের ইউরেনিয়ামের সন্ধান পাওয়া গেছে। বলা যায়, প্রকৃতি আমাদেরকে করুণা করেছেন, এ দুষ্প্রাপ্য রাসায়নিক পদার্থটি দান করে। এ দুষ্প্রাপ্য রাসায়নিক পদার্থটি অবহেলায় পড়ে আছে দেশের বিভিন্ন নদীর বালুকারাশিতে। এখন শুধু আহরণ করতে পারলেই হলো, রাতারাতি আমাদের ভাগ্যটা বদলে যাবে। কারণ বিশ্ববাজারে ইউরেনিয়ামের দাম যেমনি চড়া তেমনি রয়েছে ব্যাপক চাহিদাও। বিশেষ করে জার্মান, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউরেনিয়ামের চাহিদা বলে শেষ করার মতো নয়। এ ছাড়াও বিশ্বের অনেক দেশেই ইউরেনিয়াম সংগ্রহ নিয়ে অনেক কূটকৌশল চলছে।

সূত্রমতে, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৭৫ সালে ইউরেনিয়ামের সন্ধান মিলে হারগাছা পাহাড়ে। পাহাড়টি মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ও সাগরনালা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। সেই সময় দেশের আণবিক শক্তি কমিশনের একটি দল হারগাছা পাহাড়ে অনুসন্ধান চালিয়ে নিশ্চিত হয় ইউরেনিয়াম প্রাপ্তির বিষয়টি। তখন থেকেই হারগাছা পাহাড়কে তেজস্ক্রিয় এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে বৃহত্তর সিলেট বিভাগে ভূতত্ত্ব ও জরিপ অধিদপ্তর অনুসন্ধান চালিয়ে জৈন্তাপুরের সীমান্তবর্তী কেন্দ্রীয় হাওরে ইউরেনিয়ামের সন্ধান পায়। কিন্তু সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ার কারণে সেই সময় উক্ত গবেষণা স্থগিত করতে বাধ্য হন ভূতত্ত্ব ও জরিপ অধিদপ্তর।

১৯৮৯ সালে ময়মনসিংহ জেলার গারো পাহাড় বেষ্টিত সোমেশ্বর নদীর বালুকারাশিতে ইউরেনিয়ামের সন্ধান পায় বাংলাদেশ। বছর তিনেক আগে উক্ত জেলার ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে ইউরেনিয়ামের সন্ধান পায় গবেষকদল। জানা যায়, ইতিপূর্বে মৌলভীবাজারের হারগাছা পাহাড়ের ও সিলেটের জৈন্তাপুরের মাটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে প্রতি ১০ লাখ মাটির কণার মধ্যে ৫০০-১৩০০ ইউরেনিয়ামের কণার সন্ধান পায় গবেষকদল। পরীক্ষিত এলাকার মাটিতে ইউরেনিয়াম প্রাপ্তির হার প্রায় ৫০০-১৩০০ পার্টস পার মিলিয়ন (পিপিএম)। সূত্র মতে জানা যায়, কোনো স্থানে ইউরেনিয়ামের মাত্রা ৭ শতাংশ হলে বাণিজ্যিকভাবে সেটি আহরণের উপযুক্ত হয়। সেমতে আমাদের ব্রহ্মপুত্র নদের বালুকারাশিতে ৯ শতাংশ ইউরেনিয়ামের পরিমাণ পাওয়া যায়। যা আহরণে কোনো ধরনের বাধা বিপত্তি নেই।

৯)ইউরেনিয়াম সর্বপ্রথম কে আবিষ্কার করেন?

