বিষয়বস্তুতে চলুন

চিরঞ্জিত চক্রবর্তী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(চিরঞ্জিত থেকে পুনর্নির্দেশিত)
চিরঞ্জিত চক্রবর্তী
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২০১১
পূর্বসূরীডঃ বিথিকা মণ্ডল
নির্বাচনী এলাকাবারাসাত
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মদীপক চক্রবর্তী
(1960-11-02) ২ নভেম্বর ১৯৬০ (বয়স ৬৫)
কলকাতা, ভারত
রাজনৈতিক দলতৃণমূল কংগ্রেস
পিতামাতাশৈল চক্রবর্তী (পিতা)
জীবিকাঅভিনেতা, পরিচালক, রাজনীতিবিদ

দীপক চক্রবর্তী (জন্ম: ২ নভেম্বর ১৯৫০), যিনি পেশাদারভাবে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী নামে পরিচিত, তিনি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের একজন ভারতীয় অভিনেতা এবং পরিচালক।[][] তিনি বিখ্যাত কার্টুনিস্ট শৈলা চক্রবর্তীর পুত্র। তিনি একজন রাজনীতিবিদ এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনসভার সদস্যও ।

১৯৮১ সালের সোনায় সোহাগা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিষেক হয় । এটি একটি বক্স অফিস ব্যর্থতা ছিল। অঞ্জন চৌধুরীর ১৯৮৪ সালের শত্রু চলচ্চিত্রে অভিনয় করার পর তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন । প্রধান চরিত্রে তার প্রথম হিট ছবি ছিল ১৯৮৫ সালের অন্তরালে । এর পরে তিনি তার কর্মজীবনে প্রতিকার, প্রতীক, পাপি, পাপ পুণ্য, বেদের মেয়ে জোসনা, অমরকন্টক, জীবন যৌবন, ভয়, শয়তান, পেন্নাম কলকাতা, পুঁতি, ত্রিধারা, জীবন যুদ্ধ, ফেরিকে দিন, আগুনে রাত, এর মতো ধারাবাহিক হিট করেছিলেন।[]

২০০০ সালে ঋতুপর্ণ ঘোষের বাড়িওয়ালি ছবিতে অভিনয়ের পর তিনি তার ক্যারিয়ারে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেন । তিনি একজন বিখ্যাত মঞ্চ শিল্পীও। চক্রবর্তীকে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম সফল অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[][] ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে মর্যাদাপূর্ণ মহানায়ক সম্মানে ভূষিত করেছে ।[]

শিক্ষা এবং প্রাথমিক কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

চিরঞ্জিত মিত্র ইনস্টিটিউশন (মেইন) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন । তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে বি.ই. ডিগ্রি অর্জন করেন, কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেননি। তিনি দেশ ম্যাগাজিনে এবং টিভিতে সংবাদ পাঠক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিবাহিত এবং তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে ।[]

চলচ্চিত্র জীবন

[সম্পাদনা]

১৯৭০ সাল থেকে তিনি রোমান্টিক ছবি ছাড়াও বিভিন্ন অ্যাকশন ধাঁচের ছবিতে সফলভাবে অভিনয় করেন। তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে আরোহণ করেন মূলত ৩টি চলচ্চিত্রের মাধ্যমেঃ অশ্লীলতার দায়ে (১৯৮২); নারায়ণ স্যান্যালের একই নামাঙ্কিত উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে, সমরপিতাঅন্তরালেঅন্তরালে ছবিতে বাপ্পি লাহিড়ী-কিশোর কুমারের গাওয়া সেই বিখ্যাত গান-আজ এই দিনটাকে মনের খাঁচায় লিখে রাখব" রয়েছে। এর প্রথম দুই ছবি আলপনা গোস্বামী ও তৃতীয় ছবিটি মুনমুন সেনের বিপরীতে অভিনীত।

এছাড়াও তিনি দেবশ্রী রায়, শতাব্দী রায়-এর বিপরীতেও অভিনয় করেন। চিরঞ্জিত পরিচালিত এবং অভিনীত ভয় ছবিটি মারাত্মক সাফল্য লাভ করে। এছাড়াও তিনি রুপা গাঙ্গুলি, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত-এর বিপরীতে অভিনয় করেন।

রাজনৈতিক জীবন

[সম্পাদনা]

চিরঞ্জিত ২০১১ সালের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে বারাসাত আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং এই আসনে জয়লাভ করেন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন যে চিরঞ্জিত ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বারাসাত বিধানসভা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন । ২ মে ২০২১ তারিখে ঘোষিত ২৩,৭৮৩ ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর চ্যাটার্জিকে পরাজিত করে চক্রবর্তী এআইটিসি প্রার্থী হিসেবে বারাসাত আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। ২০২৪ সাল পর্যন্ত, তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিধানসভার সদস্য ছিলেন।[]

