ঝিনাইদহ সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঝিনাইদহ সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা
ধরনএমপিও ভুক্ত
স্থাপিত১ জানুয়ারি ১৯৪৭; ৭৭ বছর আগে (1947-01-01)
প্রতিষ্ঠাতামাওলানা মোঃ হানিফ (রহঃ)
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (২০০৬- ২০১৬)
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান)
অধ্যক্ষমো. রুহুল কুদ্দুস
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তিবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
মোট ৩৬জন
শিক্ষক ২৯ জন
কর্মচারী ৭জন
শিক্ষার্থীমোট ১২৬৪ জন

ছাত্র সংখ্যা: মোট ৮৮১ জন

ছাত্রী সংখ্যা: মোট ৪২৩ জন
অবস্থান, ,
শিক্ষাঙ্গনশহুরে
EIIN সংখ্যা১১৬৫২৭
ক্রীড়াক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, ব্যাটমিন্টন
এমপিও সংখ্যা৫৬০২০১২৪০১
ওয়েবসাইটhttp://116527.ebmeb.gov.bd/

ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী আলিয়া মাদ্রাসা।[১][২][৩] এই মাদ্রাসাটি ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, বর্তমানে মাদ্রাসাটি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মাদ্রাসা। তবে এটা ঝিনাইদহ জেলার প্রধান মাদ্রাসা হওয়ায় এটা ঝিনাইদহ আলিয়া মাদ্রাসা নামেও পরিচিত। মাদ্রাসাটির বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মো. রুহুল কুদ্দুস।

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস[সম্পাদনা]

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। সর্বপ্রথম ওহী নিয়ে জিব্রাইল (আ) নবী কারীম (সা) এর নিকটে আসলেন এবং পড়ার নির্দেশনা দিলেন। এথেকে প্রতীয়মান হয় যে ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব কতবেশি! আর নবুওয়াতি ইলম মানুষের দ্বারপ্রান্তে প্রান্তে পৌঁছে দিতে মাদ্রাসা শিক্ষার ভূমিকা অনস্বিকার্য। এই মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে মুসলিম সন্তানদেরকে ইসলামী শিক্ষার আলোকে আলোকিত করতে এবং দেশ ও সমাজে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার মহান প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটি এতদঞ্চলে দ্বীনি ও সাধারণ শিক্ষার বিস্তার এবং ইসলামী মূল্যবোধ সৃষ্টিতে এক অনবদ্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। সুন্দর ও সুশীল জীবন গড়তে এবং ছাত্রদেরকে বহুমাত্রিক জ্ঞান প্রদানে মাদ্রাসাটির কোন জুড়ি নাই। প্রায় ৮০ বছর ধরে সৎ, দক্ষ, মেধাবী ও চরিত্রবান শিক্ষার্থী গড়ার গুরুদায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে আমাদের ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা!

মাদ্রাসার নাম: ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা। (Jhenaidah Siddikiya Kamil Madrasha)

কোড: EIIN No: 116527, মাদ্রাসা কোড: 16051

প্রতিষ্ঠাতাকাল: পহেলা জানুয়ারি, ১৯৪৭ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠাতা: মাওলানা মোঃ হানিফ (রহঃ)। যিনি ছিলেন সেসময়ের একজন দক্ষ আলেমেদ্বীন।

মাদ্রাসাটির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস: আজ থেকে প্রায় ৮০ বছর আগে যখন অত্র অঞ্চলে ওহীর জ্ঞানের অভাব ছিল এবং মানুষ দিনে দিনে কুসংস্কারের দিকে নিমজ্জিত হচ্ছিল তখন অত্র অঞ্চলে জাহেলিয়াতের প্রভাব উৎপাটন করে ইসলামের সুমহান শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে ফুরফুরা শরীফের পীর সাহেব মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহঃ) হুজুরের তত্ত্বাবধানে মাওলানা মোঃ হানিফ (রহঃ) মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত করেন। সময়ের পরিক্রমায় মাদ্রাসাটি বর্তমানে দাঈ ইলাল্লাহ গড়ার কারখানায় পরিণত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।

বর্তমান অধ্যক্ষ: মাওলানা মোঃ রুহুল কুদ্দুস সাহেব

সাবেক কয়েকজন অধ্যক্ষ: প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে যোগ্যতা সম্পন্ন ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা আলেম ঝিনাইদহ সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন- মাওলানা নুরুন্নবী সামদানী (রহঃ), মাওলানা হাতেম আলী (রহঃ), মাওলানা মোস্তফা (রহঃ), মাওলানা আব্দুল জব্বার (রহঃ) প্রমুখ। তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন এক এক জন বিদগ্ধ আলেমেদ্বীন।

মাদ্রাসার অবস্থান[সম্পাদনা]

