ফেলুদা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা থেকে পুনর্নির্দেশিত)
ফেলুদা
ফেলুদা চরিত্র
ফেলুদা ও তোপসে
সত্যজিৎ রায় অঙ্কিত ফেলুদা (ডানে) এবং তোপসে (বামে)
প্রথম উপস্থিতিফেলুদার গোয়েন্দাগিরি
শেষ উপস্থিতিরবার্টসনের রুবি (রচনাকাল অনুযায়ী)
ইন্দ্রজাল রহস্য (প্রকাশকাল অনুযায়ী)
স্রষ্টাসত্যজিৎ রায়
চরিত্রায়ণসৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
শশী কাপুর
সব্যসাচী চক্রবর্তী
আবির চট্টোপাধ্যায়
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
টোটা রায় চৌধুরী
প্রকৃত নামপ্রদোষ চন্দ্র মিত্র
বাসভবন২১ রজনী সেন রোড কোলকাতা[১]
উচ্চতা৬ ফুট ২ ইঞ্চি
বন্ধুলালমোহন গাঙ্গুলি
তথ্য
ডাকনামফেলু
লিঙ্গপুরুষ
পদবিমিত্র বা মিত্তির
পেশাগোয়েন্দাগিরি
পরিবারজয় কৃষ্ণ মিত্র (বাবা)
দাম্পত্য সঙ্গীঅবিবাহিত
সন্তাননেই
আত্মীয়তপেশরঞ্জন মিত্র (খুড়তুতো ভাই)
ধর্মহিন্দুধর্ম
জাতীয়তাভারতীয়

প্রদোষ চন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদা সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট বাংলা সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র।[২] ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির প্রথমভাগ প্রকাশিত হয়,[৩] যা পরের আরো দুইটি সংখ্যার মাধ্যমে শেষ হয়।[৪] ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। ফেলুদার প্রধান সহকারী তার খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে ও লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি (ছদ্মনাম জটায়ু)। ফেলুদার চরিত্র নির্মাণে সত্যজিৎ রায় তার ছোটবেলায় পড়া শার্লক হোমস এর গোয়েন্দা গল্পের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাই ফেলুদার চরিত্রের সাথে অনেক জায়গায় আমরা হোমসের আর ফেলুদার ভাই ও সহকারী তোপসের সাথে হোমসের সহকারী ওয়াটসনের মিল পাই। নিজের লেখা অধিকাংশ গল্পের বইয়ের মতই ফেলুদার বইতেও সত্যজিৎ রায় নিজেই প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করতেন। সত্যজিৎ রায় ফেলুদার সোনার কেল্লাজয় বাবা ফেলুনাথ উপন্যাসদুটিকে চলচ্চিত্রায়িত করেন। এই দুই ছবিতে কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। আর তাই তার অধিকাংশ বইয়ের ফেলুদার ছবির অলংকরণে সৌমিত্র চট্টপাধায়ের আদলের ছাপ স্পষ্ট। একই ভাবে জটায়ু চরিত্রের অলঙ্করণে স্পষ্ট সিনেমায় এই চরিত্রের জন্য তার নির্বাচিত অভিনেতা সন্তোষ দত্তের আদল। বর্তমানে সত্যজিতের পুত্র সন্দীপ রায় ফেলুদার গল্প ও উপন্যাস নিয়ে টেলিভিশন ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

চরিত্রে ফেলুদা[সম্পাদনা]

ফেলুদার ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

ফেলুদার গল্পে তার চরিত্রকে আঁকা হয়েছে প্রায় ২৭ বছর বয়সী একজন যুবক হিসেবে, যার উচ্চতা ৬'২''। ফেলুদা মার্শাল আর্টে বিশেষ দক্ষ। যদিও অসম্ভব ভালো বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণের ক্ষমতার ওপরেই যে কোনও রহস্যের সমাধানে সে আস্থা রাখতে ভালোবাসে। তার এই বিশেষ ক্ষমতাকে সে মজা করে বলে থাকে মগজাস্ত্র। যদিও বাড়তি সতর্কতার জন্য তার নিজস্ব পয়েন্ট থ্রি টু কোল্ট রিভলভার রয়েছে। রিভলভার থেকে গুলি চালাতে ফেলুদাকে খুব কম গল্পেই দেখা যায় । যদিও সাম্প্রতিক ফেলুদার সিনেমাগুলোর প্রায় সবকটায় ফেলুদাকে গুলি চালাতে দেখা গেছে। ফেলুদার রহস্য অনেকসময়েই কলকাতার বাইরেও বিস্তারলাভ করে, এমনকি অনেক সময়ে তা দেশের গন্ডিও ছাড়িয়ে যায়। এমনকি পাড়াগাঁয়েও ফেলুদাকে দেখা গেছে গোয়েন্দাগিরি করতে। রহস্যের বিস্তার যেখানেই ঘটুক না কেন, সেই জায়গা সম্পর্কে বিস্তারিত পড়াশুনো করে যাওয়া ফেলুদার অভ্যাস।[৫]

