কিসমত হাসেম
কিসমত হাসেম | |
---|---|
মৃত্যু | ২৬ মার্চ ২০১৫ |
আনুগত্য | বাংলাদেশ |
সেবা/ | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
পদমর্যাদা | ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) |
ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) কিসমত হাসেম বাংলাদেশ সাবেক সেনা কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার খালাসপ্রাপ্ত আসামি। তবে তিনি কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। [১][২]
কর্ম জীবন
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কয়েকজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা অসন্তুষ্ট ছিলেন। ১৪ আগস্ট রাত ৮টায় প্যারেড শুরু হয় এবং রাত আড়াইটা পর্যন্ত এই প্যারেড চলে। রাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ ধরনের প্যারেড হয় না। সে দিন অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে প্যারেড করার নির্দেশ ছিল। এই প্যারেডে কিসমত হাসেম ছিলেন।[৩] ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে পরিবারের ২২ জন সদস্য সহ শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়।[৪] খন্দকার মুশতাক আহমেদকে সেনাবাহিনী কর্তৃক রাষ্ট্রপতি করা হয়।[৫][৬][৭]
কিসমত হাশেম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার খালাসপ্রাপ্ত আসামি। তবে তিনি কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম ,তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী ও আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। [৮][৯] জেনারেল জিয়াউর রহমান সরকারের সময় কানাডার ওটাওয়াতে একটি কূটনৈতিক পোস্টে নিযুক্ত হন। [১০] খন্দকার মুশতাক আহমেদ কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষতিপূরণপূর্ন অধ্যাদেশের মাধ্যমে তিনি ও অন্যান্য সেনা কর্মকর্তাকে প্রসিকিউশন থেকে রক্ষা করা হয়েছিল। ১৮ আগস্ট ১৯৮৬ সালে এই অধ্যাদেশ বাতিল করা হয়। [১১][১২][১৩]
১৫ অক্টোবর ১৯৯৮ সালে জেল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এ হত্যায় তিন সেনা সদস্য রিসালদার মুসলেমউদ্দিন, দফাদার মারফরত আলী শাহ, ও দফাদার আব্দুল হাসেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়া ক্যাপ্টেন কিসমত হাসেমসহ ১২ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। পরে হাইকোর্ট হয়ে মামলাটি আপিল বিভাগে এলে চূড়ান্ত রায়েও কিসমত হাসেমের দণ্ড বহাল থাকে। ২৯ আগস্ট ২০০৪ সালে কানাডায় থাকাবস্থাতেই জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় কিসমতকে যাবজ্জীবন সাজা দেন আদালত।[১৪][১৫][১৬]
৮ নভেম্বর ১৯৯৮ ঢাকার দায়রা জজ কিসমত হাসেমকে এবং শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার মামলায় ১৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। [১৭] ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর ওইদিন দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায় খালাসপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) কিসমত হাশেমের বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর ২০০১ সালে শামীম ওসমান ও৮১ জন অন্যান্য নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তার ভাই শওকত হাসেম শকু। (বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতা) [১৮] ৩০ এপ্রিল ২০০১ সালে বিচারপতি ফজলুল করিম মামলায় হাশেমের পরিচিতি নিশ্চিত করেন। [১৭][১৯]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]২৬ মার্চ ২০১৫ মন্ট্রিল, কানাডায় মারা যান।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "Jail killing convict Kismat Hashem dies in Canada"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৩-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "জেলহত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু"। www.jugantor.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯।
- ↑ "Shahriar's confession"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১১-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ Islam, Kajalie Shehreen। "Ending the Legacy of Murder"। দ্য ডেইলি স্টার। Star Weekend Magazine। ২০১৮-০১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "জেলহত্যা মামলার আসামি কিসমতের কানাডায় মৃত্যু"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯।
- ↑ "Five Mujib killers hanged"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "কিসমতের কিসমত ও আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন || চতুরঙ্গ"। জনকন্ঠ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Jail killing convict Kismat dies"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৩-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "Jail killing convict Kismat Hashem dies in Canada - Click Ittefaq"। www.clickittefaq.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "Rewards for slayers"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১১-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ Manik, Julfikar Ali; Ashraf, Shamim। "3 to die, 12 awarded life in Jail Killing Case"। দ্য ডেইলি স্টার। দ্য ডেইলি স্টার। ২০১৮-০১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ BanglaNews24.com। "বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার খালাসপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু"। banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯।
- ↑ "জাতীয় চার নেতার অন্যতম খুনি ক্যাপ্টেন কিসমতের মৃত্যু"। এনটিভি। ২০১৯-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯।
- ↑ "Muslem to die; Farook, Shahriar, Huda, Mohiuddin acquitted"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৮-০৮-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "Delivery of judgment on appeals begins"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৮-০৮-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "চার নেতার এক পলাতক খুনির মৃত্যু কানাডায়"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০১৯-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯।
- ↑ ক খ "SC hearing ends, verdict Nov 19"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১১-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "Shamim Osman gets bail"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-০৫-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৫।
- ↑ "মৃত্যুর দেড় বছর পরেও ইন্টারপোলের তালিকায় কিসমত হাশেম | banglatribune.com"। Bangla Tribune। ২০১৯-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯।