মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস
সভ্যতার শৈশবকালে, মধ্যপ্রাচ্য বিশ্বের অনেক পুরনো সংস্কৃতি ও সভ্যতা দেখেছে। এই ইতিহাস শুরু হয় মানব উপনিবেশের শুরুর দিক থেকে, এভাবে চলতে চলতে বেশ কিছু প্রাক ও পরবর্তী ইসলামিক সাম্রাজ্য হয়ে আজকের আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রের মধ্য প্রাচ্যে পৌঁছেছে।
৩১৫০ খ্রিষ্টপূর্বে প্রথম ফারাও অধীনে উচ্চ ও নিম্ন মিশরের রাজনৈতিক একীকরণ সঙ্গে মিশরীয় সভ্যতা একসঙ্গে বেড়ে ওঠে।[১] প্রায় পুরো মধ্য প্রাচ্যকে শাসন করতে আসা বেশ কিছু শক্তিশালী সাম্রাজ্য বিশেষ করে ১৩৬৫-১০৭৬ খ্রিষ্টপূর্বের অ্যাসিরিয়ান সাম্রাজ্য এবং ৯১১-৬০৫ খ্রিষ্টপূর্বের নব্য- অ্যাসিরিয়ান সাম্রাজ্য এর জন্য মেসোপোটেমিয়া ছিল বিচরণস্থান। খ্রিষ্টপূর্ব ৭ শতকের শুরুর দিকে এই এলাকা পারসিয়ান সাম্রাজ্যের ইরানিয়ান মিডিরা এবং পরবর্তি ইরানের রাজ্য সাম্রাজ্যের অধীনে থাকে। খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতকে বিস্তৃত রোমান সাম্রাজ্য পুরো পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল দখল করে যার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের অনেকাংশই ছিল।বলকান থেকে ইউফ্রেটিস সাম্রাজ্য পর্যন্ত শাসন করেছিল এই পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য যা এখন বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য নামে পরিচিত। এরা ক্রমবর্ধমানভাবে পরিচিতি পেয়েছিল এবং খ্রিষ্টধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাসী ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে অনেক জায়গাতে তাদের খ্রিষ্টধর্ম মতবাদ প্রতিষ্ঠার হুকুম এবং বিশ্বাসীদের মধ্যে ধর্মীয় ফাটল ধরায়।৩য় থেকে ৭ম খ্রিষ্টাব্দে পুরো মধ্য প্রাচ্য শাসন করেছে বাইজেন্টাইন ও পারস্যের সাসনীয়রা। ৭ম শতাব্দী থেকে মধ্যপ্রাচ্য এ ইসলামের নতুন শক্তি জেগে উঠে,। আরবদের শাসন হঠাৎ করেই ১১ শতকের মাঝামাঝি এসে সেলজুক রাজবংশের তুর্কিদের আগমনের সঙ্গে শেষ হয়। ১৩ শতকের শুরুর দিকে নতুন আক্রমণকারীর দল, মঙ্গল সাম্রাজ্যের সৈন্য দল মূলত তুর্কীয়রা এ অঞ্চলে আসে। ১৫ শতকের শুরুর দিকে পশ্চিম আনাতোলিয়ায় নতুন শক্তি জেগে উঠে,উসমানীয় সাম্রাজ্য, ভাষাগত ভাবে তুর্কীয় এবং ধর্মীয় ভাবে মুসলিম, যারা ১৪৫৩ তে কনস্টান্টিনোপল খ্রিস্টান বাইজেন্টাইন রাজধানী দখল করে এবং নিজেদের সুলতান বানায়।
১৬ শতকের শুরুর দিকে মধ্যপ্রাচ্যের বিশাল অংশ উসমানীয় ও ইরানিয়ান সাফাভিদের জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে পরিনত হয়। ১৭০০ তে উসমানীয়রা হাঙ্গেরি থেকে বিতারিত হয় এবং পশ্চিমের পক্ষে সীমান্তে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিতভাবে অপসারিত হয়েছিল। ব্রিটিশরাও পারস্য উপসাগরে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং ফরাসীরা তাদের প্রভাব লেবানন এবং সিরিয়াতেও বাড়িয়েছিল। ১৯১২ তে ইতালিয়ানরা উসমানীয় ভুখন্ডের আনাতোলিয়ার উপকূলের কিছু দূরে লিবিয়া ও ডোডেকানিস দ্বীপ দখল করে। ১৯ শতকের শেষ ও ২০ শতকের শুরুর দিকে ইউরোপিয়ান শক্তির সাথে তাল মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের শাসকরা তাদের রাজ্যকে আধুনিক করতে চেষ্টা করেছিলেন। ১৯০৮ এ পারস্যে এবং পরে সৌদি আরব,লিবিয়া আলজেরিয়াসহ অন্যান্য পারস্য উপসাগরের রাজ্যে তেল আবিষ্কারের পর মধ্যপ্রাচ্য ঘুরে দাড়ায়। পশ্চিমের তেলের উপর নির্ভরতা এবং ব্রিটিশদের প্রভাবের পতনের জন্য আমেরিকার এই অঞ্চলের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
১৯২০,১৯৩০,১৯৪০ এ সিরিয়া ও মিশর স্বাধীনতার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিল। ২য় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) সময় ও পরে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু অঞ্চল থেকে ব্রিটিশ,ফরাসী ও সোভিয়েতরা বিদায় নিয়েছিল।১৯৪৭ এ জাতিসংঘের ফিলিস্তিন ভাগের পরিকল্পনা আরব ও ইহুদিদের মধ্যে সংগ্রাম চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। পরে স্নায়ুযুদ্ধের দুশ্চিন্তার মধ্যে,উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার আরবি ভাষী দেশগুলো একাত্মতা উত্থান হয়। ইউরোপিয়ান শক্তির সরাসরি নিয়ন্ত্রণ দূর,ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা এবং তৈল শিল্পে গুরুত্ব আধুনিক মধ্যপ্রাচ্য তৈরি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশগুলোতে, রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি, অস্ত্র ও প্রতিপত্তি প্রকল্পে বাড়তি খরচ, এবং তেল রাজস্বের উপর অধিক নির্ভরতার জন্য বাজার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। অঞ্চলের সফল অর্থনীতি ছিল কম জনসংখ্যার তেল সম্পদযুক্ত দেশ গুলোতে,যেমন কাতার,বাহরাইন, কুয়েত, এবং আরব আমিরাত।
১৯৭৯ এ ইরানের বিপ্লব(ওরফে ইসলামী বিপ্লব) এবং ১৯৮০ - এর দশকে অন্যান্য মুসলিম-অধ্যুষিত দেশে অনুরূপ পরিবর্তনের কারণে এ অঞ্চল ভাবাদর্শে ইসলামিক।১৯৯১ এ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বৈশ্বিক নিরাপত্তা স্নায়ুযুদ্ধ থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই কেন্দ্রিভুত হয়। ২০১০ এর শুরুর দিকে বিভিন্ন মধ্যপ্রাচ্যের এবং মাগরেব দেশের মধ্যে আরব বসন্ত নামে বিপ্লবের ধারা বয়ে গেছে। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩ তে পশ্চিম ইরাকের সংঘর্ষ আইএসআইএল এর উত্থানের প্রাথমিক ধাপ ছিল।
একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে, নিকট প্রাচ্য শব্দটি মধ্যপ্রাচ্যের বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে, বিশেষত যখন প্রাচীন কাল নিয়ে আলোচনা হবে,এর সীমিত অর্থ থাকতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে আরামাইক-ভাষী সেমিটিক এলাকা এবং অ্যানাটোলিয়ান ভূখণ্ড সংলগ্ন দুটি মানচিত্রে নিচের দেয়া হল।
সাধারণ
[সম্পাদনা]ককেশাস বাদ দিয়ে মিশর সহ মধ্যপ্রাচ্যকে ভৌগলিকভাবে পশ্চিম এশিয়া মনে করা যেতে পারে যা উত্তর আফ্রিকার অমাগরেব অংশ।মধ্যপ্রাচ্য সর্বপ্রথম নবোপলীয় বিল্পব দেখেছিল আবার সর্বপ্রথম তাম্র যুগ ও লৌহ যুগে প্রবেশ করেছিল।
ঐতিহাসিকভাবে মানব বসতি নদী তীরবর্তি অঞ্চলে বেশি হয় যা আধুনিক জনসংখ্যা ঘনত্বের নমুনায় বোঝা যায়। সেচ ব্যবস্থা কৃষি নির্ভর মধ্যপ্রাচ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যা আসত মিশরের জন্য নিম্ন নীলনদ ও মেসোপোটেমিয়ার জন্য টাইগ্রিস ও ফেরাত নদী থেকে। ফলস্বরূপ লেভেন্টের বৃষ্টিনির্ভর কৃষির চেয়ে মিসর ও মেসোপটেমিয়ার নদী ভিত্তিক সেচনির্ভর কৃষি বিভিন্ন ফসলের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। সমুদ্রভ্রমণ দ্রুত ও সহজ ছিল বলে,ভুমধ্যসাগরীয় সভ্যতা যেমন ফিনিশিয়া এবং পরে গ্রীস তীব্র বাণিজ্যে যুক্ত হয়েছিল।একইভাবে প্রাচীন ইয়ামেন অন্যান্য আরবীয় উপদ্বীপের তুলনায় বেশি কৃষি পরিচালনা করত তাই আফ্রিকার শিং উপদ্বীপের সাথে ভারী সমুদ্রবাণিজ্য করত যাদের কিছু সেমিটিক ভাষার। শহর রাজ্যে কিছু লোক বসবাস শুরুর আগে আরাবিক আরবরা বসবাস করত মধ্যপ্রাচ্যের শুষ্ক মরুভুমির মধ্যে,যাযাবর মেষপালকের জীবনযাপন করত। ভু-ভাষাগত বণ্টনের জন্য পারস্যের উপদ্বীপ নজদ ও হেজাজ এ ভাগ হয়েছে,সেইসাথে উপদ্বীপের বাইরে বেদুইন এলাকায়।
প্রাচীন সময় থেকেই মধ্যপ্রাচ্য বেশ কিছু ভাষা ছিল, আক্কাডিয়ান (১৪-৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ শতাব্দী ), আরমানিক(৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ - ৮ খ্রিষ্টাব্দ শতাব্দী ), গ্রিক( ৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ -৮ খ্রিষ্টাব্দ শতাব্দী),এবং আরবী (৮ খ্রিষ্টাব্দ -বর্তমান )।[২] ইংরেজির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নয়। সাধারণভাবে আরবী তুর্কি,ইরান ও ইসরাইলে বলে না এবং কিছু আরবীর ভিন্নতা পারস্পারিক বোধগম্যতা কমায়,যদিও স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে একে ধরা ভাষাগত মানদন্ডের জন্য।
মধ্যপ্রাচ্য হল ইব্রাহীমীয়, জ্ঞানবাদী ও অন্যান্য ইরানিয়ান ধর্মের জন্মস্থান। প্রারম্ভিক ভাবে প্রাচীন অধিবাসীরা বেশ কিছু ধর্মীয় জাতিকে অনুসরন করেছিল। কিন্তু অধিকাংশই প্রথমে খ্রিষ্টান(এমনকি মিলান 313 খ্রিষ্টাব্দ ফরমানোর আগে) এবং পরে ইসলাম ধর্মের(৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে আরব উপদ্বীপের বাইরে মুসলিম বিজিতদের বিস্তারের পর) অনুসারি হয়।
যদিও বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে নির্দিষ্ট ভাবে, কিছু বৃহত্তর,জাতিগত স্বতত্র সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান দল আছে, ইসরাইলে ইহুদি এবং ইরানিয়ান ধর্মের অনুসারি আছে,যেমন স্বর্গদূতের উপাসক ও অগ্নি উপাসক। কিছু ক্ষুদ্র ধর্মীয় জাতি সাবাক গোষ্ঠী, ম্যান্ডায়িন,সামারিটান ও অন্তর্ভুক্ত। বিতর্কিত ড্রুজ ধর্ম, ইসলাম ধর্মের শাখা শিয়া ইসলামের নিছক একটি অংশ অথবা স্বতন্ত্র ধর্মও হতে পারে।
পূর্ব ইতিহাস
[সম্পাদনা]পৃথিবীর শুরুর কিছুকাল পরে ম্যামালদের যুগের অলিগছিন উপযুগ পর্যন্ত যখন আরবিক প্লেট আফ্রিকান প্লেটের অংশ ছিল। লোহিত সাগর ফাটল ধরে ইওছিন কালে কিন্তু আফ্রিকা ও আরব আলাদা হয় অলিগছিনে এবং ইউরেশীয় প্লেট এর দিকে ধীরে ধীরে আরব প্লেট আগাচ্ছে।
আরবীয় প্লেট ও ইউরেশীয় প্লেটের সংঘর্ষে ইরানের জগ্রোস পর্বতমালা জেগে উঠেছে। আরবীয় প্লেট ও ইউরেশীয় প্লেটের ধাক্কার কারণে দক্ষিণ পূর্বের তুরস্ক এর মত বেশ কিছু দেশ বিপদে আছে। এই বিপদের মধ্যে আছে ভুমিকম্প,সুনামী ও আগ্নেয়গিরি।
আজ থেকে ১.৮ মিলিয়ন বছর আগে আফ্রিকার বাইরে প্রাক-আধুনিক হোমো এরেক্টাস এর সর্বপ্রথম মানব অভিবাসন মিশরের লেভেন্টাইন গলি দিয়ে হয়।দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার মধ্যে মানব অভিবাসনের একটি অন্যতম রাস্তা হল ইরান।
হ্যাপলোগ্রুপ জে-পি২০৯ হল মধ্যপ্রাচ্যের বহুল পরিচিত মানব ওয়াই-ক্রোমোজোম ডিএনএ হ্যাপলোগ্রুপ যা উদিত হয়েছিল এ অঞ্চলে ৩১৭০০±১২৮০০ বছর আগে।[৩][৪] বর্তমান দুটি উপশাখা হল জে-এম২৬৭ এবং জে-এম১৭২ , যাদের মধ্যে হ্যাপলোগ্রুপের সব অধিবাসী ধারণ করেছে, উভয়ই উদিত হয়েছিল ১০,০০০ বছর আগে। তবু এফ-এম৮৯* ও আইজে-এম৪২৯* ওয়াই-ক্রোমোজোমগুলো ইরানিয়ান মালভুমিতে দেখা গেছে বলে বলে খবর পাওয়া গেছে।[৫]
ওয়েসিস মরুভুমিতে এবং নীলের সোপানে পাথর খোদাইয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। খ্রিষ্টপূর্ব ১০ম সহস্রাব্দে শিকারী ও জেলে সংস্কৃতি শস্য ভাঙ্গার সংস্কৃতিতে বদলে যায়। ৬০০০ খ্রিষ্টপূর্বে জলবায়ু পরিবর্তন বা অতিরিক্ত গোচারন মিশরের চারনভুমি শুকাতে শুরু করে, সাহারা নির্মাণ হয়। প্রাচীন উপজাতির লোকেরা নীলনদের কাছে চলে আসে, যেখানে তারা স্থায়ী কৃষি অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করে এবং সমাজকে কেন্দ্রীভূত করে।
প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্য
[সম্পাদনা]প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম বার্ষিক কৃষি ও অর্থকেন্দ্রিক বাণিজ্য শুরু করে, দিয়েছে পুরো বিশ্বকে সর্বপ্রথম লেখার ব্যবস্থা, উদ্ভাবন করেছে কুমারের চাকা এবং পরে যানের চাকা ও কলের চাকা,তৈরি করেছিল প্রথম কেন্দ্রিভূত সরকার এবং আইন নিয়মাবলী,উচ্চমাত্রার শ্রম বিভাগ দিয়ে প্রথম শহর রাজ্যর আতুরঘর হিসেবে নিজেকে জারি করেছিল, সেইসাথে জোতির্বিদ্যা ও গণিতের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। যদিও এই সাম্রাজ্য সামাজিক স্তর বিন্যাস, দাসপ্রথা এবং সংগঠিত যুদ্ধবিগ্রহ চালু করে ছিল।
সভ্যতার শৈশব,সুমের ও আক্কাদ
[সম্পাদনা]ইতিহাসে সভ্যতার শুরুটা এই অঞ্চলে হয়েছিল ৩৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইরাকে সুমেরিয়ানদের দিয়ে, যা সভ্যতার শৈশব বলেই জানে সবাই। সুমেরিয়ান ও আক্কাদিয়ানরা (পরে ব্যবেলিয়ান ও আসিরিয়ান নামে পরিচিত ) এই অঞ্চলে উদিত হয়।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ সহস্রাব্দে শহর রাজ্য দক্ষিণ মেসোপটেমিয়ায় উদিত হয় যা ছিল মন্দিরের পুরোহিত নিয়ন্ত্রিত।পুরোহিতরা দেবদেবীর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। শহর রাজ্যের বিশিষ্ট ছিল সুমেররা,যা এই এলাকাকে ভাষা দিয়েছিল [ সম্ভবত প্রথম লিখিত ভাষা ],গড়েছিল মানব ইতিহাসের প্রথম বড় সভ্যতা। খ্রিষ্টপূর্ব ২৩৪০ তে,মহান সারগন(২৩৬০-২৩০৫খ্রিষ্টপূর্ব),তার মেয়ে ইনহেডুয়ানাকে নিয়োগ দিয়েছিল, উর[৬] এর ইনানার প্রধান পুরোহিত হিসেবে এবং তার লেখার মারফত দুইজনে দক্ষিণের শহর রাজ্য একত্রিত করেছিল এবং প্রতিষ্ঠা করেছিল আক্কাডিয়ান রাজবংশ,বিশ্বের প্রথম সাম্রাজ্য।[৭]
মিশর
[সম্পাদনা]সুমেরিয়ান সভ্যতার শুরুর পর, নীলের নিম্ন উপত্যকা ও উপরের মিশর একত্রিত হয়েছিল ফারাও এর অধীনে, আনুমানিক ৩১৫০ খ্রিষ্টপূর্বে। তারপর থেকে প্রাচীন মিশরে সভ্যতার ৩টি গুরুত্বপূর্ণ দিক দেখা যায়,তা হল রাজ্যকালঃ
- পুরোন রাজ্য (২৬৮৬-২১৮১)
- মধ্য রাজ্য (২০৫৫-১৬৫০)
- নতুন রাজ্য (১৫৫০-১০৬৯)
প্রাচীন মিশরের ইতিহাস শেষ হয় শেষ কাল (৬৬৪-৩৩২খ্রিষ্টপূর্বে),দ্রুত মিশরের ইতিহাস অনুসরন করে চিরায়ত প্রাচীনতা এবং শুরু হয় টলেমির মিশর।
লিভ্যান্ট ও আন্টোলিয়া
[সম্পাদনা]এরপরেই সভ্যতা দ্রুত ছড়িয়ে যায় উর্বর চন্দ্রকলা এলাকা থেকে ভুমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলে এবং লিভ্যান্টের সর্বত্র সেই সাথে প্রাচীন আনাতোলিয়াতেও। প্রাচীন লিভেন্ট রাজ্য এবং শহর রাজ্যের অধীন ইবালা শহর,দামেস্ক রাজ্য,ইসরায়েল রাজ্য,জুদাহ রাজ্য,আমোন রাজ্য, মোয়াব রাজ্য,ইদম রাজ্য এবং নাবাতিয়ান রাজ্য। ফিনিসীয় সভ্যতা, ঘিরে ছিল বেশ কিছু শহর রাজ্য নিয়ে, ছিল ভূমধ্যসাগরের অববাহিকায় ঔপনিবেশিকদের সামুদ্রিক বাণিজ্যচর্চায়, লক্ষনীয়ভাবে ৮১৪ খ্রিষ্টপূর্বে কারথাগে।
আসিরিয়ান সাম্রাজ্য
