আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামাবাদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামাবাদ
আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামাবাদের লোগো
ধরনসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপিত১৯৮০; ৪৪ বছর আগে (1980)
আচার্যপাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি
সভাপতিপ্রফেসর ডঃ আবব্দুলাহ[১]
উপ-সভাপতিডঃ সাহজাদ চৌধুরী
উপাচার্যডঃ মাহাদ খান
প্রাধ্যক্ষডঃ ফাহাদ চৌধুরী
রেক্টরডঃ খুজাইমা[২]
শিক্ষার্থী৩০০০০
স্নাতক১৮৫০০
স্নাতকোত্তর১০৫০০
অবস্থান,
শিক্ষাঙ্গনশহর
সংক্ষিপ্ত নামআ.ই.বি.ই
অধিভুক্তিবিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
ওয়েবসাইটiiu.edu.pk
মানচিত্র

আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামাবাদ (আরবি: الإسلامية العالمية إسلام آباد, উর্দু: بين الاقوامی اسلامی يونيورسٹی), পাকিস্তানের ইসলামাবাদের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়[৩] এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ইসলামধর্ম, ধর্মতত্ত্বইসলামি বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।[৪] বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৫ সালে এটি পুনর্গঠন করা হয়।[৫] ২০১২ সালে পাকিস্তান উচ্চ শিক্ষা কমিশন দ্বারা প্রকাশিত পাকিস্তানি জাতীয় শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগে আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামাবাদ চতুর্থ স্থান অর্জন করে।[৬][৭] ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই বিশ্ববিদ্যালয় সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজকে রাজনৈতিক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।[৮] বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, মানবিক, ললিতকলা, ধর্ম বিষয়ক অধ্যয়ন, আইন, সামাজিক বিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞান অনুষদ রয়েছে।

ক্যাম্পাস[সম্পাদনা]

মহিলা ব্লক

আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামাবাদে দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে।

পুরনো ক্যাম্পাস[সম্পাদনা]

ফয়সাল মসজিদে পুরাতন ক্যাম্পাস অবস্থিত, এই মসজিদটি তুর্কী একটি প্রতিষ্ঠান পরিকল্পনা করেছিল।[৯] সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ এই মসজিদটি নির্মাণ করতে অর্থ দান করেছিল। এই মসজিদটি বিশ্বের বৃহত্তম মসজিদগুলোর একটি। এই মসজিদে প্রায় দশ হাজার মানুষ প্রার্থনা করতে পারে এবং নারীদের জন্য আলাদা স্থান রয়েছে।[১০][১১]

নতুন ক্যাম্পাস[সম্পাদনা]

ইসলামাবাদের এইচ-১০ খতিয়ানে নতুন ক্যাম্পাস অবস্থিত।[১২] ২০১৩ সালে, নতুন ক্যম্পাসের প্রথম ধাপ নির্মাণ করা হয়। তারপর ২০১৬ সালে মহিলাদের জন্য একটি আলাদা ক্যম্পাস প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই নতুন ক্যম্পাসেই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়।

ছাত্রাবাস[সম্পাদনা]

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোতে রয়েছে সাতটি ভবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বসবাসের জন্য রয়েছে সাতটি ছাত্রাবাস।

অনুষদ[সম্পাদনা]

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদসমূহ নিচে দেখানো হলো:

মৌলিক ও ফলিত বিজ্ঞান অনুষদ[সম্পাদনা]

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ[সম্পাদনা]

ইকরা কলেজ অব টেকনোলজি[সম্পাদনা]

ইকরা কলেজ অব টেকনোলজি (আইসিটি) একটি সংবিধান কলেজ, যেটি বি.টেক (অনার্স) এবং ডিপ্লোমার সহযোগী ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম।

ভাষা ও সাহিত্য অনুষদ[সম্পাদনা]

ভাষা ও সাহিত্য অনুষদে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, ফার্সি ও উর্দু ভাষার উপর এমএস ও পিএইচডি ডিগ্রি।

ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান অনুষদ[সম্পাদনা]

ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান অনুষদ ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৬ সালে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ ব্যবসা প্রশাসন মাস্টার প্রোগ্রাম ও ১৯৯৮ সালে প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়।

শরিয়া এবং আইন অনুষদ[সম্পাদনা]

শরিয়া এবং আইন অনুষদ ১৯৭৯-১৯৮০ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আকাইদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়। নথিভুক্তির ছাত্রছাত্রীদের ডক্টরেট প্রোগ্রাম এক বছরের বাধ্যতামূলক করা হয়।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ[সম্পাদনা]

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভেতর রয়েছে রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মনোবিজ্ঞান, ইতিহাস এবং পাকিস্তান অধ্যয়ন, ইসলামি শিল্প ও স্থাপত্য, গণ যোগাযোগ ও সমাজবিজ্ঞান।

ইসলামি অধ্যয়ন অনুষদ[সম্পাদনা]

১৯৮১ সালে ইসলামি অধ্যয়ন অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই অনুষদে অনর্ভুক্ত রয়েছে তাফসীর এবং কুরআন, বিজ্ঞান, হাদিস, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, ইসলামি সংস্কৃতি, ইবরাহিম ও দর্শন এবং সিরাত লেখক, ইসলামি ইতিহাস এবং দাওয়াত