ফেলুদার ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

মাত্র নয় বছর বয়সে মা বাবা মারা যাওয়ায় ফেলুদা তার বাবার ছোটো ভাইয়ের কাছেই মানুষ হয়েছেন।[৬] ফেলুদার বাবা জয়কৃষ্ণ মিত্র ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে গণিত ও সংস্কৃতের শিক্ষক ছিলেন। ফেলুদা পেশায় গোয়েন্দা হলেও, এটা নেশাও বটে। গোয়েন্দাগিরি শুরুর আগে ফেলুদাও একটি বেসরকারি অফিসে কিছুদিন চাকরি করেছেন। তোপসে তার সহকারী হলেও সম্পর্কে তার খুড়তুতো ভাই । তার নেশা বলতে সিগারেট। সিগারেটের প্রিয় ব্র্যান্ড চারমিনার। ফেলুদা প্রতিদিন সকালে নিয়মিত শরীরচর্চা ও যোগব্যায়ামে অভ্যস্ত। প্রচুর বই পড়া ও সাম্প্রতিক তথ্য সম্পর্কে অত্যন্ত সজাগ থাকা গোয়েন্দা হিসেবে পেশাগত দিক দিয়েও তাকে অনেক এগিয়ে রাখে।

ফেলুদা সিরিজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র[সম্পাদনা]

তপেশরঞ্জন মিত্র ফেলুদার খুড়তুতো ভাই। ফেলুদার দেওয়া তোপসে নামেই অধিক পরিচিত। এই চরিত্রটি আর্থার কোনান ডয়েলের জন ওয়াটসন চরিত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত। তোপসে ফেলুদার সর্বক্ষণের সঙ্গী। ফেলুদার প্রায় সব অভিযানের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা সে লিপিবদ্ধ করে। তোপসের বাবা সম্পর্কে ফেলুদার কাকা। ফেলুদা তার কাকার পরিবারেরর সঙ্গেই ২১,রজনী সেন রোড,কলকাতা-৭০০০২৯[৭] -র বাড়িতে থাকে। দক্ষিণ কলকাতায় রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়িটি অস্তিত্বহীন। তোপসে চরিত্রে নানা সময়ে সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়সাহেব ভট্টাচার্য্য অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ ফেলুদা চলচ্চিত্রে তোপসের ভূমিকা পালন করেছেন ঋদ্ধি সেন

লালমোহন গাঙ্গুলি বা লালমোহনবাবু ফেলুদার বন্ধু। ইনি জটায়ু ছদ্মনামে রহস্য-রোমাঞ্চ উপন্যাস লেখেন। লালমোহনবাবু বাংলায় রহস্য-রোমাঞ্চ সিরিজের একজন জনপ্রিয় লেখক এবং তার নিজের মতে সারা ভারতে তার অনুগামীরা ছড়িয়ে আছে। তার লেখা উপন্যাসগুলির প্রধান চরিত্র সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট গোয়েন্দা প্রখর রুদ্র। তার অবিশ্বাস্য গল্পগুলি বেস্টসেলার হলেও বইগুলোতে মাঝে মাঝে খুবই সাধারণ ভুল থাকে, যেগুলো ফেলুদাকে শুধরে দিতে হয়। লালমোহনবাবুর একটি "মাদ্রাজী সবুজ" এ্যাম্বাসেডর গাড়ি আছে যা ফেলুদার অনেক অভিযানের নির্ভরযোগ্য বাহন। সোনার কেল্লা গল্পে ফেলুদা ও তোপসের যোধপুর গমনকালে কানপুরে ট্রেনে প্রথম জটায়ু চরিত্রের আবির্ভাব ঘটে। সন্তোষ দত্ত সোনার কেল্লাজয় বাবা ফেলুনাথ ছবিতে জটায়ুর ভূমিকা পালন করেন। সত্যজিৎ রায় প্রথম ফেলুদা ছবির পর জটায়ু চরিত্রে রদবদল ঘটিয়ে তাকে অনেকটা সন্তোষ দত্তের মতই গড়ে তোলেন। রবি ঘোষ ও বিভু ভট্টাচার্য পরবর্তীকালে এই চরিত্রে অভিনয় করেন। নয়ন রহস্য গল্পে লেখক জটায়ুকে "বিদূষক" হিসেবে উস্থাপন করেন।

সিধুজ্যাঠা ফেলুদার বাবার বন্ধু। ফেলুদাকে প্রায়ই অসাধারণ স্মৃতিশক্তি এবং সাধারণ জ্ঞানের অধিকারী সিধুজ্যাঠার কাছে বিভিন্ন জিজ্ঞাসা নিয়ে দ্বারস্থ হতে হয় ।

মগনলাল মেঘরাজ ফেলুদার অন্যতম শত্রু। ফেলুদা তিনটি কাহিনীতে তার মোকাবিলা করে। জয় বাবা ফেলুনাথ, যত কাণ্ড কাঠমান্ডুতে এবং গোলাপী মুক্তা রহস্য এই তিনটি কাহিনীতে মগনলালকে পাওয়া যায়। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় জয় বাবা ফেলুনাথ চলচ্চিত্রে মগনলাল মেঘরাজের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উৎপল দত্ত

