আনারস
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
আনারস / Pineapple | |
---|---|
আনারস গাছে আনারসের ছবি | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
(শ্রেণীবিহীন): | Angiosperms |
(শ্রেণীবিহীন): | Monocots |
(শ্রেণীবিহীন): | Commelinids |
বর্গ: | Poales |
পরিবার: | Bromeliaceae |
উপপরিবার: | Bromelioideae |
গণ: | Ananas |
প্রজাতি: | A. comosus |
দ্বিপদী নাম | |
Ananas comosus (L.) Merr. | |
প্রতিশব্দ[১] | |
তালিকা
|
আনারস এক প্রকারের গুচ্ছফল। এর অন্যান্য নাম - Pineapple,[২][৩] Anannas, Ananus, Bahunetraphalam, Anamnasam।[৪][৫] এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Ananas comosus (L.) Merr. এই ফলের আদি জন্মস্থল দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ। তবে বর্তমানে ক্রান্তীয় অঞ্চলে বিশ্বের সর্বত্রই এর চাষের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।
পুষ্টিগুণ[সম্পাদনা]
- পুষ্টির অভাব দূর করে: আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।[৬]
- ওজন নিয়ন্ত্রণে: শুনতে অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। সকালে আনারস বা সালাদ হিসেবে এর ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
- হাড় গঠনে: আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনও রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
- দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায়: আনারসের ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।
- চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।
- হজমশক্তি বাড়ায়: আনারস আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন, যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন আনারস খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
- রক্ত জমাটে বাধা দেয়: দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলে শিরা-ধমনির (রক্তবাহী নালি) দেয়ালে রক্ত না জমার জন্য সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত যেতে পারে। হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃদপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পুষ্টিগত মান | |
---|---|
শক্তি | ২০৯ কিজু (৫০ kcal) |
13.12 g | |
চিনি | 9.85 g |
খাদ্যে ফাইবার | 1.4 g |
0.12 g | |
0.54 g | |
ভিটামিনসমূহ | |
থায়ামিন (বি১) | (7%) 0.079 mg |
রিবোফ্লাভিন (বি২) | (3%) 0.032 mg |
ন্যায়েসেন (বি৪) | (3%) 0.5 mg |
(4%) 0.213 mg | |
ভিটামিন বি৬ | (9%) 0.112 mg |
ফোলেট (বি৯) | (5%) 18 μg |
কোলিন | (1%) 5.5 mg |
ভিটামিন সি | (58%) 47.8 mg |
চিহ্ন ধাতুসমুহ | |
ক্যালসিয়াম | (1%) 13 mg |
লোহা | (2%) 0.29 mg |
ম্যাগনেসিয়াম | (3%) 12 mg |
ম্যাঙ্গানিজ | (44%) 0.927 mg |
ফসফরাস | (1%) 8 mg |
পটাশিয়াম | (2%) 109 mg |
সোডিয়াম | (0%) 1 mg |
দস্তা | (1%) 0.12 mg |
অন্যান্য উপাদানসমূহ | |
পানি | 86.00 g |
| |
Percentages are roughly approximated using US recommendations for adults. |
ঔষধি গুনাগুণ[সম্পাদনা]
- আনারস খাওয়ার ফলে অনেক নারী ও পুরুষের দেহে অ্যালার্জী দেখা দিতে পারে। আনারস খাওয়ার ফলে অ্যালার্জীর উপসর্গ হল ঠোঁট ফুলে যাওয়া ও গলায় সুরসুরি বোধ হওয়া।তাই আনারস খাওয়ার আগে তা কেটে লবন পানি দিয়ে ধুয়ে নেয়া উচিত। এভাবে ধুয়ে নিয়ে খেলে কোন সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা থাকেনা।
- আনারসের কারণে নারীদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থায় থাকলে নারীদের আনারস খেতে বারণ করা হয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থার পরে চাইলে আনারস খেতে পারেন কিন্তু শরীরের অবস্থা বুঝে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
- যখন আপনি আনারস খাবেন তখন এটি আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল নালীর কাছে পৌঁছানোর পর এটি অ্যালকোহলে পরিনত হয়। এবং এই কারণে মানুষের দেহে বাতের ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই যে সকল মানুষের দেহে বাতের ব্যথা আছে কিংবা সন্দেহ করা হচ্ছে বাত হতে পারে তাদের আনারস না খাওয়াটাই ভালো।
- আনারসে আছে অনেক বেশি পরিমানে প্রাকৃতিক চিনি। আনারসের ২ টি চিনি উপাদান সুক্রোজ এবং ফ্রুক্টোজ যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু দেহের ক্ষতি, এটি খাওয়ার উপর নির্ভর করে। এবং আনারসের মধ্যে অতিরিক্ত চিনি আমাদের দেহে রক্তের চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই আনারস বেশি না খেয়ে সপ্তাহে ২ দিন খেতে পারেন।
- আনারসে আছে ব্রমিলেইন যা দিয়ে ওষুধ বানানো হয়ে থাকে এবং কোন রোগীর প্রয়োজন পরলে তাকে তা দেয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া আপনি যদি কোন কারণে অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিকনভালসেন্ট ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আনারস খেতে ডাক্তাররা নিষেধ করে থাকেন। কারণ এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
- অনেকেই কাঁচা আনারস ব্যবহার করে থাকেন জুস বানানোর জন্য কিন্তু এটি দেহের জন্য ক্ষতিকর এবং খুব বিষাক্ত। এবং মাঝে মাঝে কাঁচা আনারস খাওয়ার কারণে বমির প্রবনতা দেখা দেয়।
- কাঁচা আনারসে আছে অনেক বেশি পরিমানে এসিডিটি যা আমদের মুখের ভিতর ও গলায় শ্লেষ্মা তৈরি করে। এবং ফলটি খাওয়ার পর মাঝে মাঝে অনেকের পেটে ব্যথাও হতে পারে।
- রক্ত তরল করার জন্য যে ওষুধ বানানো হয় তাতে আনারস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ফল দেহে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াতে বাঁধা প্রদান করে থাকে।
- ব্রমিলেইন আনারসের একটি উপাদান যা আমদের দেহের প্রোটিনের পরিমাণ নষ্ট করাতে দায়ী থাকে। এবং এই ফল দেহে ডার্মাটাইটিস ও অ্যালার্জী সংক্রামন করে।
- আনারস আমাদের দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। যাদের দাতে কেভিটিস ও জিংজাইভেটিভস এর সমস্যা আছে তাদের আনারস না খাওয়াই ভালো।
চিত্রশালা[সম্পাদনা]
'Victoria', a cultivar of small, sugary and flavourful pineapples, is particularly popular on Réunion Island.
Pineapple etching
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "The Plant List: A Working List of All Plant Species"। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৪।
- ↑ Morton, Julia F (১৯৮৭)। "Pineapple, Ananas comosus"। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ "Pineapple Definition | Definition of Pineapple at Dictionary.com"। Dictionary.reference.com। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ "Pineapple"। hort.purdue.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-১৮।
- ↑ "Definition of pineapple"। Dictionary.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-১৮।
- ↑ "Pineapple, raw, all varieties Nutrition Facts & Calories"। nutritiondata.self.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-১৮।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "আনারস খাওয়ার ৭ উপকারিতা - বাংলাদেশ প্রতিদিন"। Bangladesh Pratidin।
গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]
- Menzel, Christopher. "Tropical and Subtropical Fruit". Encyclopedia of Agricultural Science Volume 4. আইএসবিএন ০১২২২৬৬৭০৬. Charles J Arntzen. New York: Elsevier Science Publishing Co. Inc., Academic Press, 2012. 380–382.
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে আনারস সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- Pineapple Fruit Facts—information on pineapples from California Rare Fruit Growers
- The Strange History of the "King-Pine" from The Paris Review