চলচ্চিত্রের তালিকা

[সম্পাদনা]

পরিচালক হিসাবে

  • মানুষ অমানুষ (২০০২)
  • বস্তির মেয়ে রাধা (২০০০)
  • ভয় (১৯৯৬)
  • কেঁচো খুঁড়তে কেউটে (১৯৯৫)
  • সংসার সংগ্রাম (১৯৯৫)
  • ফিরিয়ে দাও (১৯৯৪)
  • মর্যাদা (১৯৮৯)

অভিনেতা হিসেবে

  • ধূমকেতু (২০২৫)
  • কিরীটী রায় (২০১৬)
  • ষড়রিপু[]
  • অব্যয় সেন (২০১৫)
  • মনিহার (২০১৫)
  • কর্নেল (২০১৩)- অপ্রকাশিত
  • চতুষ্কোণ (২০১৪)
  • কুসুম তুমি আমার (২০১৩)- অপ্রকাশিত
  • বিন্দাস (২০১৪)
  • ১০ই জুলাই (২০১৪)
  • বস (২০১৩)
  • জীবন রং বেরং (২০১১)
  • রোজ ক্রেজ রোজ (২০১০)
  • অন্তরবাস (২০১০)
  • গুডলি (২০১০)
  • শেষ সংঘাট (২০০৯)
  • ১ নং প্লাম ভিলা (২০০৯)
  • আন্টারোটামো (২০০৮)
  • অভিনেত্রী (২০০৬)
  • চোরে চোরে মাসতুতো ভাই (২০০৫)
  • আতোতায়ী (২০০৪)
  • চোর ও ভগবান (২০০৩)
  • অবৈধ (২০০২)
  • ইনকিলাব (২০০২)
  • মানুষ অমানুষ (২০০২)
  • বাড়িওয়ালি (২০০১)
  • ভালোবাসার রাজপ্রসাদে (২০০১)
  • হাতিয়ার (২০০১)
  • মাস্টারমশাই (২০০১)
  • ওস্তাদ (২০০১)
  • প্রেম প্রতিজ্ঞা (২০০১)
  • শ্রীমতি ভয়ঙ্করী (২০০১)
  • বস্তির মেয়ে রাধা (২০০০)
  • চক্রব্যুহ (২০০০)
  • দেবাঞ্জলি (২০০০)
  • ধর্ম অধর্ম (২০০০)
  • রূপসী দোহাই তোমর (২০০০)
  • ত্রিশুল (২০০০)
  • দাদাভাই (১৯৯৯)
  • মস্তান রাজা (১৯৯৯)
  • রাজদন্ড (১৯৯৯)
  • শঙ্খ সিন্দুরের দিব্যি (১৯৯৯)
  • সিঁদুর খেলা (১৯৯৯)
  • বিষ্ণু নারায়ণ (১৯৯৮)
  • লোলা লুসি (১৯৯৮)
  • মায়ার দিবি (১৯৯৮)
  • চন্দ্রগ্রহন (১৯৯৭)
  • জীবন যৌবন (১৯৯৭)
  • নিশপাপ আসামি (১৯৯৭)
  • পিতা মাতা সন্তান (১৯৯৭)
  • সবর ওপরে মা (১৯৯৭)
  • সেদিন চৈত্রমাস (১৯৯৭)
  • যোদ্ধা (১৯৯৭)
  • বেয়াদপ (১৯৯৬)
  • ভাই আমার ভাই (১৯৯৬)
  • ভয় (১৯৯৬)
  • জয় বিজয় (১৯৯৬)
  • ত্রিধারা (১৯৯৬)
  • আবির্ভাব (১৯৯৫)
  • জীবন যুদ্ধ (১৯৯৫)
  • কেঁচো খুঁড়তে কেউটে (১৯৯৫)
  • কুমারী মা (১৯৯৫)
  • মশাল (১৯৯৫)
  • নাগিনকন্য (১৯৯৫)
  • প্রেম সংঘাত (১৯৯৫)
  • রাখাল রাজা (১৯৯৫)
  • সংসার সংগ্রাম (১৯৯৫)
  • অতিক্রম (১৯৯৪)
  • বিশ্বাস অবিশ্বাস (১৯৯৪)
  • দাঙ্গা (১৯৯৪)
  • লাল পান বিবি (১৯৯৪)
  • ফিরিয়ে দাও (১৯৯৪)
  • রক্তনদীর ধারা (১৯৯৪)
  • ঘর সংসার (১৯৯৩)
  • কন্যাদান (১৯৯৩)
  • মান সম্মান (১৯৯৩)
  • সম্পর্ক (১৯৯৩)
  • শক্তি (১৯৯৩)
  • শঙ্ক (১৯৯৩)
  • তোমার রক্তে আমার সোহাগ (১৯৯৩)
  • বেদেনির প্রেম (১৯৯২)
  • পেন্নাম কলকাতা (১৯৯২)
  • পিত্রিরীন (১৯৯২)
  • রক্তে লেখা (১৯৯২)
  • শয়তান (১৯৯২)
  • বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না (১৯৯১)
  • সিন্দুর (১৯৯১)
  • ঘরের বউ (১৯৯০)
  • জোয়ার ভাঁটা (১৯৯০)
  • পাপি (১৯৯০)
  • অগ্নিতৃষ্ণা (১৯৮৯)
  • আশা (১৯৮৯)
  • মহাপীঠ তারাপীঠ (১৯৮৯)
  • মারিয়াদা (১৯৮৯)
  • নিশিবধু (১৯৮৯)
  • শতরূপাক্ষ (১৯৮৯)
  • তুফান (১৯৮৯)
  • আঘাত (১৯৮৮)
  • বোবা সানাই (১৯৮৮)
  • হেরের শিখল (১৯৮৮)
  • মধুগঞ্জের সুমতি (১৯৮৮)
  • প্রতীক (১৯৮৮)
  • গায়ক (১৯৮৭)
  • মৌনা মুখর (১৯৮৭)
  • পাপ পুণ্য (১৯৮৭)
  • প্রতিকার (১৯৮৭)
  • অমর কন্টক (১৯৮৬)
  • আর্তনাদ (১৯৮৬)
  • জীবন (১৯৮৬)
  • মধুময় (১৯৮৬)
  • প্রেম ও পাপ (১৯৮৬)
  • অন্তরালে (১৯৮৫)
  • হরিশচন্দ্র শৈব্য (১৯৮৫)
  • সোনার সংসার (১৯৮৫)
  • সমরপিতা (১৯৮৪)
  • শত্রু (১৯৮৪)
  • অশ্লীলতার দায়ে (১৯৮৩)
  • দিন যায়ে (১৯৮৩)
  • প্রফুল্ল (১৯৮২)
  • সন্ধান (১৯৮২)
  • সোনায় সোহাগা (১৯৮১)

পুরস্কার

[সম্পাদনা]
  • ১৯৯৩ সালে ঘর সংসারের জন্য কালাকার পুরস্কার-সেরা অভিনেতার পুরস্কার
  • ১৯৯৬ সালে সংসার সংগ্রামের জন্য কালাকার পুরস্কার-সেরা পরিচালকের পুরস্কার
  • কালাকার পুরস্কার- ২০০০ সালে সেরা অভিনেতার পুরস্কার
  • BFJA পুরস্কার - ২০০২ সালে আবাইধা- এর জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার
  • কালাকার পুরস্কার- ২০০৩ সালে মানুস আমানসের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার
  • ২০০৬ সালে মুশকিল আসানের জন্য কলাকার পুরস্কার - সেরা অভিনেতার পুরস্কার (টেলিভিশন)
  • BFJA পুরস্কার - ২০০৩ সালে আবাইধার জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার
  • ২০১১ সালে ভারত নির্মাণ পুরস্কার
  • ২০১২ সালে মহানায়ক সম্মান

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Chiranjeet Chakraborty: I live my life with the help of cinema, not by worshipping cinema - Times of India"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ মার্চ ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২২
  2. "Chiranjeet Chakraborty movies, filmography, biography and songs – Cinestaan.com"Cinestaan। ৩১ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৯
  3. "স্টারকে বাঁচাও নইলে অভিনেতারা মরবে"Anandabazar Patrika। ৭ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  4. Das, Soujannya (১৬ নভেম্বর ২০২৩)। "Chiranjeet Chakraborty: 'I wanted to play Feluda and Kabuliwala; I want to work with Goutam Ghose'"The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  5. Goswami, Ranita (২ নভেম্বর ২০২৪)। "জন্মদিনে শহর থেকে বহুদূরে, কোথায় কাটাচ্ছেন? জীবনে কি কোনও আক্ষেপ রয়ে গেল? কী বলছেন চিরঞ্জিত"Hindustan Times। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  6. "State Govt to felicitate Bengali actors"hindubusinessline.com। ১৮ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০২৪Some of the other winners include actor-turned Trinamool MPs and MLAs like Shatabdi Roy, Tapas Pal, Chiranjeet and Debashree Roy.
  7. Kanji, Subhasmita (১৩ মার্চ ২০২৩)। "Chiranjeet Chakraborty: 'যশ তার অধরাই', মিউজিক ভিডিয়ো প্রকাশ করেই 'গায়ক দীপক'কে নিয়ে কী বললেন চিরঞ্জিত?"Hindustan Times। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  8. ""I am very scared, I have some girlfriends" Trinamool MLA Chiranjeet said at the Partha-Arpita lecture"The Bengali Chronicle। ২৫ জুলাই ২০২২। ২৭ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২২
  9. "After Chotushkone, Chiranjeet takes on lead role"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ {{সংবাদ উদ্ধৃতি}}: |প্রকাশক=-এ ইটালিক বা গাঢ় লেখা অনুমোদিত নয় (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]