রোহতাস জেলা

স্থানাঙ্ক: ২৪°৫৭′০০″ উত্তর ৮৪°০০′৩৬″ পূর্ব / ২৪.৯৫০০০° উত্তর ৮৪.০১০০০° পূর্ব / 24.95000; 84.01000
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রোহতাস জেলা
रोहतास ज़िला, روہتاس ضلع
বিহারের জেলা
বিহারে রোহতাসের অবস্থান
বিহারে রোহতাসের অবস্থান
দেশভারত
রাজ্যবিহার
প্রশাসনিক বিভাগপাটনা
সদরদপ্তরসাসারাম
সরকার
 • লোকসভা কেন্দ্রসাসারাম, কারাকাট
আয়তন
 • মোট৩,৮৪৭.৮২ বর্গকিমি (১,৪৮৫.৬৫ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট২৯,৬২,৫৯৩
 • জনঘনত্ব৭৭০/বর্গকিমি (২,০০০/বর্গমাইল)
জনতাত্ত্বিক
 • সাক্ষরতা৭৬.৫৯%
 • লিঙ্গানুপাত৯৫০
প্রধান মহাসড়ক২ নং জাতীয় সড়ক
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট
শের শাহ সুরীর সমাধি

রোহতাস জেলা (হিন্দি: रोहतास ज़िला; উর্দু: روہتاس ضلع‎‎) হলো ভারতের বিহার রাজ্যের ৩৮টি জেলার অন্যতম।

রোহতাস জেলা পাটনা বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। এই জেলার আয়তন ৩৮৫০ বর্গকিলোমিটার। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে এই জেলার জনসংখ্যা ২,৯৬২,৫৯৩। ভোজপুরিহিন্দি ভাষা এই অঞ্চলে প্রচলিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

রোহতাস জেলার সদর সাসারাম একটি ঐতিহাসিক শহর। রোহতাস জেলার রোহতাসগড় দুর্গটি মধ্যযুগে একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ ছিল।

বর্তমানে এই জেলাটি রেড করিডোরের অন্তর্গত।

ভূগোল[সম্পাদনা]

রোহতাস জেলার আয়তন ৩,৮৫১ বর্গকিলোমিটার (১,৪৮৭ মা)।[১] আয়তনের দিক থেকে এই জেলা সলোমন দ্বীপপুঞ্জের মালাইটা দ্বীপের প্রায় সমান।[২]

রোহতাস জেলার আয়তন ছোটো হলেও এই জেলার ভৌগোলিক গঠনের মধ্যে বৈচিত্র্য দেখা যায়। কৈমুর পর্বতমালারোহতাস মালভূমি এই জেলার একাংশে অবস্থিত। মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে উৎপন্ন সোন নদী (গঙ্গার শাখানদী) এই রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চলে একটি প্লাবন সমভূমি সৃষ্টি করেছে। বিন্ধ্য পর্বতমালার অংশ কৈমুর পর্বতমালার যে অংশটি এই জেলায় অবস্থিত সেটি কিছুকাল আগে পর্যন্ত গভীর বনে আচ্ছন্ন ছিল। এখন অবশ্য দ্রুত বন কেটে ফেলা হয়েছে জ্বালানির কাঠ সংগ্রহের জন্য। রোহতাস জেলার সমভূমি অঞ্চল বেশ উর্বর এবং সেই কারণে ঘন জনবসতিবহুল।

বিভাগ[সম্পাদনা]

রোহতাস জেলা তিনটি মহকুমায় বিভক্ত। এগুলি হল: সাসারাম, বিক্রমগঞ্জ ও দেহরি

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

১৯৮০ সাল পর্যন্ত রোহতাস জেলার ডালমিয়ানগর ছিল ভারতের অন্যতম প্রধান শিল্পনগরী। এখানে চিনি, সবজি তেল, সিমেন্ট, কাগজ ও কেমিক্যাল কারখানা ছিল। কিন্তু এগুলি এখন বন্ধ। ডাকাতি, দুষ্কৃতিদের দৌরাত্ম্য ও স্থানীয় মাফিয়াদের অত্যাচারের ফলে এই অঞ্চলের শিল্পের অবনতি ঘটে। ২০০৮-০৯ সালের বাজেটে ডালমিয়ানগরে একটি রেল কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব রাখা হয় এবং ডালমিয়ানগর কারখানাটির প্রাঙ্গণ রেল মন্ত্রক কর্তৃক অধিগৃহীত হয়।

দেহরি অন সোন একটি বিখ্যাত কয়লা ডিপো। সারা উত্তর ভারত থেকে খদ্দেররা এখানে আসে কয়লা কিনতে। এখানে ৬.৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রও রয়েছে।

২০০৬ সালে ভারত সরকারের পঞ্চায়েত মন্ত্রক দেশের ২৫০টি সর্বাধিক অনগ্রসর জেলাগুলির তালিকায় রোহতাস জেলার নাম নথিভুক্ত করে।[৩] বিহারের যে ৩৬টি জেলা অনগ্রসর অঞ্চল অনুদান তহবিল কর্মসূচির অধীনে অনুদান পায়, রোহতাস জেলা তার মধ্যে অন্যতম।[৩]

পরিবহণ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

এই জেলায় সোন নদীর উপর পাশাপাশি নির্মিত সড়ক ও রেলসেতু দুটি জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন। ১৯৬৩-৬৫ সালে গ্যামন ইন্ডিয়া কর্তৃক নির্মিত সড়ক সেতুটি এশিয়ার দ্বিতীয় দীর্ঘতম সড়ক সেতু। এই সেতুটির নাম জওহর সেতু। এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩০৬১ মিটার। পাটনায় গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত মহাত্মা গান্ধী সেতু (দৈর্ঘ্য ৫৪৭৫ মিটার) নির্মিত হওয়ার আগে পর্যন্ত এটিই ছিল এশিয়ার দীর্ঘতম সড়ক সেতু। নেহেরু সেতু নামে পরিচিত রেল সেতুটি ভারতের দ্বিতীয় দীর্ঘতম রেল সেতু।

সাসারাম শহরটি রেল ও সড়ক পথে রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত। সাসারাম ও দেহরি অন সোন জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। প্রায় সব প্রধান ট্রেনই এখানে থামে। গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড এই দুই শহরের উপর দিয়েই গিয়েছে।

জনপরিসংখ্যান[সম্পাদনা]

২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, রোহতাস জেলার জনসংখ্যা ২,৯৬২,৫৯৩।[৪] জনসংখ্যার হিসেবে এই জেলা আর্মেনিয়া রাষ্ট্র[৫] বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি রাজ্যের প্রায় সমান।[৬] আয়তনের হিসেবে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে এই জেলার স্থান ১২৭তম।[৪] জেলার জনঘনত্ব ৭৬৩ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১,৯৮০ জন/বর্গমাইল)।[৪] ২০০১-২০১১ দশকে এই জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০.২২%।[৪] রোহতাস জেলায় লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯১৪ জন মহিলা।[৪] এই জেলার সাক্ষরতার হার ৭৬.৫৯%,[৪] যা বিহার রাজ্যে সর্বাধিক।

বনাঞ্চল[সম্পাদনা]

১৯৮২ সালে কৈমুর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গঠিত হলে রোহতাস জেলার কিয়দংশ এই অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়ে। এই অভয়ারণ্যটির আয়তন ১,৩৪২ কিমি (৫১৮.১ মা)।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Srivastava, Dayawanti et al. (ed.) (২০১০)। "States and Union Territories: Bihar: Government"। India 2010: A Reference Annual (54th সংস্করণ)। New Delhi, India: Additional Director General, Publications Division, Ministry of Information and Broadcasting (India), Government of India। পৃষ্ঠা 1118–1119। আইএসবিএন 978-81-230-1617-7। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-১১ 
  2. "Island Directory Tables: Islands by Land Area"United Nations Environment Program। ১৯৯৮-০২-১৮। ২০১৫-১২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-১১Malaita3,836km2 
  3. Ministry of Panchayati Raj (সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯)। "A Note on the Backward Regions Grant Fund Programme" (পিডিএফ)। National Institute of Rural Development। ৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১১ 
  4. "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০ 
  5. US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২০১১-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১Armenia 2,967,975 July 2011 est.  line feed character in |উক্তি= at position 8 (সাহায্য)
  6. "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ২০১১-০৮-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০Mississippi 2,967,297  line feed character in |উক্তি= at position 12 (সাহায্য)
  7. Indian Ministry of Forests and Environment। "Protected areas: Bihar"। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Patna Division

টেমপ্লেট:Son basin