জাহাজমারা যুদ্ধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জাহাজমারা যুদ্ধ ১১ আগস্ট ১৯৭১ ঐতিহাসিক জাহাজমারা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এইদিনটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। এইদিন টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা কমান্ডার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর মোহনায় পাকিস্তানের অস্ত্র ও রসদ বোঝাই ২টি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে। [১] এই যুদ্ধে উদ্ধার করা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র।[২]

মূল ঘটনা[সম্পাদনা]

আক্রান্ত জাহাজ এসইউ ইঞ্জিনিয়ার্স এলসি-৩

৫ আগস্ট ১৯৭১, মুক্তিবাহিনীর কাছে খবর আসে সদরঘাটে কয়েকটি বড় বড় জাহাজে অস্ত্র বোঝাই করা হচ্ছে। জাহাজগুলো বগুড়ার ফুলতলি তারপর রংপুর যাবে। কাদেরিয়া বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকা টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর ঘাট ঘেঁষে যাবে জাহাজগুলো।

৯ আগস্ট ১৯৭১ সিরাজকান্দি ঘাটে (বর্তমান যমুনা সেতুর অদূরে) এসে ভেড়ে ৭টি জাহাজ। মুক্তিযোদ্ধারা জেলের ছদ্মবেশ ধরেন আক্রমণের আগে কৌশলে জেনে যেন দরকারি তথ্য।

১০ আগস্ট অত্যাধুনিক অস্ত্র সস্ত্র ও গোলা বারুদ  বোঝাই ২ টি জাহাজ আক্রমণ করা হয়। এই যুদ্ধে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২০-২৫ জন পাক সেনা নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা জাহাজের দখল নেয়। বন্দী করা হয় বাকীদের। তারপর উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমান সামরিক অস্ত্র।

১১ তারিখ দুটি জাহাজেই আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। বাকী ৫টি জাহাজ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। [৩]

জাহাজ দুটি থেকে ১,৭০,০০০ মর্টার শেল উদ্ধার করা হয়। ৭০,০০০ গ্রেনেড, ১০ লক্ষের বেশি গুলি, ৫০০ এর অধিক বন্দুকসহ নানা রকম অস্ত্র পাওয়া যায়। মুক্তিবাহিনীর হাতে এত বিপুল পরিমাণ অস্ত্র (হানাদারদের হিসাবমতেই ২১ কোটি টাকা, যা বর্তমানে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি)।

এই যুদ্ধের পর হাবিবুর রহমানের নাম হয়ে যায় জাহাজমারা হাবিব। তাকে বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। কাদের সিদ্দিকী দুর্ধর্ষ এই যোদ্ধাকে “মেজর” বলে ডাকতেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. শাকিল, মির্জা (২০২২-০৮-১১)। "অপারেশন জাহাজমারা: একাত্তরে মোড় ঘোরানো এক যুদ্ধের গল্প"The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-১০ 
  2. ইশতিয়াক, আহমাদ (২০২১-০৮-১২)। "জাহাজমারা যুদ্ধ: একটি ওয়্যারলেস বার্তা ও দুর্ধর্ষ অপারেশন"The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-১০ 
  3. "ঐতিহাসিক জাহাজমারা (স্থান)"bhuapur.tangail.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-১০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]