লিনাক্স
ডেভলপার | সম্প্রদায় লিনাস টরভল্ডস |
---|---|
প্রোগ্রামিং ভাষা | প্রধানত সি ও অ্যাসেম্বলি প্রোগ্রামিং ভাষা |
ওএস পরিবার | ইউনিক্স-সদৃশ |
কাজের অবস্থা | চলমান |
সোর্স মডেল | প্রধানত মুক্ত সোর্স, তবে মালিকানাধীন অংশও রয়েছে |
মার্কেটিং লক্ষ্য | ব্যক্তিগত কম্পিউটার, মোবাইল ডিভাইস, মেইনফ্রেম কম্পিউটার, সুপারকম্পিউটার। |
ভাষাসমূহ | বিভিন্ন |
কার্নেলের ধরন | মনোলিথিক ( লিনাক্স কার্নেল) |
ইউজারল্যান্ড | গ্নু ও অন্যান্য[ক] |
ব্যবহারকারী ইন্টারফেস | একাধিক |
লাইসেন্স | গ্নু জেনারেল পাবলিক লাইসেন্স, সংস্করণ ২[৫] |
ওয়েবসাইট | kernel |
লিনাক্স বা গ্নু/লিনাক্স (ইংরেজি: GNU/Linux) বলতে লিনাক্স কার্নেলের সাথে বিশেষত গ্নু ও অন্যান্য উপাদানের সংমিশ্রণে প্যাকেজ করা অপারেটিং সিস্টেম এর একটি পরিবারকে বুঝায়। সাধারণত, ডেস্কটপ ও সার্ভার দু'ধরনের ব্যবহারের জন্যেই লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন বা ডিস্ট্রো নামে একটি আকারে প্যাকেজকৃত থাকে। একটি লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনকে বোঝানোর উপাদানই হলো এর কার্নেল - লিনাক্স কার্নেল,[৬] যেটি একটি অপারেটিং সিস্টেম কার্নেল, যা লিনাস টরভল্ডস ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯১ তারিখে প্রথম প্রকাশ করেন।[৭][৮][৯] অনেক লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনই লিনাক্স শব্দটি তাদের অপারেটিং সিস্টেমের নামের সাথে ব্যবহার করে এবং ফ্রি সফটওয়্যার ফাউন্ডেশন গ্নু/লিনাক্স শব্দটি এ অপারেটিং সিস্টেম পরিবারকে বুঝাতেই ব্যবহার করে।
লিনাক্স মূলত ইন্টেল এক্স৮৬ স্থাপত্যের(আর্কিটেকচার) উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত কম্পিউটারের জন্য উন্নয়ন করা হলেও, বর্তমানে এটি অন্য যেকোন অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে বেশি প্ল্যাটফর্মে পোর্ট করা হয়েছে।[১০] স্মার্টফোন জগতে লিনাক্স কার্নেল-ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড এর আধিপত্যের কারণে, বর্তমানের অন্য সব অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে লিনাক্সের সবচেয়ে বড় ইন্সটল-ভিত তৈরি হয়েছে।[১১] লিনাক্স সার্ভার এবং অন্যান্য বড় আইরন সিস্টেম, যেমন মেইনফ্রেম কম্পিউটার, এবং বৃহত্তর ৫০০ সুপারকম্পিউটারে ব্যবহৃত একমাত্র অপারেটিং সিস্টেম (লিনাক্স ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে, অন্য সব প্রতিযোগীদের এ বাজার ধীরে ধীরে সরিয়ে দিচ্ছে)।[১২][১৩] প্রায় ২.৩% ডেস্কটপ কম্পিউটারে বর্তমানে লিনাক্স ব্যবহার করা হয়।[১৪][১৫] লিনাক্স কার্নেল-ভিত্তিক ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম চালিত ক্রোমবুক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কে-১৩ শিক্ষার বাজারে গুরুত্বারোপ করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ ডলারের নিচের নোটবুক বিক্রির ২০% ক্রোমবুকই প্রতিনিধিত্ব করে।[১৬] লিনাক্স গ্রত্থিত সিস্টেম-ডিভাইসগুলোতেও অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে টিভো এবং অনুরূপ ডিভিআর ডিভাইস, রাউটার, সুবিধা স্বয়ংক্রিয়করণ নিয়ন্ত্রণ, টিভি, ভিডিও গেম কনসোল এবং স্মার্টওয়াচ অন্তর্ভুক্ত। অনেক স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট কম্পিউটার অ্যান্ড্রয়েড এবং অন্যান্য লিনাক্স ডিস্ট্রোতে চলে।[১৭]
লিনাক্সকে মুক্ত সোর্স ও মুক্ত সফটওয়্যার ধারার একটি আদর্শ উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যান্য স্বত্ত্ব-সংরক্ষিত অপারেটিং সিস্টেম যেমন উইন্ডোজ এবং ম্যাক ওএস হতে লিনাক্স বিভিন্নভাবে আলাদা। লিনাক্সের অন্তর্নিহিত সোর্স কোড যে কেউ গ্নু জেনারেল পাবলিক লাইসেন্স মোতাবেক বাধাহীনভাবে ব্যবহার করতে পারেন, এর উন্নতিসাধন করতে পারেন, এমনকি পুনঃবিতরণ করতে পারেন।
একেবারে ঠিকভাবে বলতে গেলে, লিনাক্স বলতে শুধু লিনাক্স কার্নেলকেই বোঝায়। তবে যেসব ইউনিক্স-সদৃশ অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্স কার্নেলের উপর ভিত্তি করে নির্মিত এবং মূলত গ্নু (ও অন্যান্য) প্রকল্পের কোড সংগ্রহ (লাইব্রেরি) ও হাতিয়ার (টুলস) ওই কার্নেলের সাথে যুক্ত করে বানানো হয়েছে, সাধারণভাবে সেসব অপারেটিং সিস্টেমকে লিনাক্স হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
আরও ব্যাপক অর্থে একটি লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন বলতে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ও এর সাথে সরবরাহকৃত বিপুল পরিমাণের অ্যাপলিকেশন সফটওয়্যারের সমষ্টিকে বোঝায়। লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলো সহজেই কম্পিউটারে সংস্থাপন (ইন্সটল) ও হালনাগাদ (আপডেট) করা যায়।
কিছু ডেস্কটপ পরিবেশ যেমন গ্নোম, কেডিই প্লাজমা ও এক্সএফসিই সাধারণত কেবল লিনাক্সের সাথে জড়িত বলে ধারণা করা হলেও এগুলো অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমেও (যেমন ফ্রিবিএসডি-তে) ব্যবহৃত হয়।
