ইহুদি ধর্ম
ইহুদিধর্ম যিহূদীধর্ম | |
---|---|
יַהֲדוּת Yahadut | |
ধরন | নৃগোষ্ঠীয় ধর্ম[১] |
প্রকারভেদ | ইব্রাহিমীয় |
ধর্মগ্রন্থ | তানাখ |
ধর্মতত্ত্ব | একেশ্বরবাদী |
নেতা | ইহুদি নেতৃত্ব |
আন্দোলন | ইহুদি ধর্মীয় আন্দোলনসমূহ |
Associations | ইহুদি ধর্মীয় সংগঠনসমূহ |
অঞ্চল | ইসরায়েলের প্রধান ধর্ম এবং বিশ্বব্যাপী সংখ্যালঘু ধর্ম হিসেবে বিস্তৃত |
ভাষা | শাস্ত্রীয় ইব্রীয়[২] |
সদর দপ্তর | যিরূশালেম (সিয়োন) |
প্রবর্তক | অব্রাহাম[৩][৪] |
উৎপত্তি | খ্রীষ্টপূর্ব ২০শ–১৮শ শতাব্দী[৩] যিহূদা মেসোপটেমিয়া[৩] |
Separated from | ইয়াহ্ওয়েহ্বাদ |
সন্ন্যাস সংঘ | ইহুদি ধর্মীয় সম্প্রদায়সমূহ |
সদস্য | আনু. ১৪–১৫ মিলিয়ন[৫] |
Ministers | রব্বিগণ |
ইহুদি ধর্ম |
---|
একটি সিরিজের অংশ |
|
ইহুদিধর্ম বা যিহূদীধর্ম[ক] (হিব্রু ভাষায়: יַהֲדוּת [jahaˈdut] Yahadut)[৬][৭][৮][৯] হল একটি ইব্রাহিমীয়, একেশ্বরবাদী ও নৃগোষ্ঠীগত ধর্ম যা ইহুদি জাতির সামষ্টিক ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং আইনগত ঐতিহ্য ও সভ্যতাকে ধারণ করে।[১০][১][১১] এটি ব্রোঞ্জ যুগে মধ্যপ্রাচ্যে একটি সংগঠিত ধর্ম হিসেবে উৎপত্তিলাভ করে।[১২] আধুনিক ইহুদিধর্ম প্রায় ৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন ইস্রায়েল ও যিহূদার ধর্ম ইয়াহ্ওয়েহ্বাদ থেকে বিবর্ধিত হয়।[১৩] ফলে এটিকে অন্যতম প্রাচীন একেশ্বরবাদী ধর্ম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১৪][১৫] ধার্মিক ইহুদিরা ইহুদিধর্মকে তাদের পূর্বপুরুষ ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ঈশ্বরের স্থিরকৃত নিয়মের বহিপ্রকাশ বলে গণ্য করে।[১৬] এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিস্তৃত গ্রন্থাবলি, অনুশীলন, ধর্মতাত্ত্বিক অবস্থান ও সাংগঠনিক রূপ।
প্রচলিত ইহুদি বোঝাপড়া মোতাবেক তোরাহ হল তানাখ নামে পরিচিত বৃহত্তর পাঠের অংশ। তানাখ ধর্মনিরপেক্ষ পণ্ডিতদের কাছে “হিব্রু বাইবেল” এবং খ্রীষ্টানদের কাছে “পুরাতন নিয়ম” নামে পরিচিত। তোরাহের সম্পূরক মৌখিক ঐতিহ্যকে মিদ্রাশ ও তালমুদের মতো পরবর্তী গ্রন্থ দ্বারা উপস্থাপন করা হয়। ইব্রীয় শব্দ তোরাহের অর্থ হতে পারে “শিক্ষা”, “আইন” বা “নির্দেশ”,[১৭] যদিও “তোরাহ” একটি সাধারণ শব্দ হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে যা মোশির মূল পাঁচটি বইয়ের সম্প্রসারণ বা বিস্তার করে এমন যেকোনো ইহুদি পাঠকে বোঝায়। ইহুদি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের মর্মস্থলের প্রতিনিধিত্বকারী তোরাহ হল একটি পরিভাষা ও শিক্ষাবলির একটি সমুচ্চয় যা অন্তত সত্তরটি এবং সম্ভাব্য অসীম দিক ও ব্যাখ্যা সমেত স্পষ্টত স্ব-অবস্থানে রয়েছে।[১৮] ইহুদিধর্মের গ্রন্থ, ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধ খ্রীষ্টধর্ম ও ইসলাম-সহ পরবর্তী অব্রাহামীয় ধর্মগুলোকে দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত করেছে।[১৯][২০] হেলেনীয়বাদের মতো ইব্রীয়বাদও প্রারম্ভিক খ্রীষ্টধর্মের একটি মূল পটভৌমিক উপাদান হিসাবে এর প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে পশ্চিমা সভ্যতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।[২১]