সর্বপ্রথম ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেন জার্মান রসায়নবিদ মার্টিন হাইনরিখ ক্ল্যাপরথ ১৭৮৯ সালে। তিনি ইউরেনাস গ্রহের নামে এর নাম রাখেন ‘ইউরেনিয়াম’। ১৮৬৯ সালে রুশ রসায়নবিদ দিমিত্রি মেন্ডেলিভ ও জার্মান বিজ্ঞানী লুথার মেয়র মিলে আধুনিক পর্যায় সারণি প্রকাশ করেন। এটি মূলত তেজস্ক্রিয় এবং নীলাভ সাদা বর্ণের ধাতু এবং পর্যায় সারণীর ৯২তম মৌল। ১৭৮৯ সালে বিজ্ঞানী মার্টিন হাইনরিখ ক্ল্যাপরথ ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেন। তিনি ইউরেনাস গ্রহের নামানুসারে এর নামকরণ করেন। কেননা সে সময় ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারের ঘটনা ছিল সবচেয়ে সাম্প্রতিক। কিন্তু প্রথম ইউরেনিয়াম সংশ্লেষ করা হয় ১৮৪১ সালে। সে বছর বিজ্ঞানী ইউজিন পেলিকট ইউরেনিয়াম টেট্রাক্লোরাইড (UCl4) থেকে প্রথম ইউরেনিয়াম (U) সংশ্লেষ করেন। ১৮৬৯ সালে যখন দিমিত্রি মেন্ডেলিভ পর্যায় সারণী আবিষ্কার করেন তখন ইউরেনিয়াম সবচেয়ে ভারী মৌল হিসেবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ১৯৪০ সালে প্রথম ট্রান্সইউরেনিয়াম মৌল তথা নেপচুনিয়াম আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত এটিই ছিল সবচেয়ে ভারী। ১৮৯৬ সালে বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন। তখন থেকেই মূলত বলা হয়ে থাকে এটি অত্যন্ত ভারী তেজস্ক্রিয় পদার্থ।

১০)ইউরেনিয়ামের কি কোন আর্থিক মূল্য রয়েছে?(পরিমান সাপেক্ষে)

1 গ্রাম ইউরেনিয়ামের দাম ইউরেনিয়ামের ধরন, ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা এবং কেনার পরিমাণ সহ অনেকগুলি কারণের উপর নির্ভর করে ৷ দুটি প্রধান ধরনের ইউরেনিয়াম হল প্রাকৃতিক ইউরেনিয়াম এবং সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম। প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামে প্রায় 0.7% ইউরেনিয়াম-235 থাকে, ইউরেনিয়ামের আইসোটোপ যা ফিসাইল এবং পারমাণবিক শক্তি তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামে ইউরেনিয়াম -235 এর উচ্চ ঘনত্ব রয়েছে, সাধারণত 3% এবং 5% এর মধ্যে।

ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতাও দামকে প্রভাবিত করে। ইউরেনিয়াম যা খুবই বিশুদ্ধ, যেমন পারমাণবিক জ্বালানী সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, কম বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল। যে পরিমাণ ক্রয় করা হচ্ছে তা দামকেও প্রভাবিত করে। বড় পরিমাণে ইউরেনিয়াম সাধারণত ছোট পরিমাণের চেয়ে গ্রাম প্রতি সস্তা।

আমি যে তথ্য পেয়েছি তার উপর ভিত্তি করে, 1 গ্রাম প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামের বর্তমান মূল্য প্রায় $0.50। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের দাম সমৃদ্ধকরণ স্তরের উপর নির্ভর করে বেশি। উদাহরণস্বরূপ, 1 গ্রাম ইউরেনিয়াম 5% ইউরেনিয়াম-235 সমৃদ্ধ করার জন্য প্রায় $10 খরচ হবে।

১১)বিশ্বের কোন জায়গায় সবচেয়ে বেশি ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়?

কাজাখস্তানের পরেই আসে কানাডা (২০%) এবং অস্ট্রেলিয়া (১৬%)। বিশ্বের মোট ইউরেনিয়াম খনি রিজার্ভে ২৩%-ই আছে অস্ট্রেলিয়ায়। এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ একক ইউরেনিয়াম deposit দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক ড্যাম মাইনে অবস্থিত ৷

২০০৯ সালের হিসাব অনুযায়ী ইউরেনিয়াম উৎপাদনের ক্ষেত্রে রপ্তানি বাজারে কাজাখস্তান ছিল সর্ববৃহৎ রপ্তানিকারক (২৭%) ।

কাজাখস্তানের পরেই আসে কানাডা (২০%) এবং অস্ট্রেলিয়া (১৬%)।

বিশ্বের মোট ইউরেনিয়াম খনি রিজার্ভে ২৩%-ই আছে অস্ট্রেলিয়ায় এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ একক ইউরেনিয়াম গচ্ছিত আছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক ড্যাম মাইনে।

১২)ইউরেনিয়াম এর মাধ্যমে মানুষের ক্ষতি উপকারের মধ্যে কোনটি বেশি হয়?