প্রকাশনা[সম্পাদনা]

অধিকাংশ ফেলুদা কাহিনী প্রথম পূজাবার্ষিকী দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো। অল্প কিছু কাহিনী প্রকাশিত হয়েছিলো সন্দেশ পত্রিকায়। বইগুলি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে। এছাড়া ফেলুদার উপরে একাধিক কমিক স্ট্রিপ-ও প্রকাশিত হয়েছে। অধিকাংশ ফেলুদা বইয়ের প্রচ্ছদ এবং অলঙ্করণ সত্যজিৎ রায়ের নিজের আঁকা। ফেলুদা সিরিজের সমস্ত গল্প ও উপন্যাস ইংরেজি ভাষাতে অনুদিত হয়েছে।

টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

এখন পর্যন্ত ফেলুদার এগারোটি কাহিনী চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় সোনার কেল্লা এবং জয় বাবা ফেলুনাথ এবং সত্যজিতের পুত্র সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় বাক্স রহস্য (১৯৯৬), বোম্বাইয়ের বোম্বেটে (২০০৩), কৈলাসে কেলেঙ্কারী (২০০৭), টিনটোরেটোর যীশু (২০০৮), গোরস্থানে সাবধান (২০১০), রয়েল বেঙ্গল রহস্য (২০১১), বাদশাহী আংটি(২০১৪), ডবল ফেলুদা (২০১৬) । ডবল ফেলুদা চলচ্চিত্রটি ‘সমাদ্দারের চাবি’ আর ‘গোলকধাম রহস্য’ - এই দুইটি উপন্যাস নিয়ে একসাথে করা হয়েছে। সোনার কেল্লা এবং জয় বাবা ফেলুনাথ সিনেমায় ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, এবং বোম্বাইয়ের বোম্বেটে থেকে পরবতী সকল সিনেমায় অভিনয় করেন সব্যসাচী চক্রবর্তীসব্যসাচী চক্রবর্তী সিনেমা ছাড়াও ডাঃ মুনসীর ডায়েরী নামে টেলিফিল্মে এবং সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় ফেলুদার উপরে নির্মিত টিভি সিরিয়ালে ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন । ২০১৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাদশাহী আংটি চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছে। যাতে জনপ্রিয় অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায় কে ফেলুদা চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। ফেলুদা কাহিনীর সাম্প্রতিকতম চলচ্চিত্র 'ডবল ফেলুদা' ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ মুক্তি পেয়েছে। এতে ফেলুদার ভূমিকায়ে সব্যসাচী চক্রবর্তী আবার ফিরে এসেছেন। এছাড়া বাংলাদেশের চ্যানেল আই, বায়োস্কোপ ও আড্ডা টাইমস এ, তিনটি গল্প (শেয়াল দেবতা রহস্য, ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা ও গোলকধাম রহস্য) নিয়ে ২০১৭ সালে নির্মিত সিরিজে ফেলুদা হিসেবে আবর্তিত হন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় । ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্বনামধন্য পরিচালক তৌকির আহমেদ নির্মাণ করেন "নয়ন রহস্য" । "নয়ন রহস্য" তে ফেলুদা হিসেবে প্রথমবারের মতো অভিনয় করেন বাংলাদেশের খ্যতিমান অভিনেতা আহমেদ রুবেল।

সত্যজিৎ রায় প্রেজেন্টস নামের হিন্দি ভাষার সিরিজে কিসসা কাটমান্ডু কা' (যত কাণ্ড কাটমুন্ডু তে) নামক ফেলুদা কাহিনী টিভিতে দেখানো হয়েছিলো তাতে ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেন শশী কাপুর এবং লালমোহনবাবুর ভূমিকায় অভিনয় করেন মোহন আগাসে। ২০১৯ সালে ফেলুদার পঞ্চাশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায় ফেলুদা (তথ্যচিত্র) নির্মান করেন।[৮]

পরবর্তীতে সৃজিত মুখোপাধ্যায় ৫ নভেম্বর, ২০১৯ ঘোষণা করেন যে তিনি ফেলুদার উপর এক ওয়েবসিরিজের নির্মাণ করছেন। ছিন্নমস্তার অভিশাপ এবং যত কাণ্ড কাঠমান্ডুতে কাহিনির উপর ফেলুদা ফেরত নামের এ ওয়েবসিরিজ নির্মাণ করবেন। প্রযোজক রাজীব মেহরা আর নিসপাল সিংহ রানের সাথে আড্ডা টাইমস প্ল্যাটফর্মে আগামী বছর ওয়েবসিরিজটি মুক্তি পাবে। সন্দীপ রায়ের থেকে দুটো কাহিনির সত্ত্ব কিনে নেওয়া হয়েছে।[৯] পরবর্তীতে ১২ নভেম্বর জানান, ফেলুদার চরিত্রে টোটা রায় চৌধুরী এবং জটায়ু চরিত্রে অনির্বাণ চক্রবর্তীকে নেওয়া হয়েছে।[১০]

অন্যান্য মাধ্যম[সম্পাদনা]