ইহুদিধর্মের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় আন্দোলন রয়েছে যাদের বেশিরভাগই রব্বিনীয় ইহুদিধর্ম থেকে উদ্ভূত হয়েছে,[২২][২৩] যা মনে করে যে ঈশ্বর সীনয় পর্বতে মোশির কাছে তার আইন ও আদেশগুলো লিখিত এবং মৌখিক তোরাহ উভয় আকারে প্রকাশ করেছিলেন।[২৪] ঐতিহাসিকভাবে এই দাবির সমস্ত বা অংশকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর দ্বারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল, যেমন: দ্বিতীয় মন্দির আমলে সদ্দূকী ও হেলেনীয় ইহুদিধর্ম;[২২][২৫] প্রারম্ভিক ও বিলম্বিত মধ্যযুগে করাইট ইহুদি; এবং আধুনিক অনর্থোডক্স সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অংশ।[২৬] ইহুদিধর্মের কিছু আধুনিক শাখা, যেমন: মানবতাবাদী ইহুদিধর্মকে ধর্মনিরপেক্ষ বা অনাস্তিক্যবাদী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।[২৭][২৮] বর্তমানে সবচেয়ে বড় ইহুদিধর্মীয় আন্দোলন হল অর্থোডক্স ইহুদিধর্ম (হারেদি ইহুদিধর্ম ও আধুনিক অর্থোডক্স ইহুদিধর্ম), রক্ষণশীল ইহুদিধর্ম এবং সংস্কার ইহুদিধর্ম। এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে পার্থক্যের প্রধান উৎস হল হালাখা (ইহুদি আইন), রব্বিনীয় ঐতিহ্যের কর্তৃত্ব ও ইস্রায়েল রাষ্ট্রের তাৎপর্য।[৩][২৯][৩০] অর্থোডক্স ইহুদিধর্ম মনে করে যে তোরাহ ও হালাখা উৎপত্তিগতভাবে ঐশ্বরিক, চিরন্তন ও অপরিবর্তনীয় এবং তাদের কঠোরভাবে অনুসরণ করা উচিত। রক্ষণশীল ও সংস্কার ইহুদিধর্ম আরও উদার। রক্ষণশীল ইহুদিধর্ম সাধারণত সংস্কার ইহুদিধর্মের চেয়ে ইহুদি ধর্মের বাধ্যবাধকতাগুলোর আরও ঐতিহ্যবাদী ব্যাখ্যাকে প্রচার করে। একটি গতানুগতিক সংস্কার অবস্থান হল যে হালখাকে সাধারণ নির্দেশিকাগুলোর একটি সমুচ্চয় হিসাবে দেখা উচিত নয় বরং বিধিনিষেধ ও বাধ্যবাধকতার একটি সমুচ্চয় রূপে দেখা উচিত যা পালন করা সকল ইহুদির জন্য বাধ্যতামূলক।[৩১] ঐতিহাসিকভাবে বিশেষ আদালত হালখা বলবৎ করত; আজও এই আদালতগুলো বিদ্যমান, কিন্তু ইহুদিধর্মের অনুশীলন বেশিরভাগই স্বেচ্ছাধীন।[৩২] ধর্মতাত্ত্বিক ও আইনি বিষয়ে কর্তৃত্ব কোনো একক ব্যক্তি বা সংস্থার উপর ন্যস্ত নয়, বরং পবিত্র গ্রন্থাবলি এবং সেগুলোর ব্যাখ্যাকারী রব্বি ও পণ্ডিতদের উপর ন্যস্ত।
জন্মগত ইহুদি ও ধর্মান্তরিত ইহুদিসহ ইহুদিরা একটি নৃধর্মীয় গোষ্ঠী।[৩৩] ২০১৯ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুসারে বিশ্বে ইহুদি জনসংখ্যা ১৪.৭ মিলিয়ন বা মোট বৈশ্বিক জনসংখ্যার ০.২৫%।[৩৪][৩৫] ইহুদিদের প্রায় ৪৬.৯% ইসরায়েলে এবং ৩৮.৮% যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বসবাস করে, বাকিদের অধিকাংশ বসবাস করে ইউরোপে এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বসবাস লাতিন আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া জুড়ে।[৩৫] পৃথিবীব্যাপী ১৪.৫ থেকে ১৭.৪ মিলিয়ন অনুসারী নিয়ে[৩৬] ইহুদিধর্ম বিশ্বের দশম বৃহত্তম ধর্ম।
ইতিহাস
উৎপত্তি
মৌলিকভাবে হিব্রু বাইবেল বা তানাখ হল ঈশ্বরের সঙ্গে ইস্রায়েলীয়দের সম্পর্কের একটি বিবরণ তাদের প্রাচীনতম ইতিহাস থেকে দ্বিতীয় মন্দির নির্মাণ (আনু. ৫৩৫ খ্রীষ্টপূর্বাদ) পর্যন্ত। অব্রাহামকে প্রথম ইব্রীয় এবং ইহুদি জাতির পিতা হিসেবে সমাদৃত করা হয়। এক ঈশ্বরে তার বিশ্বাসের পুরস্কার স্বরূপ তাঁকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে তার দ্বিতীয় পুত্র ইস্হাক ইস্রায়েল দেশের (তখন কনান নামে পরিচিত) উত্তরাধিকারী হবে। পরবর্তীতে ইস্হাকের পুত্র যাকোবের বংশধরদের মিসরে ক্রীতদাসে পরিণত করা হয় এবং ঈশ্বর মোশিকে মিসর থেকে যাত্রা শুরু করার নির্দেশ দেন। সীনয় পর্বতে তারা মোশির পাঁচটি পুস্তক তথা তোরাহ লাভ করে। এই বইগুলো নবীঈম ও কতূবীমের সঙ্গে একত্রে