ক্লাইড ওয়ালকট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্যার ক্লাইড ওয়ালকট
১৯৫১ সালে প্রকাশিত স্থিরচিত্রে ক্লাইড ওয়ালকট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্লাইড লিওপড ওয়ালকট
জন্ম(১৯২৬-০১-১৭)১৭ জানুয়ারি ১৯২৬
সেন্ট মাইকেল, বার্বাডোস
মৃত্যু২৬ আগস্ট ২০০৬(2006-08-26) (বয়স ৮০)
বার্বাডোস
উচ্চতা৬ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, প্রশাসক
সম্পর্ককিথ ওয়ালকট (ভ্রাতা), মাইকেল ওয়ালকট (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৮)
২১ জানুয়ারি ১৯৪৮ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৩১ মার্চ ১৯৬০ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫৪–১৯৬৪ব্রিটিশ গায়ানা
১৯৪১–১৯৫৬বার্বাডোস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৪ ১৪৬
রানের সংখ্যা ৩,৭৯৮ ১১,৮২০
ব্যাটিং গড় ৫৬.৬৮ ৫৬.৫৫
১০০/৫০ ১৫/১৪ ৪০/৫৪
সর্বোচ্চ রান ২২০ ৩১৪*
বল করেছে ১,১৯৪ ৩,৪৮৭
উইকেট ১১ ৩৫
বোলিং গড় ৩৭.০৯ ৩৬.২৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৫০ ৫/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫৩/১১ ১৭৪/৩৩
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

স্যার ক্লাইড লিওপড ওয়ালকট, কেএ, জিসিএম (ইংরেজি: Clyde Leopold Walcott; জন্ম: ১৭ জানুয়ারি, ১৯২৬ - মৃত্যু: ২৬ আগস্ট, ২০০৬) বার্বাডোসে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।

থ্রি ডব্লিউ নামে পরিচিত এভারটন উইকস এবং ফ্রাঙ্ক ওরেলের সাথে তার নামটিও উচ্চারিত হতো। বৈশ্বিক পর্যায়ে তিনজনই অত্যন্ত সফল ব্যাটসম্যানরূপে স্বীকৃত ছিলেন ও ১৮ মাসের ব্যবধানে আগস্ট, ১৯২৪ থেকে জানুয়ারি, ১৯২৬ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে স্বল্পদূরত্বে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৪৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে তাদের একযোগে অভিষেক ঘটে। ১৯৫০-এর দশকের মধ্যবর্তী সময়কালে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানরূপে পরিচিতি পেয়েছিলেন ক্লাইড ওয়ালকট[১] পরবর্তীতে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে প্রথম ইংরেজবিহীন ও অ-শ্বেতাঙ্গ সভাপতিরূপে ক্রিকেট প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

বার্বাডোসের ব্রিজটাউন এলাকার নিউ অর্লিয়েন্সে জন্মগ্রহণ করেন ওয়ালকট। বার্বাডোস অ্যাডভোকেট নামীয় সংবাদপত্রে তার বাবা প্রিন্টিং ইঞ্জিনিয়াররূপে কাজ করতেন। কম্বারমেয়ার স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি। এরপর ১৪ বছর বয়স থেকে বার্বাডোসের হ্যারিসন কলেজে অধ্যয়ন করেন। সেখানেই তিনি কলেজ দলের পক্ষে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনসহ ইনসুইঙ্গারের সাহায্যে বোলিংয়ের কলা-কৌশল রপ্ত করেন।

১৯৫১ সালে মুরিয়েল অ্যাশবি নাম্নী এক রমণীকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে মাইকেল ওয়ালকট নামীয় পুত্রসহ দুই পুত্র রয়েছে। কিথ ওয়ালকট নামীয় ক্লাইড ওয়ালকটের এক ভাই ও মাইকেল - উভয়েই পরবর্তীকালে বার্বাডোস দলের পক্ষ হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন।

ক্রিকেট জীবন[সম্পাদনা]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় ১৯৪২ সালে বার্বাডোসের পক্ষে সর্বপ্রথম খেলেন ১৬ বছর বয়সী ক্লাইড ওয়ালকট। ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৬ সালে প্রথম চমক দেখান তিনি। দীর্ঘক্ষণ উইকেটে অবস্থান করে বিদ্যালয়ের বন্ধু ফ্রাঙ্ক ওরেলকে সাথে নিয়ে ৪র্থ উইকেট জুটিতে ত্রিনিদাদের বিপক্ষে ৫৭৪ রান করেন। তিনি করেছিলেন ৩১৪* ও ফ্রাঙ্ক ওরেল ২৫৫*। এ রানের জুটিটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে বিশ্বরেকর্ড যা অদ্যাবধি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনুকূলে রয়েছে।

