জে. রবার্ট অপেনহাইমার
এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
জে. রবার্ট অপেনহাইমার | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৭ | (বয়স ৬২)
নাগরিকত্ব | মার্কিন |
মাতৃশিক্ষায়তন | হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়ন টোলম্যান-অপেনহাইমার-ভোলকফ সীমা অপেনহাইমার-ফিলিপস প্রক্রিয়া বর্ন-অপেনহাইমার অঙ্কফল |
দাম্পত্য সঙ্গী | ক্যাথরিন অপেনহাইমার |
সন্তান | পিটার অপেনহাইমার (পুত্র) ক্যাথরিন "টনি" অপেনহাইমার সিলবার (কন্যা) |
পুরস্কার | এনরিকো ফের্মি পুরস্কার |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলি ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্স স্টাডি |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | ম্যাক্স বর্ন |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | স্যামুয়েল ডব্লিউ. অল্ডারসন ডেভিড বম রবার্ট ক্রিস্টি সিডনি ড্যানকফ স্ট্যা ফ্রাঙ্কেল উইলিস ইউজিন ল্যাম্ব হ্যারল্ড লুইস ফিলিপ মরিসন মেল্বা ফিলিপস হার্টল্যান্ড স্নাইডার জর্জ ভোলকফ |
স্বাক্ষর | |
টীকা | |
পদার্থবিদ ফ্রাঙ্ক অপেনহাইমার তাঁর ভাই |
জে. রবার্ট অপেনহাইমার (জন্ম: জুলিয়াস রবার্ট অপেনহাইমার (ইংরেজি: Julius Robert Oppenheimer; /ˈɒpənhaɪmər/; ২২ এপ্রিল, ১৯০৪ - ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭)[১] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে ম্যানহাটন প্রকল্পের লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির পরিচালক ছিলেন। আণবিক বোমা আবিষ্কারের জন্য তাঁকে আণবিক বোমার জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।[২]
অপেনহাইমার লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে পরিচালক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে আণবিক বোমার বিকাশে কাজ করেন। এছাড়া তিনি বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিরও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিন্তু নিরাপত্তা বিষয়ক শুনানিতে তার বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ফলে তাঁকে মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে থেকে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীরা তাঁর সপক্ষে অবস্থান নেন। এছাড়া রাজনৈতিক এবং নৈতিকতাকে বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্তে সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]২২ এপ্রিল, ১৯০৪ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। জার্মান অভিবাসী পিতা জুলিয়াস অপেনহাইমার ভাগ্যান্বষণে ১৮৮৮ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে আসেন। টেক্সটাইল শিল্পে আমদানী-রফতানীর ব্যবসা করতেন ও সফলকাম হয়েছিলেন। মা এলা ফ্রাইডম্যান ছিলেন একজন চিত্রকর। ১৯১২ সালে পরিবারটি ১৫৫, রিভারসাই ড্রাইভ, ওয়েস্ট ৮৮তম স্ট্রীটের নিকটবর্তী, ম্যানহাটন আবাসিক এলাকার দ্বাদশ তলায় স্থানান্তরিত হন।[৩] পরিবারে পাবলো পিকাসো এবং এডোয়ার্ড ভুইলার্দসহ ভিনসেন্ট ভ্যান গগের কমপক্ষে তিনটি প্রকৃত চিত্রকর্মের সংগ্রহ রয়েছে।[৪] রবার্ট হেইমারের ফ্রাঙ্ক অপেনহাইমার নামীয় ছোট একটি ভাই ছিল। তিনিও পরবর্তীকালে পদার্থবিদ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন।[৫]