তানাখ নামে পরিচিত; অন্যদিকে মৌখিক তোরাহ মিশনা ও তালমুদকে নির্দেশ করে। অবশেষে ঈশ্বর তাদের ইস্রায়েলের দেশে নিয়ে যান যেখানে ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিলো শহরে ঈশ্বরীয় তাম্বু স্থাপন করা হয় শত্রুদের আক্রমণের বিরুদ্ধে জাতিকে সমাবিষ্ট করার জন্য। সময়ের সাথেসাথে ইহুদি জাতির আধ্যাত্মিক স্তর এমনভাবে হ্রাস পায় যে ঈশ্বর পলেষ্টীয়দের তাম্বুটি দখল করার অনুমতি দেন। ইস্রায়েলীয়রা তখন নবী শমূয়েলকে বলে যে তাদের একজন স্থায়ী রাজার দ্বারা শাসিত হওয়া দরকার এবং শমূয়েল শৌলকে তাদের রাজা হিসাবে নিযুক্ত করেন। যখন লোকেরা শৌলকে শমূয়েলের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য চাপ দেয়, তখন ঈশ্বর শমূয়েলকে বলেন তার জায়গায় দায়ূদকে নিয়োগ দিতে।
রাজা দায়ূদ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে তিনি নবী নাথনকে বলেন যে তিনি একটি স্থায়ী মন্দির তৈরি করতে ইচ্ছুক এবং তার কর্মের পুরস্কার হিসাবে ঈশ্বর দায়ূদকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তিনি তার পুত্র শলোমনকে প্রথম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেবেন এবং তার সন্তানেরা কখনও সিংহাসনচ্যুত হবে না।
রব্বিনীয় ঐতিহ্য মোতাবেক আইনের বিশদ বিবরণ ও ব্যাখ্যা, যাকে মৌখিক তোরাহ বা মৌখিক আইন বলা হয়, মূলত একটি অলিখিত ঐতিহ্য ছিল যার ভিত্তি ছিল ঈশ্বর সীনয় পর্বতে মোশিকে যা বলেছিলেন। যাই হোক, যেহেতু ইহুদিদের ওপর অত্যাচার বৃদ্ধি পায় এবং বিশদ বিবরণগুলো ভুলে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে, তাই এই মৌখিক আইনগুলো রব্বি যিহূদা হানাসি (রাজকুমার যিহূদা) মিশনাতে লিপিবদ্ধ করেন, যা প্রায় ২০০ খ্রীষ্টাব্দে সংশোধিত হয়।
তালমুদ ছিল মিশনা ও গমারা উভয়েরই সংকলন, পরবর্তী তিন শতাব্দীতে রব্বিনীয় ভাষ্যগুলি সংশোধন করা হয়েছিল। গমারার উৎপত্তি ইহুদি বৃত্তির দুটি প্রধান কেন্দ্র, ফিলিস্তিন ও বাবিল।[৩৭] তদনুসারে, বিশ্লেষণের দুটি সংস্থা তৈরি হয়েছিল এবং তালমুদের দুটি রচনা তৈরি হয়েছিল। পুরনো সংকলনটিকে যিরূশালেমীয় তালমুদ বলা হয়। এটি ফিলিস্তিনে ৪র্থ শতাব্দীতে কোনো এককালে সংকলিত হয়েছিল।[৩৭] বাবিলীয় তালমুদ পণ্ডিত ১ম রব্বিনা, ২য় রব্বিনা ও রব আশি কর্তৃক ৫০০ খ্রীষ্টাব্দে অধ্যয়নগৃহসমূহে আলোচনার মাধ্যমে সংকলিত হয়েছিল, যদিও পরবর্তীতে এর সম্পাদনা অব্যাহত ছিল।
সমালোচনামূলক পণ্ডিতদের মতে তোরাহতে অসঙ্গতিপূর্ণ পাঠ্যগুলিকে একত্রে এমনভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে যা ভিন্ন ভিন্ন বিবরণের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে।[৩৮][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন][৩৯][৪০] এদের অনেকে, যেমন অধ্যাপক মার্টিন রোজ ও জন ব্রাইট, অভিমত দেন যে প্রথম মন্দিরের আমলে ইস্রায়েলীয়রা বিশ্বাস করত যে প্রতিটি জাতির নিজস্ব ঈশ্বর আছে, কিন্তু তাদের ঈশ্বর অন্যান্য ঈশ্বরদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।[৪১][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন][৪২][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন] কারও কারও মতে কট্টর একেশ্বরবাদ বাবিলীয় নির্বাসনের সময় তৈরি হয়েছে, সম্ভবত জরথুস্ত্রীয় দ্বৈতবাদের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ।[৪৩] এই দৃষ্টিকোণ থেকে শুধুমাত্র হেলেনীয় যুগেই বেশিরভাগ ইহুদিরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল যে তাদের ঈশ্বরই একমাত্র ঈশ্বর এবং ইহুদিধর্মের সঙ্গে অভিন্ন ও স্পষ্টভাবে আবদ্ধ একটি ইহুদি জাতির ধারণা গড়ে উঠেছিল।[৪৪] জন ডে যুক্তি দেন যে, বাইবেলের ইয়াহওয়েহ, এল, আশেরা ও বালদেবের উৎপত্তি পূর্ববর্তী কনানীয় ধর্মে নিহিত থাকতে পারে, যা গ্রীক দেবমণ্ডলীর মতো দেবতাদের একটি মণ্ডলীর উপর কেন্দ্রীভূত ছিল।[৪৫]
সংজ্ঞায়ক বৈশিষ্ট্য ও বিশ্বাসমালা
মূলনীতি
বিশ্বাসের ১৩টি মূলনীতি:
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—সমস্ত সৃষ্টির স্রষ্টা ও শাসক; তিনি একাই মহাবিশ্বের সবকিছু তৈরি করেছিলেন, করেন ও করবেন।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—এক; এবং তার একত্বের মতো কোনোরূপ একত্ব নেই; এবং শুধু তিনিই আমাদের ঈশ্বর, যিনি ছিলেন, আছেন ও থাকবেন৷
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—নিরাকার; এবং তিনি সমস্ত বস্তুগত বৈশিষ্ট্য থেকে মুক্ত; এবং তার সঙ্গে কোনোকিছুর তুলনা হতে পারে না।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—প্রথম ও শেষ।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—একাই উপাসনার যোগ্য, এবং অন্য কোনো সত্তা আমাদের উপাসনার যোগ্য নয়।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, নবীদের সব কথাই সত্য।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমাদের রব্বি মোশির (মুসা)—তার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক—নবুয়ত সত্য ছিল; এবং তিনি ছিলেন তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী নবীদের মধ্যে প্রধান।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সমগ্র তোরাহ যা এখন আমাদের কাছে আছে তা অবিকৃত ও একই রয়েছে যেভাবে আমাদের রব্বি মোশির—তার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক—প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এই তোরাহের কোনো পরিবর্তন হবে না, এবং সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—অন্য কোনো তোরাহ [বা নিয়ম] প্রদান করবেন না।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—মানুষের সকল কাজ ও চিন্তাভাবনা সম্বন্ধে অবগত, যেমন বলা হয়েছে: “তিনিই দান করেন তাদের চিন্তাশক্তি, লক্ষ্য করেন তাদের সকল কার্যকলাপ (গীতসংহিতা ৩৩:১৫)।”
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সৃষ্টিকর্তা—ধন্য তার নাম—যারা তার আদেশ পালন করে তাদের পুরস্কৃত করেন এবং যারা আদেশ লঙ্ঘন করে তাদের শাস্তি দেন।
- আমি মশীহের আগমনে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি; এবং যদিও তার আসতে দেরি হতে পারে, আমি প্রতিদিন তার আগমনের প্রতীক্ষা করি।
- আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এক সময় মৃতদের পুনরুত্থান ঘটবে যখন সেই সময়কাল সৃষ্টিকর্তাকে—ধন্য তার নাম—খুশি করবে, এবং তার স্মরণ চিরকালের জন্য উন্নীত হবে।
ধর্মগ্রন্থ
ইহুদি চর্চা ও চিন্তার কেন্দ্রীয় রচনাসমূহের একটি মৌলিক ও কাঠামোবদ্ধ তালিকা নিম্নরূপ:
- তানাখ (তোরাহ, নবীঈম, কতূবীম)[৪৮] ও রব্বিনীয় সাহিত্য
- মেসোরা
- তার্গুম
- ইহুদি বাইবেলীয় ব্যাখ্যা ও পর্যালোচনা
- তালমুদীয় আমলের রচনাসমূহ (শাস্ত্রীয় রব্বিনীয় সাহিত্য)
- মিশনা ও ব্যাখ্যাসমূহ
- তোসেফতা ও গৌণ প্রবচন
- তালমুদ:
- বাবিলীয় তালমুদ ও ব্যাখ্যাসমূহ
- যিরূশালেমীয় তালমুদ ও ব্যাখ্যাসমূহ
- মিদ্রাশীয় সাহিত্য:
- হালাখীয় সাহিত্য
- ইহুদি আইন ও প্রথার প্রধান সংহিতাসমূহ
- মিশনা তোরাহ ও ব্যাখ্যাসমূহ
