বিষয়বস্তুতে চলুন

তঞ্চঙ্গ্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তঞ্চঙ্গ্যা
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে তঞ্চঙ্গ্যারা বাস করে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ভারতমিয়ানমার
ভাষা
তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা
ধর্ম
থেরবাদ বৌদ্ধ

তঞ্চঙ্গ্যা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী একটি উপজাতি জনগোষ্ঠী। উপজাতি জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যার দিক থেকে এদের স্থান ৫ম। ১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুসারে এদের জনসংখ্যা ২১,০৫৭ জন এবং পরিবার সংখ্যা ৪,০৪৩টি।

পার্বত্য চট্টগ্রামের কতিপয় পাহাড়ি জাতির মতো তঞ্চঙ্গ্যাদের আবাসভূমিও গড়ে ওঠে নদী সংলগ্ন উপত্যকায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার রইস্যাবিলি, বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়ার আশেপাশের এলাকায় ও কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনার আশেপাশের এলাকায়, বান্দরবানখাগড়াছড়ি জেলায়, কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলাটেকনাফ উপজেলা তঞ্চঙ্গ্যা জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। এছাড়াও ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্যের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলেও তঞ্চঙ্গ্যাদের আবাসভূমি রয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এবং চিন রাজ্য এবং ইয়াংগুন শহরেও তঞ্চঙ্গ্যা রয়েছে। সেখানে তারা ‘দোইনাক’ নামে পরিচিত।

উৎপত্তি

[সম্পাদনা]

নৃতাত্ত্বিক ব্যাখ্যায় তঞ্চঙ্গ্যারা মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর লোক। তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী ভারতীয় আর্য ভাষার অন্তর্গত পালি, প্রাকৃত, আদিবাংলা ভাষায় কথা বলে। তঞ্চঙ্গ্যাদের স্বভাব বেশ নম্র। তারা কিছু লাজুক স্বভাবেরও বটে।

তঞ্চঙ্গ্যাদের পেশা মূলত কৃষি। বিভিন্ন পাহাড়ে, টিলায় বা উঁচু ভূমিতে প্রস্তুত করা বাগান-বাগিচায় বৃক্ষ রোপণ করেও কেউ কেউ জীবিকা নির্বাহ করে। অতীতে তারাও ব্যাপকভাবে জুম চাষ করতো যা বর্তমানেও অব্যাহত, তবে তুলনামূলকভাবে অনেকটা কম। তঞ্চঙ্গ্যাদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার খুব বেশি নয়। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কেউ কেউ চাকরি করে।

সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]

তঞ্চঙ্গ্যাদের ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব পোশাক রয়েছে। তঞ্চঙ্গ্যা পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হল জামা,সাদা শার্ট কিন্তু বর্তমানে পুরুষরা তাদের পছন্দমত প্যান্ট, শাট, লুঙ্গি ইত্যাদি পরিধান করেন। নারীদের পরিধেয় পোশাককে পেরোইন (থামী) বলে।নারীদের তাদের নিজস্ব পোশাক দেখতে খুবই আকর্ষণীয় লাগে।পাহাড়ি নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পোশাক-পরিচ্ছদ ও অলংকার পরিধান করে তঞ্চঙ্গ্যা নারী। তাদের পোশাক-পরিচ্ছদে বৈচিত্র্যও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। তঞ্চঙ্গ্যা রমণীর পরনে থাকে প্রথমত সাত রঙের পিনুইন বা পিনন। পিননের দুই প্রান্তে লম্বালম্বি স্ট্রাইপ, মাঝখানে দুই প্রান্তে রঙের লম্বালম্বি স্ট্রাইপ এবং সমগ্র পিননে বিভিন্ন রঙের সুতার স্ট্রাইপ থাকে। তঞ্চঙ্গ্যা রমণীরা অতীতে নানা ধরনের অলংকার পরত। তাদের ব্যবহৃত অলংকারের মধ্যে কানে বাজ্জু ও ঝংকা, কবজিতে বাঘোর, কুচিখারু, বাহুতে তাজজুর, গলায় চন্দ্রহার, হাচুলি, সিকছড়া প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এসব অলংকার সাধারণত রুপা দিয়ে তৈরি।

বিখ্যাত ব্যক্তি

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]