অশ্বত্থামা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Sakkhar21 (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
অশ্বত্থামা [[হিন্দি|হিন্দিতে]]:'''अश्वत्थामा''' মহাভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। [[অশ্বত্থামা]] হল গুরু দ্রোণ এর পুত্র। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে দুটি ক্ষেত্রে এই নাম পাওয়া যায়। তার একজন হলেই এই অশ্বত্থামা এবং আরেকজন হলেন বনের হাতি। যাকে হত্যা করে [[ভীম]] এবং হত্যার কথা [[যুধিষ্ঠির]] গুরু দ্রোণ কে গিয়ে বললে তিনি যুদ্ধ ক্ষেত্রে তার অস্ত্র পরিত্যাগ করেন।
অশ্বত্থামা [[হিন্দি|হিন্দিতে]]:'''अश्वत्थामा''' মহাভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। [[অশ্বত্থামা]] হল গুরু দ্রোণ এর পুত্র। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে দুটি ক্ষেত্রে এই নাম পাওয়া যায়। তার একজন হলেই এই অশ্বত্থামা এবং আরেকজন হলেন বনের হাতি। যাকে হত্যা করে [[ভীম]] এবং হত্যার কথা [[যুধিষ্ঠির]] গুরু দ্রোণ কে গিয়ে বললে তিনি যুদ্ধ ক্ষেত্রে তার অস্ত্র পরিত্যাগ করেন।
==জন্ম==
[[অশ্বত্থামা]] এর পিতার নাম গুরু দ্রোন আর তার মাতার নাম কৃপী। জন্মের সময় [[অশ্বত্থামা]] অশ্বের মত শব্দ করেছিলেন বলে তার এইরুপ নামকরন করা হয়।
==যুদ্ধ শিক্ষা==
[[অশ্বত্থামা]] এর পিতা গুরু দ্রোণ ছিলেন একজন ব্রাক্ষ্মন। কিন্থু তিনি ব্রাক্ষ্মন হওয়ার পরেও তিনি একজন যোগ্য শিক্ষক ছিলেন। তিনি তার যুদ্ধ শিক্ষা শিক্ষেন তার পিতা ভরদ্দাজ মুণি এর কাছ থেকে। তার তার পিতার দেওয়া শিক্ষাই তিনি তার ছাত্রদের শিখাতেন। একবার তার বাল্যকালের মিত্র রাজা দৌপদ এর কাছে গেলে তিনি গুরু দ্রোণ কে অপমান করেন। আর সেই অপমানের প্রতিশোধ তিনি হস্তিনাপুরে এসে সেখানে তার যোগ্য শিষ্য খুঁজতে থাকেন। সেখানে তিনি কৌরব কুমারদের সাথে তার একমাত্র ছেলে [[অশ্বত্থামা]]কে যুদ্ধ শিক্ষা দিতেন। গুরু দ্রোন দেখতে পেলেন সেখানে ধনু বিদ্যাতে [[অর্জুন]] এর বিশেষ দক্ষতা অর্জন করছে, তাই তিনি তার ছেলে [[অশ্বত্থামা]]কে সেরা ধনুর বিদ হবার জন্য আপ্রান চেষ্টা করতে থাকেন। অশ্বত্থামা বহু গুপ্ত অস্ত্র প্রয়োগের কৌশল পিতার কাছ থেকে শিখেছিলেন। <ref>http://www.ebangladictionary.org/3888</ref><ref>http://www.ebanglalibrary.com/mahabharata/?p=1407</ref>
==কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ও অশ্বত্থামা==
