নৌচালনবিদ্যার ইতিহাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিশ্বের মানচিত্র, জেরার্ড ভ্যান শ্যাগেন কর্তৃক১৬৮৯ সালে প্রস্তুতকৃত।

নৌচালনবিদ্যা (ন্যাভিগেশন) এর ইতিহাস বা সমুদ্রযাত্রার ইতিহাস হল প্রচলিত প্রথা, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিদ্যা বা বিশেষ যন্ত্রের সহায়তায় উন্মুক্ত সমুদ্রের উপর নৌযান সমূহকে তাদের অবস্থান ও গতিপথ নির্ণয়ের মাধ্যমে পরিচালনা করার পদ্বতি। সমুদ্রযাত্রার নাবিক হিসেবে অনেকেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অস্ট্রোনেশিয়ানগণ (দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দ্বীপবাসী, মালাগাসি, মেলানেশিয়ান, মাইক্রোনেশিয়ান এবং পলিনেশিয়ান দ্বীপবাসী), হরপ্পানগণ, ফিনিশিয়ানগণ, ইরানিয়ান, প্রাচীন গ্রীকবাসী, রোমানরা, আরবগণ, ভারতীয়রা, নর্স (নরওয়ে বাসী), চীনারা, ভেনিসবাসী, জেনোয়াবাসী, হ্যানসিয়েটিক জার্মানগণ, পর্তুগিজ, স্প্যানিশ, ইংরেজ, ফরাসি, ওলন্দাজ এবং ডেনিস

পুরাকাল[সম্পাদনা]

ইন্দো-প্যাসিফিক[সম্পাদনা]

মানচিত্রটিতে প্রায় ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হওয়া অস্ট্রোনেশিয়ানদের সামুদ্রিক অভিবাসন এবং এর সম্প্রসারণ দেখানো হয়েছে

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক অভিযাত্রা শুরু হয় ৩০০০ থেকে ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে, অস্ট্রোনেশিয়ানদের সামুদ্রিক অভিবাসনের মধ্য দিয়ে, যারা তাইওয়ান হতে দক্ষিণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয় দ্বীপ এবং মেলানেশিয় দ্বীপ সমূহে ছড়িয়ে পড়ে। তাদের দীর্ঘ-দূরত্বের প্রথম সমুদ্রযাত্রা ছিল ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে, ফিলিপাইন থেকে মাইক্রোনেশিয়ায় উপনিবেশ স্থাপনের মাধ্যমে। ৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে তাদের বংশধররা প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে ৬,০০০ কিলোমিটারেরও অধিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং টোঙ্গাসামোয়াতে পৌঁছে। ফলে এই অঞ্চলে গড়ে ওঠে একটি স্বতন্ত্র পলিনেশিয়ান সংস্কৃতি। পলিনেশিয়ানরা পরবর্তী কয়েক শতকের মধ্যে হাওয়াই, নিউজিল্যান্ড, ইস্টার দ্বীপ এবং সম্ভবত দক্ষিণ আমেরিকা পারি দেয়। পলিনেশিয়ান নাবিকরা বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি এবং পদ্ধতি ব্যবহার করত উদাহরন স্বরুপ পাখিদের পর্যবেক্ষণক্ষমতা, নাক্ষত্রিক নেভিগেশন এবং নিকটবর্তি ভূমি শনাক্ত করতে সমুদ্রের ঢেউ ও স্ফীত জলরাশি। নৌচালনবিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মনে রাখতে নাবিকদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করা হতো গান, পৌরাণিক গল্প এবং তারকাচিত্র। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয় দ্বীপের অস্ট্রোনেশিয়ানরা ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যেই প্রথমবারের মতো সত্যিকারের সামুদ্রিক ব্যবসাবাণিজ্যের নেটওয়ার্ক তৈরী করে, যা চীন, দক্ষিণ ভারত, মধ্যপ্রাচ্য এবং উপকূলীয় পূর্ব আফ্রিকার মধ্য যোগাযোগ স্থাপন করে। সহস্রাব্দের প্রথম দিকে বোর্নিও (সুবোর্ন দ্বীপ) দ্বীপবাসী মাদাগাস্কারে পৌঁছে বসতি স্থাপন এবং ৫০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এটিকে তাদের উপনিবেশে পরিণত করে [১] [২] [Note ১]

ভূমধ্যসাগরীয়[সম্পাদনা]

ভূমধ্যসাগরে চলাচলকারী নাবিকরা তাদের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনে কৌশল অবলন্বন করতো, যেমন ভূমির দৃষ্টিসীমায় থাকা এবং বায়ুপ্রবাহ ও এর গতিপ্রকৃতি বোঝা। ক্রিটের মিনোয়ানরা হলো শুরুর দিকের পশ্চিমা সভ্যতার একটি উদাহরণ যারা জ্যোতির্মিতি বা সেলেস্টিয়াল নেভিগেশন ব্যবহার করতো। তাদের প্রাসাদ এবং পাহাড়ের চূড়ার আশ্রয়স্থলগুলোর স্থাপত্যশৈলি প্রদর্শন করতো বিষুবরেখায় উদীয়মান সূর্য এবং নির্দিষ্ট নক্ষত্রের উদয় ও অস্তগামীতার বৈশিষ্ট্য। [৩] মিনোয়ানরা থেরা (Thera) দ্বীপ এবং মিশরে সমুদ্র যাত্রা করেছিল। [৪] দুটো সমুদ্র যাত্রায়ই মিনোয়ানদের এক দিনেরও বেশি জাহাজ চালনা করতে হতো এবং রাতের বেলায় খোলা সমুদ্রে থাকতে হতো। [৪] সঠিক দিকে জাহাজকে পরিচালনা করতে নাবিকরা নির্দিষ্ট নক্ষত্র, বিশেষ করে উর্সা মেজর (সপ্তর্ষি) নক্ষত্রমন্ডলীর অবস্থান ব্যবহার করতো। [৪]

নক্ষত্রের অবস্থান ব্যবহার করে নৌচালনা করা, বা সেলেস্টিয়াল নেভিগেশন, এর লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায়, হোমার এর ওডিসিতে যেখানে ওডিসিউস তার দ্বীপ ওগিগিয়া হতে পূর্ব দিকে সমুদ্র পাড়ি দিতে নৌচালনা করার সময় ক্যালিপসো (Calypso) তাকে তার বায়ে রাখতে বলেন বেয়ার বা ভাল্লুককে (উর্সা মেজর) এবং সেই সাথে নজর রাখতে বলেন প্লিয়েডেস এবং দেরিতে অস্ত যাওয়া বুওটিস ও ওরিয়ন (কালপুরুষ) নক্ষত্রমন্ডলীর অবস্থানের উপর। [৫] ইউডোক্সোস কর্তৃক বর্ণিত নক্ষত্রপুঞ্জের অবস্থানের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে গ্রীক কবি আরাতুস এর লেখা ফাইনোমেনাতে[৬] তবে গ্রীক মূল ভূখণ্ডের ক্ষেত্রে আরাতুস বা ইউডোক্সোসের সময়ের নক্ষত্রের অবস্থানের সাথে বর্ণিত অবস্থানগুলো মেলে না, তবে কেউ কেউ যুক্তি দেন, ব্রোঞ্জ যুগের ক্রিট এর আকাশের সাথে এর ‌মিল রয়েছে। [৬] নক্ষত্রের অবস্থানের এই পরিবর্তন নিজ অক্ষের উপর পৃথিবীর ঘূর্ণনে মেরু গতির প্রভাব এর কারণে হয় যার প্রভাব প্রাথমিকভাবে মেরু তারা (ধ্রুব তারা) এর উপর হয়। [৭] ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে নক্ষত্রমণ্ডলী ড্রাকো হয়তো পোলারিস (ধ্রুব তারা) এর চেয়ে উত্তর মেরুর কাছাকাছি ছিল। [৮] মেরু নক্ষত্রগুলো নৌচালনা বা নেভিগেট করার জন্য ব্যবহৃত হতো কারণ তারা দিগন্তের নীচে অদৃশ্য হতো না এবং সারা রাত ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাদেরকে দেখা যেত। [৭]

খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকের দিকে গ্রীকরা নেভিগেট করার জন্য লিটল বেয়ার, উরসা মাইনর এর অবস্থান ব্যবহার করা শুরু করেছিল। [৯] লুকান খ্রিস্টীয় ১ম শতকের মাঝামাঝি সময়ে পম্পেই সম্পর্কে লিখেছেন। তিনি একজন নাবিককে ন্যাভিগেশনে তারার ব্যবহার সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন। উত্তরে নাবিকটি নেভিগেট করার জন্য সারকামপোলার নক্ষত্র ব্যবহারের বর্ণনা দেন। [১০] "অক্ষাংশের একটি ডিগ্রী বরাবর নেভিগেট করার জন্য একজন নাবিককে সেই ডিগ্রীর উপরের আকাশে একটি সারকামপোলার নক্ষত্র খুঁজে বের করতে হতো। [১১] উদাহরণস্বরূপ, অ্যাপোলোনিয়াস আলফিয়াস নদীর মুখ থেকে সিরাকিউস পর্যন্ত পশ্চিমে যাওয়ার সময় β ড্রাকোনিস ব্যবহার করতেন নেভিগেট করার জন্য । [১১]

শুরুর দিকের সুদীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একটি উদাহরণ হলো গ্রীক নাবিক ম্যাসালিয়া এর পাইথিয়াস এর সমুদ্রযাত্রা।[১২] একজন দক্ষ জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং ভূগোলবিদ, [১২] পাইথিয়াস, গ্রীস থেকে জিব্রাল্টার প্রণালী হয়ে পশ্চিম ইউরোপ এবং ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমন করেছিলেন। [১২] পাইথিয়াস হলেন প্রথম পরিচিত ব্যক্তি যিনি মধ্যরাতের সূর্য, [Note ২] মেরু বরফ, জার্মানিক উপজাতি এবং সম্ভবত স্টোনহেঞ্জের বর্ণনা দেন। পাইথিয়াস ভৌগলিক কল্পনায় দূরবর্তী " থুলে " সম্পর্কে ধারণা দেন এবং চাঁদই জোয়ার ভাটার কারণ এই ধারনা তিনিই সর্বপ্রথম দেন।

আলেকজান্ডারের ভারত অভিযাত্রার পর নিয়ারকোস এর ভারত থেকে সুসা পর্যন্ত সমুদ্রযাত্রা উৎযাপনের ইতিহাস ইন্ডিকা-তে আরিয়ান এর বিবরণে সংরক্ষিত আছে। গ্রীক নাবিক সাইজিকাস এর ইউডোক্সাস, মিশরের হেলেনিস্টিক টলেমিক রাজবংশ এর রাজা টলেমি অষ্টম এর পক্ষে আরব সাগর অন্বেষণ করেছিলেন। পসেইডোনিয়াস (Poseidonius) এর মতে, যা পরে স্ট্র্যাবো'র জিওগ্রাফিতে নথিভুক্ত করা হয়, ১১৮ বা ১১৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সাইজিকাসের ইউডোক্সাস সর্বপ্রথম তার জাহাজ চালনায় ভারত মহাসাগরের মৌসুমী বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করেন । [১৩]

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক হতে কোনো না কোনো আকারে নটিক্যাল চার্ট (Nautical chart) এবং এর লিখিত বণর্না, যা পাল তোলার দিকনির্দেশনা নামে পরিচিত, ব্যবহৃত হয়ে আসছে। [১৪] নটিক্যাল চার্টে স্টেরিওগ্রাফিক এবং অর্থোগ্রাফিক প্রোজেকশন এর ব্যবহার শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক হতে। [১৪]

১৯০০ সালে, অ্যান্টিকিথেরা ধ্বংসাবশেষ হতে উদ্ধার করা হয়েছিল অ্যান্টিকিথেরা যন্ত্রকৌশল । এই যন্ত্রকৌশল বা মেকানিজম খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতকের দিকে নির্মিত হয়েছিল।

ফিনিসিয়া এবং কার্থেজ[সম্পাদনা]

ফিনিশিয়ান এবং তাদের উত্তরসূরি, কার্থাজিনিয়ানরা, বিশেষভাবে পারদর্শী নাবিক ছিলেন এবং দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য উপকূল থেকে দুর দুরান্তে সমুদ্রযাত্রা করতে শিখেছিলেন। তাদের সাহায্য করেছিল শব্দোৎপন্নকারি ওজন নামক একটি যন্ত্র। যন্ত্রটি ছিল ঘণ্টা আকৃতির, পাথর বা সীসা দিয়ে তৈরি, ভিতরে চর্বিযুক্ত এবং লম্বা দড়ির সাথে তা যুক্ত ছিল। গভীর সমুদ্রে জল কতটা গভীর তা নির্ণয় করার জন্য নাবিকরা "শব্দোৎপন্নকারি ওজন" জলে নিমজ্জিত করতো এবং ফলে ভূমি হতে কতটা দূরত্বে তাদের অবস্থান তা তারা অনুমান করতে পারতো। এছাড়াও, লাগানো চর্বি তলদেশ থেকে পলি তুলে আনতো যা বিশেষজ্ঞ নাবিকরা পরীক্ষা করে নির্ধারণ করতে পারতো তাদের অবস্থান। কার্থাজিনিয়ান নাবিক হ্যানো দ্য ন্যাভিগেটর ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জিব্রাল্টার প্রণালী দিয়ে যাত্রা করেছিল বলে জানা যায় এবং সেই সাথে আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূল অন্বেষণ করেছিলো। সকলের মতে অভিযানটি অন্তত সেনেগাল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। [১৫] হ্যানোর অনুসন্ধানের সবচেয়ে দূরবর্তী সীমা মাউন্ট ক্যামেরুন বা গিনির ৮৯০-মিটার (২৯১০-ফুট) মাউন্ট কাকুলিমা ছিল কিনা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। [১৬] তবে, হ্যানোর সামুদ্রিক ভ্রমণের সীমা আরো উত্তরেও হতে পারে, কেননা কেপ চাউনার এর দক্ষিণের অঞ্চলগুলো থেকে ফিরতি ভ্রমণের লিপিবদ্ব তথ্যের ঘাটতি রয়েছে, যা, ১৫ শতকের গোড়ার দিক পর্যন্ত ছিলো, "এখন পর্যন্ত নন প্লাস আল্ট্রা বা ইউরোপীয় ন্যাভিগেশন এর অগম্য সীমা" [১৭] [১৮]

এশিয়া[সম্পাদনা]

দক্ষিণ চীন সাগর এবং ভারত মহাসাগরে, একজন নাবিক দিক বিচার করতে মোটামুটি স্থির মৌসুমি বায়ুর সুবিধা নিতে পারতো। [১৯] বছরে দুবার দীর্ঘ একমুখী যাত্রা সম্ভব করে তুলেছিল এটি। [১৯] ২৬০ খ্রিস্টাব্দে K'ang T'ai (康泰) কর্তৃক লিখিত বইয়ে বর্ণিত আছে ইন্দো-সিথিয়ান (月支— Yuezhi ) ব্যবসায়ীরা ঘোড়া পরিবহনের জন্য ব্যবহার করত সাতটি পাল সহ পো নামক জাহাজ। দ্বীপসমূহ (বা দ্বীপপুঞ্জ) এর মধ্যে মৌসুমী বাণিজ্যের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি, একটি বড় 'পো'তে যা এক মাসের ও বেশি সময় নিতো। [২০] প্রায় ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, নুসান্তারান অস্ট্রোনেশিয়ান তানজা পাল এবং জাঙ্ক পাল তৈরি করেন। এই ধরনের পালের উদ্ভাবন আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের চারপাশে জাহাজ চলাচল সম্ভব করে তোলে, কারণ তাদের বাতাসের বিপরীতে পাল তোলার সামর্থ ছিল। [২১] সিএ. ২০০ খ্রিস্টাব্দে হান রাজবংশ এর সময়ে চীনে উদ্ভাবিত হয় চুয়ান ( জাঙ্ক জাহাজ )। [Note ৩] সিএ. ৫০-৫০০ খ্রিস্টাব্দে মালয় এবং জাভানিজ বাণিজ্য বহর মাদাগাস্কারে পৌঁছে। সাথে নিয়ে আসে মা'আনিয়ান দায়াক জনগণকে, শ্রমিক ও দাস হিসেবে। [২৩] [২৪] [২৫] মালাগাসি ভাষা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব বারিটো ভাষা হতে, এবং মা'আনিয়ান ভাষা তার নিকটতম আত্মীয়, অসংখ্য মালয় এবং জাভানিজ শব্দ ধার সহ। [২৬] [২৭] খ্রিস্টীয় ৮ম বা ৯ম শতকের মধ্যে, প্রাচীন ইন্দোনেশিয়ান জাহাজগুলো ইতোমধ্যে হয়তো ঘানা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, সম্ভবত মাস্তুল সহ বোরোবুদুর জাহাজ এবং কুন-লুন পো বা জং জাহাজ ব্যবহার করে। [২৮]

নেভিগেশনের মধ্যযুগীয় যুগ[সম্পাদনা]

ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে দ্য হুইপল মিউজিয়াম অব দ্য হিস্ট্রি অফ সায়েন্সের রক্ষিত ১৮ শতকের একটি পারস্য অ্যাস্ট্রোল্যাব।
আইসল্যান্ড স্পার, সম্ভবত আইসল্যান্ডের মধ্যযুগীয় সানস্টোন, যা আকাশে সূর্যের সন্ধান করত যখন তা দৃষ্টিগোচোর হতো না।

নৌচলাচলের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে আরব সাম্রাজ্য, এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগর থেকে পূর্বে ভারত মহাসাগর ও চৈনিক সাগর পর্যন্ত বাণিজ্য নেটওয়ার্ক বিস্তীর্ণ করে। [২৯] ইসলামিক অঞ্চলগুলিতে নীল, টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস ছাড়া নৌ চলাচল যোগ্য নদী খুব একটা দেখা যায় না, তাই সমুদ্রপথে পরিবহন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চৌম্বক কম্পাস এবং কামাল নামে পরিচিত একটি সাধারণ যন্ত্র ইসলামিক ভূগোল এবং নৌচালনবিদ্যায় ব্যবহৃত হতো, যা সেলেস্টিয়াল নেভিগেশন এবং নক্ষত্রের উচ্চতাঅক্ষাংশ পরিমাপে সহায়তা করতো। কামাল তৈরী করা ছিলো খুবই সহজ। এটি ছিলো হাড় বা কাঠের তৈরী একটি আয়তাকার টুকরো যার সাথে সংযুক্ত ছিল ৯টি পরপর গিঁট যুক্ত একটি তার বা দড়ি। চতুষ্কন নামে অপর একটি যন্ত্রও আরবরা তৈরী করে। এছাড়াও ছিলো একটি সেলেস্টিয়াল নেভিগেশন যন্ত্র, যা মূলত উদ্ভাবন করা হয়েছিল জ্যোতির্বিদ্যার জন্য এবং পরে নেভিগেশনে ব্যবহৃত হয়। [৩০] এগুলোর সাথে সমসাময়িক বিশদ মানচিত্র ব্যবহার করে নাবিকরা বার বার উপকূল বরাবর ঘুরপাক নে খেয়ে বরং সমুদ্র পারি দিতে সক্ষম হতো। যাইহোক, উন্মুক্ত আটলান্টিক মহাসাগরে পাল তোলার কোন ইতিহাস তাদের নেই বরং তাদের কার্যকলাপ ভূমধ্যসাগর, লোহিত সাগর, পারস্য উপসাগর, আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত কেন্দ্রীভূত ছিল। [৩১] ১৫ শতক হতে পর্তুগিজরা এবং পরবর্তীতে বাকি আইবেরিয়ানরা দূর-দূরত্বের ভ্রমণের জন্য ক্যারাভেল জাহাজ তৈরী ও ব্যবহার করা শুরু করে। এছাড়াও আন্দালুসিয়ান অভিযাত্রীরা ১৩ শতক হতে কারিব ব্যবহার করা শুরু করে।[৩২]

বহু শতক ধরে ভারত ও এর প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমুহের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যে সমুদ্রপথ ব্যবহৃত হতো যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাবের জন্য দায়ী। শক্তিশালী নৌবাহিনীর মধ্যে ছিল মৌর্য, সাতবাহন, চোলা , বিজয়নগর, কলিঙ্গ, মারাঠা এবং মুঘল সাম্রাজ্য

ভাইকিংরা পোলারাইজেশন এবং সানস্টোন ব্যবহার করে সূর্যের অবস্থান নির্ণয় করে তাদের জাহাজ পরিচালনা করতো, এমনকি সম্পূর্ণ মেঘলা আকাশেও। আইসল্যান্ডের ১৩-১৪-শতকের বিভিন্ন লিখিত সূত্রে এই বিশেষ খনিজটির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কয়েক শতক পর কার্বন-ডেটিং এ জানা যায়, ১১ শতকের প্রথম দিকে সর্ব উত্তরের নিউফাউন্ডল্যান্ডে লা'নসে অক্স মেডোজ (L'Anse aux Meadows)-এ ছোট আকারে নর্স (নরওয়েজিয়ান) বসতি প্রতিষ্ঠিত হয়। [৩৩]

চীনে ১০৪০ থেকে ১১১৭ সালের মধ্যে চৌম্বক কম্পাস তৈরি হয় এবং নেভিগেশনে ব্যবহৃত হয়। [৩৪] আবহাওয়ার কারনে যখন আকাশের দৃশ্যমানতা কম থাকে তখনো এটি নাবিকদের জাহাজ চালিয়ে যেতে সাহায্য করে। শুষ্ক বাক্সে একটি পিভটিং সুচ ব্যবহার করে সত্যিকারের নৌ কম্পাস ১৩০০ সালের পরে ইউরোপে উদ্ভাবিত হয় [১৯] [৩৫]

পোর্টোলান চার্ট নামে নটিক্যাল চার্ট ১৩ শতকের শেষের দিকে ইতালিতে দেখা যায়। [৩৬] যদিও, তাদের ব্যবহার দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে হয় না, কেননা ১৪৮৯ সালের আগ পর্যন্ত কোন ইংরেজ জাহাজে নটিক্যাল চার্ট ব্যবহারের কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি [৩৬]

অন্বেষণের কাল (এইজ অব এক্সপ্লোরেশন)[সম্পাদনা]

