১নং প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়ন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১নং প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়ন
সক্রিয়১৯৭৬ – বর্তমান
দেশবাংলাদেশ
আনুগত্যবাংলাদেশ
ধরনবিশেষ অপারেশন বাহিনী
ভূমিকাবিশেষ অপারেশন
আকারশ্রেণীবদ্ধ
অংশীদারসেনাবাহিনী সদরদপ্তর
গ্যারিসন/সদরদপ্তরসিলেট
ডাকনামচিতা
নীতিবাক্যকর অথবা মর
সরঞ্জামাদিকোল্ট M4A1, Type 56, Type 81, Dragunov SVD, Accuracy International Arctic Warfare, M1911, MP5A3
যুদ্ধসমূহঅপারেশন বেকপা (কঙ্গো) অপারেশন ময়ূরপঙ্খি (চট্টগ্রাম বিমানবন্দর)
কমান্ডার
বর্তমান
কমান্ডার
লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এমএম ইমরুল হাসান
উল্লেখযোগ্য
কমান্ডার
বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো:জহুরুল আলম

১নং প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়ন (আরো পরিচিত চিতা নামে) হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্বোৎকৃষ্ট একটি কমান্ডো দল। স্পেশাল এয়ার সার্ভিস থেকে উৎসাহিত হয়ে ১৯৭৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর সদর দপ্তর সিলেটে। এটির কমান্ডিং অফিসার ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো:জহুরুল আলম(ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে ২০১০ এ অবসরপ্রাপ্ত হন)।[২] এই দলের কিছু স্বনামধন্য অফিসার হলেন: মৃত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান, মৃত ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ,মৃত কর্ণেল এ.টি.এম হায়দার, মৃত কর্ণেল আবু তাহের, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল শহীদ আব্দুস সালাম, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো:মোস্তাফিজুর রহমান, কর্ণেল সাইফুল ইসলাম, মৃত মেজর এম.আনোয়ার হোসেন সহ প্রমুখ।

এই কমান্ডো ব্যাটালিয়নটির সদর দপ্তর সিলেটে হলেও তারা সেনাবাহিনী সদরদপ্তরের অধীন।[৩] আরো বিশেষভাবে,তাদের সৈন্য-সমাবেশ চীফ অফ আর্মি জেনারেল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কমান্ডো ব্যাটালিয়নটি ক্রমাগত প্রস্তুত থাকে যাতে তারা দেরী না করে দ্রুত সংগঠিত হতে পারে।


দায়িত্ব[সম্পাদনা]

আমেরিকান স্পেশাল ফোর্সের সঙ্গে যৌথ মহড়া দিচ্ছে বাংলাদেশের কমান্ডোরা

কমান্ডোরা প্রশিক্ষিত থাকে দেশে এবং বাহিরে যেকোনো ধরনের মিশনে অংশগ্রহণ করতে। তাদের কাজ হল (কিন্তু এগুলোতেই কেবল সীমাবদ্ধ নয়):

হলি আর্টিসান বেকারী জিম্মি সংকট[সম্পাদনা]

১ জুলাই ২০১৬, স্থানীয় সময় রাত ০৯:২০ মিনিটে,[৪][৫] নয়জন হামলাকারী ঢাকার গুলশান এলাকায় অবস্থিত হলি আর্টিসান বেকারিতে গুলিবর্ষণ করে।[৬][৭] হামলাকারীরা বোমা নিক্ষেপ ও কয়েক ডজন মানুষকে জিম্মি করে এবং পুলিশের সঙ্গে তাদের বোমাবর্ষণের ফলে অন্তত চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়।[৬] সরকার প্রধানের নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১নং প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়ন 'অপারেশন থান্ডারবোল্ট' পরিচালনা করে। ৬ জুলাই শুক্রবার রাত থেকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে অবস্থানরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেনাবাহিনীর ১নং প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাবসহ যৌথভাবে অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনা করা হয়। সেনাবাহিনীর ১নং প্যারা-কমান্ডোর নেতৃত্বে ঘটনা শুরুর পরদিন, শনিবার, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে অপারেশন শুরু করে ১২-১৩ মিনিটে ঘটনাস্থলের নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়। পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ৪টি পিস্তল, একটি ফোল্ডেডবাট একে-২২, ৪টি অবিস্ফোরিত আইআইডি, একটি ওয়াকিটকি সেট ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

হতাহত[সম্পাদনা]

বিশ জন বিদেশী নাগরিক, ছয় জন বন্দুকধারী এবং দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার রাতেই নিহত হন। বিদেশীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। যেখানে আরও পঞ্চাশ জন, যাদের বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য,[৮] আহত হন।[৯] নিহতদের মধ্যে দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন, যাদের একজন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার, এবং অন্যজন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।[১০][১১][১২] নিহতদের মধ্যে জাপানি ও ইতালীয় নাগরিক ছিল।[৬] ১৯ বছর বয়সী এক ভারতীয় নাগরিকও নিহত হয়।[১৩] বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে ঘোষণা করে যে নিহতদের সকলে বিদেশী ছিল, এবং তারা অপরাধীরা যাদের "ধারালো অস্ত্র দ্বারা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল"।[৯] এদের মধ্যে যারা কুরআন থেকে একটি আয়াত বলতে পেরেছিল শুধুমাত্র সেসকল অ-মুসলিমরা রক্ষা পেয়েছিল।[১৪][১৫]

নিহতদের মধ্যে সাত জন জাপানি নাগরিক ছিল – পাঁচ জন পুরুষ এবং দুই জন নারী – যাদের জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির সাথে যুক্ত করা হয়েছে।[১৬] পরবর্তীতে অপারেশন থান্ডারবোল্টের সময় ছয় সন্ত্রাসী নিহত হয় এবং সন্দেহভাজন একজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। এছাড়া এই অভিযানে জিম্মিদশা থেকে তিন বিদেশিসহ ১৩ জনকে মুক্ত করা হয়।[১৭]

নিহত জিম্মিদের জাতীয়তা
দেশ সংখ্যা
 ইতালি [১৮]
 জাপান [১৮]
 বাংলাদেশ [১৮]
 ভারত [১৮]
 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র [১৮][১৯]
সর্বমোট ২৪[২০][২১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bangladesh PM Hasina says 13 hostages rescued alive from Gulshan café"bdnews24.com। জুলাই ২, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৬ 
  2. "Brig Gen Zahur given Responsibility of CEO (Current Charge), DSE" (পিডিএফ)Dhaka Stock Exchange। মে ১৬, ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. "Bangladesh Army"Bangladesh Army। জুলাই ২৭, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "Gunmen take hostages in Bangladeshi capital Dhaka"বিবিসি নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৭-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-০১ 
  5. "গুলশানে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "Gunmen take at least 20 hostages in Dhaka diplomatic quarter, Bangladesh - reports"rt.com (ইংরেজি ভাষায়)। রাশিয়া টুডে। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৬ 
  7. "Hostages taken in attack on restaurant in Bangladesh capital; witness says gunmen chanted 'Allahu Akbar'"foxnews.com (ইংরেজি ভাষায়)। Fox News। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৬ 
  8. "সন্ত্রাসী হামলায় ওসি সালাহ উদ্দীন নিহত"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  9. "Dhaka attack: 20 hostages killed Friday night, says ISPR"The Daily Star। ২ জুলাই ২০১৬। 
  10. "Police officer killed as gunmen attack Bangladesh restaurant"BDNews24। ২ জুলাই ২০১৬। 
  11. "2 Officers Dead, Dozens Wounded in Ongoing Bangladeshi Hostage Situation: Reports"People Magazine। ১ জুলাই ২০১৬। 
  12. "রেস্তোরাঁ থেকে ২০ মৃতদেহ উদ্ধার: আইএসপিআর"প্রথম আলো। ২ জুলাই ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  13. "Dhaka attack: 19-year-old Indian girl among 20 hostages killed, PM Modi phones Sheikh Hasina"Zee News। ২ জুলাই ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  14. "'Those who could cite Quran were spared'"। The Daily Star। ২ জুলাই ২০১৬। 
  15. "20 hostages killed in 'Isil' attack on Dhaka restaurant popular with foreigners"। The Daily Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  16. "「日本人7人死亡確認」 バングラデシュ人質事件" ['Seven Japanese Deaths Confirmed' Bangladesh Hostage Incident] (Japanese ভাষায়)। NHK। ২ জুলাই ২০১৬। ২ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  17. "রেস্তোরাঁ থেকে ২০ মৃতদেহ উদ্ধার: আইএসপিআর"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  18. "It seems the army has settled for a long haul in Sylhet to neutralise the militants"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২৬ 
  19. Ishaan Tharoor (জুলাই ২, ২০১৬)। "American is among 20 dead in terrorist attack in Bangladesh"। The Washington Post। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২, ২০১৬ 
  20. "নিহতদের মধ্যে ১৭ বিদেশি, ৩ বাংলাদেশি"প্রথম আলো। ২ জুলাই ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  21. Ishaan Tharoor (জুলাই ২, ২০১৬)। "Three American students among 20 people hacked to death in Bangladesh by ISIS terrorists - who only spared those who could recite the Koran - before armored troops moved in"। The Washington Post। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২, ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]