বাংলার আঞ্চলিক খেলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সাধারণত ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্ব অংশ অথাৎ ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বারাক অঞ্চল এবং  বাংলদেশ কে বাংলা বলে। এখানকার মানুষের প্রধান ভাষা বাংলা তাই এদের বাঙালি বলে। এই অঞ্চলের  বেশির ভাগ মানুষ গ্রামেই বসবাস করে। এই গ্রামে গুলোই আগে অনকে আঞ্চলিক খেলাছিল যা আজ প্রায়ই অবলুপ্তর দিখে। যেসব খেলা গুলো সবাই উপকৃত হতো , শারীরিক ও মানসিক ভাবে । এই সব বেশির ভাগ খেলা গুলিই খেলা যেত খুব কম সরামজ্যাম দিয়ে। যেগুলির মধ্যে কিট কিট ছিল মেয়েদের জন্য ,গুলি ডান্ডা, রাজা- মন্ত্রী -চোর- সিপিই ইত্যাদি।

আঞ্চলিক খেলা[সম্পাদনা]

কিট কিট[সম্পাদনা]

কিট কিট খেলাটা সাধারনত গ্রামীণ মেয়ের মধ্যেই বেশি খেলা হতো। এখন আর এই খেলাটা খুব একটা দেখা গ্রামে যায়না । কিছু মেয়ে নিয়ে এই খেলাটা খেলা হয় এবং ন্যুনতম দুজন হলেও হয় । ফুটবল খেলার মতোই এখানে ও দুটো দলে ভাগ হতে হয় । একটা ছোটো মাটির খন্ড দিয়ে খেলতে হয় , যেটা কে বলে গুটি । এই গুটি সাধারণত চার কোণা বা গোলাকার হয়। আর খেলাটির জন্য মাটিতে একটা বড়ো আয়তাকার ঘর কাটটে হয় এবং সেই ঘরটি আবারও মূল পাঁচ ভাগে ভাগ করা থাকে । প্রথম ঘরটিকে বলে একের ঘর , দ্বিতীয় টিকে বলে দুইয়ের ঘর, তৃতীয় টিকে বলে তিনের ঘর, চতুর্থ টিকে বলে চারের ও পঞ্চমটিকে বলে পাঁচের ঘর এবং পঞ্চমের উপর আরেকটি অন্য  অর্ধ বৃত্তাকার ঘর  থাকে , তাকে সুমন্দ্র বলে। এই প্রত্যেক ঘরে একটা করে নম্বর থাকে। যে দল যেটা কিনতে পারে সেটা তার নম্বর হয়। যেমন কোন দল যদি একের ঘর জিততে পারে তাহলে সে দল পাবে এক নম্বর বা পয়েন্ট।এই ভাবে পাঁচ নম্বর কিনলে পাঁচ পাবে। সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট থাকে সুমদ্রে ঘরে।[১][২]

   খেলাটা শুরু হয় একের ঘর থেকে অথাৎ গুঁটি টাকে প্রথমে একের ঘরে রেখে এক পা দিয়ে দুই এর ঘর, তারপর তিনের ঘর এই ভাবে পাঁচের ঘর পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয়। আবার একই ভাবে পাঁচের ঘর থেকে একের ঘর হয়ে বাইরে আসতে হবে। এই যাওয়া আসার সময় কিট কিট গাইতে হয়। গুটি নিযে যাওয়া বা আসার সময় যদি কিট কিট গাওয়া বন্ধ বা দম শেষ হয়ে যায় তাহলে সে বাদ হয়ে যায়। আবার যদি গুটি দুই ঘরে দাগে পড়ে তাহলেও সে বাদ হয়ে যাবে।

   এই খেলার অনেক গুলো ধাপ আছে। প্রথমত গুটি ঘোরানো, হাত করা, কানা করা, কিট কিট, পা করা, মাথা করা, হাপ ও কাপ করা এবং সবশেষ ঘর কেনা। খেলার শেষ যাদের ঘর কেনা বেশি হয় তারা জয়ী হয়।

