সূরা ক্বদর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
+
Addbot (আলোচনা | অবদান)
বট: আন্তঃউইকি সংযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা এখন উইকিউপাত্ত ...
৪৪ নং লাইন: ৪৪ নং লাইন:


[[বিষয়শ্রেণী:সূরা]]
[[বিষয়শ্রেণী:সূরা]]

[[ar:سورة القدر]]
[[az:Qədr surəsi]]
[[ce:Сура Кхел]]
[[de:Al-Qadr]]
[[en:Al-Qadr (sura)]]
[[fa:قدر (سوره)]]
[[fi:Al-Qadr]]
[[he:סורת אל-קדר]]
[[hi:अल-कद्र]]
[[id:Surah Al-Qadr]]
[[jv:Surat Al Qadr]]
[[kk:Әл-Қадр сүресі]]
[[ku:Qedr]]
[[ml:ഖദ്‌ർ]]
[[ms:Surah Al-Qadr]]
[[nl:Soera De Waardevolle Nacht]]
[[ps:سورة القدر]]
[[pt:Al-Qadr]]
[[ru:Сура Аль-Кадр]]
[[sl:Noč kadr (sura)]]
[[su:Al Qodar]]
[[sv:Al-Qadr]]
[[tr:Kadr Suresi]]
[[ur:القدر]]

২২:১৬, ৮ মার্চ ২০১৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

সূরা আল কদর (আরবি: سورة القدر) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৯৭ নম্বর সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৫ টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১। আল কদর সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

কদরের এক অর্থ মাহাত্ন্য ও সম্মান। এর মাহাত্ন্য ও সম্মানের কারণে একে "লায়লাতুল-কদর" তথা মহিম্মান্বিত রাত বলা হয়। আবু বকর ওয়াররাক বলেনঃ এ রাত্রিকে লায়লাতুল-কদর বলার কারণ এই যে, আমল না করার কারণে এর পূর্বে যার কোন সম্মান ও মূল্য মহিমান্বিত থাকে না, সে এ রাত্রিতে তওবা-এস্তেগফার ও এবাদতের মাধ্যমে সম্মানিতও হয়ে যায়।

শানে-নুযূল

ইবনে আবী হাতেম (রাঃ)-এর রেওয়ায়েতে আছে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) একবার বনী-ইসরাঈলের জনৈক মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। সে এক হাজার মাস পর্যন্ত অবিরাম জেহাদে[১] মশগুল থাকে এবং কখনও অস্ত্র সংবরণ করেনি। মুসলমানগণ একথা শুনে বিস্মিত হলে এ সূরা কদর অবতীর্ণ হয়। এতে এ উম্মতের জন্যে শুধু এক রাত্রির ইবাদতই সে মুজাহিদের এক হাজার মাসের এবাদত অপেহ্মা শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করা হয়েছে। ইবনে জরীর (রহঃ) অপর একটি ঘটনা এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, বনী-ইসরাঈলের জনৈক এবাদতকারী ব্যক্তি সমস্ত রাত্রি এবাদতের মশগুল থাকত ও সকাল হতেই জেহাদের জন্যে বের হয়ে যেত এবং সারাদিন জেহাদে লিপ্ত থাকত। সে এক হাজার মাস এভাবে কাটিয়ে দেয়। এর পরিপ্রেহ্মিতেই আল্লাহ্‌ তাআলা সূরা-কদর নাযিল করে এ উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন। এ থেকে আরও প্রতীয়মান হয় যে, শবে-কদর উম্মতে মুহাম্মদীরই বৈশিষ্ট্য।[২]

সমস্ত ঐশী কিতাব রমযানেই অবতীর্ণ

হযরত আবু যর গেফারী (রাঃ) বর্ণিত রেওয়ায়েতে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেনঃ ইবরাহীম (আঃ)-এর সহীফাসমূহ ৩রা রমযানে, তওরাতে ৬ই রমযানে, ইঞ্জিল ১৩ই রমযানে এবং যাবুর ১৮ই রমযানে অবতীর্ণ হয়েছে। কোরআন পাক ২০শে রমযানুল-মোয়ারকে নাযিল হয়েছে।[৩] হাদীসে আছে, শবে-কদরে জিবরাঈল ফেরেশতাদের বিরাট এক দল নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং যত নারী-পুরুষ নামায অথবা যিকরে মশগুল থাকে, তাদের জন্যে রহমতের দোয়া করেন। ফেরেশতাগণ শবে-কদরে সারা বছরের অবধারিত ঘটনাবলী নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে। কোন কোন তফসীরবিদ একে "সালাম্মুন" এর সাথে সম্পর্কযুক্ত করে এ অর্থ করেছেন যে, এ রাত্রিটি যাবতীয় অনিষ্ট ও বিপদাপদ থেকে শান্তিস্বরূপ।[৪] শবে-কদরের এই বরকত রাত্রির কোন বিশেষ অংশে সীমিত নয়; বরং ফজরের উদয় পর্যন্ত বিস্তৃত।

আয়াতসমূহ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

(১) আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।
(২) শবে-কদর সম্বন্ধে আপনি কি জানেন?
(৩) শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
(৪) এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।
(৫) এটা নিরাপত্তা যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

ব্যাখ্যা

(১) এখানে বলা হয়েছে, আমি কদরের রাতে কোরআন নাযিল করেছি আবার সূরা বাকারায় বলা হয়েছে,

এ থেকে জানা যায়, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) কাছে হেরা গূহায় যে রাতে আল্লাহর ফেরেশতা অহী নিয়ে এসেছিলেন সেটি রমযান মাসের একটি রাত। এই রাতকে এখানে কদরের রাত বলা হয়েছে। সূরা দুখানে একে মুবারক রাত বলা হয়েছে। বলা হয়েছেঃ

এই রাতে কোরআন নাযিল করার দুটি অর্থ হতে পারে। প্রথম অর্থ হচ্ছে, এই রাতে সমগ্র কোরআন অহীর ধারক ফেরেশতাদেরকে দিয়ে দেয়া হয়। অতপর অবস্থা ও ঘটনাবলী অনুযায়ী তেইশ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে জিবরাঈল (আঃ) আল্লাহর হুকুমে তার আয়াত ও সূরাগুলি রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর ওপর নাযিল করতে থাকেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ অর্থটি বর্ণনা করেছেন। দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, এই রাত থেকেই কোরআন নাযিলের সূচনা হয়। এটি ইমাম শা'বীর উক্তি। এটি একটি অভ্রান্ত সত্য, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর এবং তঁর ইসলামী দাওয়াতের জন্য কোনো ঘটনা বা ব্যাপারে সঠিক নির্দেশ লাভের প্রয়োজন দেখা দিলে তখনই আল্লাহ কোরআনের সূরা ও আয়াতগুলি রচনা করতেন না। বরং সমগ্র বিশ্ব জাহানের সৃষ্টির পূর্বে অনাদিকালে মহান আল্লাহ পৃথিবতে মানব জাতির সৃষ্টি, তাদের মধ্যে নবী প্রেরণ, নবীদের ওপর কিতাব নাযিল, সব নবীর পরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-কে পাঠানো এবং তাঁর প্রতি কোরআন নাযিল করার সমস্ত পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছিলেন। কদরের রাতে কেবলমাত্র এই পরিকল্পনার শেষ অংশের বাস্তবায়ন শুরু হয়।

কোনো কোনো তাফসীরকার কদরকে তকদীর অর্থে গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ এই রাতে আল্লাহ তকদীরের ফায়সালা জারী করার জন্য তা ফেরেশতাদের হাতে তুলে দেন। সূরা দুখানের এ আয়াতটি এই বক্তব্য সমর্থন করেঃ

অন্যদিকে ইমাম যুহরী বলেন, কদর অর্থ হচ্ছে শ্রেষ্টত্ব ও মর্যাদা। অর্থাৎ এটি অত্যন্ত মর্যাদাশালী রাত। এই অর্থ সমর্থন করে এই সূরার এ আয়াতটি

এ ব্যাপারে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা যায়। এ সম্পর্কে প্রায় ৪০টি মতের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে আলেম সমাজের সংখ্যাগুরু অংশের মতে রমযানের শেষ দশ তারিখের কোনো একটি বেজোড় রাত হচ্ছে এই কদরের রাত। আবার তাদের মধ্যেও বেশীরভাগ লোকের মত হচ্ছে সেটি সাতাশ তারিখের রাত। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বলেনঃ সেটি সাতাশের বা উনত্রিশের রাত (আবু দাউদ)। হযরত আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেনঃ কদরের রাতকে রমযানের শেষ দশ রাতের বেজোড় রাতগুলির মধ্যে তালাশ করো।[৫]

(২) মুফাস্‌সিরগণ সাধারণভাবে এর অর্থ করেছেন, এ রাতের সৎ কাজ হাজার মাসের সৎ কাজের চেয়ে ভালো। রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এই রাতের আমলের বিপুল ফযীলত বর্ণনা করেছেন। কাজেই বুখারী ও মুসলীমে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেনঃ

মুসনাদে আহমদে হযরত উবাদাহ ইবনে সামেত (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেনঃ

এই একটি রাতে এত বড় নেকী ও কল্যাণের কাজ হয়েছে যা মানবতার সূদীর্ঘ ইতিহাসে কোনো দীর্ঘতম কালেও হয়নি।

(৩) রুহ বলতে জিবরাঈল (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার কারণে সমস্ত ফেরেশতা থেকে আলাদা করে তাঁর উল্লেখ করা হয়েছে।

(৪) অর্থাৎ তারা নিজেদের তরফ থেকে আসে না। বরং তাদের রবের অনুমতিক্রমে আসে। আর প্রত্যেকটি হুকুম বলতে সূরা দুখানের ৫ আয়াত "আমরে হাকীম" (বিজ্ঞতাপূর্ণ কাজ) বলতে যা বুঝানো হয়েছে এখানে তার কথাই বলা হয়েছে।

(৫) অর্থাৎ সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সারাটা রাত শুধু কল্যাণে পরিপুর্ণ। সেখানে ফিতনা, দুস্কৃতি ও অনিষ্টকারিতার ছিঁটেফোটাও নেই।

তথ্যসূত্র

  1. জ়িহাদ, ইংরেজি উইকিপেডিয়াতে।
  2. ইবনে আবী হাতেম (রাঃ) এবং ইবনে জরীর (রহঃ), মাযহারী
  3. মাযহারী
  4. ইবনে-কাসীর, মাযহারী
  5. বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আহমদ এবং তিরমিযী

বহিঃসংযোগ