ফ্রা মাউরো মানচিত্র, "মধ্যযুগীয় কার্টোগ্রাফির সর্বশ্রেষ্ঠ স্মারক হিসাবে বিবেচিত"। রবার্তো আলমাগিয়া [৩৭] অনুসারে এটি একটি মানচিত্র যা ১৪৫৭ থেকে ১৪৫৯ সালের মধ্যে ভেনিসিয়ান সন্ন্যাসী ফ্রা মাউরো তৈরি করেন। এটি একটি বৃত্তাকার প্ল্যানিসফিয়ার যা পার্চমেন্টে আঁকা এবং প্রায় দুই মিটার ব্যাসের একটি কাঠের ফ্রেমে স্থাপন করা হয়েছে ।
ক্রস-স্টাফ ছিল আধুনিক সামুদ্রিক সেক্সট্যান্টের একটি প্রাচীন অগ্রদূত।
"ন্যাভিগেশনের আলো", ডাচ পালতোলা হ্যান্ডবুক, ১৬০৮, যা কম্পাস, বালিঘড়ি, সমুদ্রের অ্যাস্ট্রোলেব, টেরেস্ট্রিয়াল এবং সেলেস্টিয়াল (মহাকাশীয়) গ্লোব, ডিভাইডার, জ্যাকবের স্টাফ এবং অ্যাস্ট্রোল্যাব দেখাচ্ছে।
আমেরিকার মোটামুটি নির্ভুল মানচিত্র, আঁকা হয়েছিল ১৭ শতকের গোড়ার দিকে।

১৫ শতকের গোড়ার দিকে পর্তুগালের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ইউরোপীয়ানদের জন্য হাতেকলমে নৌচালনবিদ্যায় স্বতন্ত্র অগ্রগতির যুগ সুচনা করে। [১৯] ইনফ্যান্ট হেনরিক (পরে "হেনরি দ্য ন্যাভিগেটর" নামে পরিচিত) কর্তৃক প্রেরিত এই অনুসন্ধান ও বাণিজ্যিক অভিযানগুলো ১৪১৮ সালে প্রথমে পোর্তো সান্তো দ্বীপ (মাদেইরার সন্নিকটে) আবিষ্কার করে, ১৪২৭ সালে আজোরস পুনঃআবিষ্কার, ১৪৪৭ সালে কেপ ভার্দে দ্বীপপুঞ্জ এবং ১৪৬২ সালে সিয়েরা লিওন আবিষ্কার করে [১৯]

সামুদ্রিক অভিযাত্রাগুলোতে অভিজ্ঞতালব্দ পর্যবেক্ষণের সাথে, বায়ু ও স্রোত প্রবাহের ভৌগলিকচিত্র একত্রিত করে, পর্তুগিজ অভিযাত্রীরা দীর্ঘ দূরত্বে মহাসাগরীয় নেভিগেশনে নেতৃত্ব দেয়, [৩৮] ১৬ শতকের শুরুর দিকে, এবং পরবর্তিতে চালু করে, আটলান্টিকক, ভারত ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর, উত্তর আটলান্টিক ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে জাপান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত সমুদ্রপথযাত্রার একটি নেটওয়ার্ক।

আটলান্টিক পারি দেয়ার পর্তুগিজ প্রচেষ্টা, পদ্ধতিগত বৈজ্ঞানিক বৃহৎ প্রকল্পের প্রথম উদাহরণ, যা বহু দশক ধরে চলমান ছিলো। পরীক্ষামূলক এই প্রোগ্রামটিতে ব্যতিক্রমী সামর্থ সম্পন্ন বহু সংখ্যক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়। প্রোগ্রামটিতে ছিলো সুনির্দিষ্ট কতগুলো উদ্দেশ্য এবং উন্মুক্ত ছিল সফলতার সাথে উদ্দেশ্যগুলোর পরীক্ষামূলক নিশ্চিতকরণ, ব্যর্থতায় পরবর্তী নেভিগেশন পরিচালনা।

প্রারম্ভিক সময়কাল - আটলান্টিকে পর্তুগিজ অনুসন্ধানঃ ডুয়ার্তে পাচেকো পেরেইরা[সম্পাদনা]

ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ (বা বুজডোর এর দক্ষিণ) হতে শুধুমাত্র পালতুলে নৌপথে চলাচলের প্রধান বাধা ছিলো বায়ু এবং স্রোতের প্রবাহের পরিবর্তনঃ উত্তর-আটলান্টিক বলয় (gyre) এবং নিরক্ষীয় বিপরীতমুখী স্রোত [৩৯] আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম স্ফীতি বরাবর দক্ষিণে ঠেলে দিতো। উত্তর-পূর্ব বাণিজ্য বায়ু দক্ষিণ-পূর্ব বাণিজ্য বায়ুর সাথে যেখানে মিলিত হতো (ডলড্রাম বা নিরক্ষরেখার কাছাকাছি যে অঞ্চলে কখনো শান্ত আবহাওয়া থাকে কখনো আচমকা ঝড় বা অপ্রত্যাশিত মৃদু বাতাস বয়) অনিশ্চিত বাতাস সেথায় একটি পালতোলা জাহাজকে স্রোতের করুণার উপর ছেড়ে দিতো।[৪০] প্রবাহিত স্রোত এবং বায়ু একসাথে উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়াকে খুব কঠিন বা অসম্ভব করে তুলতো। এই প্রেক্ষিতে, পর্তুগিজরা দুটি বৃহৎ স্রোত, ভোল্টা ডো মার (আক্ষরিক অর্থে যা সমুদ্রের বাক এবং সেই সাথে সমুদ্র থেকে ফিরে আসা বুঝায়) আবিষ্কার করে আনুমানিক ১৫ শতকের প্রথমার্ধে এবং শেষের দিকে আবিষ্কার করে উত্তর এবং দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের বাণিজ্য বায়ু। ফলে ভবিষ্যতের আবিষ্কারের যাত্রায়, বিপরীতমুখী বায়ু ও স্রোত এড়িয়ে নতুন বিশ্বে পৌঁছানো এবং ইউরোপে ফিরে আসা ও সেইসাথে পশ্চিমের উন্মুক্ত সমুদ্রে আফ্রিকাকে প্রদক্ষিণ করার পথ সুগম হয়। ১৪২৭ সালে আজোরস দ্বীপপুঞ্জের 'পুনঃআবিষ্কার' দ্বীপটির ক্রমবর্ধমান কৌশলগত গুরুত্ব এবং পশ্চিমাদের ফেরার পথের ব্যাপ্তি প্রকাশ করে কেননা এটি আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল থেকে ফেরার পথে পরে (ক্রমানুসারে যাকে 'ভোল্টা ডি গুইনি' এবং 'ভোল্টা দা মিনা' বলা হয়) এবং ১৪৩৬ সালে, আজোরসের পশ্চিমে সারগাসো সাগরের (সে সময় 'মার দা বাগা' নামেও ডাকা হয়) 'পুনঃআবিষ্কার' হয়, । [৪১] ফিরতি পথে জড়িত সমস্যাগুলো সমাধানের নিমিত্তে, উপকূল এবং খোলা সমুদ্রের অবস্থা বুঝার জন্য একটি পদ্বতিগত অনুসন্ধান করা হয়, যা ১৫ শতকের শেষ পর্যন্ত চলমান ছিলো। এই ধরনের পদ্ধতিগত মানদণ্ডের একটি প্রাথমিক উদাহরণ হলো ডুয়ার্তে পাচেকো পেরেইরা, যিনি নৌপরিচালনাবিদ (navigator), সামরিক কমান্ডার এবং 'এসমেরালডো ডি সিটু অরবিস ' (১৫০৫-১৫০৮) এর বিজ্ঞ লেখক, যেখানে তিনি আফ্রিকান উপকূল এবং দক্ষিণ আটলান্টিকের উন্মুক্ত সমুদ্রে তার এবং অন্যদের অনুসন্ধানের তথ্য লিপিবদ্ব করেছেন।

এসমেরালদোর ভূমিকায়ঃ

"ভূ-বিবরণ বিদ্যা বা কসমোগ্রাফি এবং নাবিকবৃত্তির সাথে জড়িত বিষয়ে আমি যা বলতে চাই (...) ... কিভাবে একটি অন্তরীপ (হেডল্যান্ড) বা স্থান এর বিপরীতে আর একটি বির্স্তীন হয়; এবং এটি এভাবে করতে হয় যাতে এই কাজটি ধারাবাহিকতা এবং প্রশিক্ষণের ভিত্তির উপর নির্ভর করে এবং কিভাবে উপকূল আরো নিরাপদে নেভিগেট করা যায়; এবং একইভাবে সে অঞ্চলের বিষয়ে জ্ঞান এবং কোথায় গভীরতা কম রয়েছে তা জানাও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়; এছাড়াও কিছু স্থানের গভীরতা কত তা দেখার জন্য সাউন্ডারদের সাহায্য নেয়া হয়েছে এবং তলদেশের ভিন্নতা, যদি সেগুলি মাটি বা বালি, বা পাথর, বা নুড়ি, বা তীক্ষ্ণ ধার, বা খোলস (বুরগাও = লিভোনা পিকা) বা এই ধরনের শব্দের গুণমান কী এবং অগভীর অঞ্চল থেকে উপকূলরেখার দূরত্ব কী তা জানা; এবং একইভাবে জোয়ার, যদি তারা আমাদের স্পেনের মতো উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে হয়, অথবা তারা উত্তর এবং দক্ষিণ, বা পশ্চিম এবং পূর্ব, বা উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে হয়, যা বন্দর এবং নদীর মোহনা দিয়ে প্রবেশ এবং প্রস্থান করার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয়; স্থানটি মেরু থেকে কত ডিগ্রি দূরে অবস্থিত এবং বিষুব রেখার সাপেক্ষে অক্ষাংশ কি অর্থাৎ মেরুঅঞ্চল থেকে দুরত্বের পরিমাপও যা থেকে জানা যায়; এবং ইথিওপিয়া (আফ্রিকা) এর মানুষের স্বভাব আচরন এবং তাদের জীবনযাপনের ধরন এবং এই দেশে যে ধরনের বাণিজ্য হতে পারে সে সম্পর্কেও কথা বলব আমি [৪২] [৪৩] [৪৪]

পর্যবেক্ষণসমূহ সংরক্ষনের ভান্ডার ছিল 'রোটিরোস' বা সামুদ্রিক রুট-ম্যাপ। জানামতে প্রাচীনতম রোটিরোস সংগ্রহের সন্ধান পাওয়া যায় ভ্যালেনটিম ফার্নান্দেস (১৪৮৫) এর বেশ কয়েকটি পাণ্ডূলিপির অংশে যাতে বর্ণিত রয়েছে বর্তমান নাইজেরিয়ার উপকূল হতে নাইজার নদীর ব-দ্বীপ পর্যন্ত অঞ্চলের বর্ণনা। আরো বিবরণ পাওয়া যায় উপরোল্লিখিত 'এসমেরালডো... ' (১৫০৫-০৮)। বেশ কয়েকটি 'রোটিরোস' অন্তর্ভুক্ত হয়েছে João de Lisboa (১৫১৪) এর 'Livro de Marinharia e Tratado da Agulha de Marear' (নাবিকবৃত্তি এবং ম্যাগনেটিক সূঁচের চুক্তিসমূহ)-এ; রোটিরোস অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আন্দ্রে পিরেসের (১৫২০) সম্পাদিত 'রেজিমেন্টো দ্য নাভেগাকাও...' (নেভিগেশন রেজিমেন্ট)-এ; ব্রাজিলের জন্য সম্পাদিত পেরো লোপেস দে সুসা (১৫৩০-৩০)-এ; Diogo de Afonso এর সম্পাদিত 'Roteiro da Carreira da Índia' (ভারত অভিমুখী/থেকে ভ্রমণের রুট-বুক) (১৫৩৬); এবং ডি. জোয়াও দে কাস্ত্রোর রোটেইরোস (নীচে দেখুন): লিসবন থেকে গোয়া (১৫৩৮), গোয়া থেকে দিউ (উত্তর পশ্চিম ভারত) (১৫৩৮-৩৯), এবং লোহিত সাগর (১৫৪১) [৪৫]


