কালাইগাঁও

স্থানাঙ্ক: ২৬°৩৪′২৯″ উত্তর ৯১°৫৮′৩২″ পূর্ব / ২৬.৫৭৪৫৯° উত্তর ৯১.৯৭৫৬৭° পূর্ব / 26.57459; 91.97567
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কালাইগাঁও
কলাইগাঁও
বিধানসভা কেন্দ্র
কালাইগাঁওতে ধানের ক্ষেত ও গাছের দৃশ্য
কালাইগাঁওতে ধানের ক্ষেত ও গাছের দৃশ্য
কালাইগাঁও আসাম-এ অবস্থিত
কালাইগাঁও
কালাইগাঁও
কালাইগাঁও ভারত-এ অবস্থিত
কালাইগাঁও
কালাইগাঁও
ভারতের আসামে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৬°৩৪′২৯″ উত্তর ৯১°৫৮′৩২″ পূর্ব / ২৬.৫৭৪৫৯° উত্তর ৯১.৯৭৫৬৭° পূর্ব / 26.57459; 91.97567
দেশ ভারত
রাজ্যআসাম
জেলাউদালগুড়ি
সরকার
 • বিধানসভার সদস্যশ্রী মহেশ্বর বোড়ো (বোড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট)
আয়তন
 • মোট২৩২ বর্গকিমি (৯০ বর্গমাইল)
উচ্চতা৩৭ মিটার (১২১ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট১,১০,৮৬২
 • জনঘনত্ব৪৭৭/বর্গকিমি (১,২৪০/বর্গমাইল)
ভাষাসমূহ
 • সরকারিঅসমীয়া
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
পিন৭৮৪৫২৫
টেলিফোন কোড৯১-(০)৩৭১৩-XX XX XXX
আইএসও ৩১৬৬ কোডইন-এএস
যানবাহন নিবন্ধনএএস -১৩ এবং এএস -২৭ (মঙ্গলদাই ও উদালগুড়ি)

কালাইগাঁও হল উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি শহর এবং বিধানসভা কেন্দ্র। এটি আসাম রাজ্যের উদালগুড়ি জেলায় অবস্থিত। এখানকার গড় উচ্চতা ৩৭ মিটার, জলবায়ু আর্দ্র এবং অনুকূল, আপেক্ষিক আর্দ্রতা প্রায় ৮২% এর কাছাকাছি। বার্ষিক বৃষ্টিপাত প্রায় ২,০০০ মিমি।

ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]

এই প্রাচীন জায়গার নামটির উৎস পাওয়া যাবে, এক প্রাচীন ব্রাহ্মণ পুরোহিত সম্পর্কে স্থানীয় কিংবদন্তিতে, তার নাম ছিল কেন্দুকালাই এবং সে কামাখ্যা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত নিযুক্ত হয়েছিল। কিংবদন্তি অনুসারে, তার সংগীত প্রতিভা এবং দেবীর প্রতি তার নিষ্ঠার কারণে সে সম্ভবত কামাখ্যা দেবীকে মন্দিরে নশ্বর দেহে হাজির করতে এবং নৃত্য করাতে সক্ষম হয়েছিল।[২][৩] পূর্বের কচ রাজা নর নারায়ণ এই বিষয়টি জানতে পেরে দেবীকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। পুরোহিত রাজাকে মন্দিরের কাছেই লুকিয়ে একটি গর্ত দিয়ে নজর রাখতে বলল এবং তার উপাসনা শুরু করল। দেবী আবির্ভূতা হয়ে মন্দিরে নৃত্য শুরু করলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেবী গর্ত দিয়ে রাজার চোখ দেখতে পেয়ে গেলেন, এবং পুরোহিতের বিশ্বাসঘাতকতার বিষয়টি জানতে পেরে গেলেন। কিংবদন্তির কিছু সংস্করণে বলা হয় যে দেবী রাজার রাজবংশকে এবং পুরোহিতকে অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন যে তারা আর কখনও মন্দিরে গেলে ধ্বংস হয়ে যাবে। অন্য বর্ণনায় বলা হয় যে, রাগান্বিত দেবী রাজাকে পাথরের মূর্তিতে পরিণত করেছিলেন এবং পুরোহিতের শিরশ্ছেদ করেছিলেন।[৪]