ইউরেনিয়াম এখন পর্যন্ত মানবজাতির কী কাজে এসেছে এবং কী কেড়ে নিয়েছে ইউরেনিয়ামের সবচেয়ে উপকারী ব্যবহার হলো নিউক্লিয় চুল্লীতে এর ব্যবহার। নিউক্লিয় চুল্লী বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম মাধ্যম। সর্বপ্রথম পৃথিবীর মধ্যে পারমাণবিক চুল্লী তৈরি করেন ইতালীয় বিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মি। তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক উভয় অংশে তার ছিল অসাধারণ দক্ষতা। তিনি দেখান কোনো পারমাণবিক চুল্লীতে আধ টন ইউরেনিয়াম শক্তিতে রূপান্তরিত হলে গড়পড়তা ৪ জন লোকের একটি পরিবারের ৭০ লাখ ৩০৭ হাজার ৬০২ বছর ৩ মাস পর্যন্ত সব রকমের বৈদ্যুতিক চাহিদা পূরণ সম্ভব। এতো গেল ইউরেনিয়ামের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ। এবার চলুন মৌলটির শত্রুতাপূর্ণ আচরণ জেনে নেই। পারমাণবিক বোমা ও শক্তির উৎস হিসেবে ইউরেনিয়াম ব্যাবহার করা হয়। পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় ইউরেনিয়াম-২৩৫। দেখা গেছে, এক পাউন্ড ইউরেনিয়াম-২৩৫ একসঙ্গে বিভাজিত হলে যে শক্তি সৃষ্টি হবে তার পরিমাণ ১০ মিলিয়ন শর্ট টন (৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন) টিএটি। পারমাণবিক বিস্ফোরণের কারণে যে শক্তি বের হয় তা তাপ শক্তি, যান্ত্রিক শক্তি এবং বিদ্যুৎ শক্তিতে আত্নপ্রকাশ করে বিপুল ধ্বংস সাধন করে। আগুন এবং প্রচণ্ড উত্তাপ সৃষ্টি করে বোমা নিক্ষিপ্ত স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ইউরেনিয়ামের শক্তির তাণ্ডব বিশ্ব দেখেছিল প্রথম আণবিক বোমার প্রয়োগ হলে। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা শহরে বোমা নিক্ষিপ্ত হয়। হিরোশিমাতে যে পারমাণবিক বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল তার ধ্বংস ক্ষমতা ছিল ১৩,০০০ শর্ট টন টিএনটি। বোমাটির ওজন ছিল ৯,০০০ পাউন্ড (৪,১০০ কেজি)। এতে এক মুহূর্তেই প্রাণহানি ঘটেছিল ৭৫ হাজার লোকের। এবং পরে মোট মৃতের সংখ্যা দাড়ায় প্রায় ১ লাখ ৬৬ হাজার। এর একটি শৌখিন নামও ছিল ‘ক্ষুদে বালক'’ (Little Boy)। এরই মাত্র তিনদিন পরে নিক্ষেপ করা হয়েছিল দ্বিতীয় বোমাটি। ১৯৪৫ সালের ৯ আগস্ট জাপানের নাগাসাকি শহরে ফেলা হয়েছিল সেটি। সেদিন একটি আমেরিকান বি-২৯ বোমারু বিমান দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের কাইউসু দ্বীপের কোকুরা অভিমুখে উড়ে আসে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিমান গতিপথ পরিবর্তন করে নাগাসাকি শহরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। সে বহন করেছিল ‘ফ্যাট ম্যান’ সাংকেতিক নামের আণবিক বোমা। হিরোশিমার বোমার চেয়ে শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও নাগাসাকির ভৌগোলিক কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম ছিল। কিন্তু তার পরেও সেখানে নিহত হয়েছিল ৪০,০০০ মানুষ। এবং গুরুতর আহত হয় আরো প্রায় ৭৫,০০০ মানুষ। বোমাটির ওজন ছিল ১০,০০০ পাউন্ড (৪,৫০০ কেজি)। হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত দুটি বোমার আঘাতে নিমেষেই প্রায় লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানী ঘটেছিল। আহত হয়েছিল আরও প্রায় দেড় লাখ মানুষ। যাদের অনেকেই পরবর্তিতে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিল। এবং অচিরেই এই মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাড়ায় ২ লাখ ৩০ হাজার। এখন যদি নির্ণয় করতে বলা হয় ইউরেনিয়াম আমাদের বন্ধু নাকি শত্রু তবে এর উত্তর দিতে অপারগ সকল বিশেষজ্ঞ কিংবা সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি আমাদের হাওর অঞ্চলের জীববৈচিত্র ধ্বংসে ভারতের ইউরেনিয়াম খনি থেকে ভেসে আসা ইউরেনিয়ামকে দায়ী করা হলেও এই তথ্যের সত্যতা মেলেনি। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা মানবজীবন থেকে শুরু করে জীববৈচিত্র-সব কিছুর জন্য বিরাট হুমকি। হাওরের পানিতে ইউরেনিয়াম- এ প্রসঙ্গে আমরা এই হুমকি থেকে মুক্ত এতে কোনো ভুল নেই।

১৩) ইউরেনিয়াম এর ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে ব্যক্তি জীবনের উন্নয়ন ঘটানো যায়?

ইউরেনিয়ামের মাধ্যমে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব৷এই উৎপাদিত বিদ্যুতের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন সম্ভব৷এই বিদ্যুৎ তৈরিতে খরচ অত্যন্ত নগণ্য এবং কার্বন নিঃসরণেরও পরিমাণ মাত্র নয় শতাংশ(৯%)এই বিদ্যুৎ দ্বারা মানুষের দৈনন্দিন কর্মকান্ডে ব্যবহার করা যায় যা অন্য সকল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে তুলনামূলক খরচ কম এবং অধিক সাশ্রয়ী ৷এই ইউরেনিয়ামের দ্বারা চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয় তবে ক্যান্সার সৃষ্টি তো এই ইউরেনিয়াম দায়ী কারণ এর তেজস্ক্রিয়তা | এই ইউরেনিয়ামের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা সম্ভব৷

১৪)ইউরেনিয়াম কি একটি মৌল?(উত্তর হ্যাঁ হলে)এর বৈজ্ঞানিক গঠন কেমন?

হ্যাঁ ইউরেনিয়াম একটি মৌল ৷পর্যায় সারণির ৯২ তম মৌল এটি৷ এর বৈজ্ঞানিক গঠন বা স্ট্রাকচার যেমন :

Uranium structure
Uranium 235 isotope


১৫)এ সম্পদের কিভাবে টেকসই ব্যবহার করা যায়?

জলবায়ু সংকটের কোনো সহজ সমাধান এখনো মানুষের হাতে নেই। তবে বিজ্ঞানীরা আশা দেখাচ্ছেন, নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রযুক্তি থেকে এ সমস্যার মোটামুটি স্থায়ী একটি সমাধান পাওয়া যেতে পারে। এর আগেও বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কার্বনবিহীন, অসীম একটি উৎসের খোঁজে ফিউশন নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু এ ধরনের কোনো উদ্যোগই টেকসই হয়নি। যুক্তরাজ্যের কিছু বিজ্ঞানী সুসংবাদ দিয়েছেন। তারা নিউক্লিয়ার ফিউশন তৈরি করে আগের রেকর্ডের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি সময় পর্যন্ত একে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। একই প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন করে সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্র নিজেদের প্রজ্বলিত রাখে।

নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ায় দুই বা তার চেয়ে বেশি পরমাণু একত্র হয়ে বড় একটি পরমাণু তৈরি করে। এই বিক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ তাপ শক্তি পাওয়া যায়। হাইড্রোজেন বোমায় ফিউশন বিক্রিয়ার ধ্বংসাত্মক রূপকে দেখেছে মানবজাতি।

বর্তমানে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে ফিউশন নয়, ফিশন প্রক্রিয়া ব্যবহার হয়। ফিশনের মাধ্যমে পরমাণু একত্র করার বদলে ইউরেনিয়াম পরমাণু ভেঙে শক্তি উৎপাদন করা হয়। তবে এ প্রক্রিয়ায় তেজস্ক্রিয় বর্জ্য তৈরি হয়, যেগুলো হাজারো বছর পরিবেশে থেকে যেতে পারে। কোনো দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব অনেক সুদূরপ্রসারী হতে পারে, যেমনটা হয়েছিল ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমায়।

তুলনামূলকভাবে ফিউশন প্রক্রিয়া অনেক বেশি নিরাপদ। এতে খুব কম পরিমাণ বর্জ্য তৈরি হয় এবং জ্বালানি হিসেবে খুবই সহজলভ্য, প্রকৃতিতেই পাওয়া যায় এরকম উপকরণ ব্যবহার হয়, যার মধ্যে আছে সমুদ্রের পানিতে পাওয়া কিছু উপাদান। সব মিলিয়ে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে টেকসই জ্বালানির ব্যবহার শুরু করতে নিউক্লিয়ার ফিউশন খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডের কাছে অবস্থিত কালহ্যাম নামের একটি গ্রামে কিছু বিজ্ঞানীরা টোকামাক নামের একটি 'ডোনাট' আকৃতির যন্ত্রের মাধ্যমে ৫ সেকেন্ড ধরে ৫৯ মেগাজুল শক্তি উৎপাদন করতে সফল হয়েছেন।

ফিউশন প্রক্রিয়া চলমান রাখার জন্য উচ্চ তাপমাত্রার চৌম্বকক্ষেত্র প্রয়োজন হয়, যা কখনো কখনো ১৫০ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। এই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিল ইউরোফিউশন নামের একটি কনসোর্টিয়াম। এতে ৪ হাজার ৮০০ বিশেষজ্ঞ, শিক্ষার্থী ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কর্মীরা কাজ করেছেন। অংশীদার হিসেবে ছিল যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক শক্তি কর্তৃপক্ষ। ইউরোপিয়ান কমিশন এ প্রকল্পে কিছু পরিমাণ তহবিলের যোগান দিয়েছে।

এই পরীক্ষায় ফিউশন ঘটানোর জন্য হাইড্রোজেনের আইসোটোপ ডিউটেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম ব্যবহার করা হয়েছে। এই দুটি উপাদান সমুদ্রের পানিতে পাওয়া যায়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফিউশন জ্বালানির উৎপাদনের জন্য খুব সম্ভবত এ দুটি উপাদান ব্যবহৃত হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক টনি রোলস্টোন জানান, ডিউটেরিয়াম আর ট্রিটিয়াম ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।

'মাত্র আধ টন ডিউটেরিয়াম ব্যবহার করে পুরো যুক্তরাজ্যের এক দিনের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব, যেটি খুব সহজেই সমুদ্রের পানি থেকে সংগ্রহ করা যায়', যোগ করেন টনি।

অক্সফোর্ডের টোকামাক যন্ত্রটির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট ইউরোপিয়ান টরাস (জেট)।

জেটের পরীক্ষার ফলগুলো বেশ ইতিবাচক এবং এতে ইটার (পরীক্ষামূলক আন্তর্জাতিক থার্মোনিউক্লিয়ার রিএক্টর) প্রকল্প বেশ উপকৃত হয়েছে। ইটার আরেকটি বড় ফিউশন প্রকল্প, যেটি ফ্রান্সের দক্ষিণ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ভারত, জাপান, কোরিয়া ও রাশিয়ার সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে।

ইতোমধ্যে ইটার প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে এবং ২০২৫ বা ২০২৬ সালে এতে পুরোদমে নিউক্লিয়ার ফিউশন শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।

জেটের লক্ষ্য ছিল নিউক্লিয়ার ফিউশন তৈরি ও একে টিকিয়ে রাখার সম্ভাব্যতা যাচাই করা। ইটারের লক্ষ্য হচ্ছে ৫০ মেগাওয়াট জ্বালানি ব্যবহার করে ৫০০ মেগাওয়াট ফিউশন শক্তি তৈরি করা।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ফলগুলো বেশ ইতিবাচক। তবে নিউক্লিয়ার ফিউশনকে শক্তির উৎস হিসেবে নিয়মিত ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে এখনো অনেক দূর যেতে হবে।

টনি আরও জানান, জেটের পরীক্ষার ফলগুলো খুবই আশা জাগানিয়া। সেখানে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, কিন্তু মাত্র ৫ সেকেন্ডের জন্য। আরও দীর্ঘ সময় ধরে ফিউশন চালু রাখার প্রক্রিয়া খুঁজে বের করাই হচ্ছে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

আইপিসিসির (জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তসরকার প্যানেল) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক উষ্ণতাকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হলে এ দশকের মধ্যে গ্রিন হাউজ গ্যাসের নিঃসরণ অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে একে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ, জীবাশ্ম জ্বালানি, যেমন: কয়লা, তেল ও গ্যাসের ব্যবহার থেকে দ্রুত সরে আসতে হবে।

আইপিসিসির মতে, নিউক্লিয়ার ফিউশনের মতো টেকসই শক্তির উৎস খুঁজে পেতে ব্যর্থ হলে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না।

তাই পুরো পৃথিবী এখন তাকিয়ে আছে জেট ও ইটারের সাফল্যের দিকে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের টেকসই ও কার্যত অসীম এক উৎস খুঁজে পাওয়া হয়তো আর খুব বেশি দূরে নেই।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Uranium"Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৭ 
  2. Emsley 2001, পৃ. 479.
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Fink নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; SciTechEncy নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. Hammond, C. R. (২০০০)। The Elements, in Handbook of Chemistry and Physics (পিডিএফ) (81st সংস্করণ)। CRC press। আইএসবিএন 978-0-8493-0481-1 
  6. "Uranium"। Royal Society of Chemistry। 
  7. "Lead"। Royal Society of Chemistry। 
  8. "Tungsten"। Royal Society of Chemistry। 
  9. "Gold"। Royal Society of Chemistry। 

গ্রন্থসূত্র[সম্পাদনা]

  • উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - প্রফেসর মো. মহির উদ্দিন, লায়লা মুসতারিন, ড. তানভীর মুসলিম, হাছিনা বেগম।
  • উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী, হারাধন নাগ।
শ্রেণি   ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
হাইড্রো­জেন ও
ক্ষার ধাতু
মৃৎক্ষার
ধাতু
বোরন
শ্রেণি
বোরন
শ্রেণি
নিক্টো­জেন চ্যাল­কোজেন হ্যালো­জেন নিষ্ক্রিয়
গ্যাস
পর্যায়