গৃহীত অন্বেষণের ব্যাপ্তি 'এসমেরালডো... ' তে দ্বিতীয় অধ্যায়ের ২য় পৃষ্ঠায় পূনরায় বর্ণনা করা হয়েছেঃ

"...আমাদের প্রভুর বছর ১৪৯৮ সালে, জাহাপনা আপনি সমুদ্রের বিশালতা অতিক্রম করার জন্য পশ্চিম অঞ্চলটি অন্বেষণ করতে আমাদের আদেশ করেন; যেখানে অন্বেষণ অনেকগুলি বৃহৎ সংলগ্ন দ্বীপগুলোর সাথে একটি খুব বড় দৃঢ় ভূমি পাওয়া যায়, যা সত্তর ডিগ্রী অক্ষাংশ থেকে বিস্তৃত হবে নিরক্ষীয় রেখা থেকে আর্কটিক মেরু (...) এর দিকে এবং আরো আটাশ ডিগ্রী অক্ষাংশ অতিক্রম করবে বিষুব রেখা থেকে অ্যান্টার্কটিক মেরু (...) বরাবর এবং ইউরোপ বা আফ্রিকার যেকোনো স্থান থেকে সীম্যানশিপের নিয়ম অনুসারে একটি সরল রেখায় সমস্ত মহাসাগর অতিক্রম করবে পশ্চিমে ছত্রিশ ডিগ্রী দ্রাঘিমাংশের জন্য, যা হলো প্রতি ডিগ্রীতে আঠার লিগ গণনা করে ছয়শত চল্লিশ লিগ রুট। " [৪৬] [৪৭]

দক্ষিণ আটলান্টিকের উন্মুক্ত সমুদ্রের অন্বেষণ একটি একক সমুদ্রযাত্রায় করা হয়েছিল এমনটি অসম্ভ ছিলো, বিশেষ করে যখন ১৪৯৭ সালে ভাস্কো দা গামা যে পথটি বেছে নিয়েছিলেন তা ১৫০০ সালে পেড্রো আলভারেস ক্যাব্রালের বেছে নেওয়া পথ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে আলাদা ছিল, কেননা প্রতিটি পথই বেছে নেয়া হয়েছিল ভ্রমনের শুরুতেই। [৪৮] [৪৯] অভিযানগুলোর এই পথ বেছে নেয়া দক্ষিণ আটলান্টিকের বায়ু এবং স্রোতের বার্ষিক পরিবর্তন চক্রকে বুঝতে সহায়তা করে। তদুপরি, সুশৃঙ্খল এই অভিযানগুলোকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল পশ্চিম উত্তর আটলান্টিকের দিকে (Teive, 1454; Vogado, 1462; Teles, 1474; Ulmo, 1486)। [৪৮] জাহাজ সরবরাহ সংক্রান্ত নথিপত্র এবং ১৪৯৩-১৪৯৬ সালের প্রথম দিকে দক্ষিণ আটলান্টিক এর জন্য সূর্যাস্তের সারনির (sun declination tables) ক্রয়াদেশসমুহ , [৫০] একটি সুপরিকল্পিত এবং সুনিয়ন্ত্রিত কর্মযজ্ঞের ইঙ্গিত দেয়। এই পদ্ধতিগত জ্ঞানের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল ছিল ১৪৯৪ সালের টর্দেসিলাস চুক্তি (Treaty of Tordesillas) এর আপস-আলোচনা, যার ফলে সীমানা রেখা ২৭০ লিগ পশ্চিমে (আজোরেসের ১০০ থেকে ৩৭০ লিগ পশ্চিমে) স্থানান্তরিত হয়েছিল ব্রাজিলের উপর পর্তুগিজদের দাবি এবং আটলান্টিকে এর আধিপত্যের দাবীকে সুসংহত করার জন্য ।

পূর্ণতাপ্রাপ্ত সময়কাল - পর্তুগিজ অন্বেষণ ভারতীয়ঃ João de Castro[সম্পাদনা]

১৬ শতকের প্রথম দিকে লিসবন এবং ভারতীয়দের মধ্যে নিয়মিত সমুদ্রযাত্রা ছিল। সুপরিকল্পিত অনুসন্ধানের উত্তোরোত্তর সাফল্যের মাধ্যমে আটলান্টিক বিষয়ে নাবিকদের জ্ঞান বিকশিত হয়েছে, যা ক্রমে ভারত অভিমুখী হয়। এই ক্রিয়াকলাপের সাথে জড়িত ছিলো বেশ কয়েকজন প্রথিতযশা একাডেমিক (গণিতবিদ, কসমোগ্রাফার) পেদ্রো নুনেস (Pedro Nunes) এবং অনুসন্ধানকারী এবং 'প্রধান তদন্তকারী' জোয়াও ডি কাস্ত্রো (João de Castro) (নেভিগেটর, সামরিক কমান্ডার এবং ভারতের ভাইস-রয়); এই ধরনের ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন আন্দ্রে দে রেসেন্দে (Andre de Resende) (পণ্ডিত), জোয়াও দে ব্যারোস (João de Barros) (খ্রিস্টীয় পণ্ডিত), এবং সম্ভবত ড্যামিও দে গোইস (Damião de Gois) (একজন কূটনীতিক, পণ্ডিত এবং ইরাসমাসের বন্ধু)। [৫১] পেড্রো নুনেস (১৫০২-১৫৭৮) এর তাত্ত্বিক গবেষনার ফলে লোক্সোড্রোমিক বক্ররেখার (loxodromic curve) গাণিতিক ডিটারমিনেশন বের কর সম্ভব হয়ঃ যার ফলে একটি দ্বি-মাত্রিক মানচিত্রের উপর উপস্থাপিত গোলক পৃষ্ঠের দুটি বিন্দুর মধ্যে সংক্ষিপ্ততম কোর্স বা পথ, মার্কেটার প্রজেকশন নির্ণয় করার পথ পরিষ্কার হয় . [৫২] [৫৩] পেদ্রো নুনেস তার সমসাময়িক "ট্রিটিজ অফ দ্য স্ফিয়ার" (১৫৩৭) গ্রন্থে বলেছেন যে পর্তুগিজ নৌচলাচল কোনো দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা ছিল না:

"nam se fezeram indo a acertar: mas partiam os nossos mareantes muy ensinados e prouidos de estromentos e regras de astrologia e geometria que sam as cousas que os cosmographos ham dadar apercebidas (...) e leuaua cartas muy particularmente rumadas e na ja as de que os antigos vsauam" (দৈবক্রমে করা হয়নিঃ কিন্তু আমাদের সমুদ্রযাত্রীরা ছিলো সুশিক্ষিত এবং তাদেরকে সরবরাহ করা হতো জ্যোতিষশাস্ত্র (জ্যোতির্বিদ্যা) ও জ্যামিতিক যন্ত্র ও নিয়ম নীতি এবং কসমোগ্রাফাররা যা তাদের প্রদান করতো (...) এবং প্রাচীনদের দ্বারা ব্যবহৃত চার্ট বাদ দিয়ে তারা সঠিক রুটের চার্ট ব্যবহার করতো )। [৫৪]

১৫২৭ সাল থেকে নুনেস ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বস্ততার সাথে পাইলট এবং সিনিয়র নাবিকদের নির্দেশনা দিতেন। [৫২] তদুপরি, নুনেসই জোয়াও ডি কাস্ত্রোর পদ্ধতিগত কাজের অনুসরনে যন্ত্র এবং নির্দেশাবলী তৈরি করেছিলেন, যেমনটি কাস্ত্রো তার বেশ কয়েকটি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। [৫৫] [৫৬] João de Castro এর কাজ ভারত মহাসাগরের (১৫৩৮) সমুদ্রপথে সংঘটিত হয়, বিশেষ করে আরব সাগর হতে পারস্য উপসাগর এবং লোহিত সাগর এর নৌপথে (১৫৩৮-৯ এবং ১৫৪১)। [৪৫] উপকূল, নেভিগেশন, বায়ু এবং স্রোত সম্পর্কে তার গবেষনাময় কাজ ছিলো কঠোর এবং নির্ভুল। আটলান্টিক এবং ভারত মহাসাগরে পৃথিবীর চুম্বকত্বের উপর তার গবেষণার ফলাফল উদযাপন করার মতো ছিলঃ

" ডি. জোয়াও দে কাস্ত্রো অনেকগুলো পরীক্ষা চালিয়েছিলেন, বিশেষ করে চৌম্বকত্ব এবং জাহাজের ডেকে রক্ষিত চৌম্বকীয় সুই সম্পর্কিত, যা চৌম্বকীয় ঘটনা সফলভাবে সনাক্ত করতে পেরেছিলো, । এটা ধরে নেওয়া যায় যে পেড্রো নুনেসের কাছে এই ধরনের জ্ঞান তার ভ্রমণে করা সমস্ত পর্যবেক্ষণের প্রত্যক্ষ অনুপ্রেরণার ফল। যখন ৫ই আগস্ট, ১৫৩৮-এ, ডি. জোয়াও ডি কাস্ত্রো মোজাম্বিকের অক্ষাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন সূঁচের আশ্চর্যজনক নড়নচড়নের কারণ খুঁজে পান তিনি; সূঁচের বিচ্যুতি লক্ষ্য করেছিলেন, নিপ্পের ডেনিস গুইলাউম (১৬৬৬) এর এটি আবিষ্কার করার ১২৮ বছর আগে, যেটি হিস্ট্রি অফ সেইলিং-এ লিপিবদ্ধ হয়েছে, যেন তিনিই এই ঘটনা সম্পর্কে সর্বপ্রথম জানতেন। ২২শে ডিসেম্বর, ১৫৩৮-এ বাকাইমের কাছে একটি স্থানে একটি নতুন চৌম্বকীয় ঘটনা দেখায়, যার জন্য তার সুচ ভিন্ন রিডিং প্রদর্শন করে। চার শতাব্দী পরে নিশ্চিত হওয়া যায় যা নির্দিষ্ট শিলার নৈকট্যের কারণে সংঘটিত হয়েছিলো, যাকে স্থানীয় আকর্ষণ বলা হয়। ডি. জোয়াও দে কাস্ত্রো এই তত্ত্বটি খণ্ডন করেছেন যে চৌম্বক বিচ্যুতির বৈচিত্র ভৌগোলিক মেরিডিয়ান দ্বারা গঠিত হয় না। তার মন্তব্যগুলি, ষোড়শ শতাব্দীতে আটলান্টিক এবং ভারত মহাসাগরের চৌম্বকীয় বিচ্যুতির মানগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড যা স্থলজ চুম্বকত্বের অধ্যয়নে আজও প্রয়োজনীয়। এই শতকে ইউরোপীয় পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব, যা জাহাজ পরিচালনার সাথে এই বৈজ্ঞানিক গবেষণার গুরুত্বকে সংযুক্ত করেছিল। " [৫৭]

