জাতীয় ঈদগাহ (বাংলাদেশ)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
২০২৩ সালে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের জামাত

বাংলাদেশের জাতীয় ঈদগাহ বাংলাদেশের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুইটি অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতরঈদুল আযহার নামাজের পড়ার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ[১][২][৩] এটি ঢাকা জেলার হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে অবস্থিত। এই ঈদগাহে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রসাশনিক ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করে থাকে। জাতীয় ঈদগাহ হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত একটি ঈদের নামাজের স্থান। এখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী মানুষ নামাজ আদায় করে থাকে।[৪][৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

স্বাধীনতার আগে থেকেই হাইকোর্টের পাশের জায়গাটি ছিল ঝোপজঙ্গলে পূর্ণ। সেই জায়গার মাঝে ছিল একটি পুকুর। ১৯৮১-৮২ সালের দিকে সেই ঝোপজঙ্গল কিছুটা পরিষ্কার করা হয়। হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে রয়েছে একটি মাজার। জায়গাটি একটু পরিচিত হয়ে উঠলে সেখানে ছোট পরিসরে শামিয়ানা টানিয়ে ঈদের নামাজ পড়ানো শুরু হয়। ১৯৮৫ সালের দিকে সেই পুকুরটি ভরাট করে ফেলে কর্তৃপক্ষ। পরে ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে ওই ঈদগাহকে জাতীয় ঈদগাহ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ হাইকোর্টের অধীনে ঈদগাহটি পরিচালিত হলেও তার দেখভাল করে গণপূর্ত বিভাগ। ২০০০ সালে দুই ঈদেই ঈদগাহ প্রস্তুতের দায়িত্ব পায় ঢাকা সিটি করপোরেশন।

চারদিকে লোহার প্রাচীর দেওয়া বিশাল মাঠটিতে রয়েছে একটি মূল ফটকসহ কয়েকটি ফটক। কিবলার দিকে রয়েছে একটি মিহরাব। মিহরাবটি মূলত পাঁচটি মিনারে তৈরি। জাতীয় ঈদগাহে একটি জামাতে অন্তত এক লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। সেখানে একই জামাতে নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য থাকে ভিন্ন ব্যবস্থা। এখানে ২০ হাজার নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে।[৬]

বাংলাদেশের জাতীয় ঈদগাহের ইতিহাস অনেক পুরোনো, ২০২০, ২০২১ সালে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ঈদের নামাজ জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি।[৭][৮]

আকার[সম্পাদনা]

ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের আয়তন ২ লাখ ৭০ হাজার ২৭৭ বর্গফুটের বেশি।[৯] জাতীয় ঈদগাহ মূলত একটি প্রশস্ত ফাকা মাঠ, ঈদের পূর্বে এই মাঠকে সাজানো হয় নামাজের উপযোগী করার জন্য। সম্পূর্ণ মাঠ নামাজের উপযোগী করতে কয়েক হাজার শ্রমিক প্রয়োজন হয়। আনুমানিক বলতে গেলে, প্রতিবার ঈদগাহ ময়দানে প্যান্ডেল নির্মাণের জন্য ৪৩ হাজার বাঁশ এবং প্রায় ৩শ’ মন রশি ব্যবহৃত হয়।[১০] ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে একসঙ্গে প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "প্রধান ঈদগাহ সমূহ, বাংলাদেশ"সরকারি ওয়েবসাইট। ২৯ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২১ 
  2. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "BBC Bangla - খবর - ঈদ আনন্দে বাংলাদেশ"www.bbc.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ 
  4. "জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে শুধুই শূন্যতা"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ 
  5. Welle (www.dw.com), Deutsche। "বাংলাদেশে ঈদের জামাত যেখানে, যেভাবে | DW | 13.05.2021"DW.COM। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ 
  6. "দেশের বৃহৎ ঈদগাহ, লাখ মুসল্লির সমাবেশ হয় যেখানে"আওয়ার ইসলাম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ 
  7. "ঈদ নেই জাতীয় ঈদগাহে"Newsbangla24। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ 
  8. "খোলা ময়দানে ঈদের জামাত হচ্ছে না, তদারকি হবে কীভাবে"BBC News বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ 
  9. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রায় প্রস্তুত"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. "প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ | কালের কণ্ঠ"Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