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক-পূর্ব শ্রেণীতে অধ্যয়রত অবস্থায় অপেনহাইমার ল্যাটিন, গ্রীক, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন প্রভৃতি বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠেন। ১৯২৫ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর তিনি গবেষণাকর্মের জন্যে ইংল্যান্ড যান। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাভেন্ডিস ল্যাবরেটরিতে লর্ড আর্নেস্ট রাদারফোর্ডের তত্ত্বাবধানে আণবিক গঠন বিষয়ে গবেষণা চালান। ক্যাভেন্ডিস ল্যাবরেটরিতে অবস্থানকালে তিনি পারমাণবিক গবেষণার উন্নয়নে ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময়ের সুযোগ পান। এরপর ম্যাক্স বর্নের ছত্রচ্ছায়াও তিনি অধ্যাপনা করেন। সেখানে তিনি নিলস বোর এবং পি.এ.এম. দিরাক প্রমূখ প্রথিতযশা পদার্থবিদদের সাহচর্য্য পান। ১৯২৭ সালে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। লেইডেন এবং জুরিখের বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলোয় সংক্ষিপ্ত পরিদর্শন শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন অপেনহাইমার। এরপর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অধ্যাপনা করেন।
১৯৩১ সালে তার মাতা মারা যান। ফলে তিনি বাবার কাছাকাছি ছিলেন ও নিয়মিতভাবে ক্যালিফোর্নিয়া ভ্রমণ করতেন।[৬] ১৯৩৭ সালে মারা গেলে তিনি ও তার ভাই ফ্রাঙ্ক $৩৯২,৬০২ মার্কিন ডলার উত্তরাধিকারীসূত্রে প্রাপ্ত হন। তিনি তার নিজের সমূদয় অংশ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শিক্ষার্থীদের বৃত্তির জন্য একটি দলিল সম্পাদন করেন।[৭]
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]১৯২০-এর দশকে অপেনহাইমার নিজেকে বৈশ্বিক বিষয়াবলী থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন অপেনহাইমার। সংবাদপত্র পাঠ করা কিংবা রেডিও শোনায় আগ্রহবোধ হয়নি তার। কেবলমাত্র আর্নেস্ট লরেন্সের সাথে হাঁটার সময় ১৯২৯ সালের ওয়াল স্ট্রীট বিপর্যয়ের কথা ছয় মাস পর শুনেছেন।[৮] এছাড়াও, তিনি ১৯৩৬ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত কোন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। কিন্তু ১৯৩৪ সালের পরই তিনি রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। নাজি জার্মানি থেকে চলে আসা জার্মান পদার্থবিদদের জন্যে নিজ বেতনের তিন শতাংশ পরিমাণ সমমানের বার্ষিক $১০০ ডলার অর্থ তাদের সহায়তার জন্যে প্রদান করেছেন। ১৯৩৪ সালে ওয়েস্ট কোস্ট ওয়াটারফ্রন্ট স্ট্রাইকে তিনি এবং মেলবা ফিলিপস, বব সার্বারসহ তার কতিপয় ছাত্র মিছিলে অংশ নেন। অপেনহাইমার সার্বারকে পুণঃপুণঃ বার্কলেতে একটি পদে ঢোকানোর চেষ্টা চালালে বার্জ কর্তৃক আটকানো হয়। বার্জ মনে করেন যে, 'একজন ইহুদীই বিভাগের জন্যে যথেষ্ট।'[৯]
জার্মানিতে অ্যাডলফ হিটলারের উত্থানের পরপরই তিনি রাজনীতিতে আগ্রহান্বিত হন। ১৯৩৬ সালে স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময় প্রজাতন্ত্রটির পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। ঐ সময় তিনি সমাজতান্ত্রিক ছাত্রদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। ১৯৩৭ সালে তার পিতার মৃত্যুর ফলে তিনি ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগঠনে যুক্ত হন। জোসেফ স্টালিনের নিয়ন্ত্রণাধীন রুশ বৈজ্ঞানিকগণ তার সদস্যপদ কেড়ে নেয়। এরপর তিনি আর কখনো সংগঠনে যুক্ত হননি। একই সময়ে তিনি জোরপূর্বক সাম্যবাদ গণতান্ত্রিক দর্শনে প্রবেশ করেন।
ম্যানহাটন প্রকল্প
[সম্পাদনা]১৯৩৯ সালে নাজি জার্মানি কর্তৃক পোল্যান্ড দখল করা হয়। বিশ্বখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন এবং লিও জিলার্ড মার্কিন সরকারকে সতর্ক করে দেন যে যদি নাজিরা পারমাণবিক বোমা তৈরী করে তাহলে তা সমগ্র মানবজাতির জন্য ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি ও ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ প্রেক্ষিতে অপেনহাইমার প্রকৃতিপ্রদত্ত ইউরেনিয়াম থেকে ইউরেনিয়াম-২৩৫ পৃথকীকরণের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন। কেননা, এ ধরনের পারমাণবিক বোমা নির্মাণের জন্যে ইউরেনিয়াম-২৩৫ প্রয়োজন। আগস্ট, ১৯৪২ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনী ব্রিটিশ এবং মার্কিন পদার্থবিদদের নিয়ে পারমাণবিক শক্তির সন্ধানে সংস্থা গঠনের চেষ্টা চালায় যা পরবর্তীকালে ম্যানহাটন প্রকল্প নামে পরিচিত। এর কর্মপন্থা নির্ধারণে অপেনহাইমারকে প্রকল্প গঠন এবং ল্যাবরেটরির প্রশাসকরূপে মনোনীত করা হয়। ১৯৪৩ সালে নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের সান্তা ফে'র নিকটবর্তী লস অ্যালামোজ এলাকাকে নির্ধারণ করেন। উল্লেখ্য এলাকাটিতে অপেনহাইমার তার শৈশবকাল অতিক্রম করেন একটি বোর্ডিং স্কুলে।