প্রাথমিকভাবে কেবল কিছু উৎসাহী ব্যক্তিই মূলত লিনাক্স ব্যবহার ও এর উন্নতিসাধন করতেন। এখন বড় বড় কর্পোরেশন যেমন ডেল, আইবিএম, সান মাইক্রোসিস্টেম্স, হিউলেট-প্যাকার্ড, নভেলসহ আরও অনেক বড় কোম্পানি সার্ভারে ব্যবহারের জন্যে লিনাক্সকে বেছে নিয়েছে। ডেস্কটপ বাজারেও লিনাক্সের চাহিদা ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। লিনাক্স বিশেষজ্ঞ ও লিনাক্স সমর্থকদের মতে লিনাক্সের এই উত্থানের পেছনে কারণ লিনাক্স সস্তা, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং এটি কোনো নির্দিষ্ট বিক্রেতার কাছ থেকে কিনতে হয় না, অর্থাৎ এটি বিক্রেতা-অধীন নয়।
লিনাক্স প্রাথমিকভাবে ইন্টেল ৩৮৬ মাইক্রোপ্রসেসর এর জন্য তৈরি করা হলেও এখন এটি বর্তমানের সব জনপ্রিয় (এমনকি অনেক পুরনো ও বিরল) কম্পিউটার স্থাপত্যের অধীনে কাজ করে। গ্রত্থিত ব্যবস্থা(এম্বেডেড সিস্টেম), যেমন মোবাইল ফোন, ব্যক্তিগত ভিডিও রেকর্ডার, ইত্যাদি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার, এমনকি সুপারকম্পিউটার - সব জায়গাতেই এখন লিনাক্স ব্যবহৃত হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৮৩ সালে রিচার্ড স্টলম্যান গ্নু প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করেন। গ্নু প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল পরিপূর্ণ মুক্ত সফটওয়্যার ব্যবহার করে একটি পূর্ণাঙ্গ ইউনিক্স-সদৃশ অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা। ৯০-এর দশকের শুরুর দিকেই গ্নু এই অপারেটিং সিস্টেমের প্রায় সমস্ত প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো বানাতে বা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল বিভিন্ন কোড লাইব্রেরি, কম্পাইলার, লেখা সম্পাদক(টেক্সট এডিটর), একটি ইউনিক্স-সদৃশ শেল, এবং আরও অন্যান্য কিছু সফটওয়্যার। কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তখনও উন্নয়ন করা হয়নি, আর তা হল কার্নেল - অপারেটিং সিস্টেমটির নিম্নতম স্তরের উপাদান বা ভিত্তি।
১৯৯০ সালে গ্নু প্রকল্প তাদের নিজস্ব কার্নেল গ্নু হার্ডের ওপর কাজ শুরু করে। হার্ডের প্রাথমিক পরিকল্পনাকারী টমাস বুশনেলের কথানুযায়ী গ্নুর প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল বিএসডি ৪.৪-লাইট কার্নেলটি হার্ডের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা। সে সময়ের কথা মনে করে তিনি বলেন, “এখন আমি নিশ্চিত, যদি পরিকল্পনাটি সফল হত, বিশ্বকে তখন একদম আলাদাভাবে দেখতে পারতাম আমরা।” কিন্তু বার্কলির প্রোগ্রামারদের মধ্যে সহযোগিতার ঘাটতি দেখে স্টলম্যান হার্ড প্রকল্পের জন্য মাখ মাইক্রোকার্নেল ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পরে দেখা যায় এটির ব্যবহার আশাতীতভাবে কষ্টসাধ্য, ফলে হার্ডের উন্নয়নকাজ ধীরগতিতে এগোতে থাকে।
প্রায় কাছাকাছি সময়ে ১৯৯১ সালে, লিনাস টরভল্ডস নামের এক ফিনীয় ছাত্র হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থায় শখের বশে আরেকটি কার্নেলের ওপর কাজ শুরু করেন। এই কার্নেলটিই পরে লিনাক্স কার্নেলে রূপ নেয়। লিনুস প্রথমদিকে মিনিক্স নামের একটি সরলীকৃত ইউনিক্স-সদৃশ অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ শুরু করেন। মিনিক্সের রচয়িতা ছিলেন এন্ড্রু টানেনবম, একজন প্রখ্যাত অপারেটিং সিস্টেম ডিজাইন প্রশিক্ষক। তবে টানেনবম তার মিনিক্স সিস্টেমের ওপর সরাসরি কাজ করে উন্নতিসাধনের অনুমতি দিতেন না। ফলে লিনুসকে মিনিক্সের সমতুল্য একটি সিস্টেম বানাতে হয়। লিনুস প্রথমে আইএ-৩২ এসেম্বলার ও সি'র সাহায্যে একটি টার্মিনাল ইমুলেটর তৈরী করেন ও এটিকে কম্পাইল করে বাইনারি আকারে রূপান্তরিত করেন, যাতে এটি যেকোনো অপারেটিং সিস্টেমের বাইরেও ফ্লপি ডিস্ক থেকে বুট করে চালানো যায়। টার্মিনাল ইমুলেটরটিতে একসাথে দুটো থ্রেড চলত। একটি থ্রেড ছিল সিরিয়াল পোর্ট থেকে ক্যারেক্টার পড়ার জন্য, আর অন্যটি ছিল পোর্টে ক্যারেক্টার পাঠানোর জন্য। যখন লিনুসের ডিস্ক থেকে ফাইল পড়া ও লেখার প্রয়োজন পড়ল, তখন তিনি এই ইমুলেটরটির সাথে একটি সম্পূর্ণ ফাইল সিস্টেম হ্যান্ডলার যোগ করেন। এরপর ধীরে ধীরে তিনি এটিকে একটি সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম কার্নেলে রূপ দেন, যাতে এটিকে পজিক্স-অনুগামী সিস্টেমসমূহের ভিত্তিরূপে ব্যবহার করা যায়। লিনাক্স কার্নেলের প্রথম সংস্করণ (০.০.১) ইন্টারনেটে প্রকাশ পায় ১৯৯১ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর। কিছুদিন পরেই ১৯৯১-এর অক্টোবরে এর দ্বিতীয় সংস্করণটি বের হয়। তখন থেকে সারা বিশ্ব থেকে হাজার হাজার উন্নয়নকারী(ডেভলপার) লিনাক্সের এই প্রকল্পে অংশ নিয়েছেন। এরিক রেমনডের লেখা প্রবন্ধ দ্যা ক্যাথেড্রাল এন্ড দ্যা বাজারে লিনাক্স কার্নেলের (ও অন্যান্য সমজাতীয় সফটওয়্যারের) উন্নয়নপ্রক্রিয়ার মডেল সম্পর্কে আলচনা করা হয়েছে।
লিনাক্সের ০.০১ সংস্করণে লিনুস যথেষ্টসংখ্যক পজিক্স সিস্টেম কল বাস্তবায়ন করেন, যাতে লিনাক্স গ্নুর ব্যাশ শেল চলতে পারে। এ বুটস্ট্র্যাপিং প্রক্রিয়াটির বাস্তবায়ন লিনাক্সের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। প্রথমদিকে লিনাক্স সংস্থাপন (ইন্সটল), গঠন-প্রকৃতি নির্ধারণ (কনফিগার) ও সংকলন (কম্পাইল) করার জন্য মিনিক্স-চালিত কম্পিউটারের প্রয়োজন হত। এছাড়া লিনাক্সের প্রাথমিক সংস্করণগুলোকে হার্ড ডিস্ক থেকে বুট করানোর জন্য অপর একটি অপারেটিং সিস্টেমের উপস্থিতির প্রয়োজন হত। তবে শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হিসেবে তৈরি করা হয় কিছু আত্মনির্ভরশীল বুটলোডার; এই বুটলোডারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ছিলো লিলো। এরপর লিনাক্স উপযোগিতার হিসেবে মিনিক্সকে দ্রুত ছাড়িয়ে যায়। লিনুস ও লিনাক্স কার্নেলের অন্যান্য প্রাথমিক ডেভেলপারেরা কার্নেলের পরিবর্তন সাধন করেন যাতে সেটি গ্নুর বিভিন্ন উপাদান ও ব্যবহারকারীদের জন্য লেখা প্রোগ্রামগুলোর সাথে কাজ করতে পারে। এভাবে ধীরে ধীরে লিনাক্স গঠন ও উপযোগিতার দিক থেকে একটি সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেমের রূপ নিতে থাকে।
বর্তমানে লিনাক্স কার্নেলের উন্নয়নে দিকনির্দেশনা দেন লিনাস টরভল্ডস নিজে, তবে কার্নেলের সহযোগী অন্যান্য ব্যবস্থাগুলো, যেমন গ্নু উপাদান, আলাদাভাবে উন্নয়ন করা হয়। আর লিনাক্স বিতরণকারী বিক্রেতা বা প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান কাজ হচ্ছে এই সবগুলো উপাদান একত্র করে এবং এর সাথে গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস (যেমন এক্স-উইন্ডো সিস্টেম-ভিত্তিক গ্নোম বা কেডিই) ও অ্যাপলিকেশন সফটওয়্যার যোগ করে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিচালক ব্যবস্থা তৈরি করা।
লিনাক্সের ম্যাসকট ও লোগো হচ্ছে টাক্স নামের একটি পেঙ্গুইন। ১৯৯৬ সালে ল্যারি ইউয়িঙের আঁকা একটি ছবি থেকে টাক্স আঁকার অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে। টাক্স ছাড়াও ওএস-ট্যান ও আরও কিছু লিনাক্স প্রতিনিধিত্বকারী চরিত্র রয়েছে, তবে সেগুলো খুব একটা প্রচলিত নয়।
“লিনাক্স” নামটি কিন্ত লিনাস টরভল্ডসের দেওয়া নয়। লিনাক্সের নামকরণের কৃতিত্ব আরি লেমকের। লেমকে হেলসিংকি ইন্সটিটিউট অব টেকনলজিতে ftp.funet.fi নামক একটি এফটিপি সার্ভারের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সার্ভারটি ছিল ফিনীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা নেটওয়ার্কের একটি অংশ, আর এই নেটওয়ার্কের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি ছিল লিনুসের হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়। লিনুস যখন তার অপারেটিং সিস্টেম প্রকল্পটি এই সার্ভারটিতে সংরক্ষণ করার জন্য লেমকে-কে দেন, লেমকে তখন তা একটি ডিরেক্টরিতে রাখেন ও ডিরেক্টরিটির নাম দেন “লিনাক্স”, অর্থাৎ “লিনুসের মিনিক্স” কথাটির সংক্ষিপ্ত রূপ। লিনুস অবশ্য নিজে প্রকল্পটির নাম “ফ্রিক্স” (freax) রাখতে চাচ্ছিলেন, যা ছিল “ফ্রি” (মুক্ত) ও ইউনিক্সের শেষ অক্ষর “এক্স”-এর সম্মিলিত রূপ। অবশ্য শেষ পর্যন্ত লেমকের দেয়া লিনাক্স নামটিই টিকে যায়।
কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক
[সম্পাদনা]লিনাক্স কার্নেল ও বেশির ভাগ গ্নু উপাদান গ্নু জেনারেল পাবলিক লাইসেন্স (জিপিএল)-এর আওতাধীন। জিপিএলকৃত উৎসের কোডের সংশোধন ও এর থেকে উদ্ভূত সব কাজও জিপিএলের আওতাধীন হয়ে থাকে। লিনুস এ সম্পর্কে ১৯৯৭ সালে বলেন, “লিনাক্সের জিপিএলকরণ নিশ্চিতভাবেই আমার করা সেরা কাজ।“ লিনাক্সের অন্যান্য সহযোগী ব্যবস্থাগুলো অন্য লাইসেন্স ব্যবহার করে, যেমন অনেকগুলো কোড লাইব্রেরি এলজিপিএল ব্যবহার করে, আর এক্স-উইন্ডো ব্যবস্থা এমআইটি লাইসেন্স ব্যবহার করে।
তোরভাল্দ্স বলেছেন যে, লিনাক্স কার্নেল জিপিএল সংস্করণ ২ থেকে সংস্করণ ৩ এ উন্নীত হবেনা। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, নতুন লাইসেন্সের কিছু বিষয় তার পছন্দ হয়নি যেগুলো ডিজিটাল রাইট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে, এছাড়া সকল স্বত্ত্বধারীদের নিকট থেকে অনুমতি নেওয়ার বিষয়টিও অবাস্তবিক, যেখানে তারা সংখ্যায় হাজারেরও উপরে হতে পারে।
২০০১ সালে রেড হ্যাট লিনাক্স ৭.১ বিশ্লেষন করে দেখা গেছে যে তাতে ৩ কোটি লাইনেরও বেশি উৎস কোড (সোর্স কোড) রয়েছে। গঠনমূলক ব্যয় কাঠামো বিবেচনা করে দেখা গেছে, এই ডিস্ট্রিবিউশনটির উন্নয়নে ৮ হাজার মানববর্ষ লেগে যেতো, যদি এই সব সফটওয়্যার প্রথাগত স্বত্ত্বযুক্ত পদ্ধতিতে উন্নয়ন হতো এবং শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রায় ১১ হাজার কোটি বাংলাদেশি টাকা (২০১৯ সালের বাংলাদেশি টাকা হিসাবে) খরচ হতো।
বেশিরভাগ কোড (৭১%) সি দ্বারা উন্নয়নকৃত, এর পাশাপাশি অন্যান্য প্রোগ্রামিং ভাষাও ব্যবহার হয়েছে যেমন, সি++, অ্যাসেম্বলি ভাষা, পার্ল, পাইথন, ফোরট্রান এবং বিভিন্ন শেল স্ক্রিপ্টিং ভাষা। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক বা তার কিছু বেশি লাইন জিপিএল লাইসেন্সের আওতায় রয়েছে। লিনাক্স কার্নেল নিজে ছিল ২.৪ মিলিয়ন লাইন কোড, অথবা মোট পরিমাণের ৮%।
পরববর্তীতে একই বিশ্লেষণ ডেবিয়ান গ্নু/লিনাক্স সংস্করণ ৪.০ (ইচ, যেটি ২০০৭ সালে মুক্তি পায়) এর উপর চালানো হয়। এই ডিস্ট্রিবিউশনে রয়েছে ২৮৩ মিলিয়ন এর কাছাকাছি উৎস কোড লাইন, যেটি যদি প্রথাগত পদ্ধতিতে করা হলে প্রয়োজন হতো ৭৩ হাজার মানববর্ষ এবং খরচ হতো প্রায় ৬.৫ হাজার কোটি বাংলাদেশি টাকা (২০১৮ সালের বাংলাদেশি মূদ্রা হিসাবে)।
ট্রেডমার্ক
