হালিমা আস সাদিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হালিমা আস-সাদিয়া
ধিল মাজাজ মার্কেটে জ্যোতিষীর সামনে দাঁড়ানো হালিমাহ আল-সাদিয়া
মৃত্যু৬৩০ খ্রিস্টাব্দ
রাজবংশবনু সা'দ

হালিমা বিনতে আবি যুয়ায়েব বা হালিমা সাদিয়া (আরবি: حليمة السعدية) ছিলেন ইসলামের নবী মুহাম্মদের দুধমা। ৮দিন বয়সে তিনি মুহাম্মদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এবং দুই বছরের কিছু অধিক সময় পর্যন্ত তাকে হালিমা তার নিজ বাড়িতে লালন-পালন করে, তার মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন।

মুহাম্মাদকে গ্রহণ[সম্পাদনা]

আরব সমাজে তখন এক গোত্রের শিশুকে ভিন্ন গোত্র বাল্যকালে লালন পালনের জন্য পাঠাতো হত যাতে তারা বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জলভাষী হতে পারে। সেই হিসাবে হালিমা ও তার গোত্র আরবের কুরাইশ গোত্রের নিকট গিয়েছিল যাতে কোন সন্তান লালন-পালনের জন্য পাওয়া যায় কিনা।

ইসলাম গ্রহণ[সম্পাদনা]

হালিমা বিনতে আবি যুবায়েবের ইসলাম গ্রহণ বিষয়ে অধিকাংশ আলেমগন ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন। [২] এছাড়াও তার স্বামী ও সন্তানেরা সবাই ইসলাম গ্রহণ করে।[৩]

সন্তানাদি[সম্পাদনা]

হালিমার স্বামীর নাম হারিস ইবনে আবদিল উযযা ইবনে রিফায়া আস সাদি। এদের সন্তানরা হলেন :

  • আবদুল্লাহ
  • উনাইসা ও
  • আশ শায়মা অথবা খুযাইমা মতান্তরে হুযাফা। মুহাম্মাদ ও আবদুল্লাহ একই সাথে দুধ পান করেন।[৪]

মুহাম্মাদ চাচাতো ভাই আবু সুফিয়ান ইবনে হারিসকেও হালিমা দুধ পান করান।[৫] এবং হামযাকে একদিন দুধ পান করান।[৬][৭]

হালিমা ও মুহাম্মাদ[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ তার দুধ মাতা হালিমাকে সবসময় সশ্রদ্ধ সম্মান করতেন।[৮] একবার নিজের চাদরে তাকে বসতে দিয়েছিলেন।[৯][১০][১১] তাকে বিভিন্ন অভাবের সময় উপকৌঠন পাঠিয়েছেন। একবার খাদিজা তাকে ৪০টা ছাগল ও একটি উট দান করেছিলেন।[১২][১৩]

বর্ণিত রয়েছে,মুহাম্মাদ হালিমার ঘরে লালিত পালিত হওয়ার কারণেই অন্ত্যন্ত বিশুদ্ধভাষী ছিলেন।[১৪][১৫] এই হালিমা সাদিয়ার ঘরে অবস্থান কালেই মুহাম্মাদ এর প্রথম বক্ষ বিদারণের ঘটনা ঘটে।[১৬][১৭][১৮]

ইবনে ইসহাক বলেন, শিশু মুহাম্মাদকে নিয়ে একবার যখন হাবশায় যান। সেখানে এক খ্রিষ্টান আলেম মুহাম্মাদকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে বলেন,এই বালক ভবিষ্যতে বড় কিছু হবে।[১৯]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

আহমাদ যীনী দাহলাম বলেছেন, তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন, মদিনায় হিজরত করে সেখানে ৮ম হিজরিতে মৃত্যু বরণ করেন, জান্নাতুল বাকী গোরস্তানে দাফন করা হয়।[২০] তবে বালাযুরীর বলেছেন,হালিমা মদিনায় হিজরত করেননি এবং মক্কা বিজয়ের পূর্বে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।[২১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. [আনসার আল-আশরাফ -১/৯৩-৯৪] 
  2. [আস-সারাহ আল-হালাবিয়্যা-১/৩২] 
  3. [নিসা মিন ’আসর আন-নুবুওয়াহ্, পৃ.১৫,] 
  4. [প্রাগুক্ত; আনসাবুল আশরাফ -১/৯০-৯১] 
  5. [সীরাতু ইবন হিশাম-১/১৬১; টীকা নং-৬] 
  6. [রিজানুল মুবাশশিরূন বিল জান্নাহ-১/৭, ২/১৮৯] 
  7. [নিসা’ মিন আসর আন-নুবুওয়াহ পৃ. ১১] 
  8. [উসুদুল গাবা-৫/৪২৮] 
  9. [তাবাকাত-১/১১৪] 
  10. [আশ-শিফা-১/২৬০] 
  11. [আল-ইসী‘আব-৪/২৬২] 
  12. [নিসা’ মুবাশশারাত বিল জান্নাহ্-১/৩২] 
  13. [আনসাবুল আশরাফ-১/৯৫] 
  14. [ইবন কাছীর, আস-সীরাহ্ আন-নাবাবিয়্যা-১/১১৫] 
  15. [আস-সীরাহ্ আল-হালাবিয়্যা-১/১৪৬] 
  16. [সহীহ মুসলিম-১/১০১] 
  17. [ইবন কাছীর, আস-সীরাহ্-১/১৩] 
  18. Barkatullah, Abid। "প্রথম বক্ষ বিদারণ | নবীজি সা." (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৩-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৯ 
  19. [সীরাতু ইবন হিশাম-১/১৬৭] 
  20. [নিসা‘ মিন ‘আসর আন-নুবুওয়াহ্, পৃ.১৭] 
  21. [আনসাবুল আশরাফ, পৃ.৯১]