পর্তুগালের রাজা দ্বিতীয় জন এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন, তিনি ন্যাভিগেশন কমিটি গঠন করেন। [১৯] এই কমিটি সূর্যের অস্তগামীতার সারণী তৈরী করে এবং মেরিনারের অ্যাস্ট্রোল্যাবকে আরো উন্নত করে, তারা বিশ্বাস করে এটি ক্রস-স্টাফের জন্য একটি ভাল প্রতিস্থাপন। [১৯] এই রিসোর্সগুল সমুদ্রে একজন ন্যাভিগেটরকে তার অক্ষাংশ বিচার করার ক্ষমতাকে বৃদ্বি করে। [১৯] কাস্টিলিয়ান ইহুদি আব্রাহাম জাকুট, হিব্রু ভাষায় জ্যোতির্বিদ্যা/জ্যোতিষশাস্ত্রের উপর একটি ব্যতিক্রমী গ্রন্থের লেখক, যার শিরোনাম হা-জিব্বুর হা-গাদোল, ১৪৯২ সালে পর্তুগালে পালিয়ে যান। তিনি ১৪৯৬ সালে লেইরিয়ার ছাপাখানায় বিউর লুহোথ বইটি বা ল্যাটিন আলমানচ পারপেটুম বইটি প্রকাশ করেন, যা শীঘ্রই ল্যাটিন এবং স্প্যানিশ ভাষায় অনুদিত হয়। এই বইটিতে ১৪৯৭ থেকে ১৫০০ সাল পর্যন্ত জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত সারণীগুলি (এফিমেরাইডস) লিপিবদ্ব ছিলো, এর সাথে সহায়ক হিসাবে ছিলো, ধাতু দিয়ে তৈরি নতুন অ্যাস্ট্রোল্যাব যা আগের মতো কাঠের তৈরী নয় [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] (পর্তুগিজ আবিষ্কারের শুরুতে তৈরি এবং নিখুঁত) যা ব্যবহৃত হয়েছে ভাস্কো দা গামা এবং পেড্রো আলভারেস ক্যাব্রাল তাদের ভারত ভ্রমণে (এছাড়াও দক্ষিণ আমেরিকার যাওয়ার সময়) খোলা আটলান্টিক মহাসাগরের চারপাশে (দক্ষিণ-পশ্চিম আটলান্টিক সহ) এবং ভারত মহাসাগর। তা সত্ত্বেও, পর্তুগিজদের তাদের জাহাজ পরিচালনার জন্য কয়েক দশক ধরে ভারত মহাসাগরে স্থানীয় পাইলট নিয়োগ করতে হয়েছিল। [৫৮]

১৫ এবং ১৬ শতকে, ক্রাউন অব ক্যাস্টিলে এবং পরে "একীভূত" [[ক্রাউন অব স্পেন] ইউরোপীয় বৈশ্বিক অনুসন্ধান এবং ঔপনিবেশিক সম্প্রসারণের অগ্রগামী ভুমিকা পালন করে। স্প্যানিশ ক্রাউন ১৪৯২ সাল থেকে ক্যাস্টিলের পক্ষে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ট্রান্সআটলান্টিক অভিযানগুলি, বিশেষ করে সমুদ্র জুড়ে বাণিজ্য পথ খুলে দেয়। স্পেনের প্রথম চার্লসের অধীনে ক্রাউন অব ক্যাস্টিলে, ১৫২১ সালে বিশ্ব পরিক্রমার প্রথম অভিযানকেও স্পনসর করেছিল। এন্টারপ্রাইজটি (জাহাজটি) পর্তুগিজ ন্যাভিগেটর ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় এবং স্প্যানিশ বাস্ক জুয়ান সেবাস্তিয়ান এলকানো কর্তৃক সমাপ্ত হয়েছিল। অন্বেষণের ট্রিপগুলি আটলান্টিক মহাসাগর জুড়ে স্পেন এবং আমেরিকার মধ্যে এবং প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে এশিয়া-প্যাসিফিক এবং মেক্সিকো হয়ে ফিলিপাইনের মধ্যে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটায়। পরে, আন্দ্রেস দে উর্দানেটা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের ভোল্টা ডো মার রিটার্ন যাত্রা আবিষ্কার করেন।

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের সময়ে একজন নেভিগেটরের কাছে যে সমস্ত সরঞ্জাম ছিল তা হলো কম্পাস, একটি ক্রস-স্টাফ বা অ্যাস্ট্রোল্যাব, পোলারিসের উচ্চতা সংশোধন করার একটি পদ্ধতি এবং প্রাথমিক নটিক্যাল চার্ট । [১৯] টলেমির ভূগোলের উপর তার নোটে, নুরেমবার্গের জোহানেস ওয়ার্নার ১৫১৪ সালে লিখেছিলেন যে ক্রস-স্টাফ একটি খুব প্রাচীন যন্ত্র ছিল, তবে এটি শুরুর দিকে কেবল জাহাজেই ব্যবহার করা হয়েছিল। [৩৬]


১৫৭৭ সালের আগে, জাহাজের গতি বিচার করার কোনো পদ্ধতির উল্লেখ নেই, শুধু মাত্র জাহাজের তরঙ্গের আকার বা সমুদ্রের ফেনা বা বিভিন্ন ভাসমান বস্তুর উত্তরণ পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া । [৫৯] ১৫৭৭ সালে, চিপ লগ নামে একটি উন্নত কৌশলের উল্লেখ করা। [১৯] ১৫৭৮ সালে, একটি যন্ত্রের জন্য পেটেন্ট নিবন্ধিত হয় যা জাহাজের জলরেখার নীচে বসানো চাকার আবর্তন গণনা করে জাহাজের গতি বিচার করবে। [১৯]

দ্রাঘিমাংশ নির্ধারণের জন্য সঠিক সময় রাখা প্রয়োজন। [৩৬] ১৫৩০ সালের প্রথম দিকে, আধুনিক কৌশলগুলির পূর্বসূরিদের সাহায্য নেয়া হয়েছিল। [৩৬] যাইহোক, এই প্রথম দিকের নেভিগেটরদের কাছে পাওয়া সবচেয়ে সঠিক ঘড়ি ছিল জল ঘড়ি এবং বালির ঘড়ি, যেমন বালিঘড়ি[৩৬] ১৮৩৯ সাল পর্যন্ত সময় নির্ধারণের জন্য ব্রিটেনের রয়্যাল নেভি ঘন্টার চশমা ব্যবহার করতো। [৩৬]


ক্রমবর্ধমান অন্বেষণ এবং বাণিজ্যের সাথে ন্যাভিগেশনাল ডেটার ক্রমাগত উন্নয়নের ফলে মধ্যযুগের উৎপাদন আকারে বৃদ্ধি পায়। [১৪] "Routiers" ফ্রান্সে উত্পাদিত হয়েছিল প্রায় ১৫০০; ইংরেজরা তাদের "রুটার" বলে উল্লেখ করেছে। [১৪] ১৫৮৪ সালে লুকাস ওয়াঘেনার স্পিগেল ডার জিভের্ড্ট ( দ্য মেরিনার্স মিরর ) প্রকাশ করেন, যা বেশ কয়েক প্রজন্মের নেভিগেটরদের জন্য এই ধরনের প্রকাশনার মডেল হয়ে ওঠে। [১৪] বেশিরভাগ নাবিকদের কাছে তিনি "ওয়াগনার্স" নামে পরিচিত ছিল। [১৪]

১৫৩৭ সালে, পেদ্রো নুনেস তার ট্রাটাডো দা স্পেরা প্রকাশ করেন। এই বইতে তিনি ন্যাভিগেশন প্রশ্ন সম্পর্কে দুটি মূল বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রথমবারের মতো গাণিতিক টুলস বিষয়টির সাথে যোগ করা হয়। প্রকাশনাটি "তাত্ত্বিক বা বৈজ্ঞানিক নেভিগেশন" নামে নতুন একটি বৈজ্ঞানিক বিষয়ের জন্ম দেয়।

১৫৪৫ সালে, পেদ্রো দে মেদিনাস (Pedro de Medina) আলোড়নসৃষ্টিকারী আর্ট ডি নেভেগার (Arte de navegar) প্রকাশ করেন। বইটি ফরাসি, ইতালীয়, ডাচ এবং ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল। [৩৬]

১৫৬৯ সালে, জেরার্ডাস মার্কেটর প্রথমবারের একটি বিশ্ব মানচিত্র প্রকাশ করেন এমন কার্টোগ্রাফিক অভিক্ষেপে যাতে ধ্রুব-রুম্ব ট্র্যাজেক্টোরিগুলি সরলরেখা হিসাবে প্লট করা হয়। ১৮ শতকের পর থেকে নটিক্যাল চার্টে এই মারকেটর প্রজেকশনটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। [৬০]

১৫৯৪ সালে, দ্য সীম্যানস সিক্রেটস নামে ৮০-পৃষ্ঠার একটি প্যামফলেট প্রকাশ করেন জন ডেভিস যাতে তিনি অন্যান্য বিষয়ের সাথে গ্রেট সার্কেল সেইলিং এর বর্ণনা দেন। [৬১] বলা হয় যে অনুসন্ধানকারী সেবাস্তিয়ান ক্যাবট ১৪৯৫ সালে উত্তর আটলান্টিক অতিক্রমে গ্রেট সার্কেল সেইলিং পদ্ধতি ব্যবহার করেন [৬১] ডেভিস বিশ্বকে ব্যাকস্টাফ এর একটি নতুন সংস্করণও দিয়েছেন, যা ডেভিস কোয়াড্রেন্ট নামে পরিচিত, এবং যা ১৭ শতক থেকে ব্যবহৃত আলোড়নকারী যন্ত্রগুলির মধ্যে একটি ছিল ১৯ শতকে সেক্সট্যান্ট গ্রহণের আগ পর্যন্ত ।

১৫৯৯ সালে, এডওয়ার্ড রাইট ন্যাভিগেশনে কিছু ত্রুটি (Certaine Errors in Navigation) প্রকাশ করেন। বইটিতে রয়েছে মার্কেটর প্রজেকশনের গাণিতিক ভিত্তি ব্যাখ্যা করে পেদ্রো নুনেসের কাজের অনুবাদ, [৬২] সাথে গণনা করা গাণিতিক টেবিল যাতে তা বাস্তবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়। বইটি স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন শুধুমাত্র এই প্রজেকশনের সাথে একটি ধ্রুবক সংশ্লিষ্ট থাকবে একটি চার্টের একটি সরল রেখা সম্পর্কিত হবে। এটি অপরাপর কিছু যন্ত্রের প্যারালাক্স ত্রুটির ঝুঁকি সহ অন্যান্য ত্রুটিসমূহের উৎসগুলো এবং সমসাময়িক চার্টে অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশের ত্রুটিপূর্ণ অনুমানগুলোও বিশ্লেষণ করেছে।

