সবজাননেসা মহিলা কামিল মাদ্রাসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সবজাননেসা মহিলা কামিল মাদ্রাসা
মাদ্রাসার লোগো
ধরনএমপিও ভুক্ত
স্থাপিত১ জানুয়ারি ১৯৭৯; ৪৫ বছর আগে (1979-01-01)
প্রতিষ্ঠাতাগণ
  • ফরিদপুরের বিশিষ্ট জন (১৯৭৯)
  • আব্দুর রহিম মিয়া (১৯৮১)
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া (২০০৬- ২০১৬)
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান)
অধ্যক্ষমুহাম্মাদ মনিরুজ্জামান
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তিবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড
ঠিকানা
পূর্বখাবাসপুর
, , ,
শিক্ষাঙ্গনগ্রাম্য
ওয়েবসাইটhttps://smkm.edu.bd/

সবজাননেসা মহিলা কামিল মাদ্রাসা ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার পূর্বখাবাসপুর এলাকার একটি উল্লেখযোগ্য মহিলা আলিয়া মাদ্রাসা[১] মাদ্রাসাটির দাখিল ও আলিম স্তর বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড ও ফাজিল ও কামিল স্তর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।[২] ১৯৭৯ সালে ফরিদপুর শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তি আব্দুর রশিদ, বদিয়ার রহমান মোল্লাসহ অনেকে মিলে এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৮১ সালে আব্দুর রহিম মিয়া শীর্ণ মাদ্রাসাটি পুনঃস্থাপন করে। মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নাম মো: মনিরুজ্জামান। মাদ্রাসাটি ফরিদপুর জেলায় ইসলামি নারী শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। মাদ্রাসাটি মাঝে মাঝে ফাজিল ও কামিল পরীক্ষার কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৭০-৮০ এর দশকে ফরিদপুর অঞ্চলে খ্রিস্টান মিশনারির তৎপরতা বৃদ্ধি পায়, মুসলমানদের মধ্যে ইসলামি শিক্ষার অভাবের সুযোগে তাদের ধর্মচুত্যির দিকে নিয়ে যেতে থাকে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৯৭৯ সালে ফরিদপুর শহরের আব্দুর রশিদ, বদিয়ার রহমান মোল্লাসহ কিছু গন্যমান্য ব্যক্তি কর্তৃক একটা মিটিং-এর মাধ্যমে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত করে।[ক] এসব ব্যক্তিদের উদ্যোগে তৎকালীন ফরিদপুর পৌরসভা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম চানমিয়া এক খণ্ড জমির ব্যবস্থা করে দেন। মাদ্রাসার কার্যক্রম কিছুটা শুরু হয়, সেই সময়ে ফুরফুরা দরবার শরীফের পীর আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী মাদ্রাসাটি উদ্বোধন করেন।

তবে বহু চেষ্টার পরেও মাদ্রাসাটি ধীরে ধীরে বন্ধ হবার উপক্রম অবস্থায় পৌঁছে যায়। সেই সময় আব্দুর রহিম মিয়া নামক এক ব্যবসায়ী ও ইসলামি শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির উদ্যোগে মাদ্রাসাটি আবার পথ চলা শুরু করে।[খ] তার একক প্রচেষ্টায় ১৯৮১ সালে পূর্ব খাবাসপুরে মাদ্রাসাটি একটি বালিকা মাদ্রাসা নামে পুনঃস্থাপিত হয়, তখন আব্দুর রহিম মিয়া তার মায়ের নামে মাদ্রাসাটির নামকরণ করেন।[৪] ১৯৮৫ সালে মাদ্রাসায় স্থায়ী গৃহ নির্মাণের কাজ শুরু হয়, এবং অল্প দিনের মধ্যে দাখিল শ্রেণীর অনুমতি লাভ করে। এরপর মাদ্রাসাটি আলিম ও ফাজিল শ্রেণীর অনুমতি লাভ করে। ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের রূপ অনুযায়ী বাংলাদেশের সকল ফাজিল মাদ্রাসার সাথে এই মাদ্রাসাটিও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি লাভ করে। এরপরে ২০১৬ সালে মাদ্রাসাটি পুনরায় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি লাভ করে।

সুযোগ-সুবিধা[সম্পাদনা]

এই মাদ্রাসায় ছাত্রীদের জন্য সম্পূর্ণ ইসলামি পর্দা ব্যবস্থার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে নানা শিক্ষা সহায়ক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা।

  • আবাসিক হোস্টেল: এই মহিলা মাদ্রাসাটির শিক্ষা কার্যক্রম বেগবান করার জন্য একটি আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে ছাত্রীরা বিনামূল্যে অথবা স্বল্পমূল্যে থাকা ও খাওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে।
  • সবজাননেসা মুসলিম বালিকা এতিমখানা: এছাড়াও দুঃস্থ ও অভাবী পরিবারের মেয়েদের জন্য ১৯৯১ সালে মাদ্রাসা আলাদা প্রতিষ্ঠান সবজাননেসা মুসলিম বালিকা এতিমখানা নির্মাণ করা হয়েছে।
  • নামাজের স্থান: মেয়েদের নামাজের জন্য আলাদা নির্ধারিত স্থান রয়েছে, যেখানে মেয়েরা একত্রিত হয়ে নামাজ আদায় করতে পারে।

টীকা[সম্পাদনা]

  1. গণ্যমান্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ, আলহাজ্ব বদিয়ার রহমান মোল্লা, আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ জাকারিয়া, মোহাম্মদ আরশাদ মিয়া, শাখাওয়াত উকিলসহ আরো কয়েকজন।
  2. সেই সময় আব্দুর রহিম মিয়াকে সাহায্য করেছিলেন এদের মধ্যে সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মানছুরুর রহমান, চকবাজার জামে মসজিদের পেশ ঈমাম মো. মোমাজ্জেদ হোসেন, অধ্যাপক শাহেদ আলী, অধ্যাপক আব্দুল বাতেন, আব্দুর রহিম মিয়া উল্লেখযোগ্য।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সাবজান নেছা মহিলা মাদ্রাসা"www.priofaridpur.com। ২০২৩-০৭-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৯ 
  2. "সবজাননেসা-মহিলা-কামিল-মাদ্রাসার-পদবী-সংশোধন-সংক্রান্ত"www.dme.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৯ 
  3. "কামিল পরীক্ষার কেন্দ্র" (পিডিএফ)ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২৩ 
  4. "সবজাননেসা মহিলা কামিল এম আলিয়া মাদ্রাসা"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৯