জার্মানির আত্মসমর্পণের পর ১৬ জুলাই, ১৯৪৫ সালে বিজ্ঞানীদের যৌথ প্রচেষ্টায় নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের আমোগোর্ডো এলাকায় প্রথম আণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। একই বছরের অক্টোবর মাসে অপেনহাইমার তার পদ থেকে ইস্তফা দেন। ১৯৪৭ সালে ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি'র প্রধান হন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি কমিশনের সাধারণ পরামর্শক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ কমিটিই ১৯৪৯ সালে হাইড্রোজেন বোমা নির্মাণের বিরোধিতা করেছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণের পরপরই ৯ অক্টোবর, ১৯৪১ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট আণবিক বোমা নির্মাণে আপদকালীন প্রকল্প অনুমোদন করেন।[১০] মে, ১৯৪২ সালে জাতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা কমিটির সভাপতি জেমস বি. কন্যান্ট প্রকল্পের প্রধান হিসেবে রবার্ট অপেনহাইমারকে নিযুক্ত করেন। ইউরোপীয় পদার্থবিদ ও তার ছাত্র রবার্ট সারবার, এমিল কোনোপিনস্কি, ফেলিক্স ব্লচ, হান্স বেটে এবং এডওয়ার্ড টেলারকে নিয়ে আণবিক বোমার জন্যে কি কি করতে হবে তার হিসাব এবং কি কি স্তরে সাজাতে হবে তার নির্দেশনা দেন।[১১]
নিরাপত্তা শুনানী
[সম্পাদনা]জে. এডগার হুবারের পরিচালনায় এফবিআই বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব থেকেই অপেনহাইমারকে অনুসরণ করে আসছিল। বার্কলিতে সমাজতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণার সাথে সহানুভূতিপূর্ণ আচরণ এবং কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে তার ভাই ও ক্যাথেরিন পিউনিং হ্যারিসন নামীয় স্ত্রীর সাথে তার নৈকট্যপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিই এর প্রধান কারণ। ১৯৪০-এর দশকের শুরুতে তাকে তার বাড়ি এবং অফিসে পর্যবেক্ষণ করা হতো, ফোনে নজরদারী এবং ডাক যোগাযোগে ব্যবহৃত চিঠিও খোলা হতো।[১২] এছাড়াও, রাজনৈতিক শত্রুরূপে বিবেচিত আণবিক শক্তি সংস্থার সদস্য লুইজ স্ট্রজ কর্তৃক তাকে হাইড্রোজেন বোমা উদ্ভাবনে নিষ্ক্রিয়তা; স্ট্রজের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ রপ্তানিতে বিরুদ্ধাচরণকে 'ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু ভিটামিনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ' - এ বাক্য প্রয়োগকেও এর জন্যে দায়ী করা হয়।[১৩]
ব্যাপারটি অস্পষ্টই রয়ে গেছে যে, অপেনহাইমার ১৯৪২ সালে কিছুসংখ্যক বন্ধুদের সাথে আণবিক অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। তার উক্ত বন্ধু সোভিয়েত সরকারের গুপ্তচরবৃত্তির সাথে জড়িত ছিল। এ ঘটনাই পরবর্তীকালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বন্ধুর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ১৯৫৪ সালে নিরাপত্তাবিষয়ক শুনানীতে এ আলোচনায় অংশগ্রহণকে তিনি মিথ্যায় ভরপুর নামে আখ্যায়িত করেন।
২১ ডিসেম্বর, ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত মার্কিন সামরিক নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে অগ্রহণযোগ্যতা এবং অতীতে কমিউনিস্টদের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে। এছাড়াও, সোভিয়েত গুপ্তরচদের সাথে সম্পর্ক বজায় ও হাইড্রোজেন বোমা নির্মাণে বাঁধার কথা তুলে ধরা হয়। নিরাপত্তা শুনানীতে স্পষ্টভাবে অভিযুক্ত করা যায়নি। কিন্তু, সামরিক নিরাপত্তা বিষয়ে তার অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়। এরফলে তার সাথে পারমাণবিক শক্তি কমিশনের পরামর্শক পদের চুক্তিনামা বাতিল করা হয়। এ ঘটনাটি ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করে। ম্যানহাটন প্রকল্পে কর্মরত ৪৯৩ জন বিজ্ঞানী একযোগে স্বাক্ষর সহকারে তাদের প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করে।
ওয়ার্নার ভন ব্রাউন কংগ্রেসনাল কমিটিকে অপেনহাইমারের মতামতকে সংজ্ঞায়িত করেছেন - 'যদি ইংল্যান্ডে তার এ মতামত প্রকাশ করা হতো, তাহলে তিনি নাইট পদবীধারী হতেন।'[১৪]
আমেরিকার বিজ্ঞানীদের সংগঠন দ্রুততার সাথে তার সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং এ বিচারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ ঘটায়। ফলে রবার্ট অপেনহাইমার বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের প্রতীকিতে পরিণত হন যিনি বৈজ্ঞানিকদের আবিষ্কারের সাথে নৈতিকতাজনিত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়েছেন ও প্রেতাত্মাদের শিকারে পরিণত হয়েছেন। জীবনের বাকী দিনগুলোয় তিনি বিজ্ঞান এবং সমাজের মধ্যকার সম্পর্ক নির্ণয়ের লক্ষ্যে কাজ করে যান।
২০ মে, ২০০৯ তারিখে উড্রো উইলসন ইনস্টিটিউটে একটি সেমিনারে কেজিবি'র সংগ্রহশালা থেকে ভাসিলিয়েভের নোটবইয়ের উপর ব্যাপক বিশ্লেষণ করা হয়। জন আর্ল হেনেজ, হার্ভে ক্লের এবং আলেকজান্ডার ভাসিলিয়েভের মতে অপেনহাইমার কখনো সোভিয়েত ইউনিয়নে তথ্য পাচারের সাথে জড়িত ছিলেন না। তবে কেজিবি প্রাণপনে চেষ্টা করেছিল তাকে দলে টেনে নেয়ার জন্যে। কিন্তু তারা কখনো সফলকাম হয়নি। অপেনহাইমার যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। বরঞ্চ ম্যানহাটন প্রকল্প থেকে অনেক লোককে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি সহানুভূতিপূর্ণ আচরণের জন্যে বের করে দিয়েছেন তিনি।[১৫]
সম্মাননা
[সম্পাদনা]১৯৬৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন অপেনহাইমারকে আণবিক শক্তি কমিশনের প্রদেয় এনরিকো ফার্মি পুরস্কার প্রদান করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি ইনস্টিটিউট ফর স্টাডি থেকে অবসর নেন। এর পরের বছরই গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেহাবসান ঘটে তার।
বৈজ্ঞানিক হিসেবে অপেনহাইমার তার ছাত্র এবং সহকর্মীদের কাছে প্রথিতযশা গবেষক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। শিক্ষকতা পেশায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিনি আধুনিক তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে রয়েছেন। কারণ তার বৈজ্ঞানিক বিষয়াবলী প্রায়শঃই দ্রুততার সাথে পরিবেশ পাল্টে দিতো। কিন্তু তিনি নির্দিষ্ট কোন একটি বিষয়ে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত থাকেননি; ফলে তিনি নোবেল পুরস্কারের যোগ্যতা অর্জন করেননি।[১৬] তারপর কৃষ্ণ গহ্বর সম্পর্কীয় তত্ত্বটি এ পুরস্কারের দাবীদার হতো যদি তিনি বেঁচে থাকতেন যা জ্যোতির্বিদ্যায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে।[১৭] ৬৭০৮৫ অপেনহাইমার নামীয় একটি তারাকে তার সম্মানে নামাঙ্কিত করা হয়।[১৮]
উক্তি
[সম্পাদনা]১৬ জুলাই, ১৯৪৫ তারিখে নিউ মেক্সিকোতে ট্রিনিটি পরীক্ষা নামে পরিচিত প্রথম আণবিক বোমার সফল পরীক্ষামূলক পর্যায়ের পর অপেনহাইমার পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ভগবদ্গীতা থেকে উদ্বৃতি দিয়ে বলেছিলেন:[১৯]
এখন আমি মৃত্যুর কারণ হতে পারি, বিশ্বকে ধ্বংস করে দিতে পারি।
৮ নভেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত তা প্রকাশ করা হয়েছিল।[২০] এ কথাই পরবর্তীকালে ১৯৫৮ সালে রবার্ট জাঙ্কের ব্রাইটার দেন এ থাউজেন্ড সানস: এ পার্সোনাল হিস্ট্রি অব দি অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস শীর্ষক পুস্তকে বিবৃত করা হয়েছিল।[২১] পুস্তকের একাংশে অপেনহাইমারের স্বাক্ষাৎকারে অপেনহাইমার তা পুনরায় ব্যক্ত করেছিলেন।[২২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ দৃষ্টি আকর্ষণ: এই টেমপ্লেটি ({{cite doi}}) অবচিত। doi দ্বারা চিহ্নিত প্রকাশনা উদ্ধৃত করার জন্য:10.1098/rsbm.1968.0016, এর পরিবর্তে দয়া করে
