বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলতে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কারণে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর কৃত বিভিন্ন ধরণের সহিংসতাকে বোঝায়।[১][২] ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে ১ হাজার ৪৫টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা-নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাগুলোর মধ্যে ৪৫টি হত্যাকাণ্ড, ৭টি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা, ১০ জনকে হত্যার চেষ্টা, ৩৬ জনকে হত্যার হুমকি, ৪৭৯ জনকে হামলা বা নির্যাতন, ১১ জনের কাছে চাঁদা দাবি, ১০২টি হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনা, ৪৭টি জমি দখলের ঘটনা, ৪৫টি দখল বা উচ্ছেদের হুমকির ঘটনা, ১১টি দেশত্যাগের হুমকি, ১৫টি দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা, ৭টি শ্মশানভূমি দখলের চেষ্টা, ১৪টি মন্দিরে হামলা, ৪০টি প্রতিমা ভাঙচুর, ২৫টি ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা, ১২টি অপহরণ বা ধর্মান্তরকরণের ঘটনা, ৮ জন ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আটক, ৩২টি জাতীয় নির্বাচনে এবং ৫টি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।[৩] বাংলাদেশী সংবাদপত্র থেকে সংকলিত আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (ASK) তথ্য অনুসারে, ২০১৩-২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ১,৫৮০টি ঘটনা ঘটেছে যেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে ১৯৭টি ঘটনা ঘটে।[৪]
২০১৮ সাল থেকে ৬ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনার ৩০৭টি মামলায় চার্জশিট হয়েছে ১৭৯টির। বিচার সম্পন্ন হয়েছে ৭টির। এ ছাড়া ১৪টি মামলায় আসামিরা খালাস পান ।[৫] ১৯৭০ সালে সংখ্যালঘুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৯ শতাংশ, যা বর্তমানে কমে ৮.৬ শতাংশে এসেছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন পুলিশের প্রহরায় করা হয় । সহিংসতার অধিকাংশ ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ঘটছে। সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক দলের প্রভাব নিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করছে এবং সরকারি সংস্থাও জমি জবরদখলে জড়িত রয়েছে।[৩]
১৯৮৯
[সম্পাদনা]১৯৮৯ সালের সাম্প্রদায়িক সহিংসতাগুলি অক্টোবরে - নভেম্বর মাসে বাঙালি হিন্দুদের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ ছিল ভারতের অযোধ্যাতে বাবরি মসজিদ ভেঙে রাম মন্দির ভিত্তি পুনর্স্থাপনের প্রতিশোধ। সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় হাজার হাজার হিন্দু বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যায়।[৬] ৪০০ এরও বেশি হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা হয়েছিল ১৯৮৯ সালের ৩০ অক্টোবর কারফিউ সত্ত্বেও চট্টগ্রামে হিন্দু দোকানগুলিতে লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হিন্দু নারী-পুরুষকে আক্রমণ ও শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল।[৭] ১০ নভেম্বর, হিন্দু বিরোধী শ্লোগান দিয়ে মুসলিম জনতা খুলনায় একটি মিছিল বের করে। জনতার দ্বারা হিন্দু মন্দিরে আক্রমণ ও ধ্বংস হয়। ১১ ই নভেম্বর, নরসিংদীতে হিন্দুদের দোকান ও মন্দিরে হামলা চালায় এক মুসলিম জনতা । ২৫ টিরও বেশি হিন্দু মালিকানাধীন দোকানগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং তিনটি মন্দিরে ছবিগুলো ছিন্নভিন্ন করা হয়েছিল।[৮]
১৯৯০
[সম্পাদনা]ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে পরার পরে ১৯৯০ সালের অক্টোবরের শেষে ও নভেম্বরের প্রথম দিকে বাংলাদেশে বাঙালি হিন্দুদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণ ঘটে। হিন্দুদের উপর ৩০ অক্টোবর থেকে হামলা শুরু হয় এবং বিরতিহীন ভাবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তা চলতে থাকে। এছাড়া এই ঘটনার সূত্র ধরে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রায় সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে হিন্দুদের উপর বিরামহীন অত্যাচার, নির্যাতন, লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণের মত জঘন্য নিষ্ঠুরতা চালাতে থাকে মুসলিমরা। বিশেষ করে ১৯৯২ সালের পুরোটা সময় ধরে এই বীভৎসতার মাত্রা ছিল বর্ণনাতীত। [৯]
