জিতেন প্যাটেল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিতেন প্যাটেল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজিতেন শশী প্যাটেল
জন্ম (1980-05-07) ৭ মে ১৯৮০ (বয়স ৪৩)
ওয়েলিংটন, নিউজিল্যান্ড
ডাকনামজিতস, ড্যাভ, দ্য জিৎ
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩৩)
২৭ এপ্রিল ২০০৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট১১ জানুয়ারি ২০১৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪২)
৩১ আগস্ট ২০০৫ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ ওডিআই৫ অক্টোবর ২০০৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৯-বর্তমানওয়েলিংটন
২০০৯; ২০১১-বর্তমানওয়ারউইকশায়ার (জার্সি নং ৫)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১৯ ৩৯ ১৭৯ ১৬৩
রানের সংখ্যা ২৭৬ ৮৮ ৩,৭৯৮ ৫৭৮
ব্যাটিং গড় ১২.০০ ১৪.৬৬ ২৩.০১ ৯.৯৬
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ২/১৯ ০/১
সর্বোচ্চ রান ২৭* ৩৪ ১২০ ৫০
বল করেছে ৪,৭২৩ ১,৮০৪ ৩৫,৬৬৯ ৭,৭৪৪
উইকেট ৫২ ৪২ ৪৭৩ ১৯১
বোলিং গড় ৪৮.৪৬ ৩৬.০২ ৩৭.০৯ ৩১.১৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৬
ম্যাচে ১০ উইকেট - n/a
সেরা বোলিং ৫/১১০ ৩/১১ ৭/৭৫ ৪/১৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১২/– ১২/– ৮৬/– ৬৩/–
উৎস: CricInfo, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জিতেন শশী প্যাটেল (গুজরাটি: જીતેન પટેલ; জন্ম: ৭ মে, ১৯৮০) ওয়েলিংটনে জন্মগ্রহণকারী ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার। ডানহাতি অফ-স্পিন বোলার হিসেবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলে খেলেছেন জিতেন প্যাটেল। বর্তমানে তিনি কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ার ও ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়েলিংটন ফায়ারবার্ডসের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল মেয়াদকালে নিউজিল্যান্ড দলের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থেকে কাউন্টি ক্রিকেটে মনোনিবেশ করেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে দলের সদস্য মনোনীত হন। চতুর্থ ওডিআইয়ে চমকপ্রদ ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনার মাধ্যমে তার সুন্দর অভিষেক ঘট। একই মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তার টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। নির্ধারিত ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট লাভ করায় ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ২০০৫-০৬ মৌসুমে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো নিজ দেশে খেলার সুযোগ পান। চতুর্থ ওডিআইয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। ১০ ওভারে ২৩ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নিয়ে মিতব্যয়ী বোলার ছিলেন তিনি।[১]

২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টের মাধ্যমে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। নিউজিল্যান্ডীয় কোচ জন ব্রেসওয়েল তাকে ‘দীর্ঘদিনের বিনিয়োগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।[২] অভিষেকের পর থেকে নিউজিল্যান্ডের টেস্ট দলে নিয়মিত সদস্য থাকা স্বত্ত্বেও ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রথম একাদশে স্থান পাননি।[৩] ড্যানিয়েল ভেট্টোরি ঐ সময়ে অধিনায়ক ও প্রথম পছন্দের স্পিনার ছিলেন। ফলে নির্বাচকমণ্ডলী দুইজন স্পিনার রাখার পক্ষপাতী ছিলেন না।[৪][৫] এ সময়ে অবশ্য একদিনের আন্তর্জাতিক ও টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে নিয়মিত ছিলেন। ২০০৭ সালে তার ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মৌসুম অতিবাহিত করেন। ঐ বছরে তিনি ২০টি খেলায় অংশ নেন। ২০০৮ সালে তিনি নিউজিল্যান্ড দল থেকে গুটিয়ে নেন।[৬][৭] ঐ বছর তিনি ১৩টি আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণসহ নিউজিল্যান্ড এ দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফর করেন। ২৮ ডিসেম্বর, ২০০৮ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনি সর্বশেষ টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে খেলেছিলেন। এরপর থেকে তিনি আর দলে নিয়মিত হননি।

অক্টোবর, ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেন।[৬] এরপর তিনি আরও দশটি টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ২০১০ সালে বিভিন্ন দলের বিপক্ষে তিনটি টেস্ট খেলেন।[৬] তন্মধ্যে বোলিংয়ে ৭২.০০ ও ব্যাটিংয়ে ১২.০০ গড় ছিল। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটিমাত্র টেস্ট খেলেন। কিন্তু ১৪২ রান দিয়েও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থ হন।[৩]

আগস্ট, ২০১২ সালে ভারত সফরে দুই টেস্ট খেলার জন্য নিউজিল্যান্ডের টেস্ট দলে পুনরায় আমন্ত্রিত হন। গত ২১ মাসের মধ্যে তিনি একটি টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন।[৮] ওয়ারউইকশায়ারে ১১ খেলায় ৩৮ উইকেট লাভ ও ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র আঘাতপ্রাপ্তিই এর প্রধান কারণ। কিন্তু নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড তার অন্তর্ভুক্তিকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে উপযোগী হিসেবে বর্ণনা করে।[৯] দলের দ্বিতীয় স্পিনার তরুণ নেথুলা’র পরিবর্তে তার অংশগ্রহণ ঘটে যাতে তার দল দুই টেস্টেই হেরে যায়। পুরো সিরিজে তিনি ৭ উইকেট দখল করেন।[১০][১১][১২]

