বিষয়বস্তুতে চলুন

জামাত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জামাত বা জামাআত (আরবি: جماعه) একটি আরবি শব্দ, এর অর্থ সম্মেলন, দল, গোত্র, গোষ্ঠী, সমাবেশ ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায় মুসলিমদের সম্মিলিত অবস্থাকে জামাত বলে।[][][]

হাদিস

[সম্পাদনা]

নবী সাঃ বলেন, “সাবধান! তোমাদের পূর্ববর্তী আহলে কিতাব ইয়াহুদী ৭১ ও খ্রিষ্টানরা ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছে, আর এই মিল্লাত (উম্মত) ৭৩ দলে বিভক্ত হবে; ৭২ টি দল জাহান্নামে যাবে এবং একটি যাবে জান্নাতে আর সেটি হল জামাআত।”[টীকা ১]

— আহমাদ হা/১৬৯৭৯; ইবনু মাজাহ হা/৩৯৯২; মিশকাত হা/১৭২।

আহমাদ ইবন মানী (রহঃ) ....... ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদেরকে জাবিয়া নামক স্থানে ভাষণ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হে লোকেরা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন আমাদের মাঝে দাঁড়াতেন তেমনি আমি আজ তোমাদের মাঝে দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেছেন, আমি তোমাদেরকে আমার সাহাবীগণ সম্পর্কে ওয়াসীয়ত করে যাচ্ছি। এরপর যারা তাদের পরে আসবে, এরপর হল তারা যারা তাদেরও পরে আসবে। এরপর মিথ্যার বিস্তৃতি ঘটবে। এমনকি একজন কসম করে বসবে অথচ তাকে কসম করতে বলা হয়নি। কোন সাক্ষী দিয়ে বসবে অথচ তাকে সাক্ষ্য দিতে বলা হয়নি। শুনে রাখ, কোন পুরুষ যেন কোন মহিলার সঙ্গে নিভৃতে একত্রিত না হয় অন্যথায় শয়তান অবশ্যই তৃতীয় জন হিসাবে হাযির থাকে। তোমরা অবশ্যই মুসলিম জামাআতকে আকড়ে ধরে থাকবে। বিচ্ছিন্নতা থেকে বেঁচে থাকবে। শয়তান একাকী জনের সাথে থাকে। আর দুই জন থেকে সে আরো দূরে থাকে। যে ব্যক্তি জান্নাতের সর্বোত্তম স্থান কামনা করে সে যেন জামাআতকে আকড়ে ধরে থাকে। নেক আমল যাকে আনন্দিত করে এবং মন্দ আমল যাকে দুঃখিত করে সেই হল মু’মিন। সহীহ, ইবনু মাজাহ ২৩৬৩, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২১৬৫ /২১৬৮

ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি তার আমীর (ক্ষমতাসীন) থেকে এমন কিছু দেখে, যা সে অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধরে। কারণ, যে কেউ জামা’আত থেকে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে মারা যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলীয়্যাতের মৃত্যু।

— বুখারী, ৭০৫৩

ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আমার গোটা উম্মাতকে; অপর বর্ণনাতে তিনি বলেছেন, উম্মাতে মুহাম্মাদীকে কখনও পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত (ইজমা) করবেন না। আল্লাহ তা’আলার হাত (রহমত ও সাহায্য) জামা’আতের উপর রয়েছে।

— তিরমিযীঃ ২১৬৬/৬৭, ২১৬৯মিশকাত ১৭৩, সনদঃ সহীহ

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় আলেমগণ বলেন, এখানে জামাআত বলতে কুরআন ও সুন্নাহর অনুসারীদের বুঝানো হয়েছে, এবং সে কারণে কোরআন আর সুন্নাহ ব্যতীত আর কোন কিছুতেই সমগ্র মুসলিম উম্মাহ একমত হবে না।[]

জামাতের নামাজ

[সম্পাদনা]

জামাতের নামাজ মুসলিম পুরুষদের একটি জামাতবদ্ধ নামাজ যা তারা ফরজ নামাজ, ঈদের নামাজ, তারাবীহর নামাজ, জানাজার নামাজ সহ বিভিন্ন নামাজের সময় পালন করে থাকে।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

পাদটীকা

[সম্পাদনা]
  1. এ হাদীসের জামাআত শব্দের ব্যাখ্যায় আলেমগণ আরেকটি হাদীস উল্লেখ করেন, তা হলো, "আমার উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ছাড়া সবাই জাহান্নামে যাবে। জিজ্ঞেস করা হ’ল, তারা কারা হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তিনি বললেন, ‘যারা আমার ও আমার ছাহাবীদের আদর্শের (সুন্নাতের) উপর প্রতিষ্ঠিত’। - তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১ ‘কুরআন ও সুন্নাহ দৃঢ়ভাবে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১০৪৮।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]