রমেশ পাওয়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রমেশ পাওয়ার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরমেশ রাজারাম পাওয়ার
জন্ম (1978-05-20) ২০ মে ১৯৭৮ (বয়স ৪৫)
মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত
উচ্চতা৫ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৬৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ স্পিন
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, কোচ
সম্পর্ককেআর পাওয়ার (কাকা), কিরণ পাওয়ার (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৫৭)
১৮ মে ২০০৭ বনাম বাংলাদেশ
শেষ টেস্ট২৫ মে ২০০৭ বনাম বাংলাদেশ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৫৫)
১৬ মার্চ ২০০৪ বনাম পাকিস্তান
শেষ ওডিআই২ অক্টোবর ২০০৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৯ - ২০১৩মুম্বই
২০১৩ - ২০১৪রাজস্থান
২০১৪ - ২০১৫গুজরাত
২০০৮ - ২০১০, ২০১২কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব
২০১১কোচি তুস্কার্স কেরালা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩১ ১৪৮ ১১৩
রানের সংখ্যা ১৩ ১৬২ ৪,২৪৫ ১,০৮১
ব্যাটিং গড় ৬.৫০ ১১.৬৪ ২৬.৫৩ ১৭.১৫
১০০/৫০ –/– –/১ ৭/১৭ –/৪
সর্বোচ্চ রান ৫৪ ১৩১ ৮০
বল করেছে ২৫২ ১,৫৩৬ ২৯,১৫৮ ৫,৫৫৭
উইকেট ৩৪ ৪৭০ ১৪২
বোলিং গড় ১৯.৬৬ ৩৫.০২ ৩১.৩১ ৩০.৯২
ইনিংসে ৫ উইকেট ২৭
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৩৩ ৩/২৪ ৭/৪৪ ৫/৫৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং –/– ৩/– ৫১/০ ২৫/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ ডিসেম্বর ২০২০

রমেশ রাজারাম পাওয়ার (উচ্চারণ; মারাঠি: रमेश पोवार; জন্ম: ২০ মে, ১৯৭৮) মহারাষ্ট্রের বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ স্পিন বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন রমেশ পাওয়ার

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৯৯-২০০০ মৌসুম থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রমেশ পাওয়ারের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। মজবুত গড়নের অফ-স্পিনার হিসেবে খেললেও দর্শনীয়ভাবে ব্যাট হাতে দক্ষতা প্রদর্শনে সচেষ্ট ছিলেন। গত চার মৌসুমের ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি।

২০০০ সালে ব্যাঙ্গালোরভিত্তিক ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমির প্রথম স্তরের প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে মনোনীত হন।[১] অনেকগুলো বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ ভালোমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছেন রমেশ পাওয়ার। ১৬ বছর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছিলেন।[২]

২০০২-০৩ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফির শিরোপা বিজয়ী মুম্বই দলের সফলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ২০ উইকেট লাভের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাকে কখনো সাত নম্বরের উপরে ব্যাটিং করতে দেখা যায়নি। কখনোবা আরো নিচে দশ নম্বরে ব্যাটিং করতে দেখা গেছে। তাসত্ত্বেও, মুম্বইয়ের পক্ষে ঐ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন। ৪৬-এর অধিক গড়ে ৪১৮ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। দলের সঙ্কটকালীন সময়েই তার অধিকাংশ রান এসেছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তার এ সফলতা দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়।

২০০৫-০৬ মৌসুমে ৬৩ উইকেট লাভ করেন; পূর্ববর্তী বছরে পেয়েছিলেন ৫৪ উইকেট। আবারও তিনি ব্যাট ও বল হাতে নিয়ে সফল হন। তবে, কিছু ক্রিকেটবোদ্ধা তার কোমড়ের গড়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যাতে বেশ চর্বি জমতে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন যে, আমি কখনো শারীরিক সমস্যার কারণে কোন খেলায় অনুপস্থিত থাকিনি। তবে, পায়ের গোড়ালীর সমস্যার কারণে জুন, ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুইটি ওডিআইয়ে তাকে খেলানো হয়নি।

লিভারপুল ও জেলা ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় সেফটন পার্কের পক্ষে খেলেন। জুলাই, ২০০৫ সালে বিনায়ক মানের আঘাতের কারণে তিনি ক্লাবের পক্ষে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন। দশ খেলায় অংশ নিয়ে ৩২.৫০ গেড় ৩২৫ রান সংগ্রহের পাশাপাশি ২১ গড়ে ২৫ উইকেট লাভ করেন।[৩]

দল পরিবর্তন[সম্পাদনা]

