উত্তরবঙ্গীয় বাংলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উত্তরবঙ্গীয় বাংলা
দেশোদ্ভববাংলাদেশ
ভারত
অঞ্চলবাংলাদেশ

রাজশাহী বিভাগ, রংপুর বিভাগ

ভারত
জলপাইগুড়ি বিভাগ, মালদা বিভাগ
মাতৃভাষী

বাংলা লিপি
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩
গ্লোটোলগnort2658  (উত্তরাঞ্চলীয় বাংলা)[১]

উত্তরবঙ্গীয় বাংলা হলো বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে কথিত বাংলার একটি অ-প্রমিত উপভাষা গুচ্ছ। এটি উদীচ্য নামেও পরিচিত।[২] এটি বাংলা-অসমীয়া ভাষাসমূহের পশ্চিম কামরূপ এবং বরেন্দ্রী উপগোষ্ঠীর ছত্র গোষ্ঠী হিসাবে কাজ করে।

ভৌগোলিক সীমানা[সম্পাদনা]

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সকল বাংলা উপভাষাকে দুটি দলে ভাগ করেন: প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য। তিনি প্রাচ্যকে আবার দুই দলে ভাগ করেন, যা সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাবিত "বরেন্দ্র" এবং "কামরূপা"র সম্মিলিত উপভাষা গোষ্ঠীর সাথে মিলে, অবশিষ্ট রাঢ়ী উপভাষাগুলির সাথে মিলে। এই উত্তরের বাংলা উপভাষাটি গোয়ালপাড়া থেকে পূর্ণিয়া পর্যন্ত কথিত হত বলে মনে করা হয়, যা ভৌগোলিকভাবে ঐতিহাসিক কামরূপ এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে পড়েছে।[৩] বর্তমানে বাংলাদেশের রংপুর ও রাজশাহীর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িমালদা বিভাগ এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।

তুলনা[সম্পাদনা]

উপভাষা এক ব্যক্তির দুই পুত্র ছিল
সাধু ভাষা এক ব্যক্তির দুই পুত্র ছিল
দিনাজপুর এক জন মানুষের দুই ছাওয়া ছিল
মালদা য়্যাক্ ঝোন্ মানুসের্ দুটা ব্যাটা আছ্‌ল
মালদা (কোচ) য়্যাক্ ঝনামান্‌সের্ দুটা ব্যাটা আছ্‌লো
পূর্ণিয়া এক ঝনার দুই ছুয়া ছিল
বগুড়া এক ঝনের দুই ব্যাটাছৈল আছিল
পাবনা কোনো মান্‌ষের দুই ছাওয়াল ছিল
গোয়ালপাড়া এক জন্‌কার দুই বেটা আছিল
রংপুর একজন মান্‌ষের দুইক্‌না ব্যাটা আছিন
জলপাইগুড়ি এক ঝন্‌কার দুই ঝন্ বেটা আছিল্
কোচবিহার এক জনা মান্‌সির্ দুই কোনা বেটা আছিল্
দার্জিলিং অ্যাক্ ঝন্‌কার দুইটা বেটা ছিল

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "উত্তরাঞ্চলীয় বাংলা"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  2. (শহীদুল্লাহ ১৯৫৮, পৃ. ৬২)
  3. শহীদুল্লাহ ১৯৫৮, পৃ. ৬২: "গোয়ালপাড়া হইতে পূর্ণিয়া পর্যন্ত। ইহা প্রাচীনকালে কামরূপ ও বরেন্দ্র নাম অভিহত হইত।"

গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]

  • চট্টোপাধ্যায়, সুনীতি কুমার (১৯২৬)। The Origin and Development of the Bengali Language [বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ]। কলকাতা ইউনিভার্সিটি প্রেস। 
  • গ্রিয়ারসন, জর্জ আব্রাহাম (১৯০৩)। Linguistic Survey of India [ভারতের ভাষাগত সমীক্ষা]। কলকাতা: অফিস অফ দ্য সুপারিন্টেন্ডেন্ট, গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং, ভারত। 
  • সেন, সুকুমার (১৯৫৭)। ভাষার ইতিবৃত্ত। পাঁচুগোপাল রায়। 
  • শহীদুল্লাহ, মুহম্মদ (১৯৫৮)। বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত। মাওলা ব্রাদার্স। 
  • শহীদুল্লাহ, মুহম্মদ (১৯৬৫)। বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান। বাংলা একাডেমি।