জানুয়ারি, ১৯৪৮ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন ওয়ালকট।[২] ব্রিজটাউনে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্ট ড্র হয়েছিল। দীর্ঘদেহী ওয়ালকট স্ট্রোকপ্লেয়ার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। পিছনের পায়ে ভর রেখে দ্রুততার সাথে কাট, ড্রাইভ অথবা পুল শট মারতেন তিনি। প্রথম ১৫টি টেস্টে দলের পক্ষ হয়ে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পিঠের ব্যথাজনিত কারণে গ্লাভস বা দস্তানা নিয়ে পিছনে না দাঁড়াতে পারায় ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ ঘটান ও সফলকাম হন। ফিল্ডিংয়ে স্লিপ অবস্থানে দাঁড়াতেন এবং মাঝে-মধ্যে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলারের ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হতেন তিনি।

১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ইয়ান জনসনের অধিনায়কত্বে সফররত অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে চমৎকার খেলেন। তিনি রেকর্ডসংখ্যক পাঁচটি শতরানের ইনিংস খেললেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে পরাভূত হয়।

অবসর পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

পূর্ণাঙ্গ টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন শেষে ব্যাটিং গড়
অস্ট্রেলিয়া ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান
৯৯.৯৪
দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রেইম পোলক
৬০.৯৭
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ জর্জ হ্যাডলি
৬০.৮৩
ইংল্যান্ড হার্বার্ট সাটক্লিফ
৬০.৭৩
ইংল্যান্ড এডি পেন্টার
৫৯.২৩
ইংল্যান্ড কেন ব্যারিংটন
৫৮.৬৭
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ এভারটন উইকস
৫৮.৬১
ইংল্যান্ড ওয়ালি হ্যামন্ড
৫৮.৪৫
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ গারফিল্ড সোবার্স
৫৭.৭৮
ইংল্যান্ড জ্যাক হবস
৫৬.৯৪
ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্লাইড ওয়ালকট
৫৬.৬৮
ইংল্যান্ড লেন হাটন
৫৬.৬৭

উৎস: ক্রিকইনফো
যোগ্যতা: পূর্ণাঙ্গ খেলোয়াড়ী জীবনে কমপক্ষে ২০ ইনিংস।

২০০৬ সালে আর্সেনালের ফুটবলার থিও ওয়ালকট ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলে প্রথম মনোনীত হলে ব্যাপকভাবে গুঞ্জন রটিয়ে পড়ে যে স্যার ক্লাইড তার কাকা। দ্য সানডে টেলিগ্রাফে এ বিষয়ে একটি নিবন্ধে স্যার ক্লাইড বলেন যে, 'থিও ওয়ালকট তার আত্মীয় সম্পর্কীয় কেউ নন'।[৩] ক্লাইড ওয়ালকট দু'টি আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। ১৯৫৮ সালে 'আইল্যান্ড ক্রিকেটার্স' এবং ১৯৯৯ সালে 'সিক্সটি ইয়ার্স অন দ্য ব্যাকফুট'। ওয়ালকট ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বপালনকালে প্রথিতযশা বোলার মাইকেল হোল্ডিংয়ের অভিষেক ঘটেছিল। তার মৃত্যুতে হোল্ডিং বলেন,[৪]

আরও একজন ভাল মানুষ পৃথিবী থেকে চলে গেলেন - তিনি শুধুমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজের কীর্তিমান ব্যক্তি ছিলেন না; বরঞ্চ সমগ্র বিশ্বেরও কীর্তিমানদের একজন ছিলেন।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

'থ্রি ডব্লিউজ' নামে খ্যাত এভারটন উইকস, ফ্রাঙ্ক ওরেল ও ক্লাইড ওয়ালকটের সম্মানার্থে বার্বাডোস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ কেনসিংটন ওভালের একটি স্ট্যান্ডের নামকরণ করে।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. LG ratings graph for Walcott.
  2. 1st Test
  3. Theo who? I've never heard of this other Walcott, says Sir Clyde, Sunday Telegraph, 14 May 2006.
  4. "Tribute to Sir Clyde Walcott"। ৪ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  5. "Kensington Oval"। West Indies Cricket Board। ২০০৮-০৫-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-২৯ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

পূর্বসূরী
কলিন কাউড্রে
আইসিসি সভাপতি
১৯৯৩-১৯৯৭
উত্তরসূরী
জগমোহন ডালমিয়া