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারির নথি অনুসারে, কালাইগাঁও মহকুমার মোট জনসংখ্যা ১১০৮৬২ জন, এর মধ্যে ৫৬২৮৫ জন (৫০.৭৭%) পুরুষ এবং ৫৪৫৭৭ জন (৪৯.২২%) মহিলা। কালাইগাঁওয়ের কয়েকটি গ্রাম দারাং জেলায় পড়ে, এবং সেখানকার জনসংখ্যা ২৪২৪৬ (১২৭২৩ জন পুরুষ এবং ১২৫২৩ জন মহিলা)।[১] বাকি বেশিরভাগ গ্রামগুলি পড়ে উদালগুড়ি জেলায়, এবং সেখানকার জনসংখ্যা ৮৫,৬১৬ (৪৩,৫৬২ জন পুরুষ ও ৪২,০৫৪ জন মহিলা)।[৫]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

এই জায়গার অর্থনীতি কৃষির উপর নির্ভরশীল। ধানের চাষাবাদ হল এখানকার প্রাথমিক কৃষিকাজ, এর পরেই আছে শাকসবজির চাষ।

কালাইগাঁওয়ের রবিবারের বাজারের আচ্ছাদিত আশ্রয়কেন্দ্র

অবশ্য, গত কয়েক বছর ধরে, ভোগবাদের ফলে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ে যথেষ্ট বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। ধান চাষে ভারী ফলনের কারণে, অনেক ছোট ছোট দেশি ধান কল শহরের আশেপাশে তৈরি হয়েছে। এরা আসামের অন্যান্য অঞ্চলে চাল সরবরাহ করে; গুয়াহাটি হচ্ছে চালের বৃহত্তম ভোক্তা। কালাইগাঁওয়ের ধান আসামে এখন নিজের আলাদা পরিচয় স্থাপন করেছে। এখানে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সমবায় সমিতি তৈরি হয়েছে।[৬]

এই জায়গাটিতে দুটি সাপ্তাহিক বাজারের দিন রয়েছে, একটি রবিবার এবং অন্যটি বৃহস্পতিবার। একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে প্রাণী সম্পদ কেনাবেচা প্রায় একচেটিয়াভাবে বৃহস্পতিবারে ঘটে, যা বিশ্বের এই প্রান্তে খুব বিরল। এই বাজারটি স্থানীয়ভাবে গোরু বোজার বা গরুর বাজার নামে পরিচিত। এই বাজারগুলি প্রতি বৃহস্পতিবার এবং রবিবারে জেলার আশেপাশে প্রচুরসংখ্যক মানুষকে আকর্ষণ করে, প্রায়শই এই দু’দিন শহরে পরিবহন খুব কষ্টকর হয়ে যায়।[৭][৮]

এই শহরের আশেপাশে কয়েকটি চা বাগান রয়েছে। ১৯৫০ সালের আগে, তাদের বেশিরভাগের মালিকানা ছিল ব্রিটিশ চা সংস্থাগুলির হাতে।

সন্ত্রাসবাদ এবং বিদ্রোহ[সম্পাদনা]

আসামের অন্যান্য অংশের মতো কালাইগাঁওয়েও সন্ত্রাসবাদের ঘটনা ঘটেছে।[৯] এই অঞ্চলের সুরক্ষা সংস্থাগুলি এবং সন্ত্রাসীরা প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে নেমেছে এমন উদাহরণ রয়েছে। যাইহোক, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, এই ধরনের ঘটনার সংখ্যা অনেক কমে গেছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Kalaigaon of Darrang District"censusindia.gov.in। ২০১৫-০৯-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. Kali Prasad Goswami (২০০০)। Devadāsī: Dancing Damsel। APH Publishing। পৃষ্ঠা 76–। আইএসবিএন 978-81-7648-130-4 
  3. "State Formation, Legitimization and Cultural Change A Study of Koch Kingdom" (পিডিএফ)The NEHU Journal12 (1): 26। জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৫ 
  4. "Kamakhya - The Shrine of the Mother Goddess"KamakhyaTourism.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৫ 
  5. "Kalaigaon of Udalguri District"censusindia.gov.in। ২০১৫-০৯-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. "The Sentinel"sentinelassam.com। ২০ জানুয়ারি ২০১১। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-১৭ 
  7. "Resource Map of Assam"AssamResources.com। Director of Industries & Commerce। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৫ 
  8. Animal Husbandry and Veterinary Department, Assam। "Udalguri"ahvassam.in। Animal Husbandry and Veterinary Department, Assam। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. Ved Prakash (২০০৮)। Terrorism in India's North-east: A Gathering Storm। Gyan Publishing House। পৃষ্ঠা 464–। আইএসবিএন 978-81-7835-661-7 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]