হাইড্রো­জেনH১.০০৮০ হি­লিয়ামHe৪.০০২৬
লি­থিয়ামLi৬.৯৪ বেরি­লিয়ামBe৯.০১২২ বোরনB১০.৮১ কার্বনC১২.০১১ নাইট্রো­জেনN১৪.০০৭ অক্সি­জেনO১৫.৯৯৯ ফ্লোরিনF১৮.৯৯৮ নিয়ন১০Ne২০.১৮০
সো­ডিয়াম১১Na২২.৯৯০ ম্যাগনে­সিয়াম১২Mg২৪.৩০৫ অ্যালুমি­নিয়াম১৩Al২৬.৯৮২ সিলি­কন১৪Si২৮.০৮৫ ফস­ফরাস১৫P৩০.৯৭৪ গন্ধক১৬S৩২.০৬ ক্লোরিন১৭Cl৩৫.৪৫ আর্গন১৮Ar৩৯.৯৫
পটা­শিয়াম১৯K৩৯.০৯৮ ক্যাল­সিয়াম২০Ca৪০.০৭৮ স্ক্যান­ডিয়াম২১Sc৪৪.৯৫৬ টাইটা­নিয়াম২২Ti৪৭.৮৬৭ ভ্যানা­ডিয়াম২৩V৫০.৯৪২ ক্রো­মিয়াম২৪Cr৫১.৯৯৬ ম্যাঙ্গা­নিজ২৫Mn৫৪.৯৩৮ লোহা২৬Fe৫৫.৮৪৫ কোবাল্ট২৭Co৫৮.৯৩৩ নিকেল২৮Ni৫৮.৬৯৩ তামা২৯Cu৬৩.৫৪৬ জিংক৩০Zn৬৫.৩৮ গ্যা­লিয়াম৩১Ga৬৯.৭২৩ জার্মে­নিয়াম৩২Ge৭২.৬৩০ আর্সে­নিক৩৩As৭৪.৯২২ সেলে­নিয়াম৩৪Se৭৮.৯৭১ ব্রোমিন৩৫Br৭৯.৯০৪ ক্রিপ্টন৩৬Kr৮৩.৭৯৮
রুবি­ডিয়াম৩৭Rb৮৫.৪৬৮ স্ট্রন­শিয়াম৩৮Sr৮৭.৬২ ই­ট্রিয়াম৩৯Y৮৮.৯০৬ জিরকো­নিয়াম৪০Zr৯১.২২৪ নাইও­বিয়াম৪১Nb৯২.৯০৬ মলিব­ডেনাম৪২Mo৯৫.৯৫ টেকনে­শিয়াম৪৩Tc​[৯৭] রুথি­নিয়াম৪৪Ru১০১.০৭ রো­ডিয়াম৪৫Rh১০২.৯১ প্যালে­ডিয়াম৪৬Pd১০৬.৪২ রূপা৪৭Ag১০৭.৮৭ ক্যাড­মিয়াম৪৮Cd১১২.৪১ ইন্ডিয়াম৪৯In১১৪.৮২ টিন৫০Sn১১৮.৭১ অ্যান্টিমনি৫১Sb১২১.৭৬ টেলু­রিয়াম৫২Te১২৭.৬০ আয়োডিন৫৩I১২৬.৯০ জেনন৫৪Xe১৩১.২৯
সি­জিয়াম৫৫Cs১৩২.৯১ বেরিয়াম৫৬Ba১৩৭.৩৩ 1 asterisk লুটি­শিয়াম৭১Lu১৭৪.৯৭ হ্যাফ­নিয়াম৭২Hf১৭৮.৪৯ ট্যান­টালাম৭৩Ta১৮০.৯৫ টাংস্টেন৭৪W১৮৩.৮৪ রিনিয়াম৭৫Re১৮৬.২১ অস­মিয়াম৭৬Os১৯০.২৩ ইরি­ডিয়াম৭৭Ir১৯২.২২ প্লাটিনাম৭৮Pt১৯৫.০৮ সোনা৭৯Au১৯৬.৯৭ পারদ৮০Hg২০০.৫৯ থ্যালিয়াম৮১Tl২০৪.৩৮ সীসা৮২Pb২০৭.২ বিসমাথ৮৩Bi২০৮.৯৮ পোলো­নিয়াম৮৪Po​[২০৯] এস্টাটিন৮৫At​[২১০] রেডন৮৬Rn​[২২২]
ফ্র্যান্সি­য়াম৮৭Fr​[২২৩] রেডিয়াম৮৮Ra​[২২৬] 1 asterisk লরেন­সিয়াম১০৩Lr​[২৬৬] রাদার­ফোর্ডিয়াম১০৪Rf​[২৬৭] ডুব­নিয়াম১০৫Db​[২৬৮] সিব­র্গিয়াম১০৬Sg​[২৬৯] বোহ­রিয়াম১০৭Bh​[২৭০] হ্যাসিয়াম১০৮Hs​[২৬৯] মাইট­নেরিয়াম১০৯Mt​[২৭৮] ডার্মস্টা­টিয়াম১১০Ds​[২৮১] রন্টজে­নিয়াম১১১Rg​[২৮২] কোপার্নি­সিয়াম১১২Cn​[২৮৫] নিহো­নিয়াম১১৩Nh​[২৮৬] ফ্লেরো­ভিয়াম১১৪Fl​[২৮৯] মস্কো­ভিয়াম১১৫Mc​[২৯০] লিভার­মোরিয়াম১১৬Lv​[২৯৩] টেনে­সাইন১১৭Ts​[২৯৪] ওগা­নেসন১১৮Og​[২৯৪]
1 asterisk ল্যান্থানাম৫৭La১৩৮.৯১ সিরিয়াম৫৮Ce১৪০.১২ প্রাসিও­ডিমিয়াম৫৯Pr১৪০.৯১ নিও­ডিমিয়াম৬০Nd১৪৪.২৪ প্রমি­থিয়াম৬১Pm​[১৪৫] সামে­রিয়াম৬২Sm১৫০.৩৬ ইউরো­পিয়াম৬৩Eu১৫১.৯৬ গ্যাডালি­নিয়াম৬৪Gd১৫৭.২৫ টারবিয়াম৬৫Tb১৫৮.৯৩ ডিসপ্রো­সিয়াম৬৬Dy১৬২.৫০ হোল­মিয়াম৬৭Ho১৬৪.৯৩ আর­বিয়াম৬৮Er১৬৭.২৬ থুলিয়াম৬৯Tm১৬৮.৯৩ ইটার­বিয়াম৭০Yb১৭৩.০৫  
1 asterisk অ্যাক্টি­নিয়াম৮৯Ac​[২২৭] থোরিয়াম৯০Th২৩২.০৪ প্রোটেক্টি­নিয়াম৯১Pa২৩১.০৪ ইউরে­নিয়াম৯২U২৩৮.০৩ নেপচু­নিয়াম৯৩Np​[২৩৭] প্লুটো­নিয়াম৯৪Pu​[২৪৪] আমেরি­সিয়াম৯৫Am​[২৪৩] কুরিয়াম৯৬Cm​[২৪৭] বার্কি­লিয়াম৯৭Bk​[২৪৭] ক্যালি­ফোর্নিয়াম৯৮Cf​[২৫১] আইনস্টা­ইনিয়াম৯৯Es​[২৫২] ফার্মিয়াম১০০Fm​[২৫৭] মেন্ডেলে­ভিয়াম১০১Md​[২৫৮] নোবে­লিয়াম১০২No​[২৫৯]

আদিম ক্ষয় থেকে সিন্থেটিকসীমানা মৌলটির প্রাকৃতিক উপস্থিতি দেখায়

মানক পারমাণবিক ভর Ar, std(E)[১]
  • Ca: ৪০.০৭৮ — সংক্ষিপ্ত মান (অনিশ্চয়তা এখানে বাদ দেওয়া হয়েছে)[২]
  • Po: [২০৯] — সবচেয়ে স্থিতিশীল আইসোটোপের ভর সংখ্যা
এস-ব্লক এফ-ব্লক ডি-ব্লক পি-ব্লক
  1. মেইজা, জুরিস; ও অন্যান্য (২০১৬)। "Atomic weights of the elements 2013 (IUPAC Technical Report)" [মৌলের পারমাণবিক ওজন ২০১৩ (আইইউপিএসি প্রযুক্তিগত প্রতিবেদন)]। পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি (ইংরেজি ভাষায়)। ৮৮ (৩): ২৬৫–৯১। ডিওআই:10.1515/pac-2015-0305অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  2. Prohaska, Thomas; Irrgeher, Johanna; Benefield, Jacqueline; Böhlke, John K.; Chesson, Lesley A.; Coplen, Tyler B.; Ding, Tiping; Dunn, Philip J. H.; Gröning, Manfred; Holden, Norman E.; Meijer, Harro A. J. (২০২২-০৫-০৪)। "Standard atomic weights of the elements 2021 (IUPAC Technical Report)"Pure and Applied Chemistry (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 1365-3075ডিওআই:10.1515/pac-2019-0603