- তুর ও ব্যাখ্যাসমূহ
- শুলখান আরুখ ও ব্যাখ্যাসমূহ
- রেসপন্সা সাহিত্য
- ইহুদি আইন ও প্রথার প্রধান সংহিতাসমূহ
- চিন্তা ও নৈতিকতা
- ইহুদি দর্শন
- মুসার সাহিত্য এবং ইহুদি নৈতিকতা বিষয়ক অন্যান্য রচনাবলি
- কাব্বালা
- হাসিদীয় রচনাসমূহ
- সিদ্দুর ও ইহুদি স্ত্রোত্রপদ্ধতি
- পিয়্যুত (শাস্ত্রীয় ইহুদি কাব্য)
পাদটীকা
- ↑ এই নামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে বাইবেলীয় বানানরীতি অনুসরণ করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ Jacobs 2007, পৃ. 511 quote: "Judaism, the religion, philosophy, and way of life of the Jews."।
- ↑ Sotah 7:2 with vowelized commentary (হিব্রু ভাষায়)। New York। ১৯৭৯। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২৬, ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ Mendes-Flohr 2005।
- ↑ Levenson 2012, পৃ. 3।
- ↑ Dashefsky, Arnold; Della Pergola, Sergio; Sheskin, Ira, সম্পাদকগণ (২০১৮)। World Jewish Population (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। Berman Jewish DataBank। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৯।
- ↑ Jacobs 2007, পৃ. 511।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;bibleinterp_mason3
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;askoxford8
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Judaism | Origin and meaning of judaism by Online Etymology Dictionary"।
- ↑ এই নিবন্ধটি এখন পাবলিক ডোমেইনের একটি প্রকাশনার পাঠ্য অন্তর্ভুক্ত করে: Kohler, Kaufmann (১৯০১–১৯০৬)। "Judaism"। Singer, Isidore; ও অন্যান্য। The Jewish Encyclopedia। New York: Funk & Wagnalls।
- ↑ Schiffman 2003, পৃ. 3।
- ↑ "History of Judaism until 164 BCE"। History of Judaism। BBC।
- ↑ David P Mindell (৩০ জুন ২০০৯)। The Evolving World। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 224। আইএসবিএন 978-0-674-04108-0।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Religion & Ethics – Judaism
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Religion: Three Religions, One God PBS
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Knowledge Resources: Judaism
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Fried, Yerachmiel (আগস্ট ১৮, ২০১১)। "What is Torah?."। Aish। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০২২।
- ↑ "Bamidbar Rabah"। sefaria.org। sefaria। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০২২।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Islam, Judaism, and Christianity: Theological and Historical Affiliations
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;The Historical Muhammad
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Cambridge University Historical Series, An Essay on Western Civilization in Its Economic Aspects, p.40: Hebraism, like Hellenism, has been an all-important factor in the development of Western Civilization; Judaism, as the precursor of Christianity, has indirectly had had much to do with shaping the ideals and morality of western nations since the christian era.