[সম্পাদনা]মেসোপটেমিয়া ছিল বেশ কিছু শক্তিশালী সাম্রাজ্যের ঘর যা প্রায় পুরো মধ্যপ্রাচ্য শাসন করেছিল,বিশেষ করে আসিরিয় ও নব্য আসিরিয় সাম্রাজ্য। অ্যাসিরীয় সাম্রাজ্য,ঐ সময়ে বিশ্বের সর্বোবৃহৎ রাজ্য ছিল। এরা বর্তমানের ইরাক,সিরিয়া,লেবানন,ইসরায়েল,ফিলিস্তিন,কুয়েত,জর্ডান,মিশর,সাইপ্রাস এবং বাহরাইন ইরান,তুরস্ক,আর্মেনিয়া,জর্জিয়া,সুদান ও আরাবিয়া শাসন করেছিল। মধ্যপ্রাচ্যে অ্যাসিরীয় সাম্রাজ্যের,বিশেষ করে ৩য়র ছিল গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব। অ্যাসিরীয় দের কর্তৃত্ব শেষ হওয়ার আগে, পরবর্তিকালের তুলনায় সবথেকে উচ্চ সভ্যতা এনেছিল। কাস্পিয়ান থেক সাইপ্রাস, আন্তোলি থেকে মিশর, অ্যাসিরীয় সার্বভৌম সম্প্রসারণ বয়ে এনেছিল অ্যাসিরীয় যাযাবর বলয় এবং আদিম সম্প্রদায়,দান করেছিল সভ্যতার উপহার।[৮]
নব্য ব্যবলিয়ান ও পারস্য সাম্রাজ্য
[সম্পাদনা]খ্রিষ্টপূর্বে ৬ শতকের শুরুর দিকে, পারস্যের বেশ কিছু রাজ্য এলাকায় কর্তৃত্ব করেছিল,মেডীদের ও নব্য ব্যবলীয়নিয়ায় সাম্রাজ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল, এরপর তাদের উত্তরাধিকারি আখেমেনিয় সাম্রাজ্য ছিল প্রথম পারসীয় সাম্রাজ্য। খ্রিষ্টপূর্বে ৪ শতকের শেষে জিতেছিল, স্বল্পজীবী ম্যাসেডনীয় সাম্রাজ্যের মহান আলেক্সান্ডার এবং তার উত্তরাধিকারী রাজ্য যেমন টলেমীয় মিশর ও পশ্চিম এশিয়ার সোলুওসীড সাম্রাজ্য।
এক শতক পর, পারসীয়ান সাম্রাজ্যের ধারণা পুর্নজাগরিত হয়েছিল পার্থিয়ানদের দিয়ে এবং তা চলতে থাকে তাদের উত্তরাধিকার সাসানীয়দের দ্বারা, খ্রিষ্টপূর্ব ৩য় শতক থেকে। মধ্যপ্রাচ্যের এখনকার এশিয়ান অংশ এই সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল এবং এর প্রভাব চলতে থাকে মধ্যপ্রাচ্যের বাকী এশীয় ও আফ্রিকান অংশে, ৭ শতকের মধ্যভাগে আরবদের পারস্য বিজয় পর্যন্ত। খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতক থেকে খ্রিষ্ট পরবর্তি ৭ শতক এর শুরুর মধ্যে এই অঞ্চল ছিল রোমান, পার্থিয়ান ও সাসানিয়দের দখলে। অন্যদিকে ৭টি দেশের মধ্যে বিভিন্ন রোমান-পারসীক যুদ্ধ চরমে ছিল। খ্রিষ্ঠানদের পূর্বের গীর্জা পারস্য শাসিত মেসোপোটেমিয়া ধরে রেখেছিল,বিশেষকরে আসিরিয়ায়, খ্রিষ্ট পরবর্তি ১ম শতকের পর থেকে এবং এই এলাকা সিরিয়াক-আসিরিয়ান শিক্ষা প্রথার উন্নয়নশীল কেন্দ্রে পরিনত হয়।
গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্য
[সম্পাদনা]খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতকে, বিস্তৃত রোমান প্রজাতন্ত্র পুরো পূর্ব ভুমধ্য গ্রহণ করে যাতে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় অংশই ছিল। রোমান সাম্রাজ্য ইউরোপের অধিকাংশ এবং উত্তর আফ্রিকাকে একক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে একীভুত করেছিল। এমনকি সরাসরি রাজ্যভুক্ত নয়,এমন এলাকাও এই সাম্রাজ্যের শক্তিশালী প্রভাবে ছিল,যা কয়েক শতাব্দী শক্তিশালী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সত্তা ছিল। যদিও রোমান সংস্কৃতি এই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল, মেসোডেনিয়ান সাম্রাজ্য সর্বপ্রথম গ্রিক ভাষা ও সংস্কৃতি এই অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করেছিল,রোমান সময়ের সর্বত্র অধীনে নিয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যের শহর,আলেক্সান্দ্রিয়া, সম্রাজ্যের প্রধান শহরকেন্দ্রে পরিনত হয়েছিল এবং এই এলাকা কৃষি উৎপাদনের জন্য সাম্রাজ্যের রুটির ঝুড়িতে পরিনত হয়েছিল। এইজিপ্টাস ছিল সবচেয়ে ধনী রোমান প্রদেশ।[৯][১০]
রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যে খ্রিষ্ঠান ধর্ম ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে, এটা মধ্যপ্রাচ্যের গোড়ায় চলে যায় এবং আলেক্সান্দ্রিয়া ও এডিসার মত শহরগুলো খ্রিষ্ঠান পান্ডিত্যের প্রধান কেন্দ্রে পরিনত হয়। ৫ শতকে মধ্যপ্রাচ্য খ্রিষ্ঠানদের অধিনে ছিল, অন্যান্য ধর্মের সক্রিয়ভাবে নিপীড়িত হচ্ছিল। রোমে শহরের সাথে মধ্যপ্রাচ্য যুক্ত ছিল যা সাধারণত সাম্রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমকে বিভক্ত করেছিল, মধ্যপ্রাচ্যের সাথে রোমান রাজধানী কন্সটান্টিপোল যুক্ত ছিল। পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর এই এলাকায় এর যতসামান্য প্রভাব পরেছিল।
ব্রাজেন্টান সাম্রাজ্য বা পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য
[সম্পাদনা]বলকান থেকে ইউফ্রেটিস সাম্রাজ্য পর্যন্ত শাসন করেছিল এই পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য যা এখন বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য নামে পরিচিত।এরা ক্রমবর্ধমানভাবে পরিচিতি পেয়েছিল এবং খ্রিষ্টধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাসী ছিল। মধ্যপ্রাচ্যে অনেক জায়গাতে তাদের খ্রিষ্টধর্ম মতবাদ প্রতিষ্ঠার হুকুম এবং বিশ্বাসীদের মধ্যে ধর্মীয় ফাটল ধরায়।এই সময়ে গ্রিকরা এই অঞ্চলের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা তে পরিনত হয়, যদিও সিরিয়াক ও হিব্রু জাতি তখন টিকে ছিল। বাইজেন্টাইন বা গ্রিক শাসনকালে লেভেন্টমেট এলাকা স্থায়িত্ব ও উন্নতির যুগে।
মধ্যযুগের মধ্যপ্রাচ্য
[সম্পাদনা]মুসলিম খিলাফত
[সম্পাদনা]৭ শতক থেকে, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন শক্তি জেগে উঠে, মুসলিম, যখন রোমার পারস্য যুদ্ধের সময় বাইজেন্টাইন রোমান ও সাসনিড পারসীয়ান সাম্রাজ্যের দুর্বল হয়ে পরে। দ্রুত মুসলিম বিজয়ের ধারায়,আরব সৈন্যবাহিনী ইসলামে অনুপ্রাণিত হয়ে, খলিফাদের নির্দেশে এবং খালিদ ইবনে আল ওয়ালিদের মত দক্ষ সামরিক সেনাপতিরা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পরে। বাইজেন্টাইন অংশের অর্ধেকের বেশি কমানো এবং পুরো পারস্য দখল করে নিয়েছিল। আনাতোলিয়ায়,বুলগেরীয়দের সহায়তায় বাইজেন্টাইনরা তাদের ছড়িয়ে পড়া থামিয়ে দেয়।
পূর্ব রোম বা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সিরিয়া প্রদেশ,উত্তর আফ্রিকা এবং সিসিলি তেমন বাধা দিতে পারেনি এবং মুসলিম বিজেতারা এইসব এলাকা দ্রুত বেগে অতিক্রম করেন। একেবারে পশ্চিমে, তারা ফ্রাংকদের দ্বারা দক্ষিণ ফ্রান্স এ থামার আগে সাগর অতিক্রম করে ভানডল স্পেন দখল করে। এই বিশাল বিস্তারে,আরব সাম্রাজ্য ছিল প্রথম সাম্রাজ্য যারা পুরো মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণ করেছিল একইসাথে ভুমধ্যসাগর এলকার ৩/৪অংশ। অন্য সাম্রাজ্যের মধ্যে শুধু রোমানরা পেরেছিল অধিকাংশ ভুমধ্যসাগর নিয়ন্ত্রণ করতে।[১১] মধ্যযুগের আরব খলিফারাই মধ্যপ্রাচ্যকে স্বতন্ত্র এলাকা হিসেবে একীভুত করেছিল এবং আরব হিসেবে আজকের জাতিগত পরিচিতি দিয়েছিল। সেলজুগ সাম্রাজ্য ও পরে এ এলাকা শাসন করেছিল।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান মুসলিম কেন্দ্রের সীমানবর্তী এলাকা ছিল অধিকাংশ উত্তর আফ্রিকা কিন্তু আইবেরিয়া(আল-আন্দালুস) এবং মরোক্কো দূরবর্তি নিয়ন্ত্রণ থেকে ভেঙ্গে পরে এবং ঐ সময়ে বিশ্বের সবথেকে উন্নত সমাজ গড়ে তোলে পূর্ব ভূমধ্যের বাগদাদকে নিয়ে।
৮৩১-১০৭১ এ, ভূমধ্যে মুসলিম সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল সিসিলির আমিরাত। এটি নর্মানদের বিজয়ের পর, এই দ্বীপ পশ্চিমা ও বাইজেন্টাইনদের প্রভাবে, আরবদের সংমিশ্রণে নিজেদের সংস্কৃতি তৈরি করে। পালের্মো মধ্যযুগে ভুমধ্যের অগ্রবর্তি শৈল্পিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র থাকে।
আফ্রিকা পুনর্জাগরিত হচ্ছিল,১২ শতকের রেনেসার পর,মধ্যযুগের শেষে আরও সংগঠিত ও কেন্দ্রীভূত রাজ্য গঠন শুরু হয়েছিল। মুলসিম শক্তি ফেরানো ও পবিত্র ভূমি উদ্ধারের জন্য ইউরোপের রাজারা বেশ কিছু ধর্মযুদ্ধ চালিয়ে ছিল, ধর্মে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং বিজয়ের স্বপ্নে।ধর্মযুদ্ধ ব্যর্থ ছিল, কিন্তু তারা প্রায় নড়বড়ে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যকে দুর্বল করতে কিছুটা কার্যকর ছিল, যা হারাতে বসেছিল বেশ কিছু এলাকা উসমানীয় তুর্কিদের কাছে। মুসলিম বিশ্বের ক্ষমতার ভারসাম্য পুনর্বিন্যাস হিসেবে মিশর আবার পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় একটি প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।
তুর্কি ,ধর্মযোদ্ধা ও মঙ্গল
[সম্পাদনা]মধ্য ১১ শতকে, মধ্য এশিয়ার তুর্কিদের জন্মভুমি থেকে দক্ষিণে অভিবাসিত সেলজুগ তুর্কিদের আগমনের সাথে হটাৎ করে আরবদের কর্তৃত্ব শেষ হয়ে যায়। যারা পারস্য, ইরাক, সিরিয়া,ফিলিস্তিন ও হেজায জয় করেছিল। ১১৬৯ পর্যন্ত ফাতেমীয় খেলাফতের অধীনে ছিল, যখন তুর্কিদের কাছে এটা ভয়ংকর ছিল।
৭ শতকে বেশ এলাকা হারানো সত্ত্বেও, খ্রিষ্টান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য ভুমধ্যের একটি শক্তিশালী সৈন্য ও অর্থনৈতিক দলে পরিনত হতে চেয়েছিল, ইউরোপে আরবদের আগ্রাসন ঠেকাতে। ১১ শতকে সেলজুগ্রা বাইজেন্টাইন সৈন্যদের পরাজয় ও আন্তোলিয়া দখল কার্যকর ভাবে এই এলাকায় বাইজেন্টাইনদের প্রভাব শেষের ইঙ্গিত দিয়েছিল। সেলজুগরা পরবর্তি ২০০ বছর মধ্যপ্রাচ্য শাসন করেছিল,কিন্তু তাদের সাম্রাজ্য দ্রুত ভেঙ্গে পরে কিছু সংখ্যক ক্ষুদ্র সুলতানাতে।
৭ শতক থেকে দুর্ভোগ সত্ত্বেও ১১ শতকে পশ্চিম ইউরোপ অর্থনৈতিক ও জনতাত্ত্বিক উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। মধ্যপ্রাচ্যের খন্ডাবস্থা যৌথ সৈন্যের অনুমোদন দেয়,প্রধানত ইংল্যান্ড, ফ্রান্স থেকে এবং এই এলাকায় ঢোকার জন্য পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের উদয় হয়। ১০৯৫ এ,পোপ আরবান ২ ঝিমন্ত ব্রাজেন্টান সাম্রাজ্য আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন, ইউরোপের অভিজাতদের ডেকেছিলেন খ্রিষ্টানদের পবিত্র ভুমি উদ্ধার করতে এবং ১০৯৯ এ বীররা প্রথম ধর্মযুদ্ধে জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করেছিল। তারা জেরুজালেম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল,যা টিকেছিল ১১৮৭ পর্যন্ত যখন সালাউদ্দিন পুনরায় নিয়ে নেয়। ক্ষুদ্র ধর্মযুদ্ধ টিকেছিল ১২৯১ পর্যন্ত।
মঙ্গল আক্রমণ
[সম্পাদনা]১৩ শতকের শুরুতে একটি নতুন আক্রমণকারীদের দল আসে, মঙ্গল সাম্রাজ্যের সৈন্যদল, ১২৫৮ এ বাগদাদ ধংস এবং লুট করে এবং মিশর সীমান্তের দক্ষিণে আগাতে থাকে। মামলুক আমির বাইবার দামেস্ক ছেড়ে কায়রোতে যান যেখানে সুলতান কুতুস তাকে গ্রহণ করেন। দামেস্ক জয়ের পর, খানাত-২ প্রতিষ্ঠা করে এবং হালাকু দাবী করে সুলতান কুতুস মিশর সমর্পন করেছে,কিন্তু সুলতান কুতুস হালাকুর দূতকে মেরে ফেলে, বাইবারদের সাহায্যে তার সৈন্যকে সংহত করে।
যদিও উত্তরের সংদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মহান মংক খানের মৃত্যুতে হালাকুকে পূর্বে চলে যেতে হয়েছিল, সে তার প্রতিনিধিকে রেখে গিয়েছিল,খ্রিষ্টান কিবুগাকে। অরন্টিস নদীর কাছে মঙ্গল সৈন্যদের ফাঁদে ফেলে,আইন জালুতের যুদ্ধে টেনে আনে এবং কিতবুকাকে আটক এবং হত্যা করেছিলেন। এই বিজয়ে মামলুক তূর্কী মিশরের সুলতান এবং আসল শক্তিতে পরিণত হয় এবং ফিলিস্তিন ও সিরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। উসমানীয়রা আসার আগে যখন তুর্কি সুলতানরা ইরাক ও আনাতোলিয়া নিয়ন্ত্রণ করত।
উসমানীয় সাম্রাজ্য (১২৯৯-১৯১৮)
[সম্পাদনা]১৫ শতকের শুরুতে, পশ্চিম আনাতোলিয়ায় একটি নতুন শক্তি জেগেছিল, উসমানীয় সাম্রাজ্য। ১৪৫৩ তে কন্সট্যান্টিপোল এর খ্রিষ্টান বাইজেন্টাইন রাজধানী দখল করেন এবং নিজেদের সুলতান বানায়। এক শতকের জন্য মামলুকরা উসমানীয়দের মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে রাখে কিন্তু ১৫১৪ এ হিংস্র সেলিম এই এলাকায় কৌশলী উসমানীয় আক্রমণ শুরু করে। মামলুক সীমা ধংস করে ১৫১৬ তে সিরিয়া এবং ১৫১৭তে মিশর দখল করে। ইরানের আক কয়েনলুর উত্তরাধিকারী সাফাভিদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ বছরে ইরাক বিজয় হয়েছিল।
১০ শতকের আব্বাসীয় খিলাফতের পরে উসমানীয়রা সর্বপ্রথম পুরো এলাকা একজন শাসকের অধীনে নেয় এবং ৪০০ বছর শাসন করে, ইরানের সাফাভিদ ও আফসারিদের তৈরি সংক্ষিপ্ত বিচ্ছেদ সত্ত্বেও। বিশ্বের ইতিহাসে উসমানীয় সাম্রাজ্য ছিল সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে বিস্তৃত ও দীর্ঘস্থায়ী সাম্রাজ্য। এতে পূর্বের রোমান সাম্রাজ্যের পুরোটা ছিল এবং বাইজেন্টাইনরা ধরে রাখতে পারে নি এমন এলাকাও। ১৩০০ তে উসমানীয় সাম্রাজ্যের জন্ম এবং টিকেছিল ১ম বিশ্ব যুদ্ধ পর্যন্ত।
এই সময়ে গ্রীস,বলকান এবং হাঙ্গেরির অধিকাংশ উসমানীয়রা ধরে রাখে, দানিউব এর উত্তরে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে নতুন সীমানা নির্ধারন করে। পশ্চিমে ইউরোপ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল, জনতাত্ত্বিক,অর্থনৈতিক ও সংস্কৃতিকভাবে। ১৯ শতকে, ইউরোপ মুসলিম বিশ্বের সম্পদ,জনসংখ্যার এবং গুরুত্বের সাথে প্রযুক্তিও নিয়েছিল। শিল্প বিপ্লব এর প্রসার,পুঁজিবাদ ভিত্তি গড়েছিল।
১৭০০ নাগাদ, উসমানীয়রা হাঙ্গেরি থেকে বিতারিত হয়। উসমানীয় ইউরোপের কিছু এলাকা যেমন আলবেনিয়া এবং বসনিয়া, অনেক ইসলাম রুপান্তর দেখেছিল, কিন্তু এই এলাকা কখন ও সাংস্কৃতিকভাবে মুসলিম বিশ্বে প্রবেশ করে নি। ১৭৬৮-১৯১৮ পর্যন্ত,উসমানীয়রা এলাকা হারাচ্ছিল। ১৯ শতকে গ্রিস,সার্বিয়া,রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া তাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল এবং ১৯১২-১৩ তে বলকান যুদ্ধে কন্সটান্টিপোল এবং এর পশ্চাত প্রদেশ বাদে উসমানীয়রা ইউরোপ থেকে পুরোপুরি বিতারিত হয়।
১৯ শতকে “ইউরোপের অসুস্থ মানুষ” উসমানীয় সাম্রাজ্য ইউরোপিয়ান শক্তির অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।ফরাসীরা ১৮৩০ এ আলজেরিয়া এবং ১৮৭৮ এ তিউনেশিয়া রাজ্যভুক্ত করে। ইংরেজরা ১৮৮২ তে মিশর দখল করে যা এটা নামমাত্র উসমানীয় সার্বভৌমত্বের অধীনে থাকে।.