ফেলুদা কাহিনীগুলোর উপর ভিত্তি করে একাধিক কমিকস প্রকাশিত হয়েছে। কমিকসগুলির চিত্রনাট্য ও ছবি অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের। গ্যাংটকে গন্ডগোল এই সিরিজের প্রথম কমিকস। কমিকসগুলির অধিকাংশই প্রথমে শারদীয়া আনন্দমেলায় ও পরে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে।

ফেলুদা সিরিজ[সম্পাদনা]

গল্প/উপন্যাস প্রথম প্রকাশ গ্রন্থভুক্তি অতিরিক্ত তথ্য কাহিনি-সংক্ষেপ
ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি (গল্প) সন্দেশ, ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫-৬৬ এক ডজন গপ্‌পো, ১৯৭০
পাহাড়ে ফেলুদা, ১৯৯৬[১১]
প্রথম ফেলুদা-গল্প এতে প্রথম ফেলু মিত্তিরের পরিচয় দেওয়া হয়। এতে ফেলুদা একটি চিঠিতে হুমকির রহস্য সমাধান করে।
বাদশাহী আংটি (উপন্যাস) সন্দেশ, মে-মে, ১৯৬৬-৬৭ বাদশাহী আংটি, ১৯৬৯
ফেলুদার সপ্তকাণ্ড, ১৯৯৮
প্রথম ফেলুদা-উপন্যাস। সন্দীপ রায় চলচ্চিত্রায়িত করেন একে ২০১৪ সালে। এতে ফেলুদা একটি মূল্যবান আংটি চুরি হওয়ার রহস্য সমাধান করে। তোপসের কমবয়সকালীন সময়ে বাদশাহী আংটির মত আর কোনও রোমাঞ্চকর উপন্যাস নেই।
কৈলাস চৌধুরীর পাথর (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৬৭ এক ডজন গপ্‌পো, ১৯৭০
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
- এতে ফেলুদা একটি পাথর এর জন্য হুমকির পিছনের রহস্য উদ্ঘাটন করে। এতে একসময় যানতে পারে যে তার মক্কেলের একটি জময ভাই আছে। এর পর নানান বিপদের মধ্যদিয়ে তার সামনে আসল সত্য বেড়িয়ে আসে।
শেয়াল-দেবতা রহস্য (গল্প) সন্দেশ, গ্রীষ্ম সংখ্যা, মে-জুন, ১৯৭০ আরো এক ডজন, ১৯৭৬
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
- এতে প্রাচীন মিশরীয় দেবতা আনুবিসের একটি মূল্যবান মূর্তি হারিয়ে যায় এবং সেটি খুঁজে বের করার দায়িত্ব আসে ফেলুদার উপর।ফেলুদা অত্যন্ত চমৎকারভাবে আনুবিসের প্রপঞ্চময় চরিত্রের অবসান ঘটান এ গল্পে।
গ্যাংটকে গন্ডগোল (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭০ গ্যাংটকে গণ্ডগোল, ১৯৭১
পাহাড়ে ফেলুদা, ১৯৯৬[১১]
- গ্রীষ্মের ছুটিতে তোপসের সাথে ফেলুদা গ্যাংটকে বেড়াতে আসে। সেখানে তাদের সাথে রহস্যময় ব্যবসায়ী শশধর বোসের পরিচয় ঘটে। এর কিছুক্ষন পর শশধর বোসের ব্যবসার সঙ্গীর খুন হয়। ফেলুদা এই খুনের রহস্যের সমাধান করে।
সোনার কেল্লা (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭১ সোনার কেল্লা, ১৯৭২
ফেলুদার সপ্তকাণ্ড, ১৯৯৮
প্রথম চলচ্চিত্রায়িত ফেলুদা উপন্যাস এর কাহিনী গড়ে উঠেছে মুকুল নামে একটি জাতিস্মর বালককে কেন্দ্র করে। মুকুল ছয় বছর বয়সে পূর্বজন্মে দেখা সোনার কেল্লার স্মৃতিচারণ করতে থাকে। ডক্টর হাজরা মুকুলকে পরীক্ষা করে মুকুলের সঙ্গে পশ্চিম রাজস্থানে সোনার কেল্লার খোঁজে যেতে রাজি হন। ইতোমধ্যে মুকুলের বাবার সন্দেহ হয় যে ছেলে মুকুল বিপদে পড়েছে। তিনি ফেলুদাকে কাজ দেন তার ছেলের খোঁজ করতে।
বাক্স-রহস্য (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭২ বাক্স-রহস্য, ১৯৭৩
ফেলুদার পান্‌চ, ২০০০
- ব্যক্তিগত তদন্তকারী প্রদোষ সি. মিত্তার ওরফে ফেলুদাকে ধনী ব্যবসায়ী দিননাথ লাহিড়ী নিয়োগ দেয় শ্ম্ভূচরণ বোস লিখিত হারিয়ে যাওয়া একটি মূল্যবান পাণ্ডুলিপি উদ্ধারের জন্য। এই গল্প শিমলায় আবর্তিত হয়।
কৈলাসে কেলেঙ্কারি (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭৩ কৈলাসে কেলেঙ্কারি, ১৯৭৪
ফেলুদার সপ্তকাণ্ড, ১৯৯৮
সন্দীপ রায় কর্তৃক চলচ্চিত্রায়িত ২০০৭ সালে। গোয়েন্দা ফেলুদা, তার ভাইপো তোপসে এবং লেখক জটায়ুর সাহায্যে ভারত জুড়ে প্রাচীন ভাস্কর্যের চোরাচালান এবং অবৈধ ব্যবসার তদন্ত করে।রোমাঞ্চকর এ উপন্যাসে কৈলাস নামক স্থানের ঐতিহাসিক মূর্তি বিষয়ক বর্ণনা আছে।
সমাদ্দারের চাবি (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৭৩ আরো এক ডজন, ১৯৭৬
ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২]
- রাধারমণ সমাদ্দার মারা যাওয়ার আগে তার টাকাপয়সা কোনও এক অজানা গোপন জায়গায় রেখে যান। ফেলুদা রহস্যে নামে সেই গুপ্তধনের খোঁজে।
রয়েল বেঙ্গল রহস্য (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭৪ রয়েল বেঙ্গল রহস্য, ১৯৭৫
ফেলুদার পান্‌চ, ২০০০
সন্দীপ রায়ের করা চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ২০১১ সালে। ফেলুদা, তার খুড়তুতো ভাই তোপসে এবং লেখক জটায়ুর তার বাহিনী একটি ধাঁধা সমাধানের জন্য উত্তরবঙ্গের ধনী জমিদারের দ্বারা আমন্ত্রিত হয়, যা গুপ্তধনের সন্ধান দিবে। কিন্তু মানুষখেকো বাঘের উদয়, একটি রহস্যময় মৃত্যু এবং জঙ্গলের গুজব অপ্রত্যাশিত একটি মোড় নেয় ঘটনায়।
ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৭৫ আরো এক ডজন, ১৯৭৬
ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২]
- এতে একজন বৃদ্ধ ফেলুদাকে চিঠি লিখে তার বাড়িতে আসতে বলে। কিন্তু বৃদ্ধের পুত্র বৃদ্ধবেশে ফেলুদাকে ৪টি বই উপহার দেয়। তিনি ফেলুদাকে একটি হেঁয়ালির সমাধান করতে বলে এবং তার পরিবর্তে আরো ৪টি বই উপহার দিতে সম্মত হন। ফেলুদা তার অগাধ বুদ্ধিবলে এই রহস্য সমাধান করেন।
জয় বাবা ফেলুনাথ (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭৫ জয় বাবা ফেলুনাথ, ১৯৭৬
[১৩]ফেলুদার সপ্তকাণ্ড, ১৯৯৮
দ্বিতীয় চলচ্চিত্রায়িত ফেলুদা-উপন্যাস ঘটনাস্থল বেনারস। ফেলুদা তোপসে আর জটায়ুর সেখানকার ঘোষাল পরিবারের হারিয়ে যাওয়া মুল্যবান গনেশের মূর্তি উদ্ধারে নামে। বেনারসের এই গল্পেই ফেলুদার সাথে প্রথম আলাপ মগনলাল মেঘরাজের।
বোম্বাইয়ের বোম্বেটে (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭৬ ফেলুদা এণ্ড কোং, ১৯৭৭
ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২]
সন্দীপ রায় কর্তৃক চলচ্চিত্রায়িত ২০০৩ সালে। ঘটনাস্থল ফিল্মনগরী মুম্বই বা বোম্বে। পুলক ঘোষাল জটায়ুর লেখা গল্প নিয়ে সিনেমা করছেন। তাই জটায়ুর সাথে ফেলুদা তোপসেও হাজির। ঘটনাচক্রে একটি চোরাচালান কারবারের সাথে জড়িয়ে যাওয়া ও তাকে কেন্দ্র করেই রহস্যের প্যাঁচ।
গোঁসাইপুর সরগরম (উপন্যাস) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৭৬ ফেলুদা এণ্ড কোং, ১৯৭৭
ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২]
- জীবন মল্লিক গোঁসাইপুর জমিদারের একমাত্র ছেলে। তার বাবা কলকাতার ব্যবসায়ী। এদিকে আত্মারাম বাবু গোঁসাইপুর জমিদারি দখল করার চক্রান্ত করেন। তিনি জমিদার ও জীবনের মাঝে ঝামেলা বাঁধাতে সমর্থ হন। ফলশ্রুতিতে জমিদার মানসিক রুগীতে পরিণত হন। জীবন মল্লিক এরূপ পরিস্থিতিতে রহস্য উদ্ধার করতে গোয়েন্দা ফেলুদার শরণাপন্ন হন।[১৪]
গোরস্থানে সাবধান! (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭৭ গোরস্থানে সাবধান!, ১৯৭৯
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
২০১০ সালে চলচ্চিত্রায়িত ফেলুদা-উপন্যাস। পরিচালনায় সন্দীপ রায়। একটি গোরস্থান, কিছু খুন, আর রহস্যে মোড়া কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাহিনী আবর্তিত হয়। রহস্যটি শুরু হয়েছিল একটি মূল্যবান ঘড়ি নিয়ে।
ছিন্নমস্তার অভিশাপ (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৭৮ ছিন্নমস্তার অভিশাপ, ১৯৮১
ফেলুদার পান্‌চ, ২০০০
- ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে একজন অ্যাডভোকেডের জন্মদিনের পার্টিতে উপস্থিত ফেলুদা, তোপসে, জটায়ু। অ্যাডভোকেডের অস্বাভাবিক মৃত্যু আর তাকে কেন্দ্র করে জট পাকাতে থাকা রহস্যে ফেলুদার জড়িয়ে পরা।
হত্যাপুরী (উপন্যাস) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৭৯ হত্যাপুরী, ১৯৮১
ফেলুদার সপ্তকাণ্ড, ১৯৯৮
সন্দীপ রায় কর্তৃক চলচ্চিত্রায়িত ২০২২ সালে। পুরীতে জনাব ডিজি সেনের পুঁথি সংগ্রহ করার শখকে কেন্দ্র করে এই রহস্য আবর্তিত হয়। তিনি একজন প্রকৃত সংগ্রাহক এবং প্রত্যাশিত ক্রেতাদের কাছ থেকে লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তবে, একদল লোক তার সংগ্রহ থেকে সবচেয়ে মূল্যবান পাণ্ডুলিপি চুরি করার মনস্থির করে। কাহিনীতে একটি বড় মোড় নেয় যখন চুরির মূল সন্দেহভাজন হত্যা হয়।
গোলকধাম রহস্য (গল্প) সন্দেশ, মে-অগস্ট, ১৯৮০ আরো বারো, ১৯৮১
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
- এই গল্পে একজন বাঙালি বায়োকেমিস্ট নীহাররঞ্জন দত্ত এর কাহিনী রয়েছে। ফেলুদা নীহারবাবুর বাড়িতে ডাকাতির কেস নিয়ে যান। এই ঘটনার শেষ দিকে ফেলুদা দেখে নীহারবাবুর গবেষণার কাগজ পত্র এবং সঙ্গে ৩৩ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। ওই দিনই নীহারবাবুর ২ ভাড়াটিয়া সুখওয়ানি এবং দস্তুর-এর মধ্যে দস্তুর খুন হন।
যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৮০ যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে, ১৯৮১
পাহাড়ে ফেলুদা, ১৯৯৬[১১]
- একটি খুনের মামলার সমাধানে রহস্য গড়ায় কাঠমান্ডুতে । মগনলাল মেঘরাজের সাথে পুনরায় সাক্ষাৎ।
নেপোলিয়নের চিঠি (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৮১ ফেলুদা ওয়ান ফেলুদা টু, ১৯৮৫
ফেলুদা একাদশ, ২০০০ [১২]
- একই বাড়িতে একটি সদ্য কেনা পাখির হারিয়ে যাওয়া ও একটি অস্বাভাবিক খুনের জোড়া রহস্যের প্যাঁচে ফেলুদা।
টিনটোরেটোর যীশু (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৮২ টিনটোরেটোর যীশু, ১৯৮৫
ফেলুদার পান্‌চ, ২০০০
সন্দীপ রায় কর্তৃক চলচ্চিত্রায়িত ২০০৮ সালে। একটি অভিজাত পরিবারের সংগ্রহে থাকা ইতালীয় শিল্পী টিনটোরেটোর আঁকা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বাঁধে। রহস্যের জাল দেশের সীমানা ছাড়িয়ে হং কং অবধি ছড়ায়। ফেলুদা হং কং যায় রহস্যের সমাধানে।
অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য (গল্প) আনন্দমেলা, ৪ মে-১৫ জুন, ১৯৮৩ এবারো বারো, ১৯৮৪
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
- অম্বর সেনের হুমকি চিঠি পাওয়ার সুবাদে ফেলুদা এই কেসে জড়িয়ে যায়। অম্বর সেন কিডন্যাপ হয়ে যাওয়ায় রহস্য আরও জটিল হয়।
জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৮৩ এবারো বারো, ১৯৮৪
ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২]
- জাহাঙ্গীরের হারিয়ে যাওয়া স্বর্নমুদ্রার সন্ধানে ফেলুদা, জটায়ু, তোপসে হাজির হইয় পানিহাটিতে। জনৈক ব্যক্তির জন্মদিনের পার্টিতে তাঁর স্বর্নমুদ্রার সংগ্রহ থেকে এই বিশেষ মুদ্রাটি কোনও একজন আমন্ত্রিত ব্যক্তির দ্বারা চুরি যায়।
এবার কাণ্ড কেদারনাথে (গল্প) শারদীয় দেশ, ১৯৮৪ ফেলুদা ওয়ান ফেলুদা টু, ১৯৮৫
পাহাড়ে ফেলুদা, ১৯৯৬[১১]
- ফেলুদা, তোপসে আর জটায়ু কেদারনাথে ভবানী উপাধ্যায় নামে একজনও রসায়নবিদের সাথে ঘটতে চলা সম্ভাব্য অপরাধকে আটকানোর জন্য পাড়ি দেন। উপাধ্যায়ের কাছে ছিলো তাঁরই কাছে একজন রাজার থেকে প্রাপ্ত একটি বহুমুল্য পুরস্কার, যার সাথে রহস্যের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। ফেলুদা তাঁর নিজস্ব স্টাইলে রহস্যের সমাধানে নামে।
বোসপুকুরে খুনখারাপি (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৮৫ একের পিঠে দুই, ১৯৮৮
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
- ইন্দ্র নারায়ন আচার্য নামে ধনী পরিবারের একজন থিয়েটার কর্মি খুন হয়ে যান। ঘটনার সাথে থিয়েটার দলের মধ্যেকার প্রতিদ্বন্দিতার ঘনিষ্ঠ যোগ পাওয়া যায়।
দার্জিলিং জমজমাট (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৮৬ দার্জিলিং জমজমাট, ১৯৮৮
পাহাড়ে ফেলুদা, ১৯৯৬
- জটায়ুর গল্প অবলম্বনে দ্বিতীয় ছবির শ্যুটিং চলাকালীন ঘটে যাওয়া খুনের তদন্তে নেমে পরে ফেলুদা। ঘটনাস্থল দার্জিলিং।
অপ্সরা থিয়েটারের মামলা (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৮৭ ডবল ফেলুদা, ১৯৮৯
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
- থিয়েটারের একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির খুনের তদন্তে জড়িয়ে পড়ে ফেলুদা।
ভূস্বর্গ ভয়ংকর (গল্প) শারদীয় দেশ, ১৯৮৭ ডবল ফেলুদা, ১৯৮৯
পাহাড়ে ফেলুদা, ১৯৯৬[১১]
- এই ক্ষেত্রে, ফেলুদা এবং তার দল কাশ্মীরের শ্রীনগরে যান এবং তারা সেখানে একটি রহস্য খুঁজে পান। যেখানে বিচারক রহস্যময় অবস্থায় মারা যায়। পরে ফেলুদা বিচারক হত্যাকারীকে খুঁজে বের করতে যারা তার অসাধারণ মস্তিষ্ক ব্যবহার করে। এই প্রধান রহস্য মধ্যে আরো অনেক উপ চক্রান্ত আছে। স্বাভাবিকভাবেই ফেলুদা রহস্য সমাধান করে।
শকুন্তলার কণ্ঠহার (গল্প) শারদীয় দেশ, ১৯৮৮ আরো সত্যজিৎ, ১৯৯৩
ফেলুদার সপ্তকাণ্ড, ১৯৯৮
- ঘটনাস্থল লখনৌ। ফেলুদা যে পরিবারে গিয়ে তদন্ত শুরু করে, সেখানে শকুন্তলা দেবী নামে একজন প্রাক্তন অভিনেত্রীর গলার মালা চুরি যায়। শুধু এই ঘটনাই নয় এরই সঙ্গে ফেলুদা একটি খুনের মামলারও তদন্ত করে।
লন্ডনে ফেলুদা (গল্প) শারদীয় দেশ, ১৯৮৯ ফেলুদা প্লাস ফেলুদা, ১৯৯২
ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২]
- তদন্তের প্রয়োজনে ফেলুদা শার্লক হোমসের নগরী লন্ডনে যান।
ডাঃ মুনসীর ডায়রি (গল্প) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৯০ বাঃ! বারো, ১৯৯৪
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
- প্রাক্তন শিকারি এবং বর্তমান মনস্তাত্ত্বিক ডাঃ মুনসী তাঁর আত্মজীবনী লিখছেন। এই লেখা ছাপালে তার থেকে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে কিনা তা যাচাই করার জন্য ফেলুদার শরণাপন্ন হন। ঘটনাচক্রে ডাঃ মুনসী খুন হন। আর সেই সঙ্গে ডাঃ মুনসীর লেখা পাণ্ডুলিপিটিও উধাও হয়ে যায়। ফেলুদা এই খুনের তদন্ত করে খুনিকে শনাক্ত করে।
নয়ন রহস্য (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৯০ নয়ন রহস্য, ১৯৯১
ফেলুদার পান্‌চ, ২০০০
- এটি ফেলুদা সিরিজের একদম শেষ দিকের উপন্যাস যার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে নয়ন নামের আশ্চর্য ক্ষমতাধর এক ছেলেকে ঘিরে।
রবার্টসনের রুবি (উপন্যাস) শারদীয় দেশ, ১৯৯২ রবার্টসনের রুবি, ১৯৯১
ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২]
সর্বশেষ সম্পূর্ণ ফেলুদা উপন্যাস ফেলুদা, তোপসে আর জটায়ু একটি বহুমুল্য রুবিকে ভারত থেকে পাচার হয়ে বিদেশে চলে যাওয়া ঠেকানোর ঘটনায় জড়িয়ে যায়। রহস্যের মধ্যে চলে আসে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধিন ভারতবর্ষের ইতিহাসের রেফারেন্স।
গোলাপী মুক্তা রহস্য (গল্প)
--
ফেলুদা প্লাস ফেলুদা, ১৯৯১
ফেলুদার সপ্তকাণ্ড, ১৯৯৮
মগনলাল মেঘরাজের সর্বশেষ আবির্ভাব সোনাহাটির জয়চাঁদ বড়ালের কাছে একটি মহামূল্যবান মুক্তো রয়েছে যার রং গোলাপি। ফেলুদার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী মগনলাল মেঘরাজ এই মুক্তো হাতিয়ে নিতে চায়। ফেলুদা তার মগজাস্ত্রের প্রয়োগ করে মগনলালকে পরাস্ত করে।
ইন্দ্রজাল রহস্য (গল্প) সন্দেশ, ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫-৯৬ কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
কলকাতায় ফেলুদা, ১৯৯৮
সর্বশেষ সম্পূর্ণ ফেলুদা-গল্প একজন ম্যাজিশিয়ান তাঁর হারিয়ে যাওয়া পান্ডুলিপি খুজতে নিযুক্ত করে ফেলুদাকে। যেটি আরও একজন ম্যাজিশিয়ান সুর্য্যকুমারের দ্বারা চুরি যায়। একটি ছোটো কৃষ্ণের মুর্তিও চুরি যায়, যেটির তদন্তে নামে ফেলুদা। রহস্যের প্যাঁচে পরে ম্যাজিসিয়ানের গোপন পারিবারিক ঘটনাও প্রকাশ্যে চলে আসে।
বাক্স রহস্য (প্রথম খসড়া) (অসম্পূর্ণ) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৯৫ ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২] - ফেলুদাকে ধনী ব্যবসায়ী হরিনাথ চক্রবর্তী নিয়োগ দেয় একটি হারিয়ে যাওয়া বাক্স তার আসল মালিক কে ফেরত দেওয়ার জন্য। এই বাক্সটিতে ছিল একটি মূল্যবান তিব্বতি দেবতা যমন্তক এর মূর্তি। ফেলুদা এটিকে একজন আর্ট স্পেশালিস্টের কাছে নিয়ে যায় পরিক্ষা করাতে। এখানেই এই অসম্পূর্ণ গল্পের শেষ হয়।
তোতা রহস্য (প্রথম ও দ্বিতীয় খসড়া) (অসম্পূর্ণ) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৯৬ ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২] - একটি বাক্সকে কেন্দ্র করে রহস্য জাল নবিস্তার করে। তদন্তে নামে ফেলুদা, সঙ্গে অবশ্যই তোপসে আর জটায়ু।
আদিত্য বর্ধনের আবিষ্কার (অসম্পূর্ণ) শারদীয় সন্দেশ, ১৯৯৭ ফেলুদা একাদশ, ২০০০[১২] -

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Susnato Chowdhury (২০০৭)। "Feluda's Home"Kolkata TV। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১৪ 
  2. রবিনসন, অ্যান্ড্রু (১৯৮৯)। Satyajit Ray: The Inner Eye (ইংরেজি ভাষায়) (সচিত্র, পুনর্মুদ্রণ, পুন: প্রকাশ সংস্করণ)। ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ২৩৩–। আইএসবিএন 978-0-520-06946-6। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১২ 
  3. ভৌমিক, প্রণব। "ফেলুদা, শঙ্কু ও তারিণীর গল্প"প্রথম আলো। ১৩ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০২১ 
  4. "ফেলুদা সরগরম"আনন্দবাজার পত্রিকা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০২১ 
  5. মুখোপাধ্যায়, দেবব্রত (২ মে ২০১৯)। "ডিটেকটিভ প্রদোষ সি মিটার"kishor.alo (প্রকাশিত হয় ৫ মে ২০১৭)। ১৩ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০২১ 
  6. "বঙ্গের গোয়েন্দা-চরিত্র"প্রথম আলো। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬। ১৩ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০২১ 
  7. সুস্নাত চৌধুরী (২০০৭)। "Feluda's Home"কলকাতা টিভি। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১৪ 
  8. Feluda: 50 Years Of Rays Detective Movie: Showtimes, Review, Trailer, Posters, News & Videos | eTimes, সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৩ 
  9. "এ বার ফেলুদাকে নিয়ে ওয়েব সিরিজে আসছেন সৃজিত"আনন্দবাজার পত্রিকা। ঢাকা। ১২ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৯ 
  10. "এক্সক্লুসিভ: ওয়েব সিরিজে 'ফেলুদা'কে? ফাঁস করলেন সৃজিত"আনন্দবাজার পত্রিকা। ঢাকা। ১২ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৯ 
  11. রায়, সত্যজিৎ (১৯৯৬)। পাহাড়ে ফেলুদা। Calcutta: Ananda Publishers Private Limited। আইএসবিএন 81-7215-497-6 
  12. রায়, সত্যজিৎ (২০০৩)। ফেলুদা একাদশ। Calcutta: Ananda Publishers Private Limited। আইএসবিএন 81-7756-096-4 
  13. রায়, সত্যজিৎ (১৯৭৬)। জয় বাবা ফেলুনাথ। Calcutta: Ananda Publishers Private Limited। আইএসবিএন 81-7066-868-9 
  14. ফেলুদা-৩০, গোঁসাইপুর সরগরম[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]