উমা শর্মা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উমা শর্মা
জন্ম১৯৪২ (বয়স ৮১–৮২)
পেশাধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক, শিক্ষক

উমা শর্মা (জন্ম: ১৯৪৪) একজন কত্থক নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক এবং শিক্ষক। একটি ধ্রুপদী নৃত্য ও সংগীতের একাডেমী, ভারতীয় সংগীত সদন তিনি পরিচালনা করছেন। এটি তার পিতা ১৯৪৬ সালে নয়াদিল্লিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ধ্রুপদী নৃত্যের পুরানো রূপ নটবরী নৃত্য বা বৃন্দাবনের রাসলীলাকে পুনর্জীবিত করার জন্য তিনি বিখ্যাত। এই ধরনটিই পরবর্তীকালে কত্থকরূপে বিবর্তিত হয়েছিল। [১][২][৩]

কত্থক মধ্যযুগীয় শতাব্দীর ভক্তিমূলক কৃষ্ণ বিষয়ক কবিতা এবং আঠারো এবং উনিশ শতকের সর্বাধিক চর্চিত রাজসভার কবিতার উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছিল, যা প্রেমের অনুভূতি শৃঙ্গার কে উদযাপিত করত।

প্রাথমিক জীবন এবং প্রশিক্ষণ[সম্পাদনা]

উমা শর্মার পরিবার রাজস্থানের ঢোলপুরের বাসিন্দা। ১৯৪২ সালে দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করে উমা শর্মা গুরু হীরালালজি এবং জয়পুর ঘরানার গিরবর দয়ালের কাছ থেকে তার নাচের প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তীকালে তিনি জয়পুর ঘরানার পণ্ডিত সুন্দর প্রসাদের ছাত্র হয়ে ছন্দ বদ্ধ ভাবে পা-চালনার কৌশল এবং একাধিক বিন্যাস শেখেন। লখনউ ঘরানার কত্থক ঐতিহ্যের গুরু শম্ভু মহারাজ এবং বিরজু মহারাজ, যাঁরা অভিনয়এর জন্য পরিচিত, উমা শর্মা দু'জনের সৃজনশীল সংশ্লেষ অর্জনের চেষ্টা করেছিলেন। [১] উমা নতুন দিল্লির সেন্ট টমাস স্কুলে পড়েছিলেন এবং তারপরে তিনি নয়াদিল্লির লেডি শ্রী রাম মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক হন।

পেশা[সম্পাদনা]

ঐতিহ্যবাহী নৃত্যগুলির উপস্থাপনা শেখার পরে, তিনি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নতুন নৃত্যভঙ্গি তৈরি করে এবং পূর্ণদৈর্ঘ্য নৃত্য-নাট্য রচনা করে কত্থকের মঞ্চায়নকে আরও প্রশস্ত করেছেন। তার নৃত্য নাট্য স্ত্রী (নারী), তার শক্তিশালী বিষয়ভিত্তিক বস্তু এবং শিল্পসম্মত উপস্থাপনার জন্য পরিচিত। স্ত্রী চিত্র নাট্যে এক মহিলা কর্তৃক শতাব্দী ধরে মহিলাদের অবস্থান এবং তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় সন্ধানের চিত্র কত্থক নৃত্যের মাধ্যমে আবেগপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।

উমা সারা দেশেই নৃত্য প্রদর্শন করেছেন এবং অনেক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিয়েছেন। বিদেশী সংস্থাগুলির আমন্ত্রণ এবং ভারতের সংস্কৃতি সম্বন্ধিত পরিষদের প্রতিনিধি হিসাবে তিনি ইউএসএসআর, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মধ্য প্রাচ্য, জাপান এবং চীন সফর করেছেন।

উমা শর্মা রাজধানীতে তার নিজস্ব সংগীত ও নৃত্য বিদ্যালয় পরিচালনা করেন এবং তরুণ নৃত্যশিল্পীদের এক ঝাঁক নতুন প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

তবে প্রবীণ নৃত্য সমালোচক এবং নয়াদিল্লির পণ্ডিত সুনীল কোঠারি তার নৃত্যকে সবসময়ই বলিউডমুখী প্রকৃতির বলে সমালোচনা করেছেন। পুরস্কার এবং প্রচার পাওয়ার জন্য তিনি বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তার সাথে তার সম্পর্কের অপব্যবহারের অভিযোগও করেছেন। উমা এ জাতীয় অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

পুরস্কার[সম্পাদনা]

১৯৭৩ সালে তিনি সর্বকনিষ্ঠ নৃত্যশিল্পী হিসাবে ভারত সরকারেরর পদ্মশ্রী পুরস্কার,[৪] এবং ২০০১ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। [৫] তিনি সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার এবং সাহিত্য কলা পরিষদ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২৭শে জানুয়ারী ২০১৩ সালে, ভারতীয় কত্থক নৃত্যে দুর্দান্ত অবদানের জন্য অখিল ভারতীয় বিক্রম পরিষদ, কাশী তাঁকে ''সৃজন মণীষী'' উপাধিতে ভূষিত করেছিল।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Uma Sharma Profile
  2. Richmond, p. 198.
  3. Massey, p. 83
  4. Shukla, Vandana (২২ মার্চ ২০০৩)। "Two expressions in the medium of dance"The Times of India 
  5. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]