১৫৯৯-১৬০০ সালে, এডওয়ার্ড রাইটের ১৫৯৯ সালের ওয়ার্ল্ড চার্টটি ছিল ইংরেজদের নৌচালনাবিদ্যার জন্য একজন ইংরেজ কর্তৃক অঙ্কিত মার্কেটর প্রজেকশনের অধীনে প্রথম মানচিত্র। মানচিত্রটিতে রানী এলিজাবেথ প্রথম এর প্রিভি সীল রয়েছে; সে সময়ে তার তার রাজ্যের একমাত্র ব্যক্তিগত সীল ছিলো সেটি। অন্যান্য কার্টোগ্রাফির মধ্য একমাত্র মলিনিয়াক্স ১৫৯২ গ্লোব হল তার প্রিভি সিল ছিলো। দুজনেই নোভা অ্যালবিয়নকে (Nova Albion) চিহৃিত করেন, যে ভুমি ক্যাপ্টেন ফ্রান্সিস ড্রেক তার রানীর জন্য দাবি করেছিলেন ৪০ তম সমান্তরাল রেখার উপরে ১৫৭৭-১৫৮০ সালে প্রদক্ষিণকালে his 1577-1580 circumnavigation

১৬৩১ সালে, পিয়েরে ভার্নিয়ার (Pierre Vernier) তার নতুন উদ্ভাবিত কোয়াড্রেন্ট (quadrant) জনস্মুখে আনেন যা ভোগলিক চাপের এক মিনিট দুরত্ব পর্যন্ত নির্ভূল তথ্য প্রদান করতে পারতো। [৬১] তাত্ত্বিকভাবে, এই স্তরের নির্ভুলতা নাবিকদের এক নটিক্যাল মাইলের মধ্যে প্রকৃত অবস্থানের তথ্য দিতে পারে।

১৬৩৫ সালে, হেনরি গেলিব্র্যান্ড চৌম্বক বিচ্যুতির বার্ষিক পরিবর্তনের একটি বিবরণ প্রকাশ করেন। [৬৩]

১৬৩৭ সালে, ৫-ফুট ব্যাসার্ধের একটি বিশেষভাবে নির্মিত জ্যোতির্বিজ্ঞানের সেক্সট্যান্ট (astronomical sextant) ব্যবহার করে, রিচার্ড নরউড চেইন দিয়ে এক নটিক্যাল মাইলের দৈর্ঘ্য পরিমাপ করেছিলেন। [৬৪] তার ২,০৪০ ইয়ার্ডের সংজ্ঞা আধুনিক ইন্টারন্যাশনাল সিস্টেম অফ ইউনিটস (SI) পদ্বতির সংজ্ঞা ২,০২৫.৩৭ ইয়ার্ডের মোটামুটি কাছাকাছি। ৫৯ বছর আগে, ১৫৭৬ সালে নরউডকে চৌম্বক বিনতি আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া হয় [৬৪]

আধুনিক যুগ[সম্পাদনা]

এডমন্ড হ্যালির ১৭০১ সালের মানচিত্র যা প্রকৃত উত্তরমেরু হতে চৌম্বকীয় প্রকরণ চার্টে প্রদর্শন করছে

যুক্তরাজ্যের সমুদ্রে দ্রাঘিমাংশ আবিষ্কারের জন্য কমিশনার (Commissioners for the discovery of longitude at sea) ১৭১৪ সালে গঠিত হয়। [৬৫] এই দলটি (১৮২৮ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল) ন্যাভিগেশন সমস্যার সমাধানের জন্য অনুদান এবং পুরস্কার প্রদান করতো। [৬৫] ১৭৩৭ থেকে ১৮২৮ সালের মধ্যে কমিশনার প্রায় ১০১,০০০ পাউন্ড বিতরণ করেছিলেন। [৬৫] যুক্তরাজ্যের সরকার সে সময়ে নৌচলাচলের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের জন্য পুরস্কারও ঘোষনা করেছিল, যেমন উত্তর-পশ্চিম প্যাসেজ (Northwest Passage) আবিষ্কারের জন্য £২০,০০০ এবং উত্তর মেরুর অক্ষাংশের এক ডিগ্রির সীমানায় নৌযান চালাতে পারলে তার জন্য £৫,০০০। [৬৫] ১৮শ শতকের একটি বিস্তৃত ম্যানুয়াল ছিল জন ব্যারো এর ন্যাভিগেটিও ব্রিটানিকা, যা ১৭৫০ সালে মার্চ এন্ড পেজ কর্তৃক প্রকাশিত হয়। ১৭৮৭ সালেও এর বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতো[৬৬]

আইজ্যাক নিউটন ১৬৯৯ সালের দিকে আয়না (reflecting quadrant) আবিষ্কার করেন [৬৭] তিনি এডমন্ড হ্যালির জন্য একটি ডিজাইনকৃত যন্ত্রের বিশদ বিবরণ লিখেছিলেন, যা ১৭৪২ সালে প্রকাশিত হয়। এই সময়ের ব্যবধানের কারণে, উদ্ভাবনের কৃতিত্ব প্রায়শই জন হ্যাডলি এবং টমাস গডফ্রে-কে দেওয়া হয়েছে। অক্ট্যান্ট শেষ পর্যন্ত আগের ক্রস-স্টাফ এবং ডেভিস কোয়াড্রেন্টগুলোকে প্রতিস্থাপন করে, [৬৫] এবং অক্ষাংশকে আরও নির্ভুলভাবে গণনা করতে সক্ষম হয়।

দ্রাঘিমাংশকে সঠিকভাবে নির্ণয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অবদান হলো সামুদ্রিক ক্রোনোমিটার (marine chronometer) এর আবিষ্কার। জন হ্যারিসন নামে একজন ইয়র্কশায়ার ছুতার সমুদ্রে দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়ের একটি কার্যকর পদ্ধতি আবিস্কারের জন্য ১৭১৪ সালে ঘোষিত দ্রাঘিমাংশ পুরস্কার জিতেছিলেন। ১৭৩০ তিনি সালে একটি প্রকল্প জমা দেন এবং ১৭৩৫ সালে স্প্রিং দ্বারা সংযুক্ত কয়েকটি কাউন্টার-অসিলেটিং ওয়েটেড বিমের উপর ভিত্তি করে একটি ঘড়ি তৈরী করেন যার গতি মাধ্যাকর্ষণ বা জাহাজের গতি দ্বারা প্রভাবিত হয় না। তার প্রথম দুটি সামুদ্রিক টাইমপিস H1 এবং H2 (১৭৪১ সালে সমাপ্ত) এই সিস্টেমটি ব্যবহার করেছিল, কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তাদের মৌলিক সংবেদনশীলতা রয়েছে কেন্দ্রাতিগ বলের (centrifugal force) উপর, যার অর্থ সমুদ্রে তারা কখনই যথেষ্ট নির্ভুল হতে পারবে না। হ্যারিসন ১৭৬১ সালে নির্ভুলতা সমস্যার সমাধান করেছিলেন তার অনেক ছোট H4 ক্রোনোমিটার ডিজাইনের মাধ্যমে । H4 দেখতে অনেকটা পাঁচ ইঞ্চি (12 সেমি) ব্যাসের বড় পকেট ঘড়ির মতো। ১৭৬১ সালে, হ্যারিসন ২০,০০০ পাউন্ড দ্রাঘিমাংশ পুরস্কারের জন্য H4 জমা দেন। তার ডিজাইনে একটি দ্রুত-কম্পমান ব্যালেন্স হুইল ব্যবহার করা হয়েছে যা তাপমাত্রা-পূরনীয় (temperature-compensated) স্পাইরাল স্প্রিং দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। স্থিতিশীল ইলেকট্রনিক অসিলেটর (electronic oscillator) এর মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে অত্যন্ত নির্ভূল পোর্টেবল টাইমপিস তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত এই বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। ১৭৬৭ সালে, বোর্ড অফ দ্রাঘিমাংশ (Board of Longitude) তার কাজের একটি বর্ণনা প্রকাশ করে দ্য প্রিন্সিপলস অফ মিস্টার হ্যারিসন'স টাইম-কীপার (The Principles of Mr. Harrison's time-keeper)-এ ।

১৭৫৭ সালে, জন বার্ড (John Bird) প্রথম সেক্সট্যান্ট আবিষ্কার করেন। নেভিগেশনের প্রধান যন্ত্র হিসাবে ডেভিস কোয়াড্রেন্ট এবং অক্ট্যান্টকে প্রতিস্থাপন করে এটি । অক্ট্যান্ট থেকে সেক্সট্যান্টটি তৈরী করা হয়েছিল চন্দ্র দূরত্ব পদ্ধতির (lunar distance method) জন্য । চন্দ্র দূরত্ব পদ্ধতির সাহায্যে, নাবিকরা তাদের দ্রাঘিমাংশ সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারতো। ১৮ শতকের শেষের দিকে ক্রোনোমিটার উৎপাদন শুরু হলে, সঠিকভাবে দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়ের জন্য ক্রোনোমিটারের ব্যবহার একটি কার্যকর বিকল্প পদ্বতি হিসাবে চালু হয়। [৬৫] [৬৮] ১৯ শতকের শেষের দিকে ক্রোনোমিটারের ব্যাপক ব্যবহারে চন্দ্র দূরত্ব পদ্ধতিকে প্রতিস্থাপন করে। [৫৯]

১৮৯১ সালে বেতার (রেডিও), তারহীন টেলিগ্রাফ আকারে, সামুদ্রিক জাহাজে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। [৬৯]

১৮৯৯ সালে আরএফ ম্যাথিউস সমুদ্রে সহায়তার অনুরোধ জানানোর জন্য বেতার যোগাযোগ ব্যবহার করা প্রথম জাহাজ ছিল। [৬৯] দিকনির্দেশনা নির্ধারণের জন্য রেডিও ব্যবহার নিয়ে গবেষনা পরিচালনা করেছিলেন "ইংল্যান্ডের স্যার অলিভার লজ (Oliver Lodge) ; ফ্রান্সের আন্দ্রে ব্লন্ডেল; লি ডি ফরেস্ট (De Forest), পিকার্ড এবং স্টোন (Stone), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; এবং ইতালির বেলিনি ও তোসি।" [৭০] [৭০] স্টোন রেডিও অ্যান্ড টেলিগ্রাফ কোম্পানি ১৯০৬ সালে নেভাল কোলারে লেবাননে রেডিও দিকনির্দেশক (radio direction finder) এর একটি প্রাথমিক প্রোটোটাইপ স্থাপন করেছিল।

১৯০৪ সাল নাগাদ জাহাজগুলোতে সময় সংকেত পাঠানো হয়েছিল ন্যাভিগেটরদের তাদের ক্রোনোমিটার পরীক্ষা করার জন্য । [৭১] ইউএস নেভি হাইড্রোগ্রাফিক অফিস ১৯০৭ সাল নাগাদ সমুদ্রে জাহাজে নৌচলাচল সংক্রান্ত সতর্কতা পাঠাচ্ছিল [৭১]

পরবর্তী উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক সাইনপোস্ট হিসাবে কাজ করার জন্য তীরের কাছাকাছি বাতিঘর এবং বয়া (buoy) স্থাপন করা, যা অস্পষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলোকে তুলে ধরে, বিপদগুলোকে চিহ্নিত করে এবং দীর্ঘ সমুদ্র ভ্রমণের পরে উপকূলের সন্নিকটে আসা জাহাজগুলোর জন্য নিরাপদ চ্যানেলের দিক নির্দেশনা দেয়। বাতিঘরে গ্যাস সঞ্চয়কারক এর সংমিশ্রণে ব্যবহার করার জন্য স্বয়ংক্রিয় ভালভ আবিষ্কারের জন্য ১৯১২ সালে নিলস গুস্তাফ ডালেনকে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। [৭২]

১৯২১ প্রথম রেডিওবীকন স্থাপন করা হয়। [৭১]

শিপবর্ন রাডার সিস্টেম এর প্রথম প্রোটোটাইপ ইউএসএস লিয়ারিতে ১৯৩৭ সালের এপ্রিল মাসে স্থাপন করা হয় [৭৩]

১৮ই নভেম্বর ১৯৪০-এ, মিঃ আলফ্রেড এল. লুমিস ইলেকট্রনিক এয়ার নেভিগেশন সিস্টেমের প্রাথমিক ধারনা দেন যা পরে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির রেডিয়েশন ল্যাবরেটরি কর্তৃক LORAN (লং রেঞ্জ নেভিগেশন সিস্টেম) হিসাবে বাস্তবায়ন করে, [৭৪] এবং নভেম্বর ১, ১৯৪২, চেসাপিক কেপস (Chesapeake Capes) এবং নোভা স্কোশিয়া এর মধ্যে অবস্থিত চারটি স্টেশনের সাথে প্রথম লরান সিস্টেম চালু করা হয়। [৭৪]

১৯৪৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মানচিত্র যা সে সময় পরিচিত প্রথিবীর মহাসাগরীয় স্রোত এবং বরফের প্যাকগুলোকে চিহৃিত করেছে।

১৯৫৭ সালের অক্টোবরে, সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক উৎক্ষেপণ করে। [৭৫] জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা স্পুটনিকের ডপলার শিফট অনেকগুলো সিরিজে পরিমাপ করেন যাতে উপগ্রহের অবস্থান এবং বেগ পাওয়া যায়। [৭৫] এই দলটি স্পুটনিক এবং মহাকাশে পরবর্তী উপগ্রহগুলি, স্পুটনিক II এবং এক্সপ্লোরার I পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। ১৯৫৮ সালের মার্চ মাসে পরিচিত উপগ্রহ কক্ষপথ ব্যবহার করে পৃথিবীর পৃষ্ঠে একটি অজানা অবস্থান নির্ধারণের জন্য ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশনের ধারণা নিয়ে অন্বেষণ করা শুরু হয়। [৭৫] এটি TRANSIT স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম উন্নয়ন করে। [৭৫] ১৯৬০ সালে প্রথম ট্রানজিট স্যাটেলাইটটি মেরু কক্ষপথে স্থাপন করা হয় [৭৫] ৭টি স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত সিস্টেমটি ১৯৬২ সালে চালু করা হয় [৭৫] এজন ন্যাভিগেটর তিনটি উপগ্রহ থেকে রিডিং নিয়ে প্রায় ৮০ ফুট নির্ভুলতায় তার অবস্থান বের করতে পারে। [৭৫]

প্রথম প্রোটোটাইপ ন্যাভস্টার (Navstar) জিপিএস স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছিল ১৪ জুলাই, ১৯৭৪-এ, কিন্তু উৎক্ষেপণের পরপরই এর ঘড়ি অকার্যকর হয়ে পড়ে। [৭৫] সিজিয়াম ঘড়ি দিয়ে পুনরায় ডিজাইন করা ন্যাভিগেশনাল টেকনোলজি স্যাটেলাইট ২, ২৩ জুন, ১৯৭৭ এ কক্ষপথে স্থাপন করা হয় [৭৫] ১৯৮৫ সালের মধ্যে, প্রথম ১১-স্যাটেলাইট এর জিপিএস ব্লক-প্রথম কক্ষপথে স্থাপিত হয়। [৭৫]

অনুরূপভাবে রাশিয়ান গ্লোনাস (GLONASS) সিস্টেমের স্যাটেলাইটগুলি ১৯৮২ সালে কক্ষপথে স্থাপন করা শুরু হয় এবং ২০১০ সালের মধ্যে সিস্টেমটিতে মোট ২৪টি স্যাটেলাইট এর পুঞ্জ থাকবে বলে আশা করা হয়েছিল [৭৫] ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ২০১১-১২ সালের মধ্যে ৩০টি স্যাটেলাইট সহ তার উপগ্রহ ন্যাভিগেশন সিস্টেম গ্যালিলিওকেও স্থাপন করবে বলে আশা করা হয়েছিলো। [৭৫] [হালনাগাদ প্রয়োজন][৭৫]

ইন্টিগ্রেটেড ব্রিজ সিস্টেমস[সম্পাদনা]

ভবিষ্যত নেভিগেশন সিস্টেম পরিকল্পনায় ইলেকট্রনিক ইন্টিগ্রেটেড ব্রিজ ধারণার (Electronic integrated bridge concepts) উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। [৭৬] ইন্টিগ্রেটেড (সমন্বিত) সিস্টেমগুলো জাহাজের বিভিন্ন সেন্সর থেকে ইনপুট নেয়, ইলেকট্রনিকভাবে পজিশনিং এর তথ্য প্রদর্শন করে এবং একটি প্রিসেট কোর্সে জাহাজের গতি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ সংকেত প্রদান করে। [৭৬] ন্যাভিগেটর একজন সিস্টেম ম্যানেজার হিসাবে কাজ করে, সিস্টেম প্রিসেট নির্বাচন করা, সিস্টেম আউটপুট বোঝা এবং জাহাজের রেসপন্স নজরদারি (মনিটরিং) করা। [৭৬]

মন্তব্য[সম্পাদনা]

  1. The precise time of Austronesians reaching Madagascar is unknown, at the earliest is the earliest centuries BCE (Blench, “The Ethnographic Evidence for Long-distance Contacts”, p. 432.), the latest is no earlier than 7th century CE (Adelaar, “The Indonesian Migrations to Madagascar”, p. 15.).
  2. The theoretical existence of a Frigid Zone where the nights are very short in summer and the sun does not set at the summer solstice was already known. Similarly reports of a country of perpetual snows and darkness (the country of the Hyperboreans) had been reaching the Mediterranean for some centuries. Pytheas is the first known scientific visitor and reporter of the arctic.
  3. Chinese vessels during this era were essentially fluvial (riverine), they did not build true ocean-going fleets until the 10th century Song dynasty. A UNESCO study argues that the Chinese were using square sails during the Han dynasty; only in the 12th century did the Chinese adopt the Austronesian junk sail.[২২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