- ↑ ক খ Schiffman 2003।
- ↑ "Rabbinic Judaism"। Encyclopædia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-০৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;What is the oral Torah?
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Sadducee"। Encyclopædia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-০৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;JEkaraites
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Ackerman, Ari (২০১০)। "Eliezer Schweid on the Religious Dimension of a Secular Jewish Renewal"। Modern Judaism। 30 (2): 209–228। আইএসএসএন 0276-1114। এসটুসিআইডি 143106665। জেস্টোর 40604707। ডিওআই:10.1093/mj/kjq005।
- ↑ Myers, David N., সম্পাদক (২০১৮)। "Can We Excommunicate God?"। Can We Excommunicate God?: April 30, 1965। The Eternal Dissident। Rabbi Leonard I. Beerman and the Radical Imperative to Think and Act (1 সংস্করণ)। University of California Press। পৃষ্ঠা 69–74। আইএসবিএন 978-0-520-29745-6। জেস্টোর j.ctv941t1h.14। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৭।
- ↑ Ferziger, Adam (২০০৯)। "From Demonic Deviant to Drowning Brother: Reform Judaism in the Eyes of American Orthodoxy"। Jewish Social Studies। Indiana University Press। 15 (3): 56–88। এসটুসিআইডি 152221663। জেস্টোর 10.2979/jss.2009.15.3.56। ডিওআই:10.2979/jss.2009.15.3.56 – JSTOR-এর মাধ্যমে।
- ↑ Cohen, Steven M.; Bubis, Gerald B. (১৯৯০)। "The Impact of Denomination: Differences in the Israel-Related Opinions of American Rabbis and Jewish Communal Workers"। Jewish Political Studies Review। 2 (1/2): 137–163। আইএসএসএন 0792-335X। জেস্টোর 25834177।
- ↑ Lachoff, Irwin (২০১৯)। "Reform in Mid Nineteenth-Century Jewish New Orleans: Achieving "the Spirit of Progress and Enlightenment" Through Acculturation, Residential Patterns, and Personality"। Louisiana History: The Journal of the Louisiana Historical Association। 60 (2): 171–198। আইএসএসএন 0024-6816। জেস্টোর 2686469.।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Britannica Online Encyclopedia: Bet Din
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Ethnoreligious
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Berman Jewish Data Bank। "World Jewish Population, 2019" (পিডিএফ)। jewishdatabank.org। Berman Jewish Data Bank, Number 26, 2019। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২১।
- ↑ ক খ Sergio DellaPergola, “World Jewish Population, 2019,” in Arnold Dashefsky and Ira M. Sheskin (eds.), The American Jewish Year Book, 2019, Volume 119. Dordrecht: Springer, (2020)। "Countries with the Largest Jewish Population (2019)"। jewishvirtuallibrary.org। Jewish Virtual Library। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২১।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Population of Jews
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ Wilhelm Bacher। "Talmud"। Jewish Encyclopedia।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;yehezkal
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;biblical
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;speiser
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;history
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;history12
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;ephraim
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;beginnings
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;goddesses
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ David Birnbaum, Jews, Church & Civilization, Volume III (Millennium Education Foundation 2005)
- ↑ এই নিবন্ধটি এখন পাবলিক ডোমেইনের একটি প্রকাশনার পাঠ্য অন্তর্ভুক্ত করে: Kohler, Kaufmann; Hirsch, Emil G. (১৯০১–১৯০৬)। "Articles of Faith"। Singer, Isidore; ও অন্যান্য। The Jewish Encyclopedia। New York: Funk & Wagnalls।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;tanakh
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি