অনু মহাপ্রভু মন্দির
অনু মহাপ্রভু মন্দির | |
---|---|
![]() মনিপুরী ঘরানার নবরত্ন ধারার অনুমহাপ্রভু মন্দির | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
ঈশ্বর | অনু মহাপ্রভু |
পরিচালনা সংস্থা | মনিপুর রাজবাড়ি |
অবস্থান | |
অবস্থান | নবদ্বীপ, পশ্চিমবঙ্গ![]() |
স্থানাঙ্ক | ২৩°২৩′৫১″ উত্তর ৮৮°২১′৫১″ পূর্ব / ২৩.৩৯৭৫০° উত্তর ৮৮.৩৬৪১৭° পূর্ব মানচিত্র |
স্থাপত্য | |
ধরন | নবরত্ন মন্দির, বাংলার মন্দির স্থাপত্য (মণিপুরী শৈলীর প্রভাব বর্তমান) |
সৃষ্টিকারী | চৌরজিৎ সিংহ |
প্রতিষ্ঠার তারিখ | ১৮১৩ |
অনুমহাপ্রভু মন্দির নবদ্বীপের মনিপুর রাজবাড়ির মন্দির। মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্রের কন্যা বিম্বাবতী দেবীর সেবিত বিগ্রহ এখানে পূজিত হয়। মন্দিরটি নবদ্বীপ শহরের দক্ষিণে মনিপুর রাজবাড়ীতে অবস্থিত।[১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]অনু মহাপ্রভু মন্দিরের প্রাচীন মূর্তিটি ১৭৯৮ খ্রিষ্টাব্দে মনিপুর রাজ ভাগ্যচন্দ্র নবদ্বীপে নিয়ে এসেছিলেন। মহারাজ চৌরজিৎ সিংহ ১৮১৩ খ্রিষ্টাব্দে এখানে একটি মন্দির নির্মাণ করেন। ১৩২৭ বঙ্গাব্দ এই নির্মিত হয়। তখন একটি সমতল ছাদের মন্দির তৈরি করা হয়। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরের চূড়া ও শিখর নির্মাণ হয়।
বিগ্রহ
[সম্পাদনা]
মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্রের কন্যা বিম্বাবতী দেবীর সেবিত বিগ্রহ এখানে পূজিত হয়। কাঁঠাল কাঠ নির্মিত অপরূপ এই অনুমহাপ্রভুর মূর্তির নির্মাণ শৈলীতে মণিপুরী শৈলীর প্রভাব সুস্পষ্ট।
এছাড়াও অষ্টাদশ শতাব্দীতে মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্রের শাসনামলে তার কন্যা বিম্বাবতী দেবীর বিশেষ উদ্যোগে সিলেটে রাসেশ্বরী পালার সূচনা করেন।[২]
রথযাত্রা
[সম্পাদনা]নবদ্বীপের মণিপুর রাজবাড়ির রথ প্রায় তিন শতাব্দী ধরে পালন হচ্ছে। মণিপুররাজ ভাগ্যচন্দ্র সিংহ ১৭৯৭ সালে নবদ্বীপে আসেন ।[৩] তার কন্যা বিম্বাবতী মঞ্জরি মহাপ্রভু দর্শনের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। এরপর রাজা ভাগ্যচন্দ্রের মৃত্যুর পর কুমার চৌরজি সিংহ বোন বিম্বাবতী মঞ্জরীর ইচ্ছানুসারে নবদ্বীপে বসতি স্থাপন করেন। তারপর ১৮০৫ থেকে নবদ্বীপে মণিপুর রাজবাড়ির রথের সূচনা হয়। রাজবাড়ির চারটি মন্দির ঘুরে রথ পুনরায় রাজবাড়িতেই ফিরে আসে। মাসির বাড়ির প্রথা এখানে নেই। তবে উল্টোরথ পর্যন্ত প্রতি সন্ধ্যায় উৎসব হয়। মণিপুরী নাচের সঙ্গে জয়দেবের পদ গেয়ে জগন্নাথের সন্ধ্যারতি এই রথযাত্রার স্বতন্ত্র ঐতিহ্য।
নবদ্বীপ তথা নদিয়ার অন্যতম প্রাচীন এই রথযাত্রা প্রসঙ্গে গবেষক প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন,[৪]
“ | ১৭৪০-৫০ খ্রিস্টাব্দে মণিপুরের মানুষ গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেওয়া শুরু করেন। মণিপুরের পরম বৈষ্ণব মহারাজ ভাগ্যচন্দ্রের হাত ধরেই ১৭৯৮ খ্রিষ্টাব্দে নবদ্বীপে মণিপুরীদের উপনিবেশ গড়ে ওঠে। মণিপুরের প্রথা মেনেই রথযাত্রা পালিত হয়। | ” |
মণিপুরের রাজবাড়ির রথ প্রথা প্রকরণে উল্লেখযোগ্য স্বতন্ত্রের অধিকারী। একমাত্র মণিপুরের রথেই জগন্নাথদেব একমাত্র আরোহী। রথ থেকে উল্টোরথ প্রতিদিন রাত্রে জগন্নাথদেবের সামনে কবি জয়দেবের দশাবতার স্তোত্র গাওয়া হয়। মণিপুরের রথে জগন্নাথদেব একা হওয়ার একটি জনশ্রুতি আছে। প্রবীরবাবু বলেন,
“ |
দ্বারকা থেকে বৃন্দাবনে কৃষ্ণ একা এসেছিলেন। সেখানে তিনি রাধারানি-সহ অন্যান্য গোপিনীদের কৃপা করেন। আমাদের রথে সেই দর্শনটিই অনুসরণ করা হয়। তাই প্রতিদিন রাতে জয়দেবের দশাবতার স্তোত্র পাঠ করা হয়। |
” |
মণিপুর রথের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলো এই রথ যাত্রাপথে বিভিন্ন ভক্তের বাড়িতে থামে এবং সেই বাড়ির তরফ থেকে জগন্নাথকে আরতি করা হয় এবং তার ভোগ দেওয়া হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Sri Sri Anumahaprabhu Mandir, Manipur Old Palace | Church/Religious Organization | India | eListing.in"। eListing.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সিলেটে 'রাসেশ্বরী পালা' পরিবেশন"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ সংবাদদাদাতা, নিজস্ব। "ভাগ্যচন্দ্র স্মরণে মিশে গেল নবদ্বীপ-মণিপুর"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০১।
- ↑ "আনন্দবাজার পত্রিকা - মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০১।