আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন
বাংলাদেশের রেলওয়ে স্টেশন
অবস্থানচুয়াডাঙ্গা, খুলনা
 বাংলাদেশ
মালিকানাধীনবাংলাদেশ রেলওয়ে
পরিচালিতপশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে
লাইনচিলাহাটি-পার্বতীপুর-সান্তাহার-দর্শনা লাইন
প্ল্যাটফর্ম২ টি
ট্রেন পরিচালকবাংলাদেশ রেলওয়ে
নির্মাণ
গঠনের ধরনমানক
পার্কিংআছে
সাইকেলের সুবিধাআছে
প্রতিবন্ধী প্রবেশাধিকারআছে
অন্য তথ্য
অবস্থাসক্রিয়
ইতিহাস
চালু১৫ নভেম্বর, ১৮৬২
অবস্থান
মানচিত্র

আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি রেলওয়ে স্টেশন[১][২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

শাসনামলে রেল বিভাগের আভিজাত্য আর অপরিমেয় শান-শওকতের এক দৃষ্টিনন্দন স্মারক এ রেলওয়ে স্টেশনটি। ভারতবর্ষে প্রথম রেল চালুর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এ রেলস্টেশন ভবনের গোড়াপত্তন বলে ধারণা করা হয়। তৎকালে বিলের মধ্যদিয়ে এ রেললাইন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে রেললাইন অনেক উঁচুতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। সে কারণেই বাস্তব প্রয়োজনীয়তা থেকেই এখানে দোতলা স্টেশন ভবন নির্মাণ করতে হতে পারে। 

মোঘল আর ইংরেজ আমলের বিশেষ স্থাপত্য শৈলীর এক অনুপম দৃষ্টান্ত হয়ে আছে এ দ্বিতল স্টেশনটি। এখানে শুধু দোতলা স্টেশন ভবনই নির্মাণ করা হয়নি, এ দোতলা রেলস্টেশনের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ইউরোপ থেকে সৌন্দর্যবর্ধক বহু বিরল প্রজাতির গাছ নিয়ে এসে লাগান হয়েছিলো। নানা প্রজাতির ফুলের গাছ রোপণ করা হয়েছিলো। সেগুলোর অবশিষ্ট অংশ হিসেবে এখনও স্টেশনের প্লাটফর্মে ২টি বিরল প্রজাতির পামট্রি রয়েছে। আরো রয়েছে বয়ঃভারাক্রান্ত ২ টি কাঠমল্লিক ফুলগাছ। এ গাছগুলোর বয়স শতাধিক বছর। আলমডাঙ্গা জনপদের গোড়াপত্তনের সমসাময়িক বয়স এদের।

১৮৩২ সালে প্রথম ভারতে রেল ব্যবস্থা প্রবর্তনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ১৮৫১ সালের ২২ ডিসেম্বর ভারতে প্রথম রেল চালু হয়। ভারতের রুরকিতে স্থানীয় একটি খাল নির্মাণকার্যে মালপত্র আনা-নেয়া করার জন্য এই ট্রেনটি চালু করা হয়েছিলো। তবে এটাকে অনেকেই রেলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা হিসেবে স্বীকার করেন না। তাদের দাবি এটি ছিলো রেল লাইন প্রতিষ্ঠার একটি প্রক্রিয়া। ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল গেট ইন্ডিয়ার পেনিনসুলার রেলওয়ে নামক কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত মুম্বাই থেকে আনা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘরেল লাইনটির উদ্বোধন করা হয়। এটিই ছিলো ব্রিটিশ ভারতের রেলওয়ের প্রথম যাত্রা।

১৮৫৪ সালে ভারতের তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল লর্ড ডালহৌসির নির্দেশে মূলত বাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৬২ সালে। বাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে। সে সময় চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার লাইন স্থাপিত হয়। নীলকরদের বিরুদ্ধে এতদাঞ্চলে কৃষক বিদ্রোহের কারণে বিতাড়িত কিছু নীলকর জগতিতে আখ মাড়াইয়ের কল উৎপাদন শুরু করেছিলো। ভারী ভারী আখমাড়াইয়ের কল বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের নিকট পৌঁছানো সহজ হবে রেলপথে। এমন চিন্তা থেকেই কুষ্টিয়ার জগতিতে পর্যবসিত প্রাক্তন নীলকরদের স্বার্থে ও প্রয়োজনে এ জনপদে অন্যান্য অঞ্চলের অগেই রেলের যাত্রারম্ভ। পরবর্তীতে ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি গোয়ালন্দ পর্যন্ত সেকশনটি চালু হয়। অবশ্য অবিভক্ত বাংলায় আরও প্রায় ৮ বছর পূর্বে প্রথম রেলপথ চালু হয় ১৮৫৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধনের মাধ্যমে। ১৮৯৭ সালে দর্শনা-পোড়াদহ সেকশনটি সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়। পর্যায়ক্রমে ১৯০৯ সালে পোড়াদহ-ভেড়ামারা, ১৯১৫ সালে ভেড়ামারা-ঈশ্বরদী এবং ১৯৩২ সালে ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর সেকশনগুলোকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়। আলমডাঙ্গায় কুমার নদের ওপর লালব্রিজখ্যাত বর্তমান রেলওয়ে ব্রিজটি ১৯০৯ সালে উদ্বোধন করা হয়। তারপর কালিদাসপুর থেকে রেলস্টেশন আলমডাঙ্গায় স্থানান্তরিত হয় বলে জানা যায়।

আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের ভবণটি ১৮৬২ সালে কোলকাতা-কুষ্টিয়া ট্রেন চলাচল শুরুর অনেক আগে থেকেই এই ভবনটি নীলকুঠি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পরে ১৮৫৯ সালে কোলকাতা-কুষ্টিয়া ব্রডগেজ সিঙ্গেল লাইন রেলপথ রানাঘাট থেকে পোড়াদহ পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শুরু। প্রথম পর্যায়ে জয়নগর-চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা-পোড়াদহ পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ কাজ ১৮৬০ সালে শেষ হয় তার কিছু দিন পর পোড়াদহ থেকে জগতি পর্যন্ত রেলপথ নির্মিত হয়।

পরিষেবা[সম্পাদনা]

আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন দিয়ে যেসব ট্রেন চলাচল করে নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো:

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সমস্যায় জর্জরিত ঐতিহ্যবাহী আলমডাঙ্গা রেল স্টেশন"দৈনিক সংগ্রাম। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৮ 
  2. "আলমডাঙ্গা রেল স্টেশনের কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ!"dailysomoyersomikoron.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৮