বিষয়বস্তুতে চলুন

বজলুল হুদা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা আফতাবুজ্জামান (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:০৫, ৩০ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (103.135.255.122 (আলাপ)-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Yahya-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

মোহাম্মদ বজলুল হুদা
চিত্র:বজলুল হুদা.jpg
আনুগত্য বাংলাদেশ
সেবা/শাখা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
পদমর্যাদালেফট্যানেন্ট কর্ণেল
ইউনিটফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্ট

মোহাম্মদ বজলুল হুদা একজন বাংলাদেশী সেনা কর্মকর্তা। যাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল।[] তিনি ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ফ্রীডম পার্টির হয়ে মেহেরপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[]

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

বজলুল হুদা মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

কর্মজীবন

১৯৭৩ সালে ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ বজলুল হুদাকে মেজর শরিফুল হক ডালিমের সাথে কুমিল্লা সেনানিবাসের প্রথম ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টে পোস্ট করা হয়েছিল। ডালিম সহ কয়েকজন অফিসার খুব শীঘ্রই ভালো অনুশাসনের কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।[] ১৯৭৫-এ আওয়ামী লীগ নেতা গাজী গোলাম মোস্তফার ছেলের সাথে ডালিমের ধস্তাধস্তি হয়। কিছু কর্মকর্তা ও সৈন্য মোস্তফার বাসায় আক্রমণ করে। পরে, ডালিমসহ অফিসাররা উচ্ছৃঙ্খলতার কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে কমিশন হারিয়েছিলেন।

হুদা অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার জন্য ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট বৈঠক করেছিলেন। হুদা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বাসায় আক্রমণকারী বিদ্রোহী সেনাদের একজন ছিলেন। শেখ মুজিব সিঁড়ি দিয়ে নিচের নামার সময় মেজর এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ও হুদা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেন।

শেখ মুজিব ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পরে মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান শেখ মুজিবের বাড়িতে ক্যাপ্টেন হুদাকে মেজর পদোন্নতি দিয়েছিলেন। [][] খোন্দকার মোস্তাক আহমদ সরকার ১৯৭৫ সালের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাস করে আসামিদের সুরক্ষিত করেছিলেন। [] শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত কিছু কর্মকর্তা যেমন, ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে লে. কর্নেল) খন্দকার আব্দুর রশিদ, কর্নেল সাঈদ ফারুক রহমান ও মেজর বজলুল হুদা ১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশ ফ্রিডম পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ফ্রীডম পার্টির হয়ে মেহেরপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[][]

বিচার

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির বাসায় পরিবারসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডের অন্যতম হোতা ছিলেন মেজর বজলুল হুদা। হত্যার পর ১৯৯১ সালে এক জনসভায় বজলুল হুদা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিবকে আমি নিজের হাতে গুলি করে হত্যা করেছি। কার সাধ্য আছে আমার বিচার করার? এদেশে শেখ মুজিব হত্যার বিচার কোনো দিনই হবে না।’

১৯৯৬ সালে চুরির অভিযোগে হুদাকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে গ্রেপ্তার হয়েছিল এবং তাকে বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তখন হুদা নিজেকে রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করেছিলেন এবং শরণার্থী হিসেবে জাতিসংঘ শরণার্থী হাই কমিশনে আবেদন করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে এই মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকা দায়রা আদালত হুদাসহ ১৪ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা বাংলাদেশ হাইকোর্টে আপিল করেন। ১৪ ডিসেম্বর ২০০০ সালে হাইকোর্ট এক বিভক্তিমূলক রায় দেয়, রায়ে একজন বিচারপতি সকলের মৃত্যুদণ্ডের কথা বলেন এবং অন্য বিচারক ১০ জন আসামির মৃত্যুদণ্ডের কথা বলেন। তৃতীয় বিচারপতি কেবল অভিযুক্ত ১২ জনের সাজার কথা বলেন। ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অভিযুক্ত ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে রায় দেয়। সকল বাধা বিপত্তি শেষে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বজলুল হুদার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল।[][]

মৃত্যু

২৮ জানুয়ারী ২০১০ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত মোহাম্মদ বজলুল হুদা সহ অন্য চারজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।[১০][১১]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "সেই রাতে যা ঘটেছিল ফিরে দেখা"সমকাল (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৭ 
  2. "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  3. "Shahriar's confession"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  4. "Major Noor, Capt Bazlul Huda shot Bangabandhu dead"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ জুলাই ১৯৯৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  5. "Pasha shot dead Begum Mujib, Jamal, 2 in-laws"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  6. "Shame darker than the night"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  7. "সেই ২৩৪ এমপি প্রার্থী এখন কোথায়"বাংলাদেশ প্রতিদিন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২৫ 
  8. "Freedom Party leader Maj Joynul, 21 others jailed for 7 yrs"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  9. "Jail authorities asked to explain failure to produce 3 accused"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ মার্চ ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  10. "5 Bangabandhu killers hanged"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  11. "'Of course, we killed him ... he had to go'"Dhaka Tribune। ৭ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