মে, ২০০৮ সালে আইপিএলে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। প্রথম ওভারেই তিনি উইকেট পেয়েছিলেন। আইপিএলে প্রথম তিন মৌসুম দলটিতে পাড় করেন। ২০১১ সালের আইপিএলে বিলুপ্ত ও বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত কোচি তুস্কার্স কেরালার প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০১২ সালে পুনরায় সাবেক দলটিতে ফিরে যান।

মুম্বই ক্রিকেট দলের পক্ষে ১৪টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট মৌসুম অতিবাহিত করার পর ২০১৩ সালে রাজস্থানের পক্ষে খেলেন। তবে, নতুন দলে তেমন সুবিধে করতে পারেননি। ছয় খেলায় ৬২.২০ গড়ে মাত্র ১০ উইকেট পান। তবে, ২০১৪ সালে বিসিসিআইয়ের নির্দেশনায় প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়শন কর্তৃক বেরিয়ে যান। পরের বছর গুজরাতে যোগ দেন।[৪]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট ও একত্রিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন রমেশ পাওয়ার। সবগুলো টেস্টই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ১৮ মে, ২০০৭ তারিখে চট্টগ্রামে স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ২৫ মে, ২০০৭ তারিখে ঢাকায় একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

২০০৫-০৬ মৌসুমের ঘরোয়া ক্রিকেটে ৬৩ উইকেট লাভের ফলে তাকে পুনরায় জাতীয় দলের পক্ষে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। উপর্যুপরী দ্বিতীয় মৌসুমে পঞ্চাশোর্ধ্ব উইকেটের সন্ধান পান। পাকিস্তান গমনার্থে ভারত দলের পক্ষে প্রথমবারের মতো তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শোয়েব আখতারমোহাম্মদ সামি’র পেস বল থেকেও কিছু রান তুলেছেন। তবে, ২০০৬ সালের শুরুরদিকে ওডিআই দলে ফেরার পূর্ব-পর্যন্ত তাকে আর খেলানো হয়নি।

জানুয়ারি, ২০০৭ সালে আঘাতের কারণে দলের বাইরে থাকেন। ফলশ্রুতিতে, ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্যে অনিল কুম্বলেকে দলের দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হয়। তবে, দূর্বলমানের ফিল্ডিংয়ের কারণে তাকে ভারত দলের বাইরে রাখতে সহায়তা করে।

কোচিংয়ে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

নভেম্বর, ২০১৫ সালে তিনি সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। ২০১৫-১৬ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফির পর তিনি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথা জানান।[৫] অবসর গ্রহণের পর অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তিতে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে মনোনীত হন। বিসিসিআই তাকে ২৫ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট সময়কালে বেঙ্গালুরুতে প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপনের কথা জানায়।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ১৪ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়। বর্তমানে তিনি ভারত এ দলের বোলিং কোচের দায়িত্বে রয়েছেন। অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বি-পক্ষীয় সিরিজসহ শ্রীলঙ্কা সফর ও পরবর্তীতে নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত আইসিসি মহিলা বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে রমেশ পাওয়ারের কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিসিসিআই সম্পাদক অমিতাভ চৌধুরী মন্তব্য করেন যে, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখ পর্যন্ত তাকে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে পূর্ণাঙ্গকালীন দায়িত্ব প্রদান করেছে।

বিতর্কিত ভূমিকা[সম্পাদনা]

২০১৮ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় তারকা ব্যাটার মিতালী রাজের সাথে তার কথাকাটাকাটি হয় ও ফলশ্রুতিতে তাকে সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ দেয়া হয়নি। এরফলে, বিশ্বকাপে দলের বাজে খেলার জন্যে এ ঘটনাকে দায়ী করা হয়।[৬]

মুম্বইয়ের মাতুয়াঙ্গা এলাকায় রুপারেল কলেজ অব সায়েন্স, কমার্স এন্ড আর্টসের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তিনি। তার অপর ভ্রাতা কিরণ পাওয়ার ক্রিকেট খেলেছেন ও বর্তমানে বিদর্ভ ক্রিকেট দলের অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে কোচের দায়িত্বে রয়েছেন।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ramchand, Partab (২০০০-০৪-১৫)। "First list of NCA trainees"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০২-০৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. Veera, Sriram (১০ ডিসেম্বর ২০১৬)। "The art of bowling spin at Wankhede"। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  3. "Sefton Park CC - Site"। ২০১৩-১২-০৯। ২০১৩-১২-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-০৬ 
  4. Ramesh Powar signs for Gujarat
  5. "Ramesh Powar to retire after 2015–16 Ranji Trophy"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৫ 
  6. "Hindustan Times" 
  7. Vijay Telang appointed Vidarbha coach

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]