কিথ দাবেঙ্গা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কিথ দাবেঙ্গা
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকিথ এমবুসি দাবেঙ্গা
জন্ম (1980-08-17) ১৭ আগস্ট ১৯৮০ (বয়স ৪৩)
বুলাওয়াও, জিম্বাবুয়ে
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৭১)
১৫ আগস্ট ২০০৫ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২০ সেপ্টেম্বর ২০০৫ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৮৯)
৪ সেপ্টেম্বর ২০০৫ বনাম ভারত
শেষ ওডিআই১২ ডিসেম্বর ২০১০ বনাম বাংলাদেশ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৯ - বর্তমানমাতাবেলেল্যান্ড (ওয়েস্টার্নস)
২০০০ - ২০০১সিএফএক্স একাডেমি
২০১৩ - ২০১৫ফার্গাসলাই ক্রিকেট ক্লাব
২০১৬ - ২০১৭কেবি ইন ডেনমার্ক
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩৭ ১০৯ ১২৩
রানের সংখ্যা ৯০ ৫১৪ ৪,৯৪৪ ১,৮১১
ব্যাটিং গড় ১৫.০০ ১৯.০৩ ২৮.৯১ ২০.১২
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ৮/২২ ০/৩
সর্বোচ্চ রান ৩৫ ৪৫ ১৬১ ৮২*
বল করেছে ৪৩৮ ১১০৯ ১১,৩৭০ ৩,৬৭২
উইকেট ২৩ ১৪৮ ৯৯
বোলিং গড় ৪৯.৮০ ৪০.৬৯ ৩৯.৭২ ২৮.৮৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৩/১২৭ ৩/১৫ ৭/১ ৫/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ১২/– ১০৪/– ৫২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ জুন ২০২০

কিথ এমবুসি দাবেঙ্গা (ইংরেজি: Keith Dabengwa; জন্ম: ১৭ আগস্ট, ১৯৮০) বুলাওয়াও এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক জিম্বাবুয়ীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১] জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৫ থেকে ২০১০ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে মাতাবেলেল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন কিথ দাবেঙ্গা

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

মাতাবেলেল্যান্ডের কার্যকরী অল-রাউন্ডারের স্বীকৃতি পান। বুলাওয়েভিত্তিক বাইনেস জুনিয়র ও মিল্টন হাই স্কুলে অধ্যয়নকালে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। কিথ দাবেঙ্গা কার্যকর অল-রাউন্ডার হিসেবে ২০০০ সালে মাতাবেলেল্যান্ড দলের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলতে নামেন। ৫/৭৬ লাভ করেন তিনি। এরপর, সিএফএক্স একাডেমিতে এক মৌসুম অতিবাহিত করেন। লীগের খেলার অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০১ সালে সিএফএক্স একাডেমিতে যুক্ত হন। আমোদপ্রিয় ও সাদাসিধে প্রকৃতির কিথ দাবেঙ্গা খেলায় বেশ পরিশ্রমী ছিলেন। এ পর্যায়ে একাডেমির বর্ষসেরা ছাত্রের পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে, মাতাবেলেল্যান্ডে চলে যান। বেশকিছু দর্শনীয় খেলা উপহার দিয়ে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন।

১৯৯৯-২০০০ মৌসুম থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কিথ দাবেঙ্গা’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। মাতাবেলেল্যান্ডের পক্ষে নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন। তবে, ২০০৪-০৫ মৌসুমে মিডল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৬১ রানের স্মরণীয় ইনিংস বাদে তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। ২০০৪-০৫ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে এ-দলের পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন ও দলের সাথে নামিবিয়া এবং বাংলাদেশ গমন করেন। বাংলাদেশ এ-দলের বিপক্ষে প্রথম খেলায় ৫/৫৯ ও অপরাজিত ৫০ রান তুলেন।

২০০৫ সালে মিডল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৬১ রান তুলেন। এটিই তার একমাত্র শতরানের ইনিংস হিসেবে রয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে, জাতীয় দলে খেলার জন্যে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মূলতঃ তিনি বোলার হিসেবে খেলতেন ও ব্যাটিংয়ে দক্ষতার পরিচয় দেন। বলকে শূন্যে ভাসিয়ে স্পিন বোলিং করতেন। নিখুঁতভাব বজায় রাখলেও খুব কমই সফল হতেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে সচরাচর শিক্ষানবিস পর্যায়ে সজাগ দৃষ্টির অধিকারী ছিলেন। মেজাজ ভালো থাকলে বেশ দ্রুততার সাথে রান সংগ্রহে অগ্রসর হতেন। প্রকৃতপক্ষে মাঝারিসারি থেকে শুরু করে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। তবে, ২০০৯-১০ মৌসুমের শেষদিকে লোগান কাপে ইনিংস উদ্বোধনে নেমে কিছুটা সফল হয়েছিলেন। জানুয়ারি, ২০১০ সালে মিডওয়েস্ট রাইনোসের বিপক্ষে ১৫৮ রান করেন। দৌঁড়িয়ে ফিল্ডিং করতেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটিমাত্র টেস্ট ও সাঁইত্রিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন কিথ দাবেঙ্গা। ১৫ আগস্ট, ২০০৫ তারিখে বুলাওয়েতে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২০ সেপ্টেম্বর, ২০০৫ তারিখে হারারেতে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

আগস্ট, ২০০৫ সালে বুলাওয়েতে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২/৮৭ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। ব্যাট হাতে ২১ রান তুলেন। তন্মধ্যে, নিউজিল্যান্ডীয় তারকা ক্রিকেটার ও সেরা ব্ল্যাক ক্যাপ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র বলে ছক্কা হাঁকিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরফলে, পাঁচজন ক্রিকেটারের অন্যতম হিসেবে এ কৃতিত্বের অধিকারী হন। এছাড়াও, একমাত্র জিম্বাবুয়ীয় হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায় নিজেকে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। এছাড়াও, এরিক ফ্রিম্যান (১৯৬৮) ও কার্লাইল বেস্টের (১৯৮৬) পর তৃতীয় টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে এ কৃতিত্ব পান।[২][৩][৪][৫] পরবর্তীতে, মার্ক ক্রেগ (২০১৪) ও ধনঞ্জয় ডি সিলভা (২০১৬) এ তালিকায় যুক্ত হন।

ভারতের বিপক্ষে পরবর্তী দুই টেস্টে অংশ নেন। এটিই জিম্বাবুয়ের পক্ষে তার সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এ খেলাগুলোর মাঝে ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে ত্রি-দেশীয় সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়। হারারেতে ভারতের বিপক্ষে ওডিআই অভিষক হয় কিথ দাবেঙ্গা’র।

অল-রাউন্ডার হিসেবে উত্তরণ ঘটানোর ফলে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান। তবে, দলে প্রতিষ্ঠা লাভের ক্ষেত্রে তাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এরপর থেকে নিয়মিতভাবে একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিতেন। কিন্তু, কখনোই দলে স্থায়ীভাবে খেলতে পারেননি।

অবসর[সম্পাদনা]

২০০৬ সালে লিমিংটন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেন।[৬] ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তাকে জিম্বাবুয়ে দলে রাখা হয়। তবে, কোন খেলায় তাকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি। জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেট সংস্কারের পর থেকে ওয়েস্টার্নসের পক্ষে খেলছেন। ২০০৭ সালে লোগান কাপের একটি খেলায় ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৭/১ পান। এছাড়াও, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের ইতিহাসের এক ইনিংসে ৭ উইকেট লাভকারী বোলারদের ক্ষেত্রে এটি সেরা। তার পূর্বে ফ্রেড স্পফোর্থ ৭/৩ লাভ করেছিলেন।[৭] তবে, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট প্রদত্ত স্কোরবোর্ডে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। ফলশ্রুতিতে, দাবেঙ্গা’র এ কৃতিত্বে প্রশ্ন থেকে যায়।

২০১৩ সালে স্কটল্যান্ডীয় দল ফার্গাসলাইয়ের সাথে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। দলকে ক্রিকএইচকিউ৪০ কাপের শিরোপা লাভে সহায়তা করার পর ২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালে ফিরে যান। এ মৌসুমে দাবেঙ্গা সাত শতাধিক রান তুলে ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। গ্রীনকের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮৪ রান তুলেন। এছাড়াও, ডব্লিউডিসিইউ সিএলএল প্রথম বিভাগে ফার্গাসলাইয়ের শিরোপা বিপক্ষে প্রভূতঃ ভূমিকা পালন করেন। ২০১৫ সালে ফার্গাসলাই ছেড়ে পাইস্লেতে ফিরে যান। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্রিটজ ডি বিয়ার অব ফ্রি স্টেটের বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. http://www.espncricinfo.com/zimbabwe/content/player/55388.html
  2. Ask Steven – A six to start, and was Gilchrist's squash ball legal?
  3. "Six and in: Debutant's rare feat against Aussies"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২৯ 
  4. Unwalla, Shiamak (২০১৪-০৬-১২)। "Mark Craig and other batsmen who smashed six off first ball faced in an innings"Cricket Country (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২৯ 
  5. "Debutant de Silva joins exclusive club"cricket.com.au (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২৯ 
  6. "Lymington Cricket Club – Season 2006 Fixtures and Results"। ১৫ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০২০ 
  7. Ask Steven – Most runs, most spectators, and most letters in a name

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]