এই খেলাটা আঞ্চলিক জায়গা অনুযায়ী আলাদা আলাদা ঘর ব্যবহার করে, কিন্তু প্রত্যেক ক্ষেত্রেই মূল জিনিসটা একই।

গুলি ডান্ডা[সম্পাদনা]

মেয়ের মধ্যে যেমন কিট কিট খেলা, তেমনি ছেলেদের মধ্যে গুলি ডান্ডা খেলা খুব প্রচলিত ছিল। এটা অনেকটা ক্রিকেট খেলার মতো, কখনো বা এটা কে বলা হয় বাংলার ক্রিকেট । এই খেলতো কিছু ছেলের প্রয়োজন হয় এবং দুটো দলে করে হয়। সাধারণত দুটি জিনিসের প্রয়োজন হয় একটা একটা কাঠের লাটি যেটাকে বলে ডান্ডা আর একটা ছোটো দুই ধার সূচালো কাঠের গুলি। গুলির মাপের একটা ছোট গর্ত মাটিতে করতে হয় , যেটা কে ব্যবহার করে ,লাটির এক মাথায় দিয়ে দুরে ছুড়তে হয়। সামনের দিকে অন্য দলের প্লেয়ার দাঁড়িয়ে থাকে , যদি তারা গুলিতে টিকে ক্যাচ ধরতে পারে তাহলে সে আউট হলে বিবেচিত হবে , আর যদি আউট না হয় তাহলে সে তার ডান্ডা তাকে গর্তের এক ডান্ডা পিছনে রাখে। এরপরে অন্য এক একজন প্লেয়ার সেটাকে ছোঁড়ে ডান্ডার দিকে, যদি গুলি ডান্ডায় পর্শ করে তাহলে সে আউট হয়ে যাবে অথবা এই সময় যদি গুলিটা সম্পূর্ণ ভাবে গর্তটিতে পরে তাহলেও সে আউট হয়ে যাবে। আর যদি আউট নাহয় তাহলে সে গুলিটিকে মারা তিনবার সুযোগ পাবে। এই তিনবারের মধ্যেও যদি ডান্ডা দিয়ে গুলিকে না মারতে পারে তাহলে সে আউট হয়ে যাবে এবং পরের ছেলে খেলার সুযোগ পাবে ।এই ভাবে যখন সবাই আউট হয়ে যায়, অন্য দলটি খেলার সুযোগ পাই।

     আর যদি না আউট হয় এবং ওই তিনবারের মধ্যে যদি গুলিটিকে মেরে দূরে পাঠাতে পারে তাহলে পয়েন্ট পাবে। যতদূর যাবে ততো বেশি পয়েন্ট পাবে। এই ভাবে খেলার যে টিমের পয়েন্ট বেশি হবে সেই দল জিতে যাবে।

যখন গুলি টি মাটির উপর থাকে তখন কেউ যদি কোনো প্লেয়ার গুলিটিকে একবারের বেশি মারে তাহলে তার পয়েন্ট আরো বেশি হবে। যেমন যদি সে দুবার মারে থাকে ডাবল বলে , তিন বার মারে পয়েন্ট তিনগুন বেড়ে যাবে।

অন্য আরো জনপ্রিয় খেলা[সম্পাদনা]

রাজা- মন্ত্রী-চোর-সিপাই:

লুকোচুরি:

লাট্টু:

রুমাল চুরি:

পিটু :

কুমির ডাঙা:

তথ্যসূত্ৰ[সম্পাদনা]

  1. Ghosh, Pallab (২০১৫)। "Traditional Sports and Games Culture Around West Bengal"। International Journal of Novel Research in Humanity and Social Sciences2 (3): 1–5। আইএসবিএন 2394-9694 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: length (সাহায্য) 
  2. "Traditional rural Bengali games" 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]