বিষয়বস্তুতে চলুন

জর্দি আলবা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জর্দি আলবা
২০১৭ সালে স্পেনের হয়ে আলবা
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম জর্দি আলবা রামোস
জন্ম (1989-03-21) ২১ মার্চ ১৯৮৯ (বয়স ৩৬)
জন্ম স্থান এল'হসপিতালেত, স্পেন
উচ্চতা ১.৭০ মিটার (৫ ফুট ৭ ইঞ্চি)
মাঠে অবস্থান রক্ষণভাগের খেলোয়াড়
ক্লাবের তথ্য
বর্তমান দল
ইন্টার মায়ামি
জার্সি নম্বর ১৮
যুব পর্যায়
১৯৯৬–১৯৯৮ এল'হসপিতালেত
১৯৯৮–২০০৫ বার্সেলোনা
২০০৫–২০০৭ কর্নেয়া
২০০৭ ভালেনসিয়া
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছর দল ম্যাচ (গোল)
২০০৭ কর্নেয়া
২০০৭–২০০৮ ভালেনসিয়া বি ১৮ (৫)
২০০৮–২০১২ ভালেনসিয়া ৭৪ (৫)
২০০৮–২০০৯ → জিমনাস্তিক (ধার) ৩৫ (৪)
২০১২–২০২৩ বার্সেলোনা ৩১৩ (১৭)
২০২৩– ইন্টার মায়ামি (০)
জাতীয় দল
২০০৬ স্পেন অনূর্ধ্ব ১৯ (১)
২০০৯ স্পেন অনূর্ধ্ব ২০ (০)
২০০৮–২০১১ স্পেন অনূর্ধ্ব ২১ (০)
২০১২ স্পেন অনূর্ধ্ব ২৩ (০)
২০১১– স্পেন ৯৩ (৯)
২০১৩– কাতালোনিয়া (০)
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১১ জুন ২০২৩ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক।
‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১৮ জুন ২০২৩ তারিখ অনুযায়ী সঠিক।

জর্দি আলবা রামোস (কাতালান: Jordi Alba, কাতালান: [ˈʒɔrði ˈaɫβə ˈramos], স্পেনীয় উচ্চারণ: [ˈʝorði ˈalβa ˈramos]; জন্ম ২১ মার্চ ১৯৮৯) একজন স্পেনীয় পেশাদার ফুটবলার যিনি মেজর লিগ সকার ক্লাব ইন্টার মায়ামি এবং স্পেন জাতীয় দলের অধিনায়ক ও লেফট ব্যাক হিসেবে খেলেন।

হসপিতালেতের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও, আলবা বার্সেলোনার যুব প্রকল্প লা মাসিয়া থেকে উঠে আসা খেলোয়াড়দের অন্যতম। লা মাসিয়া ছাড়ার পর তিনি কর্নেয়ায় যোগ দেন, অতঃপর যোগ দেন ভালেনসিয়ায়। সেখানে তিনি চারটি মৌসুম পার করেন। ২০১২ সালে আলবা পুনরায় বার্সেলোনায় ফিরে আসেন। ২০২২-২৩ মৌসুম শেষে তিনি বার্সেলোনা ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

২০১১ সালে স্পেন জাতীয় দলে আলবার অভিষেক হয়। ২০১২ সালে তিনি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে স্পেনের হয়ে অংশগ্রহণ করেন।

ক্লাব ক্যারিয়ার

[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক সময়

[সম্পাদনা]

আলবা বার্সেলোনার এল'হসপিতালেত দি লব্রেগাত শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন বার্সেলোনার যুব একাডেমী লা মাসিয়ায়, কিন্তু ২০০৫ সালে ক্লাব তাকে ছেড়ে দেয়। তখন তিনি যোগ দেন কর্নেয়ায়। এর ঠিক দুই বছর পর তিনি যোগ দেন ভালেনসিয়ায় এবং সেখানে তিনি তার যুব কর্মজীবন শেষ করেন। ২০০৭–০৮ মৌসুমে তিনি ভালেনসিয়ার যুব দলকে চতুর্থ সারির লিগ থেকে তৃতীয় লিগে উন্নীত করতে সহায়তা করেন। পরের মৌসুমে তার পেশাদার অভিষেক হয়। তিনি ধারে দ্বিতীয় সারির দল জিমন্যাস্তিক দি তারাগোনার হয়ে মাঠে নামেন।[]

ভালেনসিয়া

[সম্পাদনা]
ভালেনসিয়ার হয়ে খেলছেন আলবা।

ভালেনসিয়ায় ফেরার পর ২০০৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর, লা লিগায় আলবার অভিষেক হয়। ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ঐ খেলায় ভালেনসিয়া ৪–২ গোলে জয় লাভ করে।[] তিনি উয়েফা ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বের টানা দুইটি খেলায় মাঠে নামেন। দুইটি খেলাই ১–১ গোলে ড্র হয়। ভালেনসিয়ার ডিফেন্ডারদের অতিরিক্ত ইনজুরির কারণে আলবা ২০০৯–১০ মৌসুমের অধিকাংশ সময় লেফট ব্যাক হিসেবে খেলেন। ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল ভালেনসিয়ার হয়ে তিনি প্রথম গোল করেন, যদিও খেলায় রিয়াল জারাগোজা ২–৩ গোলে জয় লাভ করে।[]

২০১০–১১ মৌসুমে, ভালেনসিয়ার রক্ষণভাগ প্রায় একাই সামাল দেন আলবা। তিনি ২৬টি খেলায় মাঠে নামেন। ভালেনসিয়া তৃতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে এবং পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।

পরের মৌসুমে আলবা আরও বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়েন। মৌসুমে তিনি সব ধরনের প্রতিযোগিতায় মোট ৫০টি খেলায় মাঠে নামেন এবং ৩টি গোল করেন।

বার্সেলোনা

[সম্পাদনা]

২০১২ সালের ২৮ জুন, আলবা বার্সেলোনার সাথে পাঁচ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তার স্থানান্তর ফি ছিল ১৪ মিলিয়ন ইউরো।[] ১৯ আগস্ট, রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে বার্সেলোনার হয়ে তার অভিষেক হয়। তিনি খেলার পুরো ৯০ মিনিট মাঠে ছিলেন এবং বার্সেলোনা ৫–১ গোলের বড় ব্যবধানে জয় লাভ করে।[]

২০১২ সালের ২০ অক্টোবর, আলবা বার্সেলোনার হয়ে প্রথম গোল করেন। খেলায় বার্সেলোনা ৫–৪ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলার প্রথম এবং শেষ গোল করেন আলবা, অবশ্য শেষ গোলটি ছিল ওন গোল।[] পরের খেলায় চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে সেল্টিকের বিপক্ষে খেলার ৯৩তম মিনিটে জয়সূচক গোল করেন আলবা; বার্সেলোনা ২–১ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে।[]

২০১৩ সালের ১২ মার্চ, আলবা বার্সেলোনার হয়ে তার পঞ্চম গোল করেন। চ্যাম্পিয়নস লিগের রাউন্ড অফ ১৬-এর ২য় লেগের খেলায় এসি মিলানের বিপক্ষে খেলার একদম শেষ মিনিটে তিনি এই গোল করেন। খেলায় বার্সেলোনা ৪–০ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে।[]

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

[সম্পাদনা]
উয়েফা ইউরো ২০১২ এর ফাইনালে নিজের করা গোল উদ্‌যাপন করছেন আলবা।

২০০৮ সালের উয়েফা ইউরোপীয়ান অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে স্পেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে অংশগ্রহণ করেন আলবা। ২০০৯ সালে মেডিটের‍্যানিনান গেমসে স্পেনের হয়ে তিনি চারটি খেলায় মাঠে নামেন এবং স্পেন স্বর্ণপদক জয় করে।

২০১১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১২ উয়েফা ইউরো-এর বাছাইপর্বের শেষ দুইটি খেলার জন্য আলবা স্পেনের সিনিয়র দলে প্রথম ডাক পান। খেলা দুইটি ছিল চেক রিপাবলিক এবং স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে।[] ১১ অক্টোবর, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় তার অভিষেক হয়। তারই সহায়তায় খেলার প্রথম গোলটি করেন ডেভিড সিলভা[১০] আলবার এই দূর্দান্ত অভিষেক তাকে লা রোজাদের নিয়মিত লেফট ব্যাক জোয়ান ক্যাপদেবিলার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে প্রমাণ করে।[১১]

আলবা ২০১২ উয়েফা ইউরো-এর জন্য ঘোষিত স্পেন দলে জায়গা পান। প্রতিযোগিতায় স্পেনের সবকয়টি খেলায় তিনি মাঠে নামেন। কোয়ার্টার-ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে খেলায় তিনি শাবি আলোনসোর করা গোলে সহায়তা করেন। খেলায় ২–০ গোলের ব্যবধানে জয় তুলে নেয় স্পেন।[১২] ফাইনালে, ইতালির বিপক্ষে আলবা পাল্টা আক্রমণ থেকে একটি গোল করেন। স্পেন ৪–০ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে এবং টানা দ্বিতীয়বারের মত ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।[১৩][১৪]

পরিসংখ্যান

[সম্পাদনা]

