শিশির কুমার ঘোষ
শিশির কুমার ঘোষ (১৮৪০ - ১০ জানুয়ারী, ১৯১১) বাংলার নবজাগরণের ব্যক্তিত্ব, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও নাট্য রচয়িতা।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]শিশির কুমার ঘোষ সালে ব্রিটিশ ভারতের যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার অমৃত বাজার(মাগুরা) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। যশোর জিলা স্কুলে কিছুদিন পড়াশুনার পর কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে ১৮৫৭ সালে এন্ট্রান্স পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। যশোর ফিরে জনকল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন।[১]
সামাজিক অবদান
[সম্পাদনা]শিক্ষা দপ্তরে ডেপুটি ইনস্পেকটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও সমাজসেবা ও সাহিত্য সাধনার প্রতি তীব্র অনুরাগ ছিল তার। তিনি ঝিকরগাছায় বাজার স্থাপনা করেন ও নাম দেন অমৃত বাজার। নিজে মুদ্রণযন্ত্র কিনে এনে পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন। তার জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ১৮৬৮ সালে অমৃত বাজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠা। সত্যনিষ্ঠ লেখনী ও সাংবাদিকতার মাধ্যমে নীলকরদের অত্যাচার নির্ভয়ে তুলে ধরতেন শিশির কুমার। তার নির্ভীক ও সত্যনিষ্ঠ কলম সমাজের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ও কৃষক শ্রেণীর পক্ষে সর্বদা সচল ছিল। ১৮৭৪ সালে তার পত্রিকায় নীল বিদ্রোহকে বাংলার প্রথম বিপ্লব বলে অভিহিত করা হয়। তার জনপ্রিয়তা ও সাহসী ভূমিকায় সরকার চিন্তিত হয়। ফলত ব্রিটিশ সরকারের রোষানলে পড়েন শিশির কুমার এবং তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়। তার পক্ষে আদালতে সওয়াল করেন ব্যারিস্টার মনমোহন ঘোষ। পত্রিকাটি ক্রমশ দ্বিভাষিক হয় ও ১৮৯১ সাল থেকে দৈনিক আকারে প্রকাশ হতে থাকে। তিনি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। সংবাদপত্র নিবারণ আইন, দমন মূলক আইন, ইত্যাদির বিরোধীতা করেন। তারই উদ্যোগে ১৮৭৫ সালে গঠিত হয় ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন। সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে শিশির কুমার ঘোষের অবদান উল্লেখযোগ্য। পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে বিধবা বিবাহ চালু করার পক্ষে যে অল্প কয়েকজন মনীষা ছিলেন তিনি তাদের অন্যতম। এর স্বপক্ষে তিনি অমৃরতবাজার পত্রিকায় জোরালো প্রবন্ধ লেখেন। তার অনন্য সামাজিক অবদানের জন্যে তাকে মহাত্মা বলে ডাকা হত।[২]
সাহিত্য
[সম্পাদনা]শিশির কুমার বঙ্গীয় নাট্যশালা স্থাপনে অবদান রাখেন। তার রচিত প্রহসন নাটক বাজারের লড়াই ও নয়শো রূপেয়া নাটক দুটি তারই পরিচালনায় মঞ্চস্থ হয়। তিনি ছয় খণ্ডে শ্রী অমিয় নিমাই চরিত্ ও ইংরেজিতে Lord Gouranga Ges এবং Salvation for All গ্রন্থ রচনা করেহিলেন। তার অন্যান্য গ্রন্থগুলি হল শ্রী কালাচাঁদগীতি, শ্রী নিমাই সন্যাস, সর্পাঘাতের চিকিৎসা, সংগীত শান্ত্র।[৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৩১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ প্রথম খণ্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৫২৫।
- ↑ "শিশির কুমার ঘোষ"। ৩ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭।
- বাংলার নবজাগরণ
- বাঙালি সম্পাদক
- বাংলা ভাষার লেখক
- ১৮৪০-এ জন্ম
- ১৯১১-এ মৃত্যু
- যশোর জেলার ব্যক্তি
- যশোর জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- এবিপি গ্রুপ
- ১৯শ শতাব্দীর ভারতীয় সাংবাদিক
- বাঙালি হিন্দু
- ১৯শ শতাব্দীর বাঙালি
- ২০শ শতাব্দীর বাঙালি
- বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
- ভারতীয় ইতিহাসবিদ
- ১৯শ শতাব্দীর ইতিহাসবিদ
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় ইতিহাসবিদ
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ভারতীয় প্রকাশক (ব্যক্তি)
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাঙালি লেখক
- ভারতীয় জীবনীকার
- পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী
- পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক
- ভারতীয় নাট্যকার
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় নাট্যকার
- ভারতীয় পুরুষ নাট্যকার
- পশ্চিমবঙ্গের নাট্যকার
- হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতার প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ভারতীয় সম্পাদক
- ভারতীয় সংবাদপত্র সম্পাদক