দলের সদস্যরূপে নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টে ৪ উইকেট ও ৩৭ রান এবং জানুয়ারি, ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টে ১ উইকেট ও ১৩ রান সংগ্রহ করেন। পোর্ট এলিজাবেথে তিনি তার সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন।[৩]

এপ্রিল, ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য ডাক পেলেও কাউন্টি ক্রিকেটে মনোনিবেশের জন্য তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।[১৩] এরফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গন থেকে তিনি দূরে অবস্থান করছেন যা প্রকারান্তরে অবসর গ্রহণের পর্যায়ে পড়ে।

কাউন্টি ক্রিকেট[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ার দলে যোগ দেন। উদ্বোধনী খেলাতেই ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১২০ রান তোলেন যা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার প্রথম শতরান। ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়ারউইকশায়ার দলের পক্ষে রেকর্ড গড়েন। নবম উইকেট জুটিতে জোনাথন ট্রটের সাথে ২৩৩ রানের জুটি গড়েন।[১৪][১৫] ২০১০ সালে সংক্ষিপ্তকালের জন্য দলে যোগদান করেন। কিন্তু ২০১১ সালে বেশ সফলতা পান। জুলাইয়ে সাসেক্সের বিপক্ষে ১০/১৬৩ লাভ করেন যা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ১০-উইকেট লাভ।[১৬] ২০১২ সালে ওয়ারউইকশায়ারের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপ বিজয়ে ব্যাট ও বল হাতে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণভূমিকা পালন করেন। [১৭]

২০১৩ সালে ওয়ারউইকশায়ারে অবস্থান করে ৩০.০১ গড়ে ৫২ উইকেট ও ২০১৪ সালে ২৬.৩২ গড়ে ৫৯ উইকেট নেন। এছাড়াও ওয়েলিংটনের পক্ষে নিয়মিত রয়েছেন।[১৮]

২০১৪ সালের কাউন্টি মৌসুমে তিনি তার সেরা সময় অতিবাহিত করেন। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে সকল ধরনের ক্রিকেটে শতাধিক উইকেট পান। রয়্যাল লন্ডন ওয়ান-ডে কাপ ও ন্যাটওয়েস্ট টি২০ ব্ল্যাস্ট প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে ২৩ ও ২৫ উইকেট নিয়ে বোলিং গড়ে শীর্ষস্থান অধিকার করেন।[১৯] ২০১৪ সাল শেষে ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে ২৭.১২ গড়ে ১৮৫ উইকেট নেন।[২০] এর পরপরই ওয়ারউইকশায়ার কর্তৃপক্ষ প্যাটেলের সাথে নতুন করে দুই বছরের জন্য চুক্তিতে আবদ্ধ হয়।[২১]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের প্রফেশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক সর্বাপেক্ষা মূল্যবান খেলোয়াড়ের বা এমভিপি পুরস্কার লাভ করেন।[২২] এরপর ২০১৫ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালের বর্ষসেরা পাঁচজন ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করে। তন্মধ্যে তাকেও ইংল্যান্ডে তার এ সফলতার জন্য অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার ঘোষণা করে।[২৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Scorecard: NZ v Sri Lanka, 6 January 2006"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৫ 
  2. "Cairns dropped from Black Caps"। ONE Sport। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৫। ১০ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৯ 
  3. "Full list of test appearances: Jeetan Patel"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৫ 
  4. Cricinfo staff (১৭ আগস্ট ২০০৯)। "Patel keen on being a regular feature"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-১৭ 
  5. Cricinfo staff (১২ সেপ্টেম্বর ২০০৭)। "Vettori takes over as Test captain"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-১৭ 
  6. "List of all international matches: Jeetan Patel"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৫ 
  7. "Miscellaneous Matches played by Jeetan Patel"Cricket Archive। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৫ 
  8. ESPNcricinfo staff (৭ আগস্ট ২০১২)। "Injured Vettori out of India tour, Patel recalled"। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  9. Richardson, Daniel (৭ আগস্ট ২০১২)। "Cricket: Patel, Franklin called in for India test series"। New Zealand Herald। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৫ 
  10. Shannon, Kris (২৩ আগস্ট ২০১২)। "Cricket: Patel, Boult included in first test lineup"। New Zealand Herald। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৫ 
  11. "Scorecard: India v NZ, Aug 23-26"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৫ 
  12. "Scorecard: India v NZ, Aug 31-Sep 3 2012"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৫ 
  13. Dobell, George (১৫ এপ্রিল ২০১৪), "Patel shuns New Zealand approach", ESPN Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  14. Dobell, George (৯ মে ২০০৯)। "Rashid shines but Vaughan injured again in draw"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১০ 
  15. "Jeetan Patel: New Zealand spinner to rejoin Warwickshire for 2013"। BBC Sport। ২৯ নভেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৫ 
  16. "Patel spins Bears to victory"। Sky Sports। ২৩ জুলাই ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৫ 
  17. Dobell, George (৬ সেপ্টেম্বর ২০১২)। "Warwickshire win Championship title"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  18. "First class bowling in each season by Jeetan Patel"Cricket Archive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১৫ 
  19. "Patel named as a Wisden Cricketer of the Year (8 April 2015)"edgbaston.com। ২৩ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৫ 
  20. First-class Bowling For Each Team by Jeetan Patel, সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  21. Warckwishire County Cricket Club (১ অক্টোবর ২০১৪), MVP Patel commits to Warwickshire, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  22. BBCSportStaff (২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪), Jeetan Patel: Warwickshire spinner wins 2014 MVP award, সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  23. "Jeetan Patel named in Wisden Almanack's top five cricketers of the year"। stuff.co.nz। ৯ এপ্রিল ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৫ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]