মোহাম্মদ ওয়াসিম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মোহাম্মদ ওয়াসিম
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমোহাম্মদ ওয়াসিম
জন্ম৮ আগস্ট, ১৯৭৮
রাওয়ালপিন্ডি, পাঞ্জাব, পাকিস্তান
ডাকনামআব্বাসী
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক গুগলি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৪২)
২১ নভেম্বর ১৯৯৬ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২১ জুন ২০০০ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১১৪)
৮ ডিসেম্বর ১৯৯৬ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ ওডিআই৫ জুন ২০০০ বনাম শ্রীলঙ্কা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ১৮ ২৫
রানের সংখ্যা ৭৮৩ ৫৪৩
ব্যাটিং গড় ৩০.১১ ২৩.৬০
১০০/৫০ ২/২ ০/৩
সর্বোচ্চ রান ১৯২ ৭৬
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২২/২ ৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩১ জানুয়ারি ২০২০

মোহাম্মদ ওয়াসিম (উর্দু: محمد وسیم‎‎; জন্ম: ৮ আগস্ট, ১৯৭৭) পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডিতে জন্মগ্রহণকারী সাবেক পাকিস্তানি ও ওলন্দাজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে পাকিস্তান এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ, রাওয়ালপিন্ডি, ওলন্দাজ ক্রিকেটে নর্থ হল্যান্ড হারিকেন্স, নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওতাগো দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৯৪-৯৪ মৌসুম থেকে ২০১১-১২ মৌসুম পর্যন্ত মোহাম্মদ ওয়াসিমের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। এক সময়ে সোজা হাতে ব্যাট চালাতেন ও কোন স্ট্রোক খেলার অধিকারী ছিলেন না বলে মনে করা হতো। কিন্তু, উইকেটে থিতু হবার পর তাকে থামানো দুষ্কর ছিল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

পাকিস্তান এবং ওলন্দাজ ক্রিকেট দলে খেলেছেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আঠারোটি টেস্ট ও পঁচিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ২১ নভেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে লাহোরে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২১ জুন, ২০০০ তারিখে গালেতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ১৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ ওয়াসিম নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৯ রানের ইনিংস খেলে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তবে, প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন তিনি। অভিষেকেই সেঞ্চুরি করার পর দলে নিয়মিত ছিলেন। কিন্তু, হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিম্নমুখী খেলায় ১৯২ রানের ইনিংস পুনরায় তাকে আলোকিত করে। হোবার্ট ও ব্রিজটাউনে সুন্দর অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটি টেস্ট শতরান করেছেন। তন্মধ্যে একটি শতরানের ইনিংস ছিল টেস্ট অভিষেকে। ১৯৯৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটেছিল মোহাম্মদে ওয়াসিমের।[১] প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নেবার পর দ্বিতীয় ইনিংসে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এরপর তার ব্যাটিং অবস্থানের উত্তরণ ঘটে। একপর্যায়ে পাকিস্তানের পক্ষে টেস্টে ব্যাটিং উদ্বোধনে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পরবর্তী শতরানের ইনিংসটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেন। ১৯৯৮ সালে হারারেতে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে এ সফলতা পেয়েছিলেন তিনি।[২]

অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত কার্লটন ও ইউনাইটেড সিরিজে মোহাম্মদ ওয়াসিম সেরা ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনায় সচেষ্ট ছিলেন। এ পর্যায়ে বিশ্ব ক্রিকেটে দুই শক্তিধর দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়াকে পিছনে ফেলে তার দল শিরোপা জয় করেছিল। এ সিরিজে নিম্নমুখী রান সংগ্রহের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে উল্লেখযোগ্য সফলতা পেয়েছিলেন তিনি।

জাতীয় দলে প্রত্যাখ্যান[সম্পাদনা]

২০০০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। দল থেকে বাদ পড়ার পর তাকে আর পাকিস্তান দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ পর্যায়ে ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপকে ঘিরে দল নির্বাচকমণ্ডলী নতুন খেলোয়াড়দেরকে অগ্রাধিকার দেয়। দল নির্বাচকমণ্ডলীর নজর আকর্ষণ করতে না পারা ও ২০০০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উপর্যুপরী ব্যর্থতার পর দল থেকে বাদ পড়েন। একদিনের আন্তর্জাতিকের ক্ষেত্রেও একই ধারা অব্যাহত থাকে। কিছু ভালোমানের ইনিংস উপহার দিলেও তা যথেষ্ট ছিল না। তিন বছরের মধ্যেই উদীয়মান প্রতিভার মোহাম্মদ ওয়াসিমকে বাদ দিয়ে পিসিবি কর্তৃপক্ষ নতুনদের দিকে ধাবিত হয়।

নিউজিল্যান্ডে অভিবাসন[সম্পাদনা]

২০০২-০৩ মৌসুমে পাকিস্তান ত্যাগ করেন। একই মৌসুমে নিউজিল্যান্ডে ওতাগোর পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন।[৩] সেখানে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন। দুই বছর পর ওতাগো ত্যাগ করে পাকিস্তানে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেন। ওয়াসিমে দাবী করেন যে, নিউজিল্যান্ডের পক্ষে খেলার প্রস্তাবনা পেলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। আশাবাদী ছিলেন যে, পাকিস্তানের পক্ষে খেলার জন্যে তাকে পুনরায় আমন্ত্রণ জানানো হবে।

নেদারল্যান্ডসে অভিবাসন[সম্পাদনা]

জুলাই, ২০১৪ সালে নেদারল্যান্ডস বনাম স্কটল্যান্ডের মধ্যকার ৫০-ওভারের খেলায় অংশ নেন। বেশ কয়েকবছর নেদারল্যান্ডসে বসবাসের সুবাদে ওলন্দাজ নাগরিকত্ব লাভ করেন তিনি। এ পর্যায়ে স্পার্টা ১৮৮৮ ও দোস্তি আমস্টারডামের পক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ঐ মৌসুমে নর্থ সী প্রো সিরিজে নর্থ হল্যান্ড হারিকেন্সের পক্ষে নিয়মিতভাবে খেলতেন। এছাড়াও সাইড্যামে কন্টিনেন্টাল টি২০ চ্যাম্পিয়নশীপে নেদারল্যান্ডস এ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।[৪]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

বর্তমানে ওলন্দাজ ক্রিকেট দলে কোচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। মে, ২০১৮ সালে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে সুইডেন ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন।[৫] ২০১৮-১৯ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ ইউরোপীয় বাছাইপর্বে অংশগ্রহণের প্রস্তুতিতে সহায়তা করেন।[৫]

ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সালে পর্যন্ত মোহাম্মদ ওয়াসিম ইসলামাবাদে বসবাস করতেন। সেখানে তিনি টেলিভিশনে ক্রিকেট বিশ্লেষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এছাড়াও ক্রিকেট একাডেমি পরিচালনা করছেন। ইউটিউব ব্যবহারকারী হিসেবেও সফলতা পেয়েছেন। ‘বোল ওয়াসিম’ নামীয় ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করছেন। সেখানে তিনি ব্যাপকভাবে ক্রিকেট বিশ্লেষণ করে থাকেন। এছাড়াও টেলিভিশনে উপস্থাপক তিনি।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Mohammad Wasim debut v New Zealand
  2. Wasim second test ton v Zimbabwe
  3. Otago sign Mohammad Wasim for 2002/03 season
  4. "Mohammad Wasim makes Dutch debut"। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২০ 
  5. Sandeep Lamichhane's IPL fairytale
  6. Rasool, Danyal (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "The other Wasim"The Cricket Monthly। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]