বিষয়বস্তুতে চলুন

কনিক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Types of conic sections:
1. পরাবৃত্ত
2. বৃত্তউপবৃত্ত
3. অধিবৃত্ত

কার্তেসীয় সমতলে একটি নির্দিষ্ট বিন্দু এবং একটি নির্দিষ্ট সরলরেখা থেকে যেসব বিন্দুর দূরত্বের অনুপাত একটি ধ্রুবক, তাদের সেট একটি সঞ্চারপথ; এই সঞ্চারপথকে কনিক (ইংরেজি: Conic) বলা হয়। এখানে একটি নির্দিষ্ট বিন্দু নামে চিহ্নিত বিন্দুটিকে কনিকের উপকেন্দ্র বা ফোকাস (focus) বলে; নির্দিষ্ট সরলেরেখাটিকে বলে কনিকের দিকাক্ষ (directrix) বা নিয়ামক এবং ধ্রুব অনুপাতটিকে বলা হয় উৎকেন্দ্রিকতা (eccentricity) যাকে সাধারণত e দ্বারা চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এই e এর বিভিন্ন মানের জন্য সঞ্চার পথের আকৃতি বিভিন্ন হয়ে থাকে। বিভিন্ন আকৃতির এই সঞ্চার পথগুলোর মাঝে পরাবৃত্ত, উপবৃত্ত ও অধিবৃত্ত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

  • হলে, সঞ্চারপথকে বলা হয় বৃত্ত
  • হলে, সঞ্চারপথটিকে বলা হয় পরাবৃত্ত (Parabola)।
চিত্রের বক্র রেখাটি একটি পরাবৃত্ত নির্দেশ করছে যার দিকাক্ষ L এবং উপকেন্দ্র F. পরাবৃত্তস্থ যেকোন বিন্দুর উপকেন্দ্র থেকে দূরত্ব(PnF), ঐ বিন্দু থেকে দিকাক্ষের উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্যে(PnQn) এর সমান।
  • হলে, সঞ্চারপথটিকে বলা হয় উপবৃত্ত (Ellipse)।
  • হলে, সঞ্চারপথটিকে বলা হয় অধিবৃত্ত (Hyperbola)।

ইউক্লিডীয় জ্যামিতি

[সম্পাদনা]

ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতে বহু প্রাচিন কাল থেকেই কনিক বা শঙ্কুচ্ছেদ নিয়ে বহু গবেষণা চলে এসেছে।

সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

কোনো দ্বিশংকুকে যদি একটি সমতল ছেদ করে তবে ওই তল এবং শংকুটি ছেদবিন্দুকে কনিক বা শংকুচ্ছেদ নামে ডাকা হয়। শংকুটিকে সুবিধের জন্য সাধারণত লম্ববৃত্তাকার শংকু বলে ধরে নেওয়া হয়, তবে আনান্য ধরনের শংকুর সাহায্যেও এর সংজ্ঞা দেওয়া যায়। যদি সমতলটি শংকুর শীর্ষদেশে ছেদ করে তবে তবে ছেদিতাংশ একটি বিন্দু, সরলরেখা বা এক জোড়া সরলরেখা হয়। সেক্ষেত্রে তাদের ডিজেনেরেট কনিক বলা হয়। কিছু লেখক এদের কনিকের আওতায় আনেন না। এই সম্পাদনায় ডিজেনেরেট নয়, এমন কনিককে আলোচোনা করা হবে।

মূলত তিন ধরণের কনিক বর্তমান, যথা- উপবৃত্ত, পরাবৃত্তঅধিবৃত্তবৃত্ত এক বিশেষ ধরণের উপবৃত্ত। যখন কনিকটি একটি বদ্ধ বক্র হয় হয় তবে তাকে উপবৃত্ত বলা হয়। যদি ছেদক সমতলটি লম্ব-বৃত্তাকার শংকুর অক্ষের সাথে লম্ব হয় তবে যে বিশেষ ধরণের উপবৃত্ত সৃষ্টত হয় তাকে বৃত্ত বলা হয়। যদি ছেদক সমতলটি জনক রেখার সাথে সমান্তরাল হয় তবে ছেদিতাংশ কে পরাবৃত্ত বলা হয়। এবং যদি এই দুই ঘটনার মধ্যে কোনোটিই না ঘটে তবে ছেদিতাংশকে অধিবৃত্ত বলা হবে। সেক্ষেত্রে সমতলটি দ্বিশংকু কে দু'বার ছেদ করবে, এবং দুটি মুক্ত বক্র তৈরী হবে, দুটিকেই একত্রে অধিবৃত্ত বলা হয়।

উৎকেন্দিকতা, নাভি, নিয়ামক

[সম্পাদনা]
বিভিন্ন কনিক যথা- উপবৃত্ত(লাল),পরাবৃত্ত (সবুজ), অধিবৃত্ত (নীল)। যদি কোনো কনিকের উৎকেন্দ্রিকতা অসীম হয় তবে তা সরলরেখায় পরিনত হয়

উপরিউক্ত সংজ্ঞা ছাড়া আরও এক ভাবে কনিকদের সংজ্ঞায়িত করা যায়। যদি একটি বিন্দু এবং একটি সরলরেখা হয়, তবে কোনো কনিক হল এমন এক বিন্দুর লোকাস যার থেকে এর দুরত্বের অনুপাত ধ্রুবক। এই ধ্রুবক কে কনিকের উৎকেন্দ্রিকতা বলা হয় এবং দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অন্যদিকে Pকে নাভিF কে নিয়ামক বলা হয়।

যদি হয় তবে তাকে উপবৃত্ত, হলে তাকে পরাবৃত্ত এবং হলে তাকে অধিবৃত্ত বলা হবে।

বৃত্ত বলতে এমন উপবৃত্ত কে বোঝায় যার উৎকেন্দ্রিকতা শূণ্য। এর নাভিটি কেন্দ্রের সাথে সমাপতিত হয় এবং নিয়ামক অসীমে অবস্থান করে। (এর নিয়ামকের উপস্থিতি শুধুমাত্র অভিক্ষেপ তলে প্রমান করা যায়)।[]

অর্থাৎ, কোনো উপবৃত্ত বৃত্তের ঠিক কত কাছাকাছি তা তার উৎকেন্দ্রিকতা দিয়ে পরিমাপ করা যায়।[]

যদি শংকুর বক্রতল ও অক্ষের মধ্যবর্তী কোন এবং সমতল ও অক্ষের মধ্যবর্তী কোন হয় তবে কনিকের উৎকেন্দ্রিকতা []

কনিকের এই উৎকেন্দ্রিকতাভিত্তিক সংজ্ঞা ড্যানড্যালিনের গোলক কর্তৃক দেওয়া হয়।.[]

উপবৃত্তকে আরও এক ভাবে প্রকাশ করা যায়। উপবৃত্ত হল অই সকল বিন্দুর লোকাস যা থেকে দুটি নির্দিষ্ট বিন্দুর দূরত্ব সর্বদা ধ্রুবক।(যথা- , যেখানে হল উপবৃত্তের অর্ধপরাক্ষ)। যদি বিন্দুর লোকাস এমন হয় যে দুটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে তাদের দূরত্বের বিয়োগফল সর্বদা ধ্রুবক (যথা ) তবে তাকে অধিবৃত্ত বলে।

পরিমাপ সমূহ

[সম্পাদনা]
উপবৃত্তের বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক আংশ

উৎকেন্দ্রিকতা, নাভি এবং নিয়ামক ছাড়াও কনিকের সাথে আরও বেশ কত গুলি পরিমাপমূলক সংজ্ঞা যুক্ত। যথা-

উপবৃত্ত ও অধিবৃত্তের নাভিদ্বয়কে যুক্তকারী রেখাকে কনিকের প্রধান অক্ষ বলা হয়। প্রধান অক্ষের মধ্যবিন্দুকে কেন্দ্র বলা হয়। পরাবৃত্তের কেন্দ্র থাকে না।

কেন্দ্র থেকে নাভিদ্বয়ের দূরত্বকে রৈখিক উকেন্দ্রিকতা (c) বলা হয়।

নাভিগামি এবং নিয়ামকের সমান্তরাল জ্যাকে নাভিলম্ব বলা হয়। অর্ধ নাভিলম্বকে দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

নাভি থেকে নিয়ামকের দূরত্বকে ফোকাল প্যারামিটার (p) বলা হয়।

নাভিদ্বয়কে যুক্তকারী জ্যাকে পরাক্ষ বলা হয়। এটি উপবৃত্তের বৃহত্তম জ্যা। অর্ধপরাক্ষকে a দ্বারা প্রকাশ করা হয়। উপবৃত্ত যদি কার্তেসীয় স্থানাঙ্ক ব্যাবস্থায় স্বাভাবিক ভাবে অবস্থান করে তবে ধরে নেওয়া হয় তার শীর্ষদ্বয়ের স্থানাঙ্ক হয়।

উপবৃত্তের ক্ষুদ্রতম জ্যা কে উপাক্ষ বলা হয়। অর্ধউপাক্ষকে b দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

এই সকল প্যারামিটারে সম্পর্ক নিম্নরূপ[]

ভিন্ন ভিন্ন কনিকের এই আনুষাঙ্গিক পরিমাপ গুলি নিম্নরূপ

শংকুচ্ছেদ সমীকরণ উৎকেন্দ্রিকতা রৈখিক উৎকেন্দ্রিকতা অর্ধনাভিলম্ব ফোকাল প্যারামিটার
বৃত্ত a
উপবৃত্ত
পরাবৃত্ত 1 N/A
অধিবৃত্ত

কার্তেসীয় স্থানাঙ্ক ব্যাবস্থা

[সম্পাদনা]
উপবৃত্তের স্ট্যান্ডার্ড ফর্ম
পরাবৃত্তের স্ট্যান্ডার্ড ফর্ম
অধিবৃত্তের স্ট্যান্ডার্ড ফর্ম

নাভি-নিয়ামক সংজ্ঞার মাধ্যমে কোনো কনিকের কার্তেসীয় সমীকরণ নির্ণয় করা যায়।[] সুবিধের জন্য কনিকগুলি তাদের স্ট্যান্ডার্ড ফর্মে অবস্থান করছে বলে ধরে নেওয়া হয় (কারণ যে কোনো কনিককে অক্ষের পরবর্তন দ্বারা এই ফর্মে আনা যায়)।[] ধরে নেওয়া হোক উপবৃত্ত বা অধিবৃত্তটি প্রধান অক্ষ হল x-অক্ষ এবং এর কেন্দ্র (0,0) বিন্দুতে অবস্থান করছে। শীর্ষবিন্দুদ্বয় a, 0) ও নাভিদ্বয় c,0) অবস্থান করছে। b এমন যে । যদি কনিক পরাবৃত্ত হয়, তবে তার নাভি x অক্ষের উপর (a,0) বিন্দুতে অবস্থান করবে এবং তার নিয়ামক হবে, । উপরিউক্ত ক্ষেত্রগুলিকেই কনিকের স্ট্যান্ডার্ড ফর্ম বলা হয়। স্ট্যান্ডার্ড ফর্মে কনিকগুলির সূত্র নিম্নরূপ

  • বৃত্ত:

  • উপবৃত্ত:

  • পরাবৃত্ত:

  • অধিবৃত্ত:

  • সমপরাবৃত্ত:[]

প্রথম চারটি সমীকরণ xy অক্ষের সাপেক্ষে প্রতিসম (বৃত্ত, উপবৃত্ত, অধিবৃত্ত) বা শুধুমাত্র x অক্ষের সাপেক্ষে প্রতিসম পরাবৃত্ত)। কিন্তু সমপরাবৃত্ত বা অক্ষের সাপেক্ষে প্রতিসম।

