পিটার উইয়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পিটার উইয়ার

Peter Weir
২০১১ সালের এপ্রিলে উইয়ার
জন্ম
পিটার লিন্ডসে উইয়ার

(1944-08-21) ২১ আগস্ট ১৯৪৪ (বয়স ৭৯)
মাতৃশিক্ষায়তনসিডনি বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক
কর্মজীবন১৯৬৭-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীওয়েন্ডি স্টাইটস (বি. ১৯৬৬)
সন্তানইংরিড উইয়ার (জ. ১৯৭২)
জুলিয়ান উইয়ার (জ. ১৯৭৬)

পিটার লিন্ডসে উইয়ার, এএম (ইংরেজি: Peter Lindsey Weir; জন্ম: ২১ আগস্ট ১৯৪৪) হলেন একজন অস্ট্রলীয় চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি অস্ট্রেলীয় নবকল্লোল চলচ্চিত্র আন্দোলনের (১৯৭০-১৯৯০) অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব।[১] তার নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ হল রহস্য নাট্যধর্মী পিকনিক অ্যাট হ্যাঙিং রক (১৯৭৫), অতিপ্রাকৃত থ্রিলার দ্য লাস্ট ওয়েভ (১৯৭৭) এবং ঐতিহাসিক নাট্যধর্মী গাল্লিপলি (১৯৮১)। তার সবচেয়ে সফল চলচ্চিত্র হল দ্য ইয়ার অব লিভিং ডেঞ্জারাসলি (১৯৮৩), যা ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে।

দ্য ইয়ার অব লিভিং ডেঞ্জারাসলি চলচ্চিত্রের সফলতার পর তিনি বিভিন্ন ধরনের মার্কিন ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যার অনেকগুলো বক্স অফিসে হিট হয়েছিল। তাছাড়া থ্রিলার উইটনেস (১৯৮৫), নাট্যধর্মী ডেড পোয়েটস সোসাইটি (১৯৮৯), প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক গিন কার্ড (১৯৯০), সামাজিক বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী দ্য ট্রুম্যান শো (১৯৯৮), এবং মহাকাব্যিক জীবনীমূলক নাট্যধর্মী মাস্টার অ্যান্ড কমান্ডার: দ্য ফার সাইড অব দ্য ওয়ার্ল্ড (২০০৩) চলচ্চিত্রগুলো বিভিন্ন বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করে। এই পাঁচটি কাজের জন্য উইয়ার নিজে শ্রেষ্ঠ পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার বিভাগে ছয়টি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক কর্মজীবন[সম্পাদনা]

উইয়ারের প্রথম আলোচিত সাফল্য আসে রহস্যধর্মী পিকনিক অ্যাট হ্যাঙিং রক (১৯৭৫) দিয়ে।[১] সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ম করপোরেশনের অর্থায়নে নির্মিত চলচ্চিত্রটির চিত্রায়ন হয় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া ও ভিক্টোরিয়ার গ্রামাঞ্চলে। জোন লিন্ডসের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটি অস্ট্রেলিয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনামূলক এবং ব্যবসায়িকভাবে সফলতা অর্জন করে। চলচ্চিত্রটি ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ের "অস্ট্রেলীয় চলচ্চিত্র রেনেসাঁস"-এর প্রধান কাজ হিসেবে স্বীকৃত হয়। উইয়ারের পরবর্তী চলচ্চিত্র অতিপ্রাকৃত থ্রিলার দ্য লাস্ট ওয়েভ (১৯৭৭)। ছবিটি পিকনিক অ্যাট হ্যাঙিং রক-এর বিষয়বস্তু থেকে উদ্ভূত ও সম্প্রসারিত একটি বিষাদময় কাজ। চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে মাঝারিমানের সফলতা লাভ করে।

তার নির্মিত সবচেয়ে সফল চলচ্চিত্র হল দ্য ইয়ার অব লিভিং ডেঞ্জারাসলি (১৯৮৩), যা ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। এতে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন মেল গিবসন এবং সেসময়ে হলিউডের অন্যতম শীর্ষ নারী তারকা সিগোর্নি উইভার। এটি ক্রিস্টোফার কোচের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলচ্চিত্র নির্মাণ[সম্পাদনা]

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উইয়ারের প্রথম চলচ্চিত্র থ্রিলারধর্মী উইটনেস (১৯৮৫)। এই চলচ্চিত্রের জন্য উইয়ার শ্রেষ্ঠ পরিচালনার জন্য একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত হন। এছাড়া