[সম্পাদনা]লিনাস টরভল্ডস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লিনাক্স ট্রেডমার্কটির মালিক। ট্রেডমার্কটির লাইসেন্সকরণ বর্তমানে দেখাশোনা করছে লিনাক্স মার্ক ইন্সটিটিউট (এলএমআই)। এলএমআই যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্যান্য দেশে লিনাক্স ট্রেডমার্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।
দর্শন
[সম্পাদনা]পারস্পারিক ব্যবহারযোগ্যতা
[সম্পাদনা]লিনাক্সের বহনযোগ্যতা
[সম্পাদনা]বহনযোগ্যতা বলতে এখানে একই সফটওয়্যারের বিভিন্ন পরিবেশে কাজ করার ক্ষমতাকে বোঝানো হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে লিনাক্স কার্নেল কেবল ৩৮৬-জাতীয় প্রসেসরের জন্যই বানানো হতো। পরবর্তীতে একে অন্যান্য স্থাপত্যের অধীনেও কর্মক্ষম করা হয়। যেমন:
- ইন্টেল/এএমডি (এক্স৮৬ স্থাপত্য)
- এক্স৮৬-৬৪ (এএমডির এএমডি৬৪ ও ইন্টেলের ইএম৬৪টি)
- আইএ-৬৪
- এআরএম স্থাপত্য
- ডিইসি আলফা
- ইএসএ/৩৯০
- মোটোরোলা ৬৮কে
- মিপ্স স্থাপত্য
- পিএ আরআইএসসি
- পাওয়ারপিসি
- সুপারএইচ
- স্পার্ক
সম্প্রদায়
[সম্পাদনা]একটি ডিস্ট্রিবিউশন ব্যাপক অর্থে এর উন্নয়নকারী এবং ব্যবহারকারী সম্প্রদায় কর্তৃক পরিচালিত হয়। কিছু বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তাদের ডিস্ট্রিবিউশন উন্নয়ন ও অনুদানের কাজ করে থাকে, একটি ভালো উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ডেবিয়ান। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানকে তাদের বাণিজ্যিক পণ্যের একটি সম্প্রদায় চালিত সংস্করণ রাখতেও দেখা যায়, যেমন- রেড হ্যাট কর্তৃক ফেডোরা এবং নভেল কর্তৃক ওপেনসুয্যে।
বিভিন্ন শহর ও অঞ্চলে, স্থানীয় সহযোগী যারা লিনাক্স ইউজার গ্রুপ (লাগ) নামে পরিচিত তারা তাদের পছন্দের ডিস্ট্রিবিউশন প্রচারণার কাজ করে, সেই সাথে ফ্রি সফটওয়্যার নিয়েও প্রচার চালায়। তারা মাঝেমধ্যে দেখা সাক্ষাতের আয়োজন করে, প্রদশর্নী, প্রশিক্ষণ, কারিগরী সহায়তা এবং অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটলে নতুন ব্যবহারকারীদের সাহায্য প্রদান করে। বিভিন্ন ইন্টারনেট সম্প্রদায়ও লিনাক্স ব্যবহারকারী এবং উন্নয়নকারীদের সহায়তা প্রদান করে। বেশিরভাগ ডিস্ট্রিবিউশন, ফ্রি/মুক্তসোর্স প্রকল্পের রয়েছে নিজস্ব আইআরসি চ্যাটরুম অথবা নিউজগ্রুপ, অনলাইন ফোরামসমূহও সহায়তার একটি ক্ষেত্র, উল্লেখ্যযোগ্য উদাহরণ হিসাবে- linuxquestions.org এবং বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউশনভিত্তিক সহায়তা ও সম্প্রদায় ফোরাম, যেমন- উবুন্টু, ফেডোরা, জেন্টু ইত্যাদি ফোরাম। লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলোর রয়েছে মেইলিং লিস্ট; সাধারণত সেখানে নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় যেমন, নির্দিষ্ট একটি তালিকার উন্নয়ন এবং ব্যবহার নিয়ে।
বিভিন্ন প্রযুক্তি ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে লিনাক্সকে তুলে ধরা হয়। লিনাক্সভিত্তিক ছাপানো পত্রিকাসমূহে প্রচ্ছদ ডিস্ক অন্তর্ভুক্ত থাকে যেখানে সফটওয়্যার অথবা এমনকি সম্পূর্ণ লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন থাকতে পারে।
যদিও লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলো বিনামূল্যে পাওয়া যায়, তবে বেশকিছু বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বিক্রয়, সহায়তা এবং বিভিন্ন উপকরনসমূহ ও ফ্রি সফটওয়্যারের উন্নয়নে অবদান রাখে। এক বিশ্লেষনে দেখা গেছে যে, ডিসেম্বর ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০১০ পর্যন্ত লিনাক্স কার্নেলের প্রায় ৭৫% কোড বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রোগ্রামারদের দ্বারা লিখিত হয়েছে, প্রায় ১৮% লিখিত হয়েছে প্রথাগত মুক্ত সোর্স সম্প্রদায় দ্বারা। কিছু উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যারা এতে অবদান রেখেছে তার মধ্যে রয়েছে ডেল, আইবিএম, হিউলেট-প্যাকার্ড, ওরাকল, সান মাইক্রোসিস্টেম (এখন ওরাকলের অংশ), নভেল এবং নকিয়া। কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষত রেড হ্যাট, নভেল, ক্যানোনিকেল লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবহার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ব্যবসা করছে।
ফ্রি সফটওয়্যার লাইসেন্স, যার উপর ভিত্তি করে লিনাক্স কার্নেল নির্ভর বিভিন্ন সফটওয়্যার উন্নয়ন করা হয়, সেটি বাণিজ্যিকীকরণে ব্যাপকভাবে অনুমতিপ্রদান এবং উৎসাহিত করে; সম্পূর্ণ এবং পৃথক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনের মধ্যে সম্পর্ককে মিথোজীবি হিসাবে কল্পনা করা যায়। বাণিজ্যিক সরবরাহকারীদের ব্যবসার একটি সাধারণ কাঠামো হল সহায়তার জন্য মূল্য নির্ধারণ করা, বিশেষত বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীদের জন্য। কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের ডিস্ট্রিবিউশনের বিশেষায়িত ব্যবসায়িক সংস্করণ প্রকাশ করে, যেখানে থাকে স্বত্ত্বযুক্ত সহায়তা এবং অনেক বেশি সংখ্যক ইন্সটলেশন নিয়ন্ত্রণকারী সুবিধাযুক্ত ব্যবস্থা বা প্রশাসনিক কার্যক্রম সহজীকরণের ব্যবস্থা।
আরেকটি ব্যবসায়িক কাঠামো হল, হার্ডওয়্যার বিক্রয়ের জন্য সফটওয়্যার প্রদান করা। কম্পিউটার শিল্পতে এটি একটি সাধারণ বিষয়, যেমন অপারেটিং সিস্টেম সিপি/এম, অ্যাপল ডস এবং ম্যাক ওএস ৭.৫ এর আগের সংস্করণগুলো, যেগুলো বিনামূল্যে কপিযোগ্য (কিন্তু পরিবর্ধন/পরিবর্তন যোগ্য নয়)। যেহেতু ১৯৮০ এর পুরোটা জুড়ে হার্ডওয়্যার একটি আদর্শ কাঠামোবদ্ধ হয়ে আসছে, ফলে হার্ডওয়্যার নির্মাতাদের জন্য এই পদ্ধতিতে লাভবান হওয়া বেশ কষ্টকর হয়ে গেছে। বর্তমানে সিস্টেম৭৬-এর পপ!_ওএস এমনই একটি উদাহরণ।
ডিস্ট্রিবিউশন
[সম্পাদনা]লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন, সংক্ষেপে ডিস্ট্রো হলো একটি সফটওয়্যার সংগ্রহ থেকে তৈরি করা অপারেটিং সিস্টেম, যেটার মূল ভিত্তি লিনাক্স কার্নেল এবং মাঝেমধ্যে একটি স্বকীয় প্যাকেজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম। লিনাক্স ব্যবহারকারীরা যেকোন একটি ডিস্ট্রিবিউশন ডাউনলোডের মাধ্যমে লিনাক্স ধারণ করে থাকে, যেগুলো আবার অনেকগুলো যন্ত্রের জন্যে উপযোগী। সে তালিকায় আছে গ্রত্থিত যন্ত্র(ওপেন্ডব্লিউআরটি) আর ব্যক্তিগত কম্পিউটার (লিনাক্স মিন্ট) থেকে ক্ষমতাসম্পন্ন সুপারকম্পিউটারও(রক ক্লাস্টার ডিস্ট্রিবিউশন)। কিছু জনপ্রিয় লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন হলো—
- রেড হ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স
- ফেডোরা (অপারেটিং সিস্টেম)
- ওপেন সুসে
- আর্চ লিনাক্স (লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন)
- মানজারো
- ডেবিয়ান
- লিনাক্স মিন্ট
- উবুন্টু
- কালি লিনাক্স
- ব্যাকবক্স (লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন)
- এলিমেন্টারি ওএস
- ডিপিন
- লিনাক্স লাইট
- এভি লিনাক্স
- বোধি লিনাক্স
ইন্টারফেস
[সম্পাদনা]কমান্ড লাইন ইন্টারফেস
[সম্পাদনা]বেশিরভাগ লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনেই ডিফল্টভাবে গ্রাফিক্যাল ডেস্কটপ পরিবেশ ব্যবহৃত হয় যেখানে কমান্ড-লাইন ইন্টারফেস একটি টার্মিনাল ইমুলেটর বা আলাদা ভার্চুয়াল কনসোল দ্বারা বাস্তবায়িত করা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ নিম্নধাপের লিনাক্স উপকরণসমূহ, যেমন গ্নু ইউজারল্যান্ড, ব্যাপকভাবে কমান্ড-লাইন ইন্টারফেস ব্যবহার করে। কমান্ড লাইন ইন্টারফেস সাধারণত পূনরাবৃত্তিমূলক বা কালক্ষেপণমূলক কাজ সমূহের স্বয়ংক্রিকরণের কাজে বহুল ব্যবহৃত হয় এবং আন্তঃপ্রক্রিয়া যোগাযোগ প্রদান করে। একটি গ্রাফিক্যাল টার্মিনাল ইমুলেটর প্রোগ্রাম লিনাক্স ডেস্কটপ থেকে কমান্ড লাইন ইন্টারফেসে প্রবেশের কাজে ব্যবহৃত হয়। একটি লিনাক্স সিস্টেমে কমান্ড লাইন ইন্টারফেস সাধারণত শেল দ্বারা বাস্তবায়িত হয়, যেটি ইউনিক্স সিস্টেমের সাথে মিথস্ক্রিয়ারও একটি প্রথাগত উপায়। সার্ভারের জন্য উন্নয়নকৃত একটি লিনাক্স সিস্টেমে সাধারণত কমান্ড লাইন ইন্টারফেসই একমাত্র ইন্টারফেস হিসাবে ব্যবহার হতে পারে।
এক্স উইন্ডো ব্যবস্থাপক
[সম্পাদনা]বেশিরভাগ লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনে ব্যবহৃত জনপ্রিয় গ্রাফিক্যাল ডেস্কটপ পরিবেশগুলো এক্স উইন্ডো সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে নির্মিত, যেটিকে সংক্ষেপে এক্স হিসাবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। এটি নেটওয়ার্ক স্বচ্ছতা প্রদান করে এবং একটি সিস্টেমে চলা গ্রাফিক্যাল অ্যাপলিকেশনসমূহ অন্য আরেকটি সিস্টেমে প্রদর্শনের অনুমতি প্রদান করে যেখানে ব্যবহারকারীকে উক্ত অ্যাপলিকেশনগুলোর সাথে মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
অন্যান্য ডেস্কটপ পরিবেশসমূহ সাধারণ এক্স উইন্ডো ম্যানেজার নামে পরিচিত, যেমন- এফভিডব্লিউএম, এনলাইটমেন্ট ও উইন্ডো মেকার, যেগুলো ডেস্কটপ পরিবেশের সাপেক্ষে আরও স্বল্প পরিমাণের কাজ সম্পন্ন করতে পারে। একটি উইন্ডো ম্যানেজার বিভিন্ন অ্যাপলিকেশন উইন্ডোসমূহের স্থানান্তর এবং চেহারা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে থাকে এবং এক্স উইন্ডো সিস্টেমের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে থাকে।
ডেস্কটপ পরিবেশসমূহ এদের আদর্শ ইন্সটলেশনের অংশ হিসাবে উইন্ডো ব্যবস্থাপক অন্তর্ভুক্ত করে (যেমন ২০১০ সাল অনুযায়ী, গ্নোমের জন্য মেটাসিটি, কেডিই এর জন্য কেউইন এবং এক্সএফসিই এর জন্য এক্সএফডব্লিউএম), যদিও নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহারকারী অন্য কোন উইন্ডো ম্যানেজার বাছাই করতে পারেন।
ডেস্কটপ পরিবেশ
[সম্পাদনা]বর্তমান সময়ে ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ কম্পিউটারে লিনাক্সের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে বেশিরভাগ লিনাক্স ডিস্ট্রোই গ্রাফিক্যাল ডেস্কটপ পরিবেশ ব্যবহার করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গ্নোম ও কেডিই প্লাজমা ডেস্কটপ।
এর পাশাপাশি এলএক্সডিই, এক্সএফসিই ইত্যাদি তুলনামূলক হালকা ডেস্কটপ পরিবেশও রয়েছে যেগুলো মূলত নিম্ন-কনফিগারেশনের কম্পিউটার সিস্টেমকে উদ্দেশ্য করে উন্নয়ন করা হয়েছে।