১৯৯২
[সম্পাদনা]১৯৯২ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় মন্দির ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হামলা করে মুসলিমরা। বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার গুজবকে কেন্দ্র করে ১৯৯০ সালেও এই মন্দিরে হামলা করেছিল মুসলিমরা। এছাড়া দুর্বিত্তরা ঢাকার ভোলানাথগিরি আশ্রমেও আক্রমণ, লুটপাট ও ভাংচুর চালায়।[১০] পুরনো ঢাকার হিন্দু মালিকানাধীন স্বর্ণের দোকানগুলোতে লুটপাট করে মুসলিমরা।রায়েরবাজারের হিন্দু বাড়িঘর লুট করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সার্ক চার জাতির ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। ৭ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ-এ এবং ভারতীয়-এ দলের মধ্যকার খেলা চলাকালে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম) প্রায় ৫,০০০ উন্মত্ত মুসলিম জনতা লোহার রড,বাঁশের লাঠি, ছুরি, রাম দা নিয়ে আক্রমণ করে।[১১]
৮ ডিসেম্বরে, কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার হিন্দুদের আক্রমণ করা হয়। ১৪ টি হিন্দু মন্দির লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসের শিকার হয়। ৫১ টি হিন্দু বাড়ি ধ্বংস করা হয় আলী আকবর ডালে ও ৩০ টি ধ্বংস করা হয় চৌফলদানিতে।[১২] চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও মীরেরসরাইয়ের প্রত্যেকটি হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেয়া হয়।পঞ্চাননধাম এবং তুলসীধাম সহ পাঁচটি হিন্দু মন্দির ভাংচুর ও ধ্বংস করে দেয়।চট্টগ্রামে বাচুলিয়া এবং ইলিয়াস কলোনির হিন্দু মহিলাদেরকে ধর্ষণ ও অপহরণ করা হয়।[১৩]
২০১২
[সম্পাদনা]২০১২ চিরিরবন্দর সহিংসতা
[সম্পাদনা]২০১২ সালের ৪ই আগস্ট রংপুর বিভাগে দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ইসলামী চরমপন্থীদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়।[১৪][১৫][১৬]
২০১২ ফতেহপুর সহিংসতা
[সম্পাদনা]২০১২ সালের ৩১ মার্চ দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এই সময় আশেপাশের গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক যুবক তাদের বাড়ির কাছে জড়ো হয় এবং পরিবারকে লাথি মেরে ভারতে পাঠানোর হুমকি দেয়। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার কিশোর ও যুবককে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়। বহিরাগতরা সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়ির আশেপাশে জড়ো হয় এবং তাদের বাড়িতে পাথর ও ইট নিক্ষেপ করতে থাকে। হিন্দু পুরুষ, মহিলা ও শিশুরা তাদের জীবনহানির ভয়ে পেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে ছুটতে শুরু করে। এরপর হামলাকারীরা তাদের বাড়িঘর ভেঙে দেয় এবং তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র, গয়না, পোশাক, জমির কাজ এবং অন্যান্য মূল্যবান দলিল লুট করে। তারা ললিতা সর্দারের কাছ থেকে গয়নার বাক্সও ছিনিয়ে নেয়। নিরাপদে লুটপাট করার পর দুর্বৃত্তরা পেট্রল দিয়ে ঘরগুলো পুড়িয়ে দেয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ টি হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি লুট করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুরোপুরি পুড়ে না যাওয়া পর্যন্ত দমকল বাহিনী এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত ডি.আই.জি. (খুলনা রেঞ্জ) এবং র্যাব কর্মকর্তারা রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।[১৭]
২০১২ রামু সহিংসতা
[সম্পাদনা]২০১২ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলায়[১৮] স্থানীয় জনতা কর্তৃক মধ্যরাতে বৌদ্ধ বিহার, মন্দির ও ঘরবাড়িতে ধারাবাহিক হামলা।[১৯] বৌদ্ধ পুরুষ নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের টাইমলাইনে কোরআন অবমাননাকারী একটি ছবি ট্যাগ করার প্রতিক্রিয়ায় জনতা ১২ টি বৌদ্ধ মন্দির ও মঠ এবং ৫০ টি বাড়ি ধ্বংস করে।[২০][২১][২২] ছবিটির প্রকৃত পোস্টিং কোন বৌদ্ধধর্মাবলম্বী দ্বারা করা হয়নি, যাদের মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছিল।[২৩] এই অভিযোগ থেকে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা নির্দোষ ছিলেন।[২৪] এই সহিংসতা পরে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা ও চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে,[২৫] যেখানে বৌদ্ধ বিহার ও হিন্দু মন্দিরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। আনুমানিক ২৫,০০০ জনের বেশি জনতা বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের উপর পরিচালিত সহিংসতায় অংশ নিয়েছিল।[২৬]
২০১৩
[সম্পাদনা]২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীর সহ-সভাপতি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে একাত্তরের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য মৃত্যুদন্ডের সাজা প্রদান করে। এই সাজার পরে জামায়াতে ইসলামী এবং এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের উপর হামলা চালায়। হিন্দু সম্পত্তি লুট করা হয়, হিন্দুদের বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং হিন্দু মন্দিরগুলিতে ভাঙচুর করা হয় ও অগ্নি সংযোগ করা হয়।[২৭][২৮]
২০১৪
[সম্পাদনা]২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে দশম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর পেক্ষিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লুটপাট, ভাঙচুর এবং সারা দেশে বেশ কয়েকটি জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।[২৯] [৩০] [৩১] জামাতি ইসলাম এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা অন্ততপক্ষে ১৫০ টি হিন্দু বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে।[৩২]
২০১৬
[সম্পাদনা]২০১৭
[সম্পাদনা]২০২১
[সম্পাদনা]২০২২
[সম্পাদনা]২০২৩
[সম্পাদনা]১০ জানুয়ারী বরিশাল নগরে নৌ বন্দর এলাকায় 'স্থানীয় তৌহিদি জনতার’ ব্যানারে বিক্ষুব্ধ লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। এর একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ লোকজন ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডারে ভাঙচুর ও কর্মচারীদের মারধর করেন।[৩৩]
৪ ফেব্রুয়ারি, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এক রাতে ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। নতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিণ্ডি এলাকার আটটি, পাড়িয়া ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকার তিনটি ও চাড়োল ইউনিয়নের সাহবাজপুর নাথপাড়া এলাকার একটি মন্দিরের ওই ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে।[৩৪][৩৫][৩৬][৩৭][৩৮][৩৯][৪০]
২০২৪
[সম্পাদনা]২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তীতে অসহযোগ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগে মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হয়।[৪১] সরকারের পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর কিছু জায়গায় ছাত্র-জনতা সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়ে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেও ৫ আগস্ট থেকে দেশের ৫২টি জেলায় কয়েক হাজার সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দির ভাংচুর, হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।[৪২][৪৩] ডেইলি স্টারের তথ্যমতে, সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রথম ঘণ্টায় অন্তত ২৭টি জেলায় হিন্দুদের বাড়ি, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে।[৪৪] এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় আদিবাসীদের ওপরও হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনায় আদিবাসী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেয়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সকল জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দাবি জানায়।[৪৫] বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, পদত্যাগে দুই দিনে দেশে ২৯টি জেলায়[৪৬] এবং চার দিনে ৫২টি জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর অন্তত ২০৫টি নিপীড়নের ঘটনা ঘটে।[৪৭] আতঙ্কে জলপাইগুড়ির মানিকগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ১২ শতাধিক[৪৮] এবং ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল সীমান্ত দিয়ে ৩ শতাধিক নারী–শিশুসহ সাধারণ বাংলাদেশী ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে।[৪৯] ৯ আগস্ট লালমনিরহাটের জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী সীমান্ত দিয়ে বসত ভিটেসহ সব ফেলে রেখে কয়েক হাজার সনাতন ধর্মালম্বী দেশ ত্যাগের চেষ্টা করে।[৫০]
আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কেন"। www.ajkalerkhobor.net। ২০২৩-০১-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১১।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শেষ কোথায়?"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৪-০৭-০৮)। "এক বছরে ১০৪৫টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা-নিপীড়নের ঘটনায় ৪৫ জন খুন: ঐক্য পরিষদ"। Prothomalo। ২০২৪-০৭-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১০।
- ↑ "Hurting religious sentiment: Are minorities denied justice?"। Dhaka Tribune। ২০২০-১১-০৭। ২০২৩-০১-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৮।
- ↑ "সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলায় ছয় বছরে ৩০৭ মামলা, বিচার হয়েছে ৭টির"। ইন্ডিপেন্ডেন্ট নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ Ghosh Dastidar, Sachi (২০০৮)। Empire's Last Casualty: Indian Subcontinent's vanishing Hindu and other Minorities। Firma KLM। পৃষ্ঠা 201। আইএসবিএন 81-7102-151-4।
- ↑ Kamra, A.J. (২০০০)। The Prolonged Partition and its Pogroms: Testimonies on Violence Against Hindus in East Bengal 1946-64। Voice of India। পৃষ্ঠা 215। আইএসবিএন 81-85990-63-8।
- ↑ "Pakistan Protests Indian Temple, Moslems Riot in Bangladesh"। Associated Press। ১১ নভেম্বর ১৯৮৯। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ Azad, Salam (২০০১)। হিন্দু সম্প্রদায় কেন বাংলাদেশ ত্যাগ করছে? [Why Are The Hindus Migrating From Bangladesh] (Bengali ভাষায়) (1st সংস্করণ)। Kolkata: Punascha। পৃষ্ঠা 60–64।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। vietnamhumanrights.net। ২০২৩-০৩-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১১।
- ↑ "Bangladesh v India 'A' at Dhaka, 7 Dec 1992" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে. cricinfo.com. Wisden CricInfo. Retrieved October 5, 2012.
- ↑ Sarkar, Bidyut (1993). Bangladesh 1992 : This is our home : Sample Document of the Plight of our Hindu, Buddhist, Christian and Tribal Minorities in our Islamized Homeland : Pogroms 1987-1992. Bangladesh Minority Hindu, Buddhist, Christian, (and Tribal) Unity Council of North America. p. 67.
- ↑ Amor, Abdelfattah (January 20, 1994). "Application de la Declaration sur l'Elimination de toutes le formes d'Intolerance et de Discrimination Fondees sur la Religion ou la Conviction" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ মার্চ ২০২৩ তারিখে. Vietnam Human Rights Network. Retrieved October 5, 2012.
- ↑ "Archived copy" জামায়াত নেতার উস্কানিতে দিনাজপুরে হিন্দুদের ওপর হামলা, বাড়িতে আগুন। Janakantha। ৫ আগস্ট ২০১২। ২১ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Anatomy of instigated violence"। New Age। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১২। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Violence Unleashed Over the Hindu Community of Dinajpur, Bangladesh"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ Rahman, Mizanur (এপ্রিল ৩, ২০১২)। সাতক্ষীরায় ৭ সংখ্যালঘু পরিবারের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে [Satkhira 7 minority family homes have been burnt]। The Daily Janakantha। ডিসেম্বর ১০, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Violencia religiosa en Bangladesh por imagen ofensiva publicada en Facebook"। BBC Mundo। ১১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Desa-desa Buddha di Bangladesh diserang"। BBC Indonesia। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "ভুয়া খবর ঘিরে বাংলাদেশে পাঁচটি বড় ঘটনা"। www.bbc.com। বিবিসি বাংলা। ১৪ নভেম্বর ২০১৮। ১৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Extremists 'linked'"। The Daily Star। ১ অক্টোবর ২০১২। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Khaleda for neutral probe, tough action"। The Daily Star। ১ অক্টোবর ২০১২। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Bangladesh rampage over Facebook Koran image"। BBC News। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২। ১১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Bangladesh Buddhists pick up pieces after mob rampage"। BBC News। Ramu, Cox's Bazar District। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। ১১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "5 Buddhist temples attacked in Ukhia"। bdnews24.com। ২ সেপ্টেম্বর ২০১২। ১৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Rioting mob torches temples in Bangladesh"। ABC News। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২। ১০ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Hindus Under Attack in Bangladesh"। News Bharati। ৩ মার্চ ২০১৩। ১৭ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৩।
- ↑ "Bagerhat Hindu Temple Set on Fire"। bdnews24.com। ২ মার্চ ২০১৩। ৭ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০১৩।
- ↑ Parveen, Shahnaz (৭ জানুয়ারি ২০১৪)। বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার পর আতঙ্ক। BBC Bangla (Bengali ভাষায়)। Dhaka। ৮ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Seven arrested for attacks on Hindus in Bangladesh"। NDTV। New Delhi। ৭ জানুয়ারি ২০১৪। ৮ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ Habib, Haroon (৯ জানুয়ারি ২০১৪)। "Will act against those attacking minorities: Sheikh Hasina"। The Hindu। ১০ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Attacks on minorities continue"। The Daily Ittefaq। Dhaka। ৯ জানুয়ারি ২০১৪। ১০ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "বরিশালে নাশতার বিল ১০ টাকা বেশি নিয়ে মারামারি, সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ সদস্য আহত"। Prothomalo। ২০২৩-০১-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১১।
- ↑ প্রতিনিধি। "বালিয়াডাঙ্গীতে এক রাতে ১২ মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর"। Prothomalo। ২০২৩-০২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৬।
- ↑ নিউজ, সময়। "ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি | বাংলাদেশ"। Somoy News। ২০২৩-০২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৬।
- ↑ Dhakatimes24.com। "ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর"। Dhakatimes News। ২০২৩-০২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৬।
- ↑ "ঠাকুরগাঁওয়ে একরাতে ১৪ মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর"। Bangla Tribune। ২০২৩-০২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৬।
- ↑ "ঠাকুরগাঁওয়ে কালীমন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর"। www.jugantor.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৬।
- ↑ "ঠাকুরগাঁওয়ে কালি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর"। চ্যানেল আই অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৬।
- ↑ "এক রাতে ১২ প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৬।
- ↑ দিগন্ত, Daily Nayadiganta-নয়া। "হাসিনার পদত্যাগের পর মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত"। Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper। ২০২৪-০৮-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৬।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৪-০৮-০৯)। "সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অবসান চেয়ে ড. ইউনূসকে খোলাচিঠি"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১০।
- ↑ "সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চেয়ে ড. ইউনূসকে খোলা চিঠি"। Bangladesh Journal Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১০।
- ↑ Report, Star (২০২৪-০৮-০৭)। "Attacks on Hindu houses, temples, businesses go on"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৮-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৬।
- ↑ bdnews24.com। "আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জনগণের নিরাপত্তা দাবি"। আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জনগণের নিরাপত্তা দাবি (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৮-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৭।
- ↑ "'Homes attacked, temples vandalised': Hindus targetted in Bangladesh after Sheikh Hasina ouster"। The Times of India। ২০২৪-০৮-০৬। আইএসএসএন 0971-8257। ২০২৪-০৮-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৬।
- ↑ Report, Star Digital (২০২৪-০৮-০৯)। "205 incidents of persecution of minorities since Aug 5: Oikya Parishad"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১০।
- ↑ Ananda, A. B. P. (২০২৪-০৮-০৭)। "জলপাইগুড়ি সীমান্তে আটক ১২০০ বাংলাদেশি! অনুপ্রবেশ রুখল BSF"। bengali.abplive.com। ২০২৪-০৮-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৮।
- ↑ "ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ শতাধিক মানুষের ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, বিএসএফের ফাঁকা গুলি"। আজকের পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "দেশত্যাগ করতে ভারত সীমান্তে জড়ো হয়েছেন সনাতন ধর্মালম্বীরা"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪।