ক্রেগ কাইজওয়েটার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(ক্রেইগ কাইজওয়েটার থেকে পুনর্নির্দেশিত)
ক্রেগ কাইজওয়েটার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্রেগ কাইজওয়েটার
জন্ম (1987-11-28) ২৮ নভেম্বর ১৯৮৭ (বয়স ৩৬)
জোহানেসবার্গ, গুটেং, দক্ষিণ আফ্রিকা
ডাকনামহবনব[১]
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাউইকেট-কিপার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২১৪)
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বনাম বাংলাদেশ
শেষ ওডিআই১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ বনাম ভারত
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ৪৯)
৫ মে ২০১০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টি২০আই২৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ বনাম নিউজিল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৭-১৫সমারসেট (জার্সি নং ২২)
২০১৩-১৪ব্রিসবেন হিট (জার্সি নং ২২)
২০১৪ওয়ারিয়র্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা ওডিআই টি২০আই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৪৬ ২৫ ১১৫ ১৩৪
রানের সংখ্যা ১,০৫৪ ৫২৬ ৫,৭২৮ ৪,২৫৪
ব্যাটিং গড় ৩০.১১ ২১.৯১ ৩৯.২৩ ৩৯.৩৮
১০০/৫০ ১/৫ ০/৩ ১১/৩১ ১১/১৭
সর্বোচ্চ রান ১০৭ ৬৩ ১৬৪ ১৪৩
বল করেছে ৫৪ ১২
উইকেট
বোলিং গড় ১৪.৫০ ১৯.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - - -
সেরা বোলিং ২/৩ ১/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫৩/১২ ১৭/৩ ৩৩১/১২ ১৩৬/২৬
উৎস: ক্রিকেটআর্কাইভ, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ক্রেগ কাইজওয়েটার (ইংরেজি: Craig Kieswetter; জন্ম: ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৭) জোহানেসবার্গে জন্মগ্রহণকারী ও দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত সাবেক ইংরেজ ক্রিকেটার। ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-কিপার ও ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

জোহানেসবার্গে আফ্রিকানা পিতা ওয়েন ও স্কটল্যান্ডীয় মাতা বেলিন্ডার সন্তানরূপে জন্ম তার।[২][৩] দক্ষিণ আফ্রিকাতেই বড় হন ও কেপ টাউনের ডাইওসিসান কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জুনিয়র ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলে ক্রিকেট খেলেন। প্রাদেশিক দলে খেলার জন্য তাকে দুই থেকে তিন বছর ক্লাব ক্রিকেটে খেলার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু সেখানে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা উজ্জ্বল না থাকায় ও পড়াশোনা শেষ করার উদ্দেশ্য নিয়ে ইংল্যান্ডে চলে যান।[২] মিলফিল্ডে এ লেভেল অধ্যয়নের সুযোগ পান ও সেখানেই সমারসেটের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

কাউন্টি ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমারসেটের সাবেক বোলার মার্ক ডেভিস মিলফিল্ডে তাকে শনাক্ত করেন ও দ্রুততার সাথে কাউন্টিতে চুক্তিবদ্ধ করান।[৪] ঐ কাউন্টি দলের ভালো উইকেট-কিপার না থাকায় কাইজওয়েটারকে ঐ স্থানে নেয়া হয়।

শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ২০০৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৬৬ বলে ৮০ রান তুলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।[৫] ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ তারিখে সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।[৬]

মে, ২০০৬ সালে সমারসেটের দ্বিতীয় একাদশের সদস্যরূপে প্রথম অংশ নেন। একটি খেলা চলাকালে নিয়মিত উইকেট-কিপার স্যাম স্পারওয়ে আহত হলে তিনি এ সুযোগ পান।[৭] ঐ খেলায় গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ৯৪ রান তোলেন।[৮] ২০০৭ সালের শুরুতে সমারসেটের পক্ষে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

মা স্কটিশ ছিলেন ও ক্রীড়াশৈলী আশাপ্রদ হওয়া ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে তার অন্তর্ভূক্তি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক গ্রেইম স্মিথ ও তার দিকে নজর রাখছিলেন।

সমারসেটের পক্ষে বেশ ভালো ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে শীতকালীন প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে কাইজওয়েটারকে ইংল্যান্ড পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম দলের সদস্যরূপে আট সপ্তাহের জন্য লাফবোরা ও প্রিটোরিয়ায় পাঠানো হয়।[৯] দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের অধিনায়ক গ্রেইম স্মিথ তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্রিকেট খেলার জন্য পরামর্শ দেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানান।[১০] তবে তিনি তাকে সরাসরি জাতীয় দলে খেলার কথা বলেননি। কিন্তু, কাইজওয়েটার ইংল্যান্ডের পক্ষেই খেলার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।[১০]

তিন বছর পর ২০১০ সালের শুরুতে কাইজওয়েটারের স্বপ্ন পূর্ণ হয় ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগ পান। ইংল্যান্ড লায়ন্সের পক্ষে কিছু দক্ষতা প্রদর্শন করেন বিশেষ করে ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে। এরফলে তাকে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবার জন্য দাঁড় করানো হয়।[১১] দুই সপ্তাহ পরই বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অভিষেক ঘটে তার। একদিনের আন্তর্জাতিকে তাকে বিশেষজ্ঞরূপে বিবেচনা করা হতো। এরপর থেকেই ওডিআই কিংবা টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে তার পদচারণা ঘটে নিয়মিতভাবে। তবে তার অন্তর্ভূক্তি ইংল্যান্ড দলের অন্যান্য দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের উপস্থিতি সমালোচনার মুখোমুখি হয়। নিজস্ব তৃতীয় খেলায় তার একমাত্র ওডিআই সেঞ্চুরিটি আসে।[১২] কয়েক মাস পর ২০১০ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।[১৩]

ইংল্যান্ডের পক্ষে আশাপ্রদ সূচনার পর তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন ও ২০১০ সালের শেষার্ধ্বে দল থেকে বাদ পড়েন। পরের বছর দলে পুনরায় ফিরে আসেন।[১৪] কিন্তু দলে তার অবস্থান প্রায়শঃই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল ও ২০১৩ সালে সমারসেটের দলীয় সঙ্গী জস বাটলার তার স্থলাভিষিক্ত হন।

অবসর[সম্পাদনা]

১২ জুলাই, ২০১৪ তারিখে সমারসেটের পক্ষে ব্যাটিংয়ের সময় গুরুতর আঘাত পান ও খেলোয়াড়ী জীবনে অকাল সমাপ্তি নিয়ে আসে। নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে খেলাকালীন ডেভিড উইলি’র শর্ট-পিচের বাউন্সার হেলমেট পরিহিত অবস্থায় মুখে আঘাত হানে। একটি বল তার মুখে লাগে ও চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেয়। শুরুতে সমারসেটের সভাপতি অ্যান্ডি ন্যাশ মন্তব্য করেন যে, আঘাত গুরুতর কিন্তু খেলোয়াড়ী জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ নয়।[১৫]

প্রারম্ভিকভাবে সুস্থতা লাভের পর ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভূক্তি ঘটে। কিন্তু দৃষ্টির সীমাবদ্ধতা নিয়ে আসায় জুন, ২০১৫ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে পেশাদারী ক্রিকেট থেকে নিজের অবসরের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন।[১৬]

অবসর ঘোষণার অল্প সময় পরই ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে এক স্বাক্ষাৎকারে কাইজওয়েটার জানান যে, সংবাদমাধ্যমে তার কাজ করার আগ্রহ রয়েছে। টুয়েন্টি২০ খেলায় ধারাভাষ্যকার দলের সদস্যও মনোনীত হন তিনি।[১৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Player profile: Craig Kieswetter"ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৫ 
  2. James, Jeremy (২০ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "The keeper who could be KP"ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  3. "Christmas Comes Early"Sporting Post। Cape Town। ২৫ আগস্ট ২০১৩। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৫ 
  4. James, Steve (২৯ মে ২০০৭)। "Scouting report: Craig Kieswetter, Somerset"The Guardian। London: Guardian Media Group। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০০৯ 
  5. "South Africa Under-19s v United States of America Under-19s in 2005/06"CricketArchive। The Cricketer Publishing Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০০৯ 
  6. "Kieswetter pledges future to England"Somerset County Gazette। Taunton: Newsquest Media Group। ১ নভেম্বর ২০০৭ – NewsBank-এর মাধ্যমে। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য)) 
  7. "BREAKING: Craig Kieswetter announces he is to retire from professional cricket"Somerset County Gazette। Taunton: Newsquest। ৫ জুন ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৫ 
  8. "Somerset Second XI v Glamorgan Second XI: Second Eleven Championship 2006"CricketArchive। The Cricketer Publishing Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৫ 
  9. "Craig Kieswetter in England Performance Programme squad"ESPNcricinfo। ESPN। ৩ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৫ 
  10. "Craig Kieswetter reiterates England desire"ESPNcricinfo। ESPN। ১৩ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৫ 
  11. "Kieswetter added to England one-day squad"ESPNcricinfo। ESPN। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  12. Brickhill, Liam (৫ মার্চ ২০১০)। "Kieswetter ton sets up whitewash"ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১০ 
  13. Miller, Andrew (১৬ মে ২০১০)। "Kieswetter and Pietersen seal title for England"ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৫ 
  14. "Patel and Kieswetter earn England recalls"ESPNcricinfo। ESPN। ১৫ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৫ 
  15. "Kieswetter suffers broken nose and cheek bone"ESPNcricinfo। ESPN। ১৩ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  16. Hopps, David (১০ ডিসেম্বর ২০১৪)। "Kieswetter eye problems force lengthy lay-off"ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  17. Dobell, George (২২ জুন ২০১৫)। "'I wanted to play a certain way and I can't do that now'"ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]