সংবিধান ইউনিট[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউট অব ইসলামি অর্থনীতি[সম্পাদনা]

১৯৮৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউট অব ইসলামি অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ইসলামি ব্যাংকিং ও অর্থসংস্থানের অর্থায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়ন অনুষদ, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ, প্রচার এবং প্রস্তাব, কর্মীদের জন্য সরকারী এবং বেসরকারী আর্থিক অনুদান প্রতিষ্ঠা করে।

ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র[সম্পাদনা]

বাংলা ভাষা কেন্দ্র, কুরআন শিক্ষা কেন্দ্র, ইংরেজি ভাষা প্রস্তুতিমূলক কোর্সে ছাত্রদের সচেষ্ট করার জন্য তালিকাভুক্ত দেশী এবং বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় (উদাহরণস্বরূপ, একটি এইস.ই.সি বৃত্তি) বা কর্মসংস্থান সচেষ্ট করা হয়ে থাকে। এবং একটি ইংরেজি দক্ষতা প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হয়।

গ্রন্থাগার[সম্পাদনা]

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার[সম্পাদনা]

নতুন ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার অবস্থিত, এতে মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ এবং আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউট এবং ইসলামি অর্থনীতির তিনটি লাইব্রেরি রয়েছে। এই গ্রন্থাগারে রয়েছে বিরল বই, ইসলামি আইন সম্পর্কিত বই, অর্থনীতি ও ইসলামি শাসনের বিবিধ বই-এর সমাহার।

ইসলামি গবেষণা ইনস্টিটিউট গ্রন্থাগার[সম্পাদনা]

ইসলামি গবেষণা ইনস্টিটিউট গ্রন্থাগার একটি ইসলামি উৎস সম্পর্কিত গন্থাগার।

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি গন্থাগার[সম্পাদনা]

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি গ্রন্থাগারে রয়েছে ২৫,০০০ এরও অধিক বই। ১৫টি সাময়িকী এবং ১০টি সংবাদপত্র ক্রয় করা হয়। প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রী গ্রন্থাগারে অবস্থান করতে পারে। এছাড়াও সেখানে ৫৫০টি গবেষণা প্রতিবেদন ও নিবন্ধ রয়েছে।

শরিয়া একাডেমী গ্রন্থাগার[সম্পাদনা]

শরিয়া একাডেমি গ্রন্থাগারে রয়েছে ৮,৯৭৫টিরও বেশি বই এবং কোরআন শরীফের গবেষণার জন্য কেন্দ্রে শরিয়া ইসলামি আইন রয়েছে। এছাড়াও আছে বিভাগীয় গ্রন্থাগার, গবেষণা গ্রন্থাগার, ইসলামি অধ্যয়নাগার, অর্ন্তদৃষ্টি গ্রন্থাগার এবং মায়ার গ্রন্থাগার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশ করেছে জার্নাল অব বিজনেস এবং ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান

গবেষণা পত্রিকা[সম্পাদনা]

  • ইসলামি অধ্যয়ন
  • অর্ন্তদৃষ্টি
  • মায়ার
  • ইসলামাবাদ আইন পর্যালোচনা
  • ফিকার হে নজর
  • জার্নাল অব বিজনেস এবং ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান

বিদেশী সাহায্য[সম্পাদনা]

নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে একাডেমিক বন্ধন রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের:

সমিতি[সম্পাদনা]

বিতর্ক[সম্পাদনা]

মার্চ ২০১৫ সালে একটি রিপোর্ট করা হয়েছিল যে, নিরাপত্তাজনিত কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।[১৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "President IIUI" iiu.edu.pk. Accessed 11 April 2018.
  2. "Rector IIUI" iiu.edu.pk. Accessed 11 April 2018.
  3. "International Islamic University location." Google Maps. Accessed 26 October 2013.
  4. Yusuf I. "Islam and Knowledge: Al Faruqi's Concept of Religion in Islamic Thought." I.B.Tauris 2012.
  5. Ahmed A. and Sonn T. (ed.) "The SAGE Handbook of Islamic Studies." SAGE, 2010 p124.
  6. "Ranking of Universities." ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ মে ২০১৩ তারিখে HEC.gov.pk Accessed 26 October 2013.
  7. "HEC announces ranking of universities." The News.com.pk 23 February 2013. Accessed 26 October 2013.
  8. "Pakistan's International Islamic University Awards Honorary Doctorate to the Custodian of the Two Holy Masjids." Ministry of Foreign Affairs, Saudi Arabia. 2 March 2014. Accessed 12 November 2015.
  9. Rengel M. "Pakistan: A Primary Source Cultural Guide." The Rosen Publishing Group, 2004 p71
  10. Rizvi K. "The Transnational Masjid: Architecture and Historical Memory in the Contemporary Middle East." UNC Press Books, 2015 p90.
  11. "Faisal Masjid." ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মে ২০১১ তারিখে Archnet Digital Library. Accessed 9 February 2011.
  12. "International Islamic University, Islamabad." Google Maps. Accessed 23 September 2013.
  13. Abbasi, Kashif (২২ মার্চ ২০১৫)। "International Islamic University shuts down Barelvi masjid" 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]