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এ অশ্বত্থামা কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করেন। আর তার পিতা গুরু দ্রোণ তার ছেলে [[অশ্বত্থামা]] এর স্মেহের কারনে কৌরবদের পক্ষে থাকেন। এই কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে [[অশ্বত্থামা]] এর বিশেষ অব্দান রয়েছে। তিনি পাণ্ডবদের বহু সেনাদের হত্যা করেন। তাকে বধ করা প্রায় অসমম্ভ হয়ে পড়ে। রুক্ষেত্রের যুদ্ধে দ্রোণাচার্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলে দ্রোণকে বধ করার জন্য পান্ডবগন [[শ্রীকৃষ্ণ]] এর কাছে পরামশ করেন। আর তখন [[শ্রীকৃষ্ণ]] পাণ্ডবদের বলেন কোন ভাবে যদি গুরু দ্রোণ এর কানে যদি [[অশ্বত্থামা]] এর মৃত্যুর খবর পোঁছানো যায় তাহলে সে সময় ধৃষ্টদ্যুম্ন তাঁকে হত্যা করবে। [[শ্রীকৃষ্ণ]] এর পরামশ মতে [[ভীম] বনের এক হাতীকে হত্যা করেন। আর সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন [[যুধিষ্ঠির]]। আর একমাত্র গুরু দ্রোণ [[যুধিষ্ঠির]] এর কথাকে বিশ্বাস করবেন। তাই [[যুধিষ্ঠির]] দ্রোণের উদ্দেশ্যে 'অশ্বত্থামা হতঃ- ইতি গজ' (অশ্বত্থামা -নামক হাতী নিহত হয়েছে) বাক্য উচ্চারণ করেন। '''ইতি গজ''' শব্দটি আস্তে বলাতে দ্রোণচার্য মনে করেন যে তাঁর পুত্র অশ্বত্থামার মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়েছে। এরপর দ্রোণাচার্য অস্ত্র ত্যাগ করলে– ধৃষ্টদ্যুম্ন তাঁকে হত্যা করেন। আর তাতে [[অশ্বত্থামা]] ভীষন খেপে যায়। <ref>http://www.bankim.rachanabali.nltr.org/node/1824</ref>
==শেষ জীবনে অশ্বত্থামা==
[[অর্জুন]] দ্বারা [[কর্ণ]] এর মৃত্যুর পরে [[দুর্যোধন]] অশ্বত্থামাকে সেনাপতি নিয়োগ করেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এ যখন [[দুর্যোধন]] সহ কৌরবদের সবাই মারা যায় তখন শেষ সময় এ এসে অশ্বত্থামা [[দুর্যোধন]]কে বলেন কি করলে [[দুর্যোধন]] মৃত্যু কালে খুশিতে মৃত্যু বরণ করতে পারবেন। আর তার উত্তরে [[দুর্যোধন]] বলেন তিনি পাণ্ডবদের বংশকে নিঃচিহ্ন করে দেখতে চান। তার মিত্রের কথা রক্ষার জন্য [[অশ্বত্থামা]] সাথে সাথে পাণ্ডবদের শিবিরে গমন করেন। আর প্রথমে ধৃষ্টদ্যুম্ন কে দেখা মাত্র তাকে হত্যা করেন। তারপরে অশ্বত্থামা দ্রৌপদীর পুত্রদের, শিখণ্ডী ও অন্যান্য পাণ্ডব বীরদের হত্যা করেন। উল্লেখ্য, এই সময় পঞ্চপাণ্ডব, কৃষ্ণ গঙ্গাতীরে অবস্থান করছিলেন। তারপরে অশ্বত্থামা ব্রহ্মশির অস্ত্র প্রয়োগ করলে সেটা গিয়ে উত্তরার গর্ভে থাকে সন্তান এর উপর গিয়ে পড়ে। অশ্বত্থামা এর এইরুপ কাজ থেকে [[শ্রীকৃষ্ণ]] তাকে এইরুপ অভিশাপ দেন যে কখনো অশ্বত্থামার মৃত্যু হবে না। অশ্বত্থামা চাইলেও কোনদিন মৃত্যু বরন করতে পারবেন না। আজীবন অমর থাকবে। <ref>http://aainanagar.com/tag/mahabharata/</ref>


== তথ্যসূত্র ==
== তথ্যসূত্র ==

১৯:২৩, ২৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

অশ্বত্থামা হিন্দিতে:अश्वत्थामा মহাভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। অশ্বত্থামা হল গুরু দ্রোণ এর পুত্র। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে দুটি ক্ষেত্রে এই নাম পাওয়া যায়। তার একজন হলেই এই অশ্বত্থামা এবং আরেকজন হলেন বনের হাতি। যাকে হত্যা করে ভীম এবং হত্যার কথা যুধিষ্ঠির গুরু দ্রোণ কে গিয়ে বললে তিনি যুদ্ধ ক্ষেত্রে তার অস্ত্র পরিত্যাগ করেন।

জন্ম

অশ্বত্থামা এর পিতার নাম গুরু দ্রোন আর তার মাতার নাম কৃপী। জন্মের সময় অশ্বত্থামা অশ্বের মত শব্দ করেছিলেন বলে তার এইরুপ নামকরন করা হয়।

যুদ্ধ শিক্ষা

অশ্বত্থামা এর পিতা গুরু দ্রোণ ছিলেন একজন ব্রাক্ষ্মন। কিন্থু তিনি ব্রাক্ষ্মন হওয়ার পরেও তিনি একজন যোগ্য শিক্ষক ছিলেন। তিনি তার যুদ্ধ শিক্ষা শিক্ষেন তার পিতা ভরদ্দাজ মুণি এর কাছ থেকে। তার তার পিতার দেওয়া শিক্ষাই তিনি তার ছাত্রদের শিখাতেন। একবার তার বাল্যকালের মিত্র রাজা দৌপদ এর কাছে গেলে তিনি গুরু দ্রোণ কে অপমান করেন। আর সেই অপমানের প্রতিশোধ তিনি হস্তিনাপুরে এসে সেখানে তার যোগ্য শিষ্য খুঁজতে থাকেন। সেখানে তিনি কৌরব কুমারদের সাথে তার একমাত্র ছেলে অশ্বত্থামাকে যুদ্ধ শিক্ষা দিতেন। গুরু দ্রোন দেখতে পেলেন সেখানে ধনু বিদ্যাতে অর্জুন এর বিশেষ দক্ষতা অর্জন করছে, তাই তিনি তার ছেলে অশ্বত্থামাকে সেরা ধনুর বিদ হবার জন্য আপ্রান চেষ্টা করতে থাকেন। অশ্বত্থামা বহু গুপ্ত অস্ত্র প্রয়োগের কৌশল পিতার কাছ থেকে শিখেছিলেন। [১][২]

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ও অশ্বত্থামা

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এ অশ্বত্থামা কৌরবদের পক্ষ অবলম্বন করেন। আর তার পিতা গুরু দ্রোণ তার ছেলে অশ্বত্থামা এর স্মেহের কারনে কৌরবদের পক্ষে থাকেন। এই কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে অশ্বত্থামা এর বিশেষ অব্দান রয়েছে। তিনি পাণ্ডবদের বহু সেনাদের হত্যা করেন। তাকে বধ করা প্রায় অসমম্ভ হয়ে পড়ে। রুক্ষেত্রের যুদ্ধে দ্রোণাচার্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলে দ্রোণকে বধ করার জন্য পান্ডবগন শ্রীকৃষ্ণ এর কাছে পরামশ করেন। আর তখন শ্রীকৃষ্ণ পাণ্ডবদের বলেন কোন ভাবে যদি গুরু দ্রোণ এর কানে যদি অশ্বত্থামা এর মৃত্যুর খবর পোঁছানো যায় তাহলে সে সময় ধৃষ্টদ্যুম্ন তাঁকে হত্যা করবে। শ্রীকৃষ্ণ এর পরামশ মতে [[ভীম] বনের এক হাতীকে হত্যা করেন। আর সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন যুধিষ্ঠির। আর একমাত্র গুরু দ্রোণ যুধিষ্ঠির এর কথাকে বিশ্বাস করবেন। তাই যুধিষ্ঠির দ্রোণের উদ্দেশ্যে 'অশ্বত্থামা হতঃ- ইতি গজ' (অশ্বত্থামা -নামক হাতী নিহত হয়েছে) বাক্য উচ্চারণ করেন। ইতি গজ শব্দটি আস্তে বলাতে দ্রোণচার্য মনে করেন যে তাঁর পুত্র অশ্বত্থামার মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়েছে। এরপর দ্রোণাচার্য অস্ত্র ত্যাগ করলে– ধৃষ্টদ্যুম্ন তাঁকে হত্যা করেন। আর তাতে অশ্বত্থামা ভীষন খেপে যায়। [৩]

শেষ জীবনে অশ্বত্থামা

অর্জুন দ্বারা কর্ণ এর মৃত্যুর পরে দুর্যোধন অশ্বত্থামাকে সেনাপতি নিয়োগ করেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এ যখন দুর্যোধন সহ কৌরবদের সবাই মারা যায় তখন শেষ সময় এ এসে অশ্বত্থামা দুর্যোধনকে বলেন কি করলে দুর্যোধন মৃত্যু কালে খুশিতে মৃত্যু বরণ করতে পারবেন। আর তার উত্তরে দুর্যোধন বলেন তিনি পাণ্ডবদের বংশকে নিঃচিহ্ন করে দেখতে চান। তার মিত্রের কথা রক্ষার জন্য অশ্বত্থামা সাথে সাথে পাণ্ডবদের শিবিরে গমন করেন। আর প্রথমে ধৃষ্টদ্যুম্ন কে দেখা মাত্র তাকে হত্যা করেন। তারপরে অশ্বত্থামা দ্রৌপদীর পুত্রদের, শিখণ্ডী ও অন্যান্য পাণ্ডব বীরদের হত্যা করেন। উল্লেখ্য, এই সময় পঞ্চপাণ্ডব, কৃষ্ণ গঙ্গাতীরে অবস্থান করছিলেন। তারপরে অশ্বত্থামা ব্রহ্মশির অস্ত্র প্রয়োগ করলে সেটা গিয়ে উত্তরার গর্ভে থাকে সন্তান এর উপর গিয়ে পড়ে। অশ্বত্থামা এর এইরুপ কাজ থেকে শ্রীকৃষ্ণ তাকে এইরুপ অভিশাপ দেন যে কখনো অশ্বত্থামার মৃত্যু হবে না। অশ্বত্থামা চাইলেও কোনদিন মৃত্যু বরন করতে পারবেন না। আজীবন অমর থাকবে। [৪]

তথ্যসূত্র