চন্দ্রকথা
চন্দ্রকথা | |
---|---|
পরিচালক | হুমায়ূন আহমেদ |
রচয়িতা | হুমায়ূন আহমেদ |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | মকসুদ জামিল মিন্টু |
চিত্রগ্রাহক | মাহফুজুর রহমান খান |
সম্পাদক | আতিকুর রহমান মল্লিক |
পরিবেশক | নুহাশ চলচ্চিত্র |
মুক্তি | ২২ আগস্ট ২০০৩ |
স্থিতিকাল | ১৪২ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
চন্দ্রকথা হল ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী নাট্য চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। এটি তার নিজের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নিজ চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নুহাশ চলচ্চিত্র-এর ব্যানারে নির্মাণ করেন।[১] এতে প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস ও মেহের আফরোজ শাওন। এছাড়াও আছেন আসাদুজ্জামান নূর, আহমদ রুবেল, চম্পা, এবং স্বাধীন খসরু।
চলচ্চিত্রটি ২০০৩ সালের ২২ আগস্ট বাংলাদেশে মুক্তি পায়। আহমদ রুবেল এবং শাওন ৬ষ্ঠ মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে সমালোচনা পুরস্কার শাখায় যথাক্রমে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন।
কাহিনির সারাংশ
[সম্পাদনা]জমিদার সরকার জমিদারী চলে গেলেও এখনো সেই মর্যাদা ধরে রেখে চলেছেন। তিনি তার বিশাল মহলে এক রকম নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেন। যদিও তার পুত্র, পুত্রবধু মদিনা ও নাতনী জয়তরী একই বাড়িতে থাকে। তার একমাত্র আজ্ঞাবহ তার ভৃত্য আমিন। জমিদার কাকের কা কা শব্দে বিরক্ত এবং সকালে কাক কা কা করলে তার বন্দুক নিয়ে কাকের উদ্দেশ্যে গুলি ছুড়েন। আমিন সেগুলো কুড়িয়ে এনে জমিদারকে দেখান এবং জয়তরী সেগুলো মাটিতে পুঁতে রাখে। গ্রাম্য যুবক জহির একদিন একটি মৃত কাক ধরে নিয়ে যায় এবং তা পুড়িয়ে খাওয়ার আয়োজন করে। জহির তার খালার বাড়িতে থাকে। জহিরের খালাতো বোন চন্দ্র জহিরের এই কর্মকাণ্ড দেখে তার মায়ের কাছে অভিযোগ জানায়। তার মা জহিরের খাবার বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
চন্দ্র জমিদার বাড়িতে দুধ দিতে যায়। সেখান থেকে আমিনের তাকে ভালো লাগে। আমিন চন্দ্রের মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। চন্দ্রও এই প্রস্তাবে সম্মত হয়। আমিন জমিদারের সম্মতি নিয়ে বিয়ের আয়োজন শুরু করে। নতুন খাট বানায়, মদিনাকে বধূ বরণের আয়োজন করতে অনুরোধ করে এবং গ্রাম্য পাঠশালার শিক্ষককে বরযাত্রী হিসেবে যাওয়ার নিমন্ত্রণ দেয়। কিন্তু বাধ সাধে জহির। বিয়ের দিন সে চন্দ্রকে জানায় সে তাকে ভালোবাসে। চন্দ্রও জহিরকে পছন্দ করে এবং তার সাথে পালিয়ে যায়। ফলে আমিনের সাথে চন্দ্রের বিয়ে ভেঙ্গে যায়।
রাতে জহির আর চন্দ্র ফিরে এসে দেখে চন্দ্রের মা আত্মহত্যা করার আয়োজন করছে। চন্দ্রের মা জহিরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে গ্রাম্য সালিশ পরের দিন তাদের বিচারের জন্য ডাকে। চন্দ্র ও তার মা বিচারের ভয়াবহতা সম্পর্কে শিউরে ওঠে। পরদিন ঘাটে বসে গান গাওয়ার সময় জমিদার তার গান শুনতে পায় এবং তার পরিচয় জানতে পারে। সন্ধ্যায় সালিশে বিচারে তাদের একঘরে করে দেওয়া হলে চন্দ্রের মা জমিদারের কাছে তাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করার প্রার্থনা জানায়। জমিদার চন্দ্রকে তার সাথে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়, কারণ জমিদারের স্ত্রীকে কেউ কিছু বলতে পারবে না। জমিদারের সাথে বিয়ে হওয়ায় এই যাত্রায় বিপদ থেকে উদ্ধার হলেও চন্দ্র পরে আরও বড় বিপদের সম্মুখীন হয়।
কুশীলব
[সম্পাদনা]- ফেরদৌস আহমেদ - জহির
- মেহের আফরোজ শাওন - চন্দ্র
- আসাদুজ্জামান নূর - জমিদার সরকার
- আহমদ রুবেল - আমিন
- চম্পা - মদিনা
- স্বাধীন খসরু - জমিদারের পুত্র
- এজাজুল ইসলাম - পাঠশালার শিক্ষক
- মুনিরা মিঠু - চন্দ্র'র মা
- বহতা সাহা - জয়তরী
- নাজমুল হুদা বাচ্চু - গ্রামের মুরুব্বী
- দীপক কুমার সুর - গ্রাম্য ব্যক্তি
- হাসমত খাঁন - মুন্না
- আহমেদ আমজাদ - আমজাদ
সঙ্গীত
[সম্পাদনা]চন্দ্রকথা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা ও সুর করেছেন মকসুদ জামিল মিন্টু। চলচ্চিত্রের চারটি গানের কথা লিখেছেন হুমায়ূন আহমেদ এবং কাজী নজরুল ইসলাম রচিত "পথহারা পাখি" গানটিও এই চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সুবীর নন্দী, এন্ড্রু কিশোর, রুনা লায়লা, সেলিম চৌধুরী এবং মেহের আফরোজ শাওন।
গানের তালিকা
[সম্পাদনা]নং. | শিরোনাম | গীতিকার | সুরকার | কণ্ঠশিল্পী(গণ) | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|---|---|
১. | "ও আমার উড়াল পঙ্খীরে" | হুমায়ূন আহমেদ | মকসুদ জামিল মিন্টু | সুবীর নন্দী | : |
২. | "আমার ভাঙ্গা ঘরে ভাঙ্গা চালা" | হুমায়ূন আহমেদ | মকসুদ জামিল মিন্টু | রুনা লায়লা | : |
৩. | "গরুর গাড়ির দুই চাক্কা" | হুমায়ূন আহমেদ | মকসুদ জামিল মিন্টু | এন্ড্রু কিশোর | : |
৪. | "চাঁদনী পসরে কে" | হুমায়ূন আহমেদ | মকসুদ জামিল মিন্টু | সেলিম চৌধুরী | : |
৫. | "পথহারা পাখি" | কাজী নজরুল ইসলাম | মকসুদ জামিল মিন্টু | মেহের আফরোজ শাওন | : |
পুরস্কার
[সম্পাদনা]বছর | পুরস্কারের বিভাগ | মনোনীত চলচ্চিত্র | ফলাফল | সূত্র |
---|---|---|---|---|
২০০৪ | শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা (সমালোচক) | আহমদ রুবেল | বিজয়ী | [২] |
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী (সমালোচক) | মেহের আফরোজ শাওন | বিজয়ী |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সিনে-দুপুরে হুমায়ূন আহমেদের 'চন্দ্রকথা'"। দৈনিক ইত্তেফাক। ইত্তেফাক গ্রুপ অব পাবলিকেশন্স লিঃ। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Meril-Prothom Alo Award handed over"। দ্য ডেইলি স্টার। ২২ মে ২০০৯। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে চন্দ্রকথা (ইংরেজি)
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে চন্দ্রকথা
- ২০০৩-এর চলচ্চিত্র
- ২০০০-এর দশকের নাট্য চলচ্চিত্র
- বাংলাদেশী উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র
- বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র
- বাংলাদেশী চলচ্চিত্র
- বাংলাদেশী নাট্য চলচ্চিত্র
- মকসুদ জামিল মিন্টু সুরারোপিত চলচ্চিত্র
- হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত চলচ্চিত্র
- বাংলাদেশে ধারণকৃত চলচ্চিত্র
- ২০০০-এর দশকের বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র
- বাংলা ভাষার বাংলাদেশী চলচ্চিত্র
- ২০০০-এর দশকের পটভূমিতে চলচ্চিত্র