মা ভবতারিণী মন্দির, নবদ্বীপ

স্থানাঙ্ক: ২৩°২৪′৩৮.১১″ উত্তর ৮৮°২২′১২.২৫″ পূর্ব / ২৩.৪১০৫৮৬১° উত্তর ৮৮.৩৭০০৬৯৪° পূর্ব / 23.4105861; 88.3700694
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মা ভবতারিণী মন্দির
মা ভবতারিণী মাতা
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলানদিয়া জেলা
ঈশ্বরকালী
অবস্থান
অবস্থানপোড়ামাতলা, নবদ্বীপ
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
দেশভারত
স্থানাঙ্ক২৩°২৪′৩৮.১১″ উত্তর ৮৮°২২′১২.২৫″ পূর্ব / ২৩.৪১০৫৮৬১° উত্তর ৮৮.৩৭০০৬৯৪° পূর্ব / 23.4105861; 88.3700694 মানচিত্র
স্থাপত্য
ধরনবাংলার মন্দির স্থাপত্য, দালানের উপরে চার চালা
সৃষ্টিকারীমহারাজ গিরিশচন্দ্র
প্রতিষ্ঠার তারিখ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দ
সম্মুখভাগের দিকদক্ষিণমুখী

মা ভবতারিণী মন্দির নবদ্বীপ শহরের প্রায় দ্বিশতাধিক প্রাচীন একটি কালীমন্দির। প্রথমে গণেশ ও পরে সেই গণেশ মূর্তির রূপান্তরের মাধ্যমে এই ভবতারিণী কালী বিগ্রহের সৃষ্টি। দালান সহ মন্দিরটি সমতল ছাদের উপর পঙ্খ-অঙ্কিত শিখরযুক্ত চারচালা মন্দির।[১] পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটিকে নবদ্বীপের হেরিটেজ মন্দির হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।[২] নবদ্বীপের পোড়ামাতলায় এই মন্দিরের পাশেই পোড়ামা কালী মন্দিরভবতারণ শিব মন্দির অবস্থিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পোড়ামাতলা মন্দির চত্ত্বরের পুরাতন আলোকচিত্র: বামপাশে মা ভবতারিণী মন্দির, মধ্যে বটগাছ সহ মা পোড়ামাতা ও ডানপাশে ভবতারণ শিব মন্দির

নদিয়ার রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদারের পুত্র রাঘব তার রাজত্বের শেষ পর্বে নবদ্বীপের গঙ্গার ধারে মন্দিরসহ প্রকাণ্ড এক গণেশ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৬৬৯ সালে গণেশ মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন কিন্তু তার পরপরই তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর প্রায় ১০০ বছর পর বন্যাপ্রবণ নবদ্বীপ ভাঙনের কবলে পরলে তৎকালীন নদিয়ার রাজা দোর্দণ্ডপ্রতাপ কৃষ্ণচন্দ্র বিগ্রহ দুটিকে সেখান থেকে সরিয়ে আনেন। কিন্তু বিগ্রহ স্থানান্তরের সময় বহু মানুষের স্পর্শ লাগায় এখানকার পণ্ডিতবরেরা বিগ্রহকে ১২ বছর মাটির তলায় রাখার বিধান দেন। পরে সেই বিগ্রহ মাটি থেকে তোলা হয় কৃষ্ণচন্দ্রের প্রপৌত্র মহারাজ গিরিশচন্দ্রের আমলে। সেইসময় বিগ্রহটিকে মাটি থেকে তোলার সময় গণেশের শুঁড়টি ভেঙে যায়।[৩] তখন রাজার আদেশে কোনো এক অজ্ঞাত শিল্পী গণেশ মূর্তি থেকে গিরিশচন্দ্র মহারাজের আরাধ্যা দেবী আনন্দময়ীর মূর্তি তৈরি করেন এবং দেবীমূর্তির নামকরণ করেন ভবতারিণী মাতা[৪]

রূপ বর্ণনা[সম্পাদনা]

১২ বছর মাটির নিচে রাখার পর মহারাজ গিরিশচন্দ্রের আমলে যখন মূর্তিটি পুনরুদ্ধার করা হয় তখন গণেশের শুঁড়টি ভেঙে গেলে বিগ্রহটিকে পরিবর্তন করে কালী রূপ দেওয়া হয়। সেই কারণে তথাকথিত কালী মূর্তি থেকে এটি প্রাচীন মূর্তিটি সম্পূর্ণরূপে আলাদা। এখানে দেবী জোড়াসনে উপবিষ্টা এবং গণেশের মতো ভুঁড়িও দেখা যায়। কান ও জিভের কাছটা লক্ষ্য করলে আগের গণেশ মূর্তির আভাস পাওয়া যায়। কালী মূর্তির নিচে শায়িত শিবকেও সাধারণের থেকে একটু আলাদা দেখতে।

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

প্রায় দুশো বছরের প্রাচীন মন্দিরটিকে তত্সংলগ্ন একটি প্রাচীন বটগাছ আষ্টেপৃষ্টে আবৃত আছে। এই বটগাছের গোড়াতেই ঘট স্থাপন করে পোড়ামা পূজিত হওয়ায় বর্তমানে বটগাছের কোনো ক্ষতিসাধন করে মন্দিরের কোনো বৃহত সংস্কার বর্তমানে সম্ভবপর নয়।[৪]

ভবতারিণী মন্দির নবদ্বীপ

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. নবদ্বীপের ইতিবৃত্ত। নবদ্বীপ, নদিয়া: মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল। জানুয়ারি ২০১৩। পৃষ্ঠা ৩৩৪। 
  2. "WEST BENGAL HERITAGE COMMISSION, Report July 2019" (পিডিএফ)। West Bengal Heritage Commission, Government of West Bengal। পৃষ্ঠা 4। ২ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২১ 
  3. রায়, মোহিত (১৯৭৫)। বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিয়কুমার; দাশ, সুধীররঞ্জন, সম্পাদকগণ। নদীয়া জেলার পুরাকীর্তি। পূর্ত (পুরাতত্ত্ব বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পৃষ্ঠা ৪৪। 
  4. সংবাদদাতা, নিজস্ব। "ভবতারিণী মন্দির সংস্কারে ভক্তেরাই"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-১০