ডেস্কটপে লিনাক্সের পারফরমেন্স সবসময়ই একটি বিতর্কিত ইশু, উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, ২০০৭ সালে কন কলিভাস শুধুমাত্র সার্ভারে লিনাক্সের পারফরমেন্সের দিকে নজর দেওয়ার জন্যে লিনাক্স সম্প্রদায়কে দায়ী করেন। তিনি ডেস্কটপের প্রতি এরুপ ঔদাসীন্য দেখে হতাশ হয়ে লিনাক্স কার্নেল উন্নয়ন থেকে সরে আসেন এবং পরবর্তীতে এই বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকারও প্রদান করেন। তখন থেকেই ডেস্কটপে লিনাক্সের পারফরমেন্স উন্নয়নের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কাজ শুরু হয়েছে। আপস্টার্ট এধরনেরই একটি প্রকল্প যেটির মূল লক্ষ্য হলো লিনাক্স বুটের সময় ত্বরান্বিত করা।
-
প্লাজমা ৫
-
বাজি
-
এলএক্সকিউটি
-
ইডিই
-
এনলাইটেনমেন্ট
-
এটোইলে
-
গ্নু স্টেপ
-
এমবিয়েন্ট
-
সিডিই
-
লুমিনা
-
মেনার্ড
-
মেজো
-
প্রজেক্ট লুকিং গ্লাস
-
রেজর কিউটি
-
রক্স ডেস্কটপ
-
সুগার
-
ট্রিনিটি
-
টিডব্লিউএম
-
ইউনিটি
-
উইন্ডো মেকার
প্রয়োগ
[সম্পাদনা]অতীতে লিনাক্স সংস্থাপন ও এর গঠন-প্রকৃতি নির্ধারণের জন্য ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের প্রয়োজন হত। তাছাড়া ব্যবহারকারীরা লিনাক্সের ভেতরের অংশে সরাসরি প্রবেশাধিকার পান। এই কারণে অতীতের লিনাক্স ব্যবহারকারীরা বেশির ভাগই মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ও ম্যাকওএস ব্যবহারকারীদের চেয়ে বেশি প্রযুক্তিমনা হতেন। তারা নিজেদেরকে হ্যাকার বা গিক বলতেও ভালবাসতেন।
তবে এখন লিনাক্স ব্যবহারকারীদের এই বাঁধাধরা রূপ আর দেখা যায় না। লিনাক্সের ব্যবহারকারী-বন্ধুভাবাপন্নতা অনেক বেড়েছে, আর লিনাক্সের বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউশন এখন অনেক জায়গায় ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ উদ্দেশ্য ক্ষেত্র, যেমন ইমেজ রেন্ডারিং, ওয়েব সেবা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে এবং সার্ভারেও লিনাক্সের ব্যবহার চোখে পড়ার মত বৃদ্ধি পেয়েছে। লিনাক্স বর্তমানে ডেস্কটপেও উল্লেখযোগ্যভাবে জায়গা করে নিচ্ছে।
লিনাক্স তথাকথিত ল্যাম্প সার্ভার-সফটওয়্যার সম্মিলনের (লিনাক্স, অ্যাপাচি, মাইএসকিউএল, পার্ল/পাইথন/পিএইচপি) ভিত্তি। ল্যাম্প প্ল্যাটফর্মটি ওয়েব উন্নয়নকারীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। উইকিপিডিয়ার জন্য লেখা মিডিয়াউইকি সফটওয়্যারটিও ল্যাম্প প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে। এছাড়া লিনাক্সে রয়েছে অনেক ডাটাবেস সফটওয়্যার যেমন - মাইএসকিউএল, সাইবেস এএসই, এমএসকিউএল, ইত্যাদি।
সার্ভার এবং ডেস্কটপে সাধারণ ব্যবহারযোগ্য লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজের জন্য বিশেষভাবে উন্নয়নকৃত ডিস্ট্রিবিউশনও রয়েছে, এসকল কাজের মধ্যে রয়েছে, কম্পিউটার স্থাপত্য সমর্থন, গ্রথিত যন্ত্র, স্থায়ীত্ব, নিরাপত্তা, কোন একটি অঞ্চল বা ভাষার আঞ্চলিকতা, নির্দিষ্ট ব্যবহারকারী দলকে উদ্দেশ্য করা, রিয়েল টাইম অ্যাপলিকেশন সমর্থন, অথবা কোন ডেস্কটপ পরিবেশের নিজস্ব ডিস্ট্রিবিউশন। অধিকন্তু, কিছু বিশেষ ডিস্ট্রিবিউশনে কেবলমাত্র পূর্ণ ফ্রি সফটওয়্যার অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে ৩০০ এর অধিক ডিস্ট্রিবিউশন উন্নয়নরত অবস্থায় আছে, যার মধ্যে এক ডজনের মত ডিস্ট্রিবিউশন সাধারণ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা ও পরিচিতিঅর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
বেশকিছু শিল্প সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং হার্ডওয়্যার কনফারেন্স লিনাক্সের জন্য বিভিন্ন প্রচলিত হার্ডওয়্যারসমূহ পরিচালনা ও সহায়তা উন্নত করার কাজে নিয়োজিত আছে, যেমন- ফ্রিডমএইচইসি।
লিনাক্স ব্যবহার
[সম্পাদনা]ডেস্কটপ
[সম্পাদনা]লিনাক্সে চালানোর মত উচ্চমানের ডেস্কটপ সফটওয়ারের প্রচন্ড চাহিদা আছে। এধরনের সফটওয়ার হচ্ছে লেখালাখি (word processors), হিসাবনিকাশ (spreadsheets), ইমেইল গ্রাহক (email clients), ওয়েব ব্রাউজার (web browsers) ইত্যাদি।
নিচে কিছু প্রধান লিনাক্স সফটওয়ারের তালিকা দেয়া হলঃ
- অপিস: ওপেনঅফিস, লিব্রাঅফিস, আইবিএম লোটাস সিম্ফনি ইত্যাদি অপিস ব্যবস্থাপনার কাজে লাগে
- ইন্টারনেট: মোজিলা ফায়ারফক্স, মোজিলা থান্ডারবার্ড, ব্রেভ ওয়েব ব্রাউজার, অপেরা, গুগল ক্রোম, ক্রোমিয়াম, পিজিন, কোপেতে, ট্রান্সমিশন, এমপ্যাথি, ডেল্যুয, জিডব্লিউগেট, ইউগেট, টিমভিউয়ার
- মাল্টিমিডিয়া: ভিএলসি মিডিয়া প্লেয়ার, সেলুলয়েড, টোটেম (গ্নোম ভিডিওজ), অ্যামারক, ক্যাফেইন, এসএম প্লেয়ার,রিদমবক্স, ক্লেমেন্টাইন, কেথ্রিবি
- গ্রাফিক্স: গিম্প, ইঙ্কস্পেস, স্ক্রাইবাস, ব্লেন্ডার, গ্নোম ফটোজ, জিথাম্ব
- প্রোগ্রামিং: অ্যাটম, ভিজুয়াল স্টুডিও কোড, কোড::ব্লকস, নেটবিনস, এক্লিপ্স, কেডেভেলপ, পাইচার্ম, কোয়ান্টা প্লাস, কিউটি ডিজাইনার
যদিও লিনাক্সে ডেস্কটপ প্রকাশনা অথবা পেশাদার সঙ্গীতের মত বিশেষ বিষয়ের জন্য বাণিজ্যিক মানের সফটওয়্যারের অভাব আছে, তা সত্ত্বেও যে সমস্ত ব্যবহারকারী ম্যাক ওএস অথবা উইন্ডোজ ছেড়ে লিনাক্স ব্যবহার করা শুরু করেছেন, তারা আগের অপারেটিং সিস্টেমের সমতুল্য প্রায় সব সফটওয়্যারই লিনাক্সে সুলভ।[১৮] তাছাড়া যেসব সফটওয়ার উইন্ডোজ বা ম্যাক ওএসের জন্য বিনামূল্যে পাওয়া যায়, সেগুলোও সাধারণত লিনাক্সের জন্য পাওয়া যায়। অনেক স্বত্বযুক্ত সফটওয়ারও বর্তমানে লিনাক্স সমর্থন করে;[১৯] যেমন- অ্যাডোব ফ্ল্যাশ প্লেয়ার, অ্যাডোব রিডার, নিরো বার্নিং রম, অপেরা ওয়েব ব্রাউজার, রিয়েল প্লেয়ার, স্কাইপি। ওয়াইন নামে উম্মুক্ত সোর্সের একটি প্রকল্পের ক্রসওভার এমন একটি সমাধান যা কিনা মাইক্রোসফট অফিস, অ্যাডোবি ফটোশপ, ড্রিমওয়েভার, এডোব ইলাস্ট্রেটর ইত্যাদিের উইন্ডোজ সংস্করণ লিনাক্সে চালাতে পারে।
গেমস
[সম্পাদনা]উইন্ডোজ, বিভিন্ন গেমিং কনসোল কিংবা ম্যাক ওএস টেনের তুলনায় লিনাক্সে খেলার সফটওয়্যার নেই বললেই চলে। লিনাক্সের বাজার খুব সীমিত হওয়ায় কোন খেলা তৈরির প্রতিষ্ঠান লিনাক্সের জন্য গেম তৈরি করতে আগ্রহী হয়নি। তবে এখন লিনাক্সে স্টীম দিয়ে অনেক গেমস খেলা যায়। লিনাক্স গেমার্স গেম লিস্ট[২০] ও দ্য লিনাক্স গেম টোম[২১] এ অনেকগুলো লিনাক্সে খেলার মত খেলার তালিকা আছে।
কিছু কিছু উম্মুক্ত সোর্সের খেলা আছে যেগুলো বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, যেমন নেটহ্যাক ও টাক্স রেসার। এদের উপর ভিত্তি করে অনেক খেলা যেমন ফ্রিসিভ ও দি আর-কুয়ান মাস্টার্স তৈরি হয়েছে। এছাড়াও লিনাক্স প্লাটফর্মের জন্য নির্মিত আরো কিছু জনপ্রিয় এবং উচ্চমানসম্পন্ন খেলার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- এসল্ট কিউব, আরবান টেরর, আমেরিকান আর্মি, ড্রিমচেজ, ভিড্রিফট, টরকস, ডুম, এলিয়েন এরিনা, জিরোএডি, এনিমি টেরিটরি, এক্সমোটো, ফ্রোজেন বাবল ইত্যাদি। কোন কোন খেলা তৈরির প্রতিষ্ঠান সরাসরি লিনাক্সের উপযোগী খেলা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। যেমন- আইডি সফটওয়ারের কোয়েক ৪। অনেক প্রতিষ্ঠান উইন্ডোজে চলা খেলাগুলোকে লিনাক্সের উপযোগী করে তৈরি করছেন। ১৯৯৮ সালে প্রতষ্ঠিত লোকি সফটওয়ার, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত লিনাক্স গেম পাবলিশিং এ ধরনের প্রতিষ্ঠান। ওয়াইন, সেডেজা ও ক্রসওভার গেমস উইন্ডোজের অনেক গেম লিনাক্সে চালানোর সুবিধা দিচ্ছে। ভার্চুয়াল মেশিন ও নিম্ন-স্তিরের ইমুলেটর এর মাধ্যমেও অন্য প্লাটফর্মের (যেমন- সনি প্লেস্টেশন, নিনটেন্ডো উই]] ইত্যাদি) জন্য তৈরীকৃত খেলা লিনাক্সে চালানো যাচ্ছে।
সার্ভার, সুপারকম্পিউটার এবং এম্বেডেড যন্ত্র
[সম্পাদনা]লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলো দীর্ঘসময় ধরেই সার্ভার সার্ভার অপারেটিং সিস্টেম হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, এই ক্ষেত্রে তারা উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণে অবদান রেখেছে, ২০০৬ সালে নেটক্রাফটের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ১০টির মধ্যে ৮টি নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট হোস্টিং কোম্পানী তাদের ওয়েব সার্ভারে লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবহার করে থাকে। ২০০৮ এর জুন পর্যন্ত, ১০টির মধ্যে ৫টিতে লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন, ১০টির মধ্যে ৩টিতে ফ্রিবিএসডি এবং ১০টির মধ্যে ২টিতে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ চলছে, ২০১০ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, ১০টির মধ্যে ৬টিতে লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন, ১০টির মধ্যে ২টিতে ফ্রি-বিএসডি এবং ১০টির মধ্যে ১টিতে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ চলছে। লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলো হলো ল্যাম্প সার্ভার-সফটওয়্যার সংমিশ্রনের (লিনাক্স, অ্যাপাচে, মাইএসকিউএল, পার্ল/পিএইচপি/পাইথন) প্রধান অনুষংগ যেটি সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নকারীদের মাঝে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং যেটি ওয়েবসাইট হোস্টিংয়ের একটি কমন প্লাটফর্ম হিসাবে বর্তমানে সমাদৃত। লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলো মেইনফ্রেম কম্পিউটারের অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমগুলোর তুলনায় তাদের মূল্যমানের কারণে বিগত কয়েক দশক যাবত মেইনফ্রেম কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম হিসাবেও জনপ্রিয়তা পেয়ে আসছে। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে, বড় কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত আইবিএম মেইনফ্রেম কম্পিউটারভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স সার্ভার বিস্তৃত অর্থে বাজারজাতকরন ও বিক্রয়ের ঘোষণা দেয়। সুপারকম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম হিসাবেও লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলো সমাদৃত, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ সিস্টেমের মধ্যে ৪৫৯ টি (৯১.৮%) লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন দ্বারা চলে। বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম সুপার-কম্পিউটার বলে পরিচিত আইবিএমের সিকুয়া এর অপারেটিং সিস্টেম হিসাবেও লিনাক্স ব্যবহৃত হবে যেটি ২০১১ সালে কার্যক্ষম হবে।
কম দাম ও উচ্চমানের কাস্টমাইজেশন সুবিধার কারণে গ্রথিত যন্ত্রগুলোতে লিনাক্স ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গুগল কর্তৃক উন্নয়নকৃত অ্যান্ড্রয়েড এধরনেরই একটি লিনাক্সভিত্তিক কাস্টোমাইজড অপারেটিং সিস্টেম যেটি এমুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। মুক্তসোর্স প্লাটফর্মে লিনাক্স ভিত্তিক পিডিএ এবং মুঠোফোন ২০০৭ সাল থেকে জনপ্রিয় হওয়া শুরু করে; উদাহরণস্বরুপ, নকিয়া এন৮১০, ওপেনমোকো নিও১৯৭৩ এবং মটোরোলার আরওকেআর এইট। এই ধারা অব্যাহত রেখে পাম (পরবর্তীতে এইচপি কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত) একটি লিনাক্সভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম উন্নয়ন করে যেটির নাম হলো 'ওয়েবওএস' এবং যেটি পাম প্রি স্মার্টফোন সিরিজে ব্যবহৃত হয়। জনপ্রিয় টিভো ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার একটি কাস্টমাইজড লিনাক্স ব্যবহার করে, একইভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন- সিসকো/লিংকসিস কর্তৃক বাজারজাত কৃত বিভিন্ন রাউটার ও নেটওয়ার্ক ফায়ারওয়ালেও এধরনের লিনাক্স সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।
কর্গ ওয়েসিস, কর্গ ক্রোনাস, ইয়ামাহা মোটিফ এক্সএফ/এক্সএস মিউজিক ওয়ার্কস্টেশন, ইয়ামাহা এস৯০এক্সএস/এস৭০এক্সএস, ইয়ামাহা এমওএক্স৬/এমওএক্স৮ সিন্থেসাইজার, ইয়ামাহা মোটিফ-র্যাক এক্সএফ টক জেনারেটর মডিউল এবং রোল্যান্ড আরডি-৭০০জিএক্স ডিজিটাল পিয়ানো লিনাক্স ব্যবহার করে। মঞ্চসজ্জায় ব্যবহৃত আলোক সিস্টেমেও লিনাক্স ব্যবহৃত হয়, যেমন- হোলহুগল কনসোল।
পাদটীকা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ লিনাক্স অনলাইন (২০০৮)। "লিনাক্স লোগো ও মাসকট"। আগস্ট ১৫, ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১১, ২০০৯।
- ↑ "জিএনইউ ইউজারল্যান্ড"। ১৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "ইউনিক্স ফান্ডামেন্টালস — সিস্টেম এডমিনিস্ট্রেশন ফর সাইবোর্গস"। অক্টোবর ৫, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "অপারেটিং সিস্টেম — ইন্ট্রোডাকশন টু ইনফরমেশন এন্ড কমুনিকেশন টেকনোলজি"। ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "The Linux Kernel Archives: Frequently asked questions"। kernel.org। সেপ্টেম্বর ২, ২০১৪। সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৫।
- ↑ Eckert, জেসন ডব্লিউ. (২০১২)। লিনাক্স+ গাইড টু লিনাক্স সার্টিফিকেশন (তৃতীয় সংস্করণ)। বোস্টন, ম্যাসাচুসেটস: Cengage Learning। পৃষ্ঠা ৩৩। আইএসবিএন 978-1111541538। মে ৯, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৪, ২০১৩।
The shared commonality of the kernel is what defines a system's membership in the Linux family; the differing OSS applications that can interact with the common kernel are what differentiate Linux distributions.
- ↑ "টুয়েন্টি ইয়ার্স অব লিনাক্স একোর্ডিং টু লিনুস বেনেদিক্ত তোরভাল্দ্স"। জেডিনেট। এপ্রিল ১৩, ২০১১। সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৯-১৯।
- ↑ লিনুস বেনেডিক্ট তোরভাল্দ্স (অক্টোবর ৫, ১৯৯১)। "ফ্রি মিনিক্স-লাইক কার্নেল সোর্সেস ফর ৩৮৬-এটি"। সংবাদগোষ্ঠী: comp.os.minix। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১১।
- ↑ "হোয়াট ইজ লিনাক্স-এন ওভারভিউ অব লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম"। লিনাক্স ফাউন্ডেশন। এপ্রিল ৩, ২০০৯। ১৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৫, ২০১১।
- ↑ ব্যারি লিভাইন (আগস্ট ২৬, ২০১৩)। "লিনাক্স' 22th [sic] বার্থডেবিজ কোমেমোরেডেট - সাটলি - বাই ক্রিয়েটর"। সিম্পলার মিডিয়া গ্রুপ, ইংক.। মে ১৮, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০১৫।
প্রধানত ইন্টেল এক্স-৮৫ পিসির জন্যে ডেভেলপ করা, তোরভাল্দ্স' "শখ" এখন এটি এমন সব প্ল্যাটফর্মের জন্যে প্রকাশ করা যা ইতোমধ্যে করা হয়নি।
- ↑ Thibodeau, Patrick (২০০৯)। "আইবিএম এর শেষ মেইনফ্রেম লিনাক্স নির্ভর"। কম্পিউটারওয়ার্ল্ড (প্রকাশিত হয় ডিসেম্বর ৯, ২০০৯)। নভেম্বর ১১, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২২, ২০০৯।
- ↑ Lyons, Daniel (মার্চ ১৫, ২০০৫)। "সুপারকম্পিউটার জগৎ লিনাক্সের অধীনে"। ফোর্বস। ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২২, ২০০৭।
- ↑ "ডেস্কটপ ওএসের মার্কেট শেয়ার"। Netmarketshare.com। আগস্ট ১১, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১২, ২০১৬।
- ↑ "Archived copy"। নভেম্বর ১৩, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৩, ২০১৩।
- ↑ স্টিভেন জে. ভন-নিকোল। "ক্রোমবুক শিপমেন্ট লিপ"। ZDNet। সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫।
- ↑ লিনাক্স ডিভাইস (নভেম্বর ২৮, ২০০৬)। "ট্রলটেক রোলস কম্পলিট লিনাক্স স্মার্টফোন স্ট্যাক"। মে ২৫, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১২, ২০১৭।
- ↑ The table of equivalents / replacements / analogs of Windows software in Linux.
- ↑ "The Global Desktop Project, Building Technology and Communities"। ২০০৬-০৪-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৫-০৭।
- ↑ লিনাক্স গেমার্স গেম লিস্ট
- ↑ "দি লিনাক্স গেম টোম"। ২৮ আগস্ট ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০০৭।