পাকিস্তানবিদ্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পাকিস্তানবিদ্যা (উর্দু: مطالعہ پاکستان‎‎) হলো কেতাবি গবেষণা ও শিক্ষার পাঠ্যক্রম[১][২] যেটি পাকিস্তানের  সংস্কৃতিজনসংখ্যাভূগোলইতিহাসআন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং রাজনীতি কে অন্তর্ভুক্ত করে। বিষয়টি দেশের মধ্যে এবং বাইরে ব্যাপকভাবে গবেষণা করা হয়, যদিও পাকিস্তানের বাইরে এটি বৃহত্তর দক্ষিণ এশীয়বিদ্যা বা অন্য কোনো বিস্তৃত ক্ষেত্রের অংশ। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এর জন্য নিবেদিত বিভাগ এবং গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে অনেক স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাকিস্তানবিদ্যার উপর বহুবিষয়ক গবেষণা করে। এছাড়াও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা রয়েছে যারা সহযোগিতামূলক শিক্ষাদান, গবেষণা, এবং বিষয়ের উপর কার্যকলাপ বিনিময়।

তাৎপর্য[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে[সম্পাদনা]

দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ, এবং মুসলিম বিশ্বের রাজনীতিতে অন্যতম প্রধান অভিনেতা হিসেবে, পাকিস্তান বহুবিভাগীয় গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু।[৩] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রযুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানবিদ্যা সম্পর্কিত কেতাবি ও গবেষণা সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যস্ত গবেষণা দল রয়েছে। যেমন, ১৯৭৩ সাল প্রতিষ্ঠিত উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের "আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ পাকিস্তান স্টাডিজ"। এশীয়বিদ্যা সংঘর অধিভুক্ত, প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবে পাকিস্তানবিদ্যা সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনাসভা, সর্বজনীন বক্তৃতা এবং সম্মেলন এর মতো কার্যক্রমের আয়োজন করে। এটি পাকিস্তানের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত উপকরণগুলির উপর গবেষণার জন্য বার্ষিক আন্তর্জাতিক ফেলোশিপ প্রদান করে।[৪]

এপ্রিল ২০০৪ সালে, এআইপিএস পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে "সল্ট রেঞ্জ কালচার জোন অফ পাকিস্তান" নিয়ে আন্তর্জাতিক কর্মশালার আয়োজন করে।[৫] এটি আন্তর্জাতিক দর্শকদেরকে দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিক এবং স্থাপত্য ঐতিহ্য বোঝার সুযোগ দিয়েছে।

১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত "ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর পাকিস্তান স্টাডিজ" হলো আরেকটি কেতাবি উদ্যোগ। ফোরামের সাধারণ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের চেয়ে এই বিষয়ে বিস্তৃত মতামত রয়েছে এবং গবেষণা ও কথোপকথনকে উৎসাহিত করে যা শিক্ষাবিদ ও অনুশীলনকারী উভয়ই জড়িত। ফোরাম স্বীকার করে যে বিষয়টি দেশ এবং তার সমাজের প্রাপ্য ব্যক্তিগত মনোযোগ পায়নি, এবং তাই এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে।[৬]

এছাড়াও বৃহত্তর বহুজাতিক ও বহুসাংস্কৃতিক সংস্থা রয়েছে যারা এশিয়ার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানবিদ্যা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের জন্য বহুত্ববাদী প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। এশিয়া ফাউন্ডেশন, স্থানীয় শাসন, সুশীল সমাজ, মানবাধিকার, এবং স্বাস্থ্যসেবার[৭] পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বিচারিক, এবং বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয়ে পদক্ষেপের মাধ্যমে বিষয়ের বিভিন্ন বোঝার জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প চালু করেছে।[৮]

পাকিস্তানে[সম্পাদনা]

পাকিস্তানে, মাধ্যমিক স্কুল এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার স্তরে তিনটি বাধ্যতামূলক পাঠ্যক্রমের (উর্দু ও ইংরেজি কোর্সের সাথে) বিষয় হলো একটি।[৯] এটি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে ডিগ্রী কোর্স হিসেবেও পড়ানো হয়। পাকিস্তানবিদ্যায় শিক্ষা ও গবেষণার জন্য নিবেদিত বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগও রয়েছে।[১০]

বিভাগগুলির মধ্যে অনেকগুলি গভীরভাবে অধ্যয়নের জন্য ডিগ্রি প্রোগ্রাম প্রদান করে, সেইসাথে এমফিলপিএইচডি স্কলারদের জন্য গবেষণা সুবিধা প্রদান করে। কোর্সগুলি বিস্তৃতভাবে ইতিহাস, রাজনীতি ও ভাষাতত্ত্ব থেকে দেশের ভূগোল এবং অর্থনীতি এবং বৈদেশিক সম্পর্ক এবং ধর্মবিদ্যা থেকে সামাজিক সম্পর্ক ও সাহিত্য পর্যন্ত বিস্তৃত।[১১] উচ্চ শিক্ষার স্তরে বিষয়ের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার অর্থ হলো গবেষণার জন্য বিস্তৃত সুযোগ, এইভাবে বিষয়টিকে ক্রমবর্ধমান আন্তঃবিভাগীয় করে তোলে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. EDITORIAL (2006), Good news about curriculum; Daily Times – A new voice for a new Pakistan, 8 December. Retrieved on 3 January 2010
  2. Irfan Ghauri (2006), School curriculum ‘enlightened’; Two-Nation Theory explained: ‘Muslim deprivation, not religion, led to independence’ – * New Pak Studies syllabus ‘eliminates prejudice against non-Muslims’ – * Includes concept of ‘enlightened moderation’, economic and privatisation policies, October 1999 coup; Daily Times – A new voice for a new Pakistan, 7 December. Retrieved on 3 January 2010
  3. Pakistan Workshop (2007) Conference programme and paper abstracts ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে. Workshop organised by Pakistan Studies Group ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে at University of Leeds. Retrieved on 4 June 2008
  4. See the official website of the institute at http://www.pakistanstudies-aips.org/ Retrieved on 4 June 2008
  5. Meister, M.W. (2006). Salt Range Temples, Pakistan ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ জুন ২০০৮ তারিখে. Retrieved on 4 June 2008
  6. Malik, I.H. (1996). The British Association for Pakistan Studies. International Institute for Asian Studies. Newsletter 7. Retrieved on 4 June 2008
  7. Pakistan Projects ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ মার্চ ২০০৮ তারিখে at The Asia Foundation website. Retrieved on 6 June 2008.
  8. AF (2000). Focus on Pakistan ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুন ২০০৭ তারিখে. Asian Perspectives Seminar. Asia Foundation. 3 February. Retrieved on 6 June 2008.
  9. AKDN (2004). Curriculum for the Aga Khan Higher Secondary School, Hunza ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জুন ২০১৬ তারিখে. Aga Khan Development Network. Retrieved on 4 June 2008
  10. See for example the Department of Pakistan Studies ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে at Federal Urdu University, Karachi. Retrieved on 6 June 2008.
  11. Department of Pakistan Studies ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ মে ২০১০ তারিখে at Bahauddin Zakariya University, Multan. Retrieved on 6 June 2008.

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]