প্যারামেট্রিক সমীকরণ

[সম্পাদনা]

কনিকগুলির প্য়ারামেট্রিক সমীকরণ নিম্নরূপ

  • বৃত্ত:
  • উপবৃত্ত:
  • পরাবৃত্ত
  • অধিবৃত্ত
    বা
  • সমপরাবৃত্ত:
    যেখানে

সাধারণ কার্তেসীয় সমীকরণ

[সম্পাদনা]

কার্তেসীয় স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় দ্বিচল বিশিষ্ট যেকোনো দ্বিঘাত সমীকরণ সর্বদা কনিকের সমীকরণ হয়। তাই দ্বিচলবিশিষ্ট দ্বিঘাত সমীকরণ মাত্রেই কনিকের সমীকরণ (ডিজেনেরেট কনিককে ধরে)। অর্থাৎ কনিকের সাধারণ সমীকরণ হল[]

এখানে সহগগুলি বাস্তব সংখ্যা এবং A , B, C অশূণ্য।

ম্যাট্রিক্স উপস্থাপণা

[সম্পাদনা]

উপরুক্ত সমীকরণকে ম্যাট্রিক্সের ম্যাধমে উপস্থাপন করা যায়,[১০] একে আরও এক ভাবে প্রকাশ করা সম্ভব, যথা অভিক্ষেপ জ্যামিতিতে এই ফর্মটিকে ব্যপক রূপে ব্যবহার করা হয়।(নীচে দেখুন)

নির্ণায়ক

[সম্পাদনা]

অপরিবর্তিত বিষয়সমূহ

[সম্পাদনা]

সহগের সাপেক্ষে উৎকেন্দ্রিকতা

[সম্পাদনা]

ক্যাননিকাল ফর্ম

[সম্পাদনা]

পোলার স্থানাঙ্ক

[সম্পাদনা]

বৈশিষ্ট সমূহ

[সম্পাদনা]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

মেনেকমাস

[সম্পাদনা]

পেরগার অ্যাপলিনিয়াস

[সম্পাদনা]

ইসলামিক গণিতবিদসমূহ

[সম্পাদনা]

ইউরোপ

[সম্পাদনা]

প্রয়োগসমূহ

[সম্পাদনা]

বাস্তব অভিক্ষেপ তল

[সম্পাদনা]

অসীমে ছেদবিন্দু

[সম্পাদনা]

সমমাত্রিক স্থানাঙ্ক ব্যাবস্থা

[সম্পাদনা]

বৃত্তের অভিক্ষেপভিত্তিক সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

স্টাইনার কনিক

[সম্পাদনা]

রৈখিক কনিক

[সম্পাদনা]

ফন স্ট্রটের সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

সম্পাদ্য

[সম্পাদনা]

জটিল জ্যামিতি

[সম্পাদনা]

ডিজেনেরেট কনিক

[সম্পাদনা]

কনিকের পেন্সিল

[সম্পাদনা]

দুটি কনিকের ছেদবিন্দু

[সম্পাদনা]

সাধারণীকরণ

[সম্পাদনা]

গণিতের অনান্য শাখায়

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Brannan, Esplen এবং Gray 1999, পৃ. 13
  2. Cohen, D., Precalculus: With Unit Circle Trigonometry (Stamford: Thomson Brooks/Cole, 2006), p. 844.
  3. Thomas ও Finney 1979, পৃ. 434
  4. Brannan, Esplen এবং Gray 1999, পৃ. 19; Kendig 2005, পৃ. 86, 141
  5. Brannan, Esplen এবং Gray 1999, পৃ. 13–16
  6. Brannan, Esplen এবং Gray 1999, পৃ. 11–16
  7. Protter ও Morrey 1970, পৃ. 314–328, 585–589
  8. Wilson ও Tracey 1925, পৃ. 130
  9. Protter ও Morrey 1970, পৃ. 316
  10. Brannan, Esplen এবং Gray 1999, পৃ. 30