|doi=10.1098/rsbm.1968.0016
সহ {{সাময়িকী উদ্ধৃতি}} ব্যবহার করুন। reprinted as Bethe, Hans (১৯৯৭)। "J. Robert Oppenheimer 1904-1967"। Biographical Memoirs। Washington, D.C.: United States National Academy of Sciences। 71: 175–218। - ↑ Bird ও Sherwin 2005, পৃ. xi
- ↑ Cassidy 2005, পৃ. 5–11
- ↑ Bird ও Sherwin 2005, পৃ. 12
- ↑ Cassidy 2005, পৃ. 16, 145
- ↑ Bird & Sherwin 2005, p. 98
- ↑ Bird & Sherwin 2005, p. 128
- ↑ Herken 2002, p. 12
- ↑ Bird & Sherwin 2005, pp. 104–107
- ↑ Hewlett & Anderson 1962, pp. 44–49
- ↑ Hoddeson et al. 1993, pp. 42–44
- ↑ Stern 1969, p. 2
- ↑ Cassidy 2005, p. 286
- ↑ Bethe 1968, p. 27
- ↑ Haynes 2006, pp. 133–144
- ↑ Cassidy 2005, p. 175
- ↑ Kelly 2006, p. 128
- ↑ "Small-Body Database Browser 67085 Oppenheimer (2000 AG42)". Jet Propulsion Laboratory. Retrieved February 27, 2011.
- ↑ "J. Robert Oppenheimer on the Trinity test (1965)"। Atomic Archive। সংগ্রহের তারিখ মে ২৩, ২০০৮।
- ↑ "The Eternal Apprentice"। Time। নভেম্বর ৮, ১৯৪৮। আগস্ট ১৯, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৬, ২০১১।
- ↑ Jungk 1958, পৃ. 201
- ↑ Hijiya 2000, পৃ. 123–124
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]
|
|
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Biography and online exhibit created for the centennial of his birth
- PBS American Experience / The Trials of J. Robert Oppenheimer ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে
- Was Oppenheimer a member of the Communist Party? documents on the question
- On Atomic Energy, Problems to Civilization audio file of UC Berkeley talk, November 1946
- Oppenheimer talking about the experience of the first bomb test (video file, "Now I am become death, destroyer of worlds.")
- Scanned and declassified government documents relating to the Oppenheimer Hearings and H-Bomb decision
- টেমপ্লেট:সম্পর্কে বাক্যগঠন ঠিক নেই
- ১৯০৪-এ জন্ম
- ১৯৬৭-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী
- মার্কিন অজ্ঞেয়বাদী
- মার্কিন ইহুদি
- মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী
- মার্কিন নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞানী
- কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদগণ
- খ্রিস্টস কলেজ, ক্যামব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মার্কিন মানুষ
- জার্মান ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
- ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষক
- নিউ জার্সিতে ক্যান্সারে মৃত্যু
- এনরিকো ফের্মি পুরস্কার প্রাপক
- রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য
- হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ইহুদি অজ্ঞেয়বাদী
- ইহুদি মার্কিন বিজ্ঞানী
- ম্যানহাটান প্রকল্পের মানুষ
- গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- অস্ত্র বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী
- তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী
- কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
- ক্রাইস্ট কলেজ, কেমব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- হার্ভার্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য
- কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী
- ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলির শিক্ষক