ক্লাব

[সম্পাদনা]
০১ জুন ২০২৩ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।[১৫]
ক্লাব মৌসুম লিগ কাপ ইউরোপ অন্যান্য[১৬] মোট
উপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোল
কর্নেয়া ২০০৬–০৭ ১৫১৫
মোট ১৫১৫
জিমনাস্তিক ২০০৮–০৯ ৩৫৩৬
মোট ৩৫৩৬
ভালেনসিয়া ২০০৯–১০ ১৫২৬
২০১০–১১ ২৭৩৩
২০১১–১২ ৩২১০৫০
মোট ৭৪১৪২২১১০
বার্সেলোনা ২০১২–১৩ ২৯৪৪
২০১৩–১৪ ১৫২৬
২০১৪–১৫ ২৭১১৪৪
২০১৫–১৬ ৩১৪৫
২০১৬–১৭ ২৬৩৯
২০১৭–১৮ ৩৩৪৮
২০১৮–১৯ ৩৬১১৫৪
২০১৯–২০ ২৭৩৬
২০২০–২১ ৩৫৪৯
২০২১–২২ ৩০১১৪৪
২০২২–২৩ ২৪৩০
মোট ৩১৩১৭৪৭৮৪১৫৪৫৯২৭
সর্বমোট ৪৩৭২৯৬২১০৬১৫৬২০৪০

আন্তর্জাতিক

[সম্পাদনা]
১৮ জুন ২০২৩ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
জাতীয় দলমৌসুমউপস্থিতিগোল
স্পেন ২০১১
২০১২১৩
২০১৩
২০১৪
২০১৫
২০১৬১১
২০১৭
২০১৮
২০১৯
২০২০
২০১৮
২০১৯
২০২০
২০২ ১১০
২০২২১১
২০২৩
মোট৯৩

সম্মাননা

[সম্পাদনা]

ক্লাব

[সম্পাদনা]
বার্সেলোনা

আন্তর্জাতিক

[সম্পাদনা]
স্পেন অনূর্ধ্ব-২০
  • ভূমধ্যসাগরীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা স্বর্ণপদক: ২০০৯
স্পেন

ব্যক্তিগত

[সম্পাদনা]
  • উয়েফা ইউরো প্রতিযোগিতার সেরা দল: ২০১২
  • ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশ দ্বিতীয় দল: ২০১৫
  • ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশ তৃতীয় দল: ২০১৩, ২০১৪, ২০১৬
  • উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ মৌসুমসেরা দল: ২০১৪–১৫
  • লা লিগা মৌসুমসেরা দল: ২০১৪–১৫
  • ইএসএম বর্ষসের দল: ২০১৭–১৮, ২০১৮–১৯

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Jordi Alba ya es grana y Campano puede quedarse" (স্পেনীয় ভাষায়)। Diario AS। ২৬ জুলাই ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৩
  2. "Villa stars in Valencia win"ইএসপিএন সকারণেট। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯। ২৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  3. "Los Che complete woeful week"ইএসপিএন সকারণেট। ১১ এপ্রিল ২০১০। ২৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  4. "Agreement with Valencia over Jordi Alba"ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। ২৮ জুন ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  5. "Messi bags brace for five-goal Barca"। ইএসপিএন সকারণেট। ১৯ আগস্ট ২০১২। ২৩ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  6. "Alba, el primero en marcar un gol y un autogol desde Kluivert en 2003" [Alba, first to score goal and own goal since Kluivert in 2003] (স্পেনীয় ভাষায়)। El Mundo Deportivo। ২১ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  7. "Last-gasp Barcelona break Celtic hearts"উয়েফা। ২৩ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  8. "Breathtaking Barcelona blow Milan away"। উয়েফা। ১২ মার্চ ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  9. "Only one new face as Del Bosque names Spain squad"Shanghai Daily। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩
  10. McGuire, Annie (১১ অক্টোবর ২০১১)। "Spain 3–1 Scotland"বিবিসি স্পোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩
  11. "Spain's Del Bosque spoilt for choice"Sports Illustrated। ১২ অক্টোবর ২০১১। ৩১ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩
  12. "Centurion Alonso sends Spain into last four"উয়েফা। ২৩ জুন ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩
  13. "Spain overpower Italy to win UEFA EURO 2012"। উয়েফা। ১ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩
  14. Coerts, Stefan (১ জুলাই ২০১২)। "Jordi Alba: I cannot believe what has happened"Goal.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩
  15. "Jordi Alba Ramos"। ভালেনসিয়া সিএফ। ১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩
  16. অন্যান্য এর মধ্যে রয়েছে স্পেনীয় সুপার কাপ, উয়েফা সুপার কাপ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]