পারস্য উপসাগরে ইংরেজরা তাদের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং ফরাসিরা লেবানন ও সিরিয়ায় তাদের প্রভাব বিস্তার করেছিল। ১৯১২ তে ইতালীয়রা লিবিয়া ও ডোডেকন দ্বীপ দখল করে,যা উসমানীয় ভুখন্ডের উপকূল থেকে কিছুটা দূরে। উসমানীয়রা জার্মানীর কাছে গিয়েছিল নিজেদের পশ্চিমা শক্তি থেকে রক্ষা করার জন্য, কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো। তারা অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্র জার্মানীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে।
সংস্কারের দিকে উসমানীয় প্রচেষ্টা
[সম্পাদনা]১৯ শতকের শেষ ও ২০ এর শুরুর দিকে, মধ্যপ্রাচ্যের শাসকরা তাদের রাজ্যের আধুনিকায়নের জন্য ইউরোপীয়দের সাথে আরো কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেন।উসমানীয় সাম্রাজ্যে তানজিমাত ১৯ শতকের শেষে উসমানীয় শাসন পুনরায় জোরদার এবং যুবক উসমানীয়দের দিয়ে অগ্রসর করানো হয়েছিল।১৮৭৬ সংবিধান এর লিখিত সহ প্রথম সাংবিধানিক যুগের দিকে নিয়ে যায় এবং প্রতিষ্ঠা করেছিল উসমানীয় সংসদ। পারস্যের ১৯০৬ এর বিপ্লবের লেখকেরা সবাই সাংবিধানিক সরকার, নাগরিক আইন, ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা এবং শিল্প বিকাশের পশ্চিমা মডেল তাদের দেশে আনতে চেয়েছিল। এই অঞ্চল দিয়ে, রেললাইন ও টেলিগ্রাফ লাইন বানানো হয়েছিল,স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছিল এবং আর্মি অফিসার,আইনজীবী, শিক্ষক, এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তার নতুন শ্রেনী উদয় হয়েছিল, ইসলামিক পন্ডিত্যের প্রথাগত নেতৃত্ব আহ্বান করা হয়েছিল।
প্রথম উসমানীয় সাংবিধানিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে দ্রুত শেষ হয়, যখন স্বৈরাচারী সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ সংসদ এবং ব্যক্তিগত শাসনের পক্ষে সংবিধান বিলুপ্ত করেন।আবদুল হামিদ পরবর্তি ৩০ বছরের জন্য নির্দেশের দ্বারা শাসন করেন এবং তার শাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অসন্তোষ দেখা দেয়। আব্দুল হামিদের শাসনের বিপক্ষে সংস্কার আন্দোলন চালায় তরুন তুর্কীরা, যা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ঘটায়। তরুন তুর্কি বিপ্লব এর মধ্য দিয়ে ১৯০৮ এ তরুন তুর্কিরা ক্ষমতা দখল করে এবং ২য় সাংবিধানিক যুগ প্রতিষ্ঠা করে, প্রথমবারের মতো সাম্রাজ্যে একটি বহুত্ববাদী ও বহুদলীয় নির্বাচন ঘটায়। তরুন তুর্কিরা,জার্মানবাদী ও কেন্দ্রীয়করণবাদী “একতা ও উন্নয়নের দল” এবং ইংরেজবাদী ও অকেন্দ্রীকরনবাদী “স্বাধীনতা ও সঙ্গতি দল”,দলে ভাগ হয়ে যায়। নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের একটি উচ্চাভিলাষী যুগল, তালাত পাশা ও জামাল পাশা এবং মৌলবাদী আইনজীবী আনোয়ার পাশা। দুই দলের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের পর “একতা ও উন্নয়নের দল” জয়ী হয় এবং তালাত প্রধান উজির এবং আনোয়ার যুদ্ধমন্ত্রি হিসেবে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা সরকার গঠন করে এবং পুরো সাম্রাজ্য জুড়ে জার্মান অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা করেন আধুনিকীকরণ কর্মসূচি।
আনোয়ার পাশার মিত্র জার্মানি, যাদের তিনি ইউরোপের সবচেয়ে উন্নত সামরিক শক্তি হিসেবে দেখেছিলেন। ইংরেজরা দাবি করে বলকান যুদ্ধে হারার পর তাদের প্রচলিত রাজধানী এদ্রিন বুলগেরিয়ানদের কাছে সমর্পন করতে হবে,যা তুর্কিরা ইংরেজদের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখেছিল।[১২] ইংরেজরা এই দাবীতে তুর্কিদের বিশ্বাস হারিয়েছিল,একারণে ইংরেজপন্থী দলকে, জার্মানপন্থীরা অবদমিত করে রাখে। আনোয়ারের ভাষায়, এদ্রিন ছেড়ে দেয়ার দাবীকে মেনে নিয়ে, লজ্জাজনকভাবে দেশকে শত্রুর(ইংরেজ) হাতে তুলে দিলাম।[১৩]
আধুনিক মধ্যপ্রাচ্য
[সম্পাদনা]উসমানী সাম্রাজ্যের অন্তিম বছর
[সম্পাদনা]১৮৭৮ এ সাইপ্রাস সম্মেলনের ফল হিসেবে, যুক্তরাজ্য উসমানী সাম্রাজ্য থেকে একটি আশ্রিত রাজ্য হিসেবে সাইপ্রাস সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। যখন সাইপ্রাসের অধিবাসীরা ইংরেজ শাসনকে স্বাগতম জানায়, আশা করছিল যে তারা ধীরে ধীরে সমৃদ্ধি, গণতন্ত্র ও জাতীয় মুক্তি অর্জন করবে, দ্রুতই তাদের ঘোর কাটে। সাইপ্রাস তাদের দখলে নিতে সুলতানকে যা দিয়েছিল তার ক্ষতিপূরন তুলতে ইংরেজরা তাদের উপর মোটা কর চাপিয়ে দেয়। হাই কমিশনার ও লন্ডনে ক্ষমতা সংরক্ষিত থাকায়,দ্বীপের ক্ষমতায় জনগণকে অংশগ্রহণের অধিকার দেয়া হয় নি। ১৮১৯ এ লর্ড লিভারপুল তৈরি করেছিলে ৬ আইন, যা বার্তা বিবাচন প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ (প্রধানত সাম্যবাদী দল), পৌর নির্বাচন বাতিল করেছিল, শ্রমিক ইউনিয়নের বাইরের নিয়ন্ত্রণ, অধিক পাঁচ ব্যক্তি বিশেষের সভা এবং বাইরের কাজে গির্জার ঘণ্টা বাজানো।[১৪]
এদিকে, উসমানীয়দের পতন এবং মিত্রদের আন্তোলিয়ার বিভাজনে, তুর্কি জনগণ প্রতিরোধের করেছিল। মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক এর নেতৃত্বে তুর্কির জাতীয় আন্দোলন,তুর্কির স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে হানাদার ক্ষমতা বিরুদ্ধে তুর্কিদের জয় এবং ১৯২৩ সালে তুরস্কে আধুনিক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আতাতুর্ক, আধুনিকীকরণ ও ধর্মনিরপেক্ষকরন কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। তিনি খিলাফত বিলুপ্ত, নারীদের মুক্ত, পশ্চিমা পোশাক চালু এবং আরবীর বদলে লাতিন বর্ণমালা ভিত্তিক নতুন তুর্কি বর্ণমালা ব্যবহার শুরু করেন, ইসলামি আদালতের এখতিয়ার বাতিল করেন। কার্যত, তুরস্ক, আরব বিশ্ব শাসন করার ইচ্ছা ছেড়ে দিয়ে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এবং ইউরোপের সাংস্কৃতিক অংশ হয়ে পরিচিত হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে আরেকটি সন্ধিক্ষণ আসে যখন তেল আবিষ্কৃত হয়, ১৯০৮ সালে পারস্যে প্রথম এবং পরে সৌদি আরব (১৯৩৮ সালে) এবং অন্যান্য পারস্য উপসাগরীয় রাজ্যের, এবং লিবিয়া ও আলজেরিয়াতেও। মধ্যপ্রাচ্য, এটি ঘুরে দাঁড়ায়, অশোধিত তেলের বিশ্বের বৃহত্তম সহজে প্রবেশযোগ্য মজুদে পরিণত হয়, ২০ শতাব্দীর শিল্প বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য এর।যদিও পশ্চিমা তেল কোম্পানি তেল তুলেছিল এবং বিস্তৃত অটোমোবাইল শিল্প এবং অন্যান্য পশ্চিমা শিল্প উন্নয়নের জন্য প্রায় সব তেল জ্বালানি রপ্তানি করেছিল, এতে রাজা ও তেল রাজ্যের আমিরা প্রচুর ধনী হয়ে ওঠে, তাদের সক্রিয় ক্ষমতা উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ সুসংহত করার এবং অঞ্চলে পশ্চিমা আধিপত্যে সংরক্ষণের জন্য তাদের একটি পণ দেয়া হয়েছিল।[১৫]
মধ্যপ্রাচ্যের তেলের ওপর পশ্চিমা নির্ভরতা এবং অঞ্চলে ব্রিটিশ প্রভাব পতন ক্রমবর্ধমানভাবে আমেরিকানদের আগ্রহী করে তুলেছিল। প্রাথমিকভাবে, পশ্চিমা তেল কোম্পানিগুলো উৎপাদন ও আহরণ উপর একটি প্রধানতা প্রতিষ্ঠিত করেছিল। যাইহোক, তেল সম্পদ জাতীয়করণ দিকে আদিবাসী আন্দোলন, তেল ভাগ করা এবং ওপেক এর আবির্ভাব আরব তেল উৎপাদনশীল দেশগুলির প্রতি ক্ষমতার ভারসাম্যে একটি পরিবর্তন নিশ্চিত করে।[১৫] এছাড়াও তেল সম্পদের বোকা বানানোর প্রভাব ছিল। তুরস্কে কেমালিস্ট বিপ্লবের প্রভাবে,অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বা সামাজিক সংস্কারের দিকে আন্দোলনের জন্য আরব বিশ্বের আবির্ভাব হয়েছিল।
১৯১৪ সালে জার্মানির সঙ্গে আনোয়ার পাশা এর জোট থাকায়,ব্রিটেন ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় সাম্রাজ্যের জার্মানি ও অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির সাথে যোগদান একটি মারাত্মক পদক্ষেপে ছিল। উসমানীয়দের ব্রিটিশরা শত্রু জোটের দুর্বল সংযোগ হিসাবে দেখল ও যুদ্ধের হারানোর জন্য মনোযোগ দিল। ১৯১৫ সালে গ্যালিপলিতে একটি সরাসরি আক্রমণ ব্যর্থ হলে, তারা উসমানীয় রাজ্যের মধ্যে বিপ্লব তৈরি করতে শুরু করল, আরব, আর্মেনিয়, অ্যাসিরীয় জাতীয়তাবাদের জাগরণ বল কাজে লাগাল ঊসমানীয়দের বিরুদ্ধে।
ব্রিটিশরা মক্কার বংশগত শাসক (মোহাম্মদের এর পরিবারের বংশধর হতে আগত) শরীফ হোসেনকে মিত্র হিসেবে পেয়েছিল,যে আরবের স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে উসমানীয় শাসনের বিরুদ্ধে একটি আরব বিদ্রোহ নেতৃত্বে দিয়েছিল।
উসমানীয় সাম্রাজ্যের পরাজয় ও ভাগ
[সম্পাদনা]"১৯১৮ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের আরব বিদ্রোহ এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বাহিনী দ্বারা সিনাই ও ফিলিস্তিন অভিযানে পরাজয়ের পর, সাম্প্রতিক সময়ের অনেক ইসলামী কর্মীর বর্নিত একটি ইঙ্গ-ফরাসি বিশ্বাসঘাতক আরব জনগণ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছিল। ব্রিটিশ ও ফরাসি সরকারের একটি গোপন চুক্তি (পিকট-সাইকস চুক্তি )অনুসারে তাদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য ভাগ করে, তার উপর ব্রিটিশরা, বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক ইহুদিবাদ আন্দোলনে ,পুনরায় ফিলিস্তিনে ঐতিহাসিক ইহুদি স্বদেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাতে তাদের সমর্থন থাকবে।
ঐতিহাসিকভাবে উত্তরাধিকারী ইহুদি জাতির জন্য প্রায় ১১০০ খ্রিষ্টপূর্ব - ১০০ খ্রিস্টাব্দ , ১২০০ বছর ধরে প্রাচীন ইহুদি দেশ হিসেবে ইসরাইল রাজ্যে পরিচিত ছিল এবং ৭ম শতক থেকে এই অঞ্চলে একটি বৃহৎ আরব জনগণ ছিল। উসমানীয়রা যখন চলে গেলে, দামেস্কে আরবরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল,কিন্তু দীর্ঘ সময়ের জন্য ইউরোপীয়দের প্রতিহত করতে এটা সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে খুবই দুর্বল ছিল এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্স শীঘ্রই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করে এবং নিজেদের অনুসারে পুনরায় সাজায় মধ্যপ্রাচ্যকে।[১৬]
সিরিয়া ফরাসির আশ্রিত হয়ে জাতিসংঘের ছদ্ম জনাদেশ হয়। খ্রিস্টান উপকূলীয় অঞ্চল বিভক্ত হয়ে একটি ফরাসি আশ্রিত দেশ লেবাননে পরিণত হয়। ইরাক ও ফিলিস্তিন ব্রিটিশ অধীন অঞ্চল হয়ে ওঠে। ইরাক হয় “ইরাক রাজ্য” এবং হুসাইনের এক ছেলে,ফয়সাল,ইরাকের রাজা হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়। ইরাকের বৃহৎ জনগোষ্ঠী ছিল কুর্দি,অ্যাসিরীয়,তুর্কি।যাদের অনেকেই নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্রের ব্যাপারে প্রতিশ্রুত হয়েছিল।
ফিলিস্তিন হয়ে ওঠে “ব্রিটিশ জনাদেশের ফিলিস্তিন” এবং অর্ধেকে বিভক্ত হয়। ফিলিস্তিনের পূর্ব অর্ধেক হয় "ট্রান্সজর্ডান আমিরাত" যা হুসাইনের পুত্র আবদুল্লাহ জন্য আরেকটি একটি সিংহাসন প্রদান করে। ফিলিস্তিনের পশ্চিম অর্ধেক সরাসরি ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়।১৯১৮ সালে ফিলিস্তিনে ইহুদি জনসংখ্যা, ৮ শতাংশের কম ছিল। যারা বিনামূল্যে অভিবাসন, অনুপস্থিত ভূমালিক থেকে জমি কেনা একটি ছায়া সরকার গঠন করে অপেক্ষা করছিল এবং ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সুরক্ষায় একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। যা ১৯৩৬ এ ফিলিস্তিনে বিদ্রোহের সৃষ্টি করে। আরব উপদ্বীপ অধিকাংশ অন্য ব্রিটিশ মিত্র,ইবনে সৌদের হাতে পড়ে। সৌদ ১৯৩২ সালে সৌদি আরব প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯২০,১৯৩০,১৯৪০ এ সিরিয়া ও মিশর স্বাধীনতার জন্য আগানো শুরু করে। ১৯১৯ সালে, সাদ জগলুল প্রথম বিপ্লব নামে পরিচিত, মিশরের গণবিক্ষো্ভ সুষ্ঠুভাবে সমন্বিত করেন। জগলুল পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হন,উপনিবেশ বিরোধী দাঙ্গায় ব্রিটিশের নিপীড়ন প্রায় ৮০০ মানুষের মৃত্যু ঘটায়।১৯২০ সালে,মায়সালুনের যুদ্ধে সিরীয় বাহিনী ফরাসি দ্বারা পরাজিত হয় এবং ইরাকি বাহিনী যখন বিদ্রোহ করে, তাদের ব্রিটিশরা পরাজিত করে। ১৯২২ সালে, ব্রিটিশ সরকারের ইস্যু অনুসারে, মিশরের স্বাধীনতার একতরফা ঘোষণার জন্য স্বাধীন রাজ্য মিশর(নামমাত্র) তৈরি করা হয়েছিল।
যদিও মিশর রাজ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় "নিরপেক্ষ" ছিল, কায়রো শীঘ্রই ব্রিটিশ বাহিনীর জন্য একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটি হয়ে ওঠে এবং দেশটি দখল করা হয়েছিল। ১৯৩৬ চুক্তি অনুসারে ব্রিটিশরা এই কাজ করতে সক্ষম ছিল,কারণ চুক্তিতে যুক্তরাজ্য দাবি করেছিল যে, সুয়েজ খাল রক্ষা করার জন্য মিশরের মাটিতে সৈন্যঘাটি বানাতে পারবে। ১৯৪১ সালে ইরাকি অভ্যুত্থান ইঙ্গ ইরাকি যুদ্ধের সময় দেশটিকে ব্রিটিশ আক্রমণের দিকে নিয়ে যায়। ইরাকে ব্রিটিশ আগ্রাসন অনুসরন করে মিত্রবাহিনী সিরিয়া-লেবানন আগ্রাসন এবং ইরানে ইঙ্গ-সোভিয়েত আগ্রাসন চালিয়েছিল।
ফিলিস্তিনে,আরব জাতীয়তাবাদ ও ইহুদিবাদের এর পরস্পরবিরোধী শক্তি এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে ব্রিটিশ না পারছে সমাধান করতে,না পারে নিজেদের মুক্ত করতে। জার্মান একনায়ক এডলফ হিটলারের উত্থান, ফিলিস্তিনে অভিবাসন এবং ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে নতুন জরুরি অবস্থা তৈরি করেছিল। কার্যত ব্রিটিশ,ফরাসি একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ছিল আরব ও পারস্য নেতাদের একটি আকর্ষণীয় বিকল্প এবং ইহুদি ঔপনিবেশিকতাবাদ বা সাম্রাজ্যবাদ বেলায় এই যুক্তিতে, “আমার শত্রুর শত্রু, আমার বন্ধু”।
২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তি রাষ্ট্র
[সম্পাদনা]ব্রিটিশ, ফরাসি, এবং সোভিয়েতরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং পর মধ্যপ্রাচ্যের অনেক অংশ থেকে চলে গেল। ইরান, তুরস্ক, সৌদি আরব ও আরব উপদ্বীপের মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো সাধারণত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারা অপ্রভাবিত ছিল। তবে যুদ্ধের পর, নিম্নলিখিত মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার বা স্বাধীন হয়ে ছিল:
- ২২ নভেম্বর ১৯৪৩ – লেবানন
- ১ জানুয়ারি ১৯৪৪ – সিরিয়া
- ২২ মে ১৯৪৬ – জর্ডান (ব্রিটিশ জনাদেশ শেষ)
- ১৯৪৭ – ইরাক (যুক্তরাজ্যর সৈন্য প্রত্যাহার)
- ১৯৪৭ – মিশর(সুয়েজ খাল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার)
- ১৯৪৮- ইসরাইল (যুক্তরাজ্যর সৈন্য প্রত্যাহার)
- ১৬ আগস্ট ১৯৬০ – সাইপ্রাস
ফিলিস্তিনে আরব ও ইহুদিদের মধ্যে সংগ্রাম, ১৯৪৭ এ জাতিসংঘের ফিলিস্তিন ভাগ করার চরম পরিকল্পনার ফল।এই পরিকল্পনা অনুযায়ী জর্ডান নদী ও ভূমধ্য মধ্যে সংকীর্ণ স্থান মধ্যে একটি আরব রাষ্ট্র ও একটি ইহুদি রাষ্ট্র তৈরি করার চেষ্টা করা। ইহুদী নেতারা তা গ্রহণ করার সময়, আরব নেতারা এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেন।
১৪ মে ১৯৪৮ সালে, যখন ব্রিটিশ জনাদেশে মেয়াদ শেষ হয়, ইহুদিবাদী নেতৃত্ব ইসরাইল রাজ্য ঘোষণা করেন। ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধ মিশর, সিরিয়া, ট্রান্সজর্ডান, লেবানন, ইরাক ও সৌদি আরবের সেনাদলের হস্তক্ষেপে হয় এবং তারা ইসরাইলের কাছে পরাজিত হয়েছিল। ৮০০০০০০ ফিলিস্তিনি ইসরাইলভুক্ত এলাকা থেকে পালিয়ে যান এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থী হয়ে ওঠে, এইভাবে "ফিলিস্তিনি সমস্যা", শুরু থেকেই অঞ্চলের অশান্তি নিয়ে এসেছে।৭৫৮০০০-৮৬৬০০০ এর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ইহুদী যারা বহিষ্কৃত বা সমগ্র আরব ভূখণ্ড থেকে পালিয়ে ছিল ১৯৪৮ এর পরে ইসরাইল তাদের গ্রহণ করে।
আগস্ট ১৬, ১৯৬০ এ, সাইপ্রাস যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। একজন সহজাত ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা,আর্চবিশপ ম্যাকারিওস তৃতীয়, স্বাধীন সাইপ্রাসের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ১৯৬১ সালে এটি জাতিসংঘের ৯৯ তম সদস্য নির্বাচিত হয়।
আধুনিক রাজ্য
[সম্পাদনা]প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ থেকে ইউরোপীয় শক্তির প্রভাবলোপ,ইসরাইল প্রতিষ্ঠা, এবং তেল শিল্পের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব, আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যের সৃষ্টির সোপান। এই ঘটনাগুলো মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি বাড়িয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার চূড়ান্ত জামিনদার ছিল এবং ১৯৫০ থেকে তেল শিল্পের প্রভাবশালী বাহিনী ছিল। ১৯৫৪ যখন বিপ্লব মৌলবাদী বিরোধী পশ্চিমমুখী শাসকদের ক্ষমতায় আনে,১৯৫৪ সালে মিশরে, সিরিয়ায় ১৯৬৩ সালে, ইরাকে ১৯৬৮ সালে এবং লিবিয়া ১৯৬৯ সালে মৌলবাদী বিরোধী পশ্চিমমুখী শাসকদের ক্ষমতায় আনে। আরব সমাজতান্ত্রিক শাসকদের সঙ্গে যেমন মিশরের জামাল আব্দুল নাসের এবং ইরাকের সাদ্দাম হোসেনের সাথে জোট করে সোভিয়েত ইউনিয়ন মধ্যপ্রাচ্যে স্নায়ু যুদ্ধের নতুন ক্ষেত্র খুজছিল।
এই শাসকরা ইস্রায়েল রাষ্ট্র ধ্বংস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হারানো এবং "পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের" অন্যান্য সর্বনাশ ঠেকানো ও আরব জনগণের সমৃদ্ধি আনতে তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনসমর্থন লাভ করে। যখন ১৯৬৭ এ ইসরায়েল এবং তার প্রতিবেশীদের মধ্যে ছয় দিনের যুদ্ধ মুসলিম অংশ চূড়ান্ত ক্ষতির মধ্যে শেষ করে, ইসলামী বিশ্ব একে আরব সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতা হিসাবে দেখেছে। এই সন্ধিক্ষণ প্রতিনিধিত্ব করে যখন, মৌলিক এবং যুদ্ধরত ইসলাম পূর্ণ করতে শুরু করেছিল রাজনৈতিক শূন্যতা তখন সৃষ্টি হয়।[১৭]
এ অঞ্চলে মার্কিনদের স্বার্থে তাদের অবশিষ্ট মিত্র , রক্ষণশীল রাজতন্ত্র এর সৌদি আরব, জর্ডান, ইরান এবং পারস্য উপসাগরীয় আমিরাত রক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে,যাদের শাসন পদ্ধতি যেমন পশ্চিমাদের চোখে অনাকর্ষণীয় ছিল তেমনি পশ্চিমাবিরোধী শাসকদের ক্ষেত্রেও। বিশেষত ইরান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিত্রতে পরিণত হয় ১৯৭৯ সালের ইরানের বিপ্লব আগপর্যন্ত এবং বিপ্লবের পরে ইরাক বা সিরিয়ার ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের চেয়ে বেশি পশ্চিমা বিরোধী একটি ধর্মভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাধ্য করছিল সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মৈত্রী তৈরি করতে।আরব-ইসরাইল যুদ্ধের তালিকায় বেশ কিছু বড় ধরনের যুদ্ধ রয়েছে যেমন ১৯৪৮ এ আরব-ইসরাইল যুদ্ধ, ১৯৫৬ এ সুয়েজ যুদ্ধ, ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধ, ১৯৭০এ ক্ষয়যুদ্ধ, ১৯৭৩ এ ইঅম কিপ্পুর যুদ্ধ, ১৯৮২ এ লেবানন যুদ্ধ, এবং সেইসাথে কিছু ছোট ধরনের সংঘর্ষও আছে।
১৯৬৩ এবং ১৯৭৪ সালের মধ্যে, গ্রিক সাইপ্রিয়টদের এবং তুর্কি সাইপ্রিয়টদের মধ্যে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সাইপ্রাসে বিরোধ বাড়তেই থাকে যা সাইপ্রোয়েট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সহিংসতা ও সাইপ্রাসের তুর্কি আক্রমণের দিকে অগ্রসর হয়। সাইপ্রাস বিরোধ অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
১৯৬০ সালের মধ্যভাগে মিশেল আফলাক এবং সালাহ আল-দীন আল-বিতার নেতৃত্বে আরব সোশ্যালিস্ট বাথ পার্টি ইরাক ও সিরিয়ার উভয় স্থানেই ক্ষমতায় ছিল। ইরাক প্রথম আহমেদ হাসান আল-বকর দ্বারা শাসিত হয়,পরে ১৯৭৯ সালে সাদ্দাম হোসেন এবং সিরিয়া সালাহ জাদিদ নেতৃত্বাধীন একটি সামরিক কমিটি এবং পরে ২০০০ পর্যন্ত হাফেজ আল-আসাদ, এরপর তার পুত্র বাশার আল-আসাদ দ্বারা অনুসৃত হয়েছিল।
১৯৭৯ সালে মিশরের অধীনে নাসেরের উত্তরসূরি আনোয়ার সাদাত,সংযুক্ত আরব সামরিক ফ্রন্টের সম্ভাবনা শেষ করে, ইসরাইলের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করেন। ১৯৭০ সাল থেকে ফিলিস্তিনের ইয়াসির আরাফাত এর নেতৃত্বে মুনাজ্জামাত্ আল তাহ্রি ফিলিস্তিনিয়াহ্ ইসরাইলের সহিংসতার বিরুদ্ধে, আমেরিকান, ইহুদী এবং সাধারণ পশ্চিম লক্ষ্যমাত্রার বিরুদ্ধে একটি দীর্ঘায়িত প্রচারাভিযান চালাতে থাকল, ইসরাইলি সংকল্পকে দুর্বল এবং ইসরাইলের জন্য পশ্চিমা সমর্থন কমানোর একটি উপায় হিসেবে।
ফিলিস্তিনের নানা স্তরের মানুষ এবং সিরিয়া, লিবিয়া, ইরান ও ইরাকের মধ্যে শাসকরা একে সমর্থন দেয়। এই প্রচারাভিযানের উচ্চ ফল আসে ১৯৭৫ সালে,জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন ৩৩৭৯ এ বর্ণবাদের একটি রূপ হিসেবে ইহুদিবাদের নিন্দা এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক আরাফাতের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। রেজোলিউশন ৩৩৭৯ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৪৬৮৬ দ্বারা ১৯৯১ সালে প্রত্যাহার করা হয়েছে।মধ্যপ্রাচ্যে ১৯৭০এর শেষের দিকে অনেক ক্ষিপ্ত ঘটনা প্রতিবেশী ইরান ও ইরাকের মধ্যবর্তী ইরান-ইরাক যুদ্ধের কারণ। যুদ্ধ, ইরাক শুরু করে, ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের কারণে দেশটির বিশৃঙ্খলার সুযোগে ১৯৮০ সালে ইরানের খুজেস্তান আক্রমণ করে, শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষের হাজার হাজার শত শত মৃতর সঙ্গে একটি অচলাবস্থা পরিণত হয়।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং ১৯৯০ সালে সাম্যবাদের পতন মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন ঘটনার জন্য দায়ী ছিল। এটা বৃহৎ সংখ্যক সোভিয়েত ইহুদীদের রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে ইসরাইল যেতে অনুমতি দিয়েছিল,যাতে ইহুদি রাষ্ট্র আরও শক্তিশালী করা যায়।পশ্চিমা বিরোধী আরব শাসকদের কৃতিত্ব, যুদ্ধোপকরণ এবং কূটনৈতিক সমর্থন কমিয়ে দিয়েছিল, তাদের অবস্থান দুর্বল করেছিল। রাশিয়া থেকে সস্তা তেল পাওয়ার প্রত্যাশা, তেলের দাম কমানো,আরবের তেলের উপর পশ্চিমাদের নির্ভরতা কমিয়ে দেয়। এর জন্য স্বৈরাচারী রাষ্ট্রীয় সমাজতন্ত্রের উন্নয়নের মডেল নিন্দিত হয়েছিল,যা মিশর (নাসের অধীনে), আলজেরিয়া, ইরাক ও সিরিয়া ১৯৬০ সাল থেকে অনুসরণ করছিল, এই শাসকদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পরিত্যাক্ত করেছিল। শাসকরা যেমন ইরাকে সাদ্দাম সমাজতন্ত্র জন্য একটি বিকল্প হিসেবে ক্রমবর্ধমানভাবে আরব জাতীয়তাবাদকে পরিণত করেছিল।
সাদ্দাম হোসেন ১৯৮০ সালের ইরানের সঙ্গে দীর্ঘ এবং খুব ব্যয়বহুল যুদ্ধ ছিল, তার উপর ১৯৯০ সালে কুয়েতে তার অবশ্যম্ভাবী আগ্রাসনের মধ্যে ইরাককে টেনে নিয়েছিলেন। কুয়েত ১৯১৮ সালের আগে বসরার উসমানীয় প্রদেশের অংশ এবং ইরাকের ধারণা এটা তাদের অংশে ছিল, কিন্তু ইরাক ১৯৬০ সালে স্বাধীনতা পেয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আগ্রাসন ঠেকানোর জন্য একটি মিত্রজোট গঠন করে যার মধ্যে ছিল সৌদি আরব,মিশর,সিরিয়া। জাতিসংঘের অনুমোদন পায় এবং পারস্য উপসাগরের যুদ্ধে ইরাককে কুয়েত থেকে বিতারিত করে। বুশ সাদ্দাম হোসেনের শাসন উৎখাত করার প্রচেষ্টা করেছিলেন যা পরে আমেরিকার আফসোসের কারণ ছিল। ফার্সি উপসাগরীয় যুদ্ধের এবং তার পরবর্তি সময়, অনেক মুসলমান এর বিরোধিতা স্বত্ত্বেও, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে স্থায়ী মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছিল,এটা লাদেনের বিভিন্ন হামলা যেমন ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার জন্যও হয়েছিল।
১৯৯০-বর্তমান
[সম্পাদনা]রাজনৈতিক গণতন্ত্রের দ্রুত বিস্তার ও ল্যাটিন আমেরিকা, পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকার কিছু অংশ ও পূর্ব ইউরোপের বাজার অর্থনীতির উন্নয়ন মধ্যপ্রাচ্যেকে এড়িয়ে গিয়েছিল। গোটা অঞ্চলে, শুধুমাত্র ইসরাইল, তুরস্ক এবং কতক লেবানন ও ফিলিস্তিনে গণতন্ত্র ছিল।
অন্যান্য দেশে বিধানিক ব্যক্তিত্বদের সামান্য ক্ষমতা ছিল। পারস্য উপসাগরীয় রাজ্যের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট দিতে পারত না কারণ তারা অতিথি শ্রমিক ছিল। অনেক আরব দেশের পাল্টা দাবী যে, পশ্চিমা পররাষ্ট্রনীতির ফল হল মাত্রাতিরিক্ত শক্তিশালী ইসরায়েল, যা স্বাভাবিকভাবেই এই সব জাতির অনেক উন্নতি বাতিল করেছিল।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশগুলোতে, রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি, অস্ত্র ও প্রতিপত্তি প্রকল্পে বাড়তি খরচ এবং তেল রাজস্বের উপর অধিক নির্ভরতার জন্য বাজার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। অঞ্চলের সফল অর্থনীতি ছিল কম জনসংখ্যার তেল সম্পদযুক্ত দেশ গুলোতে,যেমন কাতার,বাহরাইন, কুয়েত, এবং আরব আমিরাত। এসব রাজ্যে ক্ষমতাসীন আমিররা ক্ষমতা নিজের হাতে রেখে চালু করেছিল কিছু রাজনৈতিক এবং সামাজিক উদারীকরণ। ১৯৮০ তে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর লেবানন মোটামুটি সফল অর্থনীতি পুনর্নির্মিত করেছিল।
২১ শতকের শুরুর বছরগুলোতে এই সমস্ত বিষয়গুলি মিলিত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বড়িয়ে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায় এবং সারা বিশ্ব জুড়ে তার পরিণতি ছড়িয়ে পড়ে। ২০০০ সালে ক্যাম্প ডেভিড এ বিল ক্লিন্টনের ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি চুক্তি করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা, সরাসরি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এরিয়েল শ্যারন এর নির্বাচন এর দিকে নিয়ে যায় এবং আল-আকসা ইন্তিফাদা নেতৃত্বে ইসরায়েলি বেসামরিক লক্ষ্যের দিকে আত্মঘাতী বোমা শুরু হয়। এটা ১৯৯৩ এর অসলো শান্তি চুক্তিকে পর প্রথম প্রধান সহিংসতার প্রাদুর্ভাব ছিল।
একই সময়ে, অধিকাংশ আরব শাসকদের ব্যর্থতা এবং ধর্মনিরপেক্ষ আরব প্রগতিবাদের দেউলিয়াত্ব, ইরানের শিয়া আলেমদের দ্বারা এবং সৌদি আরবের শক্তিশালী ওহাবী সম্প্রদায় দ্বারা সর্মর্থিত হয়ে, শিক্ষিত আরবদের (এবং অন্যান্য মুসলমান) একটি অংশকে ইসলামবাদের আলিঙ্গন এর দিকে টেনে নেয়। বিপথগামী ইসলামপন্থীদের অনেকে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ লাভ করে আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়ন বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল।
এই জঙ্গিদের একজন ছিল সৌদি আরবের ধনী নাগরিক, ওসামা বিন লাদেন। আফগানিস্তানে সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পর তিনি আল-কায়েদা গঠন করেন, যা ১৯৯৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে বোমা হামলা, ইউএসএস কোল বোমাবর্ষন ও ১১ সেপ্টেম্বর,২০০১ এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ আক্রমণের জন্য দায়ী ছিল। ১১ ই সেপ্টেম্বরের হামলার পর তালেবান শাসন উৎখাতের জন্য্, ২০০১ সালে আফগানিস্তান আক্রমণ আরম্ভ করে, মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন, যেখানে বিন লাদেন ও তার সংগঠন আশ্রয় নিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এই অপারেশনকে বিশ্বব্যাপী “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের” অংশ হিসাবে প্রচার করেছিল।
২০০২ এ প্রশাসন, প্রতিরক্ষা সচিব ডোনাল্ড রামসফেল্ডের নেতৃত্বে, ইরাক আক্রমণ,সাদ্দামকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করার জন্য একটি পরিকল্পনা করে, এবং তারা আশা প্রকাশ করেন ইরাক মুক্ত বাজার অর্থনীতির একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে যা মধ্যপ্রাচ্যের বাকি দেশের জন্য একটি আদর্শ হয়ে উঠবে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রধান মিত্র, ব্রিটেন, ইতালি, স্পেন এবং অস্ট্রেলিয়া, জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়াই এপ্রিল ২০০৩ এ ইরাকে আক্রমণ শুরু করে কোনভাবে টেনেটুনে সাদ্দামকে উৎখাত করতে।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজধানীতে পশ্চিমা দখলদার সেনাবাহিনীর আবির্ভাব অঞ্চলের ইতিহাসকে ঘুরিয়ে দেয়। ২০০৫ সালে জানুয়ারী এ অনুষ্ঠিত সফল নির্বাচন সত্ত্বেও (যদিও ইরাকের সুন্নি জনসংখ্যার বড় অংশ বর্জন করেছিল) ইরাকের সব ধ্বংস হয়েছিল কারণ একটি যুদ্ধোত্তর বিদ্রোহ যা ক্রমাগত জাতিগত সহিংসতার দিকে আগাচ্ছিল এবং আমেরিকান সেনারা প্রাথমিকভাবে দমন করতে পারেনি। ইরাকি বুদ্ধিজীবী ও অভিজাত ব্যবসায়ীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছিল, অঞ্চলে বিদ্রোহের পরবর্তি অস্থিতিশীলতার জন্য অনেক ইরাকি উদ্বাস্তু হয়েছিল। ইরাকে মার্কিন বাহিনীর একটি প্রতিক্রিয়াশীল দল সম্প্রতি বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ এবং দেশের স্থিতিশীলতা আনতে অনেকটাই সফল হয়েছে।
২০০৫ এ, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি জন্য প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের পদক্ষেপ সামনে আগায়নি। যদিও এই অবস্থা ২০০৪ সালে ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর সঙ্গে পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। ইসরাইলের একতরফা সমাধান দিকে আগানোর উদ্দেশ্যে ফিলিস্তিন আত্মঘাতী বোমাহামলাকারীদের থেকে ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করার জন্য ইসরাইল পশ্চিম তীরের বাধা নিয়ে সামনে আগাচ্ছে এবং গাজা এই একতরফা প্রস্তাব প্রত্যাহার করেছিল।ইসরাইল যদি সফল হয় তবে পশ্চিম তীর এলাকা এরা কার্যত আত্মসাৎ করবে। ২০০৬ সালে ইসরাইল ও লেবাননের হিজবুল্লাহ শিয়া সৈন্যদের মধ্যে একটি নতুন দ্বন্দ্ব সূত্রপাত হয়, যার ফলে আর কোন শান্তির জন্য সম্ভাবনা রইল না।
বর্তমানে ২০১০ সাল এর শেষ থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিভিন্ন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আরব বসন্ত নামে একটি বিপ্লবী ধারা চলছে যা উল্লেখযোগ্যভাবে অঞ্চলের সামাজিক অনুক্রম পরিবর্তন করতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Dodson, Aidan (১৯৯১)। Egyptian Rock Cut Tombs। Buckinghamshire, UK: Shire Publications Ltd। পৃষ্ঠা 46। আইএসবিএন 0-7478-0128-2।
- ↑ Richard, Suzanne (২০০৩)। Near Eastern Archaeology: A Reader (Illustrated সংস্করণ)। EISENBRAUNS। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 978-1-57506-083-5।
- ↑ Semino, Ornella; Magri, Chiara; Benuzzi, Giorgia; Lin, Alice A.; Al-Zahery, Nadia; Battaglia, Vincenza; MacCioni, Liliana; Triantaphyllidis, Costas; Shen, Peidong; Oefner, Peter J.; Zhivotovsky, Lev A.; King, Roy; Torroni, Antonio; Cavalli-Sforza, L. Luca; Underhill, Peter A.; Santachiara-Benerecetti, A. Silvana (২০০৪)। "Origin, Diffusion, and Differentiation of Y-Chromosome Haplogroups E and J: Inferences on the Neolithization of Europe and Later Migratory Events in the Mediterranean Area"। The American Journal of Human Genetics। 74 (5): 1023–34। ডিওআই:10.1086/386295। পিএমআইডি 15069642। পিএমসি 1181965 ।
- ↑ Gérard, Nathalie; Berriche, Sala; Aouizérate, Annie; Diéterlen, Florent; Lucotte, Gérard (২০০৬)। "North African Berber and Arab Influences in the Western Mediterranean Revealed by Y-Chromosome DNA Haplotypes"। Human Biology। 78 (3): 307–16। ডিওআই:10.1353/hub.2006.0045। পিএমআইডি 17216803।
- ↑ Grugni, Viola; Battaglia, Vincenza; Hooshiar Kashani, Baharak; Parolo, Silvia; Al-Zahery, Nadia; Achilli, Alessandro; Olivieri, Anna; Gandini, Francesca; ও অন্যান্য (২০১২)। Kivisild, Toomas, সম্পাদক। "Ancient Migratory Events in the Middle East: New Clues from the Y-Chromosome Variation of Modern Iranians"। PLoS ONE। 7 (7): e41252। ডিওআই:10.1371/journal.pone.0041252। পিএমআইডি 22815981। পিএমসি 3399854 ।
- ↑ http://www.ancient.eu/akkad/
- ↑ Lyons, Albert S.। "Ancient Civilizations – Mesopotamia"। Health Guidance.org। ১৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ BetBasoo, Peter (২০০৭)। "Brief History of Assyrians"। Assyrian International News Agency। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ Egypt (page 102)
- ↑ The Inheritance of Rome
- ↑ Subhi Y. Labib (1969), "Capitalism in Medieval Islam", The Journal of Economic History 29 (1), p. 79–96 [80].
- ↑ Erik-Jan Zürcher (২০০৪)। Turkey: A Modern History (Revised সংস্করণ)। I.B.Tauris। পৃষ্ঠা 107ff.। আইএসবিএন 978-1-86064-958-5।
- ↑ Y.R. (১ ফেব্রুয়ারি ১৯১৩)। "Le coup d'état du 23 Janvier"। L'Illustration। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১৪।
- ↑ Dr. Tofallis, Kypros, A History of Cyprus, p.98 (2002)
- ↑ ক খ Morton, Michael Quentin (ডিসেম্বর ২০১১)। "Narrowing the Gulf: Anglo-American Relations and Arabian Oil, 1928-74" (পিডিএফ)। Liwa Journal। 3 (6): 39–54। ১৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Skyes Picot Agreement: Division of Territory"। Crethi Plethi। ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ Watson, Peter (2006). Ideas: A History of Thought and Invention, from Fire to Freud. New York: Harper Perennial. p. 1096. আইএসবিএন ০-০৬-০৯৩৫৬৪-২.