ঝিনাইদহ জেলার, সদর উপজেলায় পৌরসভার ভিতরে, নির্বাচনী ২ আসনের মধ্যে মাদ্রাসাটির অবস্থান। ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্ত্বর থেকে সদর হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাস্তার ডান দিকে, কেন্দ্রীয় কবরস্থানের পরপরই মাদ্রাসাটি অবস্থিত। ঝিনাইদহ জেলার প্রধান মাদ্রাসা হওয়ায় এটি ঝিনাইদহ আলিয়া মাদ্রাসা নামেও অনেকের কাছে পরিচিত। মাদ্রাসাটির চারপাশ দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত, যাতায়াতের জন্য একটি মূল গেইট এবং মসজিদ সংলগ্ন একটি পার্শ্ব গেইট রয়েছে। মাদ্রাসার ভিতরে রয়েছে নানা ধরনের সারি সারি গাছ গাছালির সমাহার। এছাড়াও মাদ্রাসার অভ্যন্তরে একটি বিস্তৃত ও সুন্দর খেলার মাঠ রয়েছে। সব মিলিয়ে মাদ্রাসাটিতে এক মনোরম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজমান!

ভবনসমূহের বিবরণ[সম্পাদনা]

মাদ্রাসাটি ইট দিয়ে তৈরি দুই তলা বিশিষ্ট এবং প্রতিটা ক্লাসরুমগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে পর্যায়ক্রমে একটার পর একটা সাজানো। শ্রেণিকক্ষ: মোট ২৪ টি। অফিস কক্ষ: ১ টি। অধ্যক্ষের কক্ষ: ১টি। উপাধ্যক্ষের কক্ষ: ১ টি। শিক্ষক মিলনায়তন: ১ টি। মসজিদ: ১ টি।

কম্পিউটার ল্যাব: শিক্ষার্থীদের আইসিটি বিষয়ক জ্ঞান প্রদানের জন্য একজন দক্ষ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে মাদ্রাসায় একটি সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে।

লাইব্রেরি: মাদ্রাসাটিতে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের জন্য লাইব্রেরিতে রয়েছে অনেক বইয়ের সমাহার। কুরআন, হাদিস, ইসলামী সাহিত্য সহ বিভিন্ন কিতাবাদির এক সমৃদ্ধ সংকলন এখানে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।

যোগাযোগ[সম্পাদনা]

ই-মেইল: jskm47@gmail.com

website: http://116527.ebmeb.gov.bd/

মোবাইল নং: ০১৭১৬-৩৫২৫৮৫ (অধ্যক্ষ), ০১৩০৯-১১৬৫২৭ (অফিস)

[৪]

অধিভুক্তি ও স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

অধিভুক্তি: ইবতেদায়ি, দাখিল, আলিম, ফাজিল (পাস), ফাজিল (অনার্স), কামিল, কামিল (মাস্টার্স)

স্বীকৃতি: কামিল ১৯৮৭, ফাজিল (অনার্স) ২০১৬, কামিল (মাস্টার্স) ২০২৩।

শিক্ষার মান[সম্পাদনা]

মাদ্রাসাটির শিক্ষার মান খুবই ভালো। এই প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে এবং অনেকেই বর্তমানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত আছেন। বাংলাদেশের বিখ্যাত আলেমেদ্বীন, বিদগ্ধ গবেষক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক মরহুম ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (র) অত্র মাদ্রাসারই ছাত্র ছিলেন।

নিম্নে বিগত তিন বছরে বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষায় মাদ্রাসার সম্মিলিত ফলাফল উল্লেখ করা হলো-

ফলাফল: দাখিল:

  • ২০২০ সালে মোট ৬০ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৪৭ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৭৮%, A+ পেয়েছে ১ জন।
  • ২০২১ সালে মোট ৮২ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৭৩ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৮৯%, A+ পেয়েছে ৪ জন।
  • ২০২২ সালে মোট ৬৬ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৪৯ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৭৪%, A+ পেয়েছে ১০ জন।

আলিম:

  • ২০১৯ সালে মোট ৭১ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৫৬ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৮০%।
  • ২০২০ সালে মোট ৮০ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৮০ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ১০০%, A+ পেয়েছে ২ জন।
  • ২০২১ সালে মোট ১৩৮ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ১২৯ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৯৩%, A+ পেয়েছে ৭ জন।

ফাজিল:

  • ২০১৮ সালে মোট ৫৫ জন শিক্ষার্থী ফাজিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৫১ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৯২%।
  • ২০১৮ সালে মোট ৭০ জন শিক্ষার্থী ফাজিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৬৮ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৯৭%।
  • ২০১৮ সালে মোট ৬২ জন শিক্ষার্থী ফাজিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে মোট ৫৯ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়, পাশের হার ৯৫%।


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "ঝিনাইদহ কামিল মাদ্রাসার মাদ্রাসার ইতিহাস"www.jskm.edu.bd। ২০২১-০৭-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২১ 
  2. "মাদ্রাসা - Jessore, Jhenaidah, Magura, Narail"www.jessore.info। ২০২১-০৭-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২১ 
  3. agaminews.com। "ঝিনাইদহ সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসায় এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা লোপাট !"agaminews.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২১ 
  4. "Jhinaidah Siddikia Kamil Madrasha - Sohopathi | সহপাঠী" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২১