  1. Bellwood, Peter; Fox, James J. (২০০৬)। The Austronesians: Historical and Comparative Perspectives। Australian National University Press। আইএসবিএন 9781920942854 
  2. Mahdi, Waruno (১৯৯৯)। "The Dispersal of Austronesian boat forms in the Indian Ocean"। Archaeology and Language III: Artefacts languages, and texts। One World Archaeology। Routledge। পৃষ্ঠা 144–179। আইএসবিএন 0415100542 
  3. Bloomberg, 1678:793
  4. Bloomberg, 1997:77
  5. Homer, Odyssey, 273-276
  6. Bloomberg, 1997:72
  7. Taylor, 1971:12
  8. Taylor, 1971:10
  9. Taylor, 1971:43
  10. Taylor, 1971:46-47
  11. Bilic, 2009:126
  12. Bunbury ও Beazley 1911.
  13. Strabo's Geography - Book II Chapter 3, LacusCurtius.
  14. Bowditch, 2003:2.
  15. Donald Harden, The Phoenicians, Penguin Books, Harmondsworth, page 168
  16. B.H. Warmington, op. cit., page 79
  17. John Locke, "The works of John Locke: in nine volumes, Volume 9" The history of navigation, p. 385, Printed for C. and J. Rivington, 1824
  18. ROBERT KERR, F.R.S. & F.A.S.- GENERAL HISTORY and COLLECTION of VOYAGES and TRAVELS, ARRANGED in SYSTEMATIC ORDER: Forming a Complete History of the Origin and Progress of Navigation, Discovery, and Commerce, by Sea and Land, from the Earliest Ages to the Present Time. Edin. (1755-1813)
  19. Martin 1911.
  20. Christie, Anthony (১৯৫৭)। "An Obscure Passage from the "Periplus: ΚΟΛΑΝΔΙΟϕΩΝΤΑ ΤΑ ΜΕΓΙΣΤΑ"": 345–353। ডিওআই:10.1017/S0041977X00133105 – JSTOR-এর মাধ্যমে। 
  21. Mahdi, Waruno (১৯৯৯)। "The Dispersal of Austronesian boat forms in the Indian Ocean"। Archaeology and Language III: Artefacts languages, and texts। One World Archaeology। Routledge। পৃষ্ঠা 144–179। আইএসবিএন 0415100542 
  22. Pham, Charlotte Minh-Hà L. (২০১২)। "Unit 14: Asian Shipbuilding (Training Manual for the UNESCO Foundation Course on the Protection and Management of the Underwater Cultural Heritage)"। Training Manual for the UNESCO Foundation Course on the Protection and Management of Underwater Cultural Heritage in Asia and the Pacific। Bangkok: UNESCO Bangkok, Asia and Pacific Regional Bureau for Education। পৃষ্ঠা 20-21। আইএসবিএন 978-92-9223-414-0 
  23. Dewar, Robert E.; Wright, Henry T. (১৯৯৩)। "The culture history of Madagascar": 417–466। ডিওআই:10.1007/bf00997802  |hdl-সংগ্রহ= এর |hdl= প্রয়োজন (সাহায্য)
  24. Burney DA, Burney LP, Godfrey LR, Jungers WL, Goodman SM, Wright HT, Jull AJ (আগস্ট ২০০৪)। "A chronology for late prehistoric Madagascar": 25–63। ডিওআই:10.1016/j.jhevol.2004.05.005পিএমআইডি 15288523 
  25. Kumar, Ann (2012). 'Dominion Over Palm and Pine: Early Indonesia’s Maritime Reach', in Geoff Wade (ed.), Anthony Reid and the Study of the Southeast Asian Past (Singapore: Institute of Southeast Asian Studies), 101–122.
  26. Otto Chr. Dahl, Malgache et Maanjan: une comparaison linguistique, Egede-Instituttet Avhandlinger, no. 3 (Oslo: Egede-Instituttet, 1951), p. 13.
  27. There are also some Sulawesi loanwords, which Adelaar attributes to contact prior to the migration to Madagascar: See K. Alexander Adelaar, “The Indonesian Migrations to Madagascar: Making Sense of the Multidisciplinary Evidence”, in Truman Simanjuntak, Ingrid Harriet Eileen Pojoh and Muhammad Hisyam (eds.), Austronesian Diaspora and the Ethnogeneses of People in Indonesian Archipelago, (Jakarta: Indonesian Institute of Sciences, 2006), pp. 8–9.
  28. Dick-Read, Robert (২০০৫)। The Phantom Voyagers: Evidence of Indonesian Settlement in Africa in Ancient Times। Thurlton। পৃষ্ঠা 41–42। 
  29. Subhi Y. Labib (1969), "Capitalism in Medieval Islam", The Journal of Economic History 29 (1), p. 79-96.
  30. ThinkQuest: Library, “Early Navigational Instruments,” http://library.thinkquest.org/C004706/contents/1stsea/nap/page/n-2.html# ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১১-০৮-০৮ তারিখে
  31. Christides, Vasilios (1988). "Naval History and Naval Technology in Medieval Times the Need for Interdisciplinary Studies". Byzantion. 58 (2): 309–332. JSTOR 44171055.
  32. John M. Hobson (2004), The Eastern Origins of Western Civilisation, p. 141, Cambridge University Press, আইএসবিএন ০৫২১৫৪৭২৪৫.
  33. Boissoneault, Lorraine (২৩ জুলাই ২০১৫)। "L'Anse Aux Meadows & the Viking Discovery of North America"JSTOR Daily 
  34. Li Shu-hua, “Origine de la Boussole 11. Aimant et Boussole,” Isis, Vol. 45, No. 2. (July 1954), p.181
  35. Frederic C. Lane, “The Economic Meaning of the Invention of the Compass,” The American Historical Review, Vol. 68, No. 3. (April 1963), p.615ff.
  36. Martin 1911.
  37. Almagià, discussing the copy of another map by Fra Mauro, in the Vatican Library: Roberto Almagià, Monumenta cartographica vaticana, (Rome 1944) I:32-40.
  38. Kenneth Maxwell, Naked tropics: essays on empire and other rogues, p. 16, Routledge, 2003, আইএসবিএন ০-৪১৫-৯৪৫৭৭-১
  39. http://ksuweb.kennesaw.edu/~jdirnber/oceanography/LecuturesOceanogr/LecCurrents/LecCurrents.html (retrieved 13/06/2020)
  40. https://kids.britannica.com/students/assembly/view/166714 (retrieved 13/06/2020)
  41. Carlos Calinas Correia, A Arte de Navegar na Época dos Descobrimentos, Colibri, Lisboa 2017; আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৯-৬৮৯-৬৫৬-০
  42. “ho que toca ha cosmografia e marinharia por extenso espero dizer (…) ... como jaz um promontorio ou lugar com outro e isto porque esta obra leve hordem e fundamento e ha costa mais seguramente se possa navegar e o mesmo as conhesensas das terras e asy honde estam as baixas que para isto he muito necessario saber se; tambem das sondas que á em alguns lugares em quanta altura som e asy as deferensas dos fundos .s. se he vasa ou area, ou pedra, ou saibro, ou harestas, ou burgao ou de que calidade ha tal fonda he e sendo conhecida quantas leguas aveera daly a terra e o mesmo as marés, se som de nordeste he sudueste asy como as de nossa espanha, ou se som do norte, o sul, ou de lest e oest, ou de noroest e suest, as quais para entrarem e sairem nas barras, e bocas dos Rios som forsadamente necessarias; e asim as alturas de cada hum dos pollos por onde se pode saber quantos graaos se cada lugar apartam e ladeza da equinocial e tambem a natureza da jente desta ethiopia e ho seu modo de viver e asy direi do comercio que nesta terra pode haver”
  43. "Esmeraldo de Situ Orbis"Internet Archive। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০২০ 
  44. "Esmeraldo de Situ Orbis" (পিডিএফ)Biblioteca Nacional Digital (BND)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০২০ 
  45. Calinas Correia, Carlos (২০১৭)। A Arte de Navegar na Época dos Descobrimentos (1 সংস্করণ)। Edicoes Colibri। পৃষ্ঠা 82–83। আইএসবিএন 978-989-689-656-0 
  46. ...hano de nosso senhor de mil quatrocentos noventa e oito donde nos vossa alteza mandou descobrir ha parte oucidental passando alem ha grandeza do mar ociano honde he hachada e naveguada huma tam grande terra firme com muitas e grandes Ilhas adjacentes a ella que se estende a satenta graaos de ladeza da linha equinocial contra o polo artico (…) e vay alem em vinte e oito graaos e meo de ladeza contra o pollo antratico (…) de qualquer outro lugar da europa e dafrica e dasia hatravesando alem todo ho oceano direitamente ha oucidente ou a loest segundo ordem de marinharia por trinta e seis graaos de longura que seram seiscentas e quarenta e oyto leguoas de caminho contando a dezoyto leguoas por graao.
  47. "Esmeraldo de Situ Orbis"Internet Archive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২০ 
  48. Carlos Viegas Gago Coutinho, As Primeiras Travessia Atlânticas - lecture, Academia Portuguesa de História, 22/04/1942 - in: Anais (APH) 1949, II serie, vol.2
  49. Carlos Viegas Gago Coutinho, A Viagem de Bartolomeu Dias, Anais (Clube Militar Naval) May 1946
  50. Luis Adão da Fonseca, Pedro Álvares Cabral - Uma Viagem, INAPA, Lisboa, 1999, p.48
  51. Hooykaas, Reijer (১৯৭৯)। The Erasmian Influence on D. João de Castro। Imprensa de Coimbra। 
  52. Pedro Nunes Salaciense at the MacTutor History of Mathematics archive. Retrieved 13/06/2020
  53. W.G.L. Randles, "Pedro Nunes and the Discovery of the Loxodromic Curve, or How, in the 16th Century, Navigating with a Globe had Failed to Solve the Difficulties Encountered with the Plane Chart," Revista da Universidade Coimbra, 35 (1989), 119-30.
  54. Pedro Nunes Salaciense, Tratado da Esfera, cap. 'Carta de Marear com o Regimento da Altura' p.2 - https://archive.org/details/tratadodaspherac00sacr/page/n123/mode/2up (retrieved 13/06/2020)
  55. Oliveira e Costa, Joao Paulo; Gaspar Rodrigues, Vitor Luis (২০১৭)। Construtores do Imperio (পর্তুগিজ ভাষায়)। Bertrand। পৃষ্ঠা 268–271। আইএসবিএন 978-989-626-800-8 
  56. Sanceau, Elaine (১৯৫৪)। Cartas de D. João de Castro (পিডিএফ)। Agência Geral do Ultramar। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২০ 
  57. Rangel, Artur José Ruando (২০০৯)। O magnetismo terrestre no roteiro de Lisboa a Goa: as experiências de D. João de Castro। Repositório da Universidade de Lisboa Communities and Collections Faculdade de Letras (FL) FL - Dissertações de Mestrado। 
  58. Semedo de Matos, Jorge (২০১৫)। "Tábuas Solares na náutica portugues dos séculos XV e XVI"D'Aquém, d'Além e d'Ultramar. Homenagem a António Dias Farinha। CHUL। পৃষ্ঠা 1235–1250। 
  59. May, William Edward, A History of Marine Navigation, G. T. Foulis & Co. Ltd., Henley-on-Thames, Oxfordshire, 1973, আইএসবিএন ০-৮৫৪২৯-১৪৩-১
  60. Brotton, Jerry (২০১২)। A History of the World in Twelve Maps। Penguin UK। পৃষ্ঠা chapter 7। আইএসবিএন 9781846145704 
  61. Martin 1911.
  62. "the errors I poynt at in the chart, have beene heretofore poynted out by others, especially by Petrus Nonius, out of whom most part of the first Chapter of the Treatise following is almost worde for worde translated;" - in: Edward Wright
  63. Martin 1911.
  64. Martin 1911.
  65. Martin 1911.
  66. ODNB entry for John Barrow (fl. 1735–1774): Retrieved 18 July 2011. Subscription required.
  67. Newton, I., “Newton's Octant” (posthumous description), Philosophical Transactions of the Royal Society, vol. 42, p. 155, 1742
  68. Roberts, Edmund (অক্টোবর ১২, ২০০৭)। "Chapter XXIV―departure from Mozambique"Embassy to the Eastern courts of Cochin-China, Siam, and Muscat : in the U. S. sloop-of-war Peacock ... during the years 1832-3-4 (Digital সংস্করণ)। Harper & brothers। পৃষ্ঠা 373। আইএসবিএন 9780608404066। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৫, ২০১২ 
  69. "Short History of Radio" (পিডিএফ)fcc.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-২২ 
  70. Howeth, Captain Linwood S. (১৯৬৩)। "XXII"History of Communications-Electronics in the United States Navy। Bureau of Ships and Office of Naval History। পৃষ্ঠা 261–265। 
  71. Bowditch, 2002:8.
  72. "Gustav Dalén, The Nobel Prize in Physics 1912: Biography."nobelprize.org। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-১৭ 
  73. Howeth, Captain Linwood S. (১৯৬৩)। "XXXVIII"History of Communications-Electronics in the United States Navy। Bureau of Ships and Office of Naval History। পৃষ্ঠা 443–469। 
  74. Howeth, Captain Linwood S. (১৯৬৩)। "Appendix A. Chronology of Developments in Communications and Electronics"History of Communications-Electronics in the United States Navy। Bureau of Ships and Office of Naval History। পৃষ্ঠা 443–469। 
  75. Bedwell, Don (২০০৭)। "Where Am I?"। ২০০৭-০৪-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-২০ 
  76. Bowditch, 2002:1.

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • Bilic, Tomislav (মার্চ ২০০৯)। "The Myth of Alpheus and Arethusa and Open-Sea Voyages on the Mediterranean--Stellar Navigation in Antiquity"। International Journal of Nautical Archaeology38 (1): 116–132। এসটুসিআইডি 162185043ডিওআই:10.1111/j.1095-9270.2008.00189.x 
  • Bloomberg, Mary; Göran Henricksson (১৯৯৭)। "Evidence for the Minoan origins of stellar navigation in the Aegean"। Actes de la Vème conférence annuelle de la SEAC। Gdansk। পৃষ্ঠা 69–81। 
  • Bowditch, Nathaniel (২০০২)। The American Practical Navigator। Bethesda, MD: National Imagery and Mapping Agencyআইএসবিএন 0-939837-54-4। ২০০৭-০৬-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  • Bunbury, Edward Herbert; Beazley, Charles Raymond (১৯১১)। "Pytheas"। চিসাম, হিউ। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ22 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 703–704। 
  • Cutler, Thomas J. (ডিসেম্বর ২০০৩)। Dutton's Nautical Navigation (15th সংস্করণ)। Annapolis, MD: Naval Institute Press। আইএসবিএন 978-1-55750-248-3 
  • Department of the Air Force (মার্চ ২০০১)। Air Navigation (পিডিএফ)। Department of the Air Force। ২০০৭-০৩-২৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-১৭ 
  • Great Britain Ministry of Defence (Navy) (১৯৯৫)। Admiralty Manual of SeamanshipThe Stationery Officeআইএসবিএন 0-11-772696-6 
  • Homer.। link; link, সম্পাদকগণ। The Odyssey। Book V.। 
  • Maloney, Elbert S. (ডিসেম্বর ২০০৩)। Chapman Piloting and Seamanship (64th সংস্করণ)। New York, NY: Hearst Communications Inc.। আইএসবিএন 1-58816-089-0 
  • Martin, William Robert (১৯১১)। "Navigation"। চিসাম, হিউ। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ19 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 284–289। 
  • National Imagery and Mapping Agency (২০০১)। Publication 1310: Radar Navigation and Maneuvering Board Manual (7th সংস্করণ)। Bethesda, MD: U.S. Government Printing Office। ২০০৭-০৩-০৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। 
  • Taylor, E. G. R. (১৯৭১)। link; link, সম্পাদকগণ। The haven-finding art; A History of Navigation from Odysseus to Captain Cook। New York: American Elsevier Publishing Company, INC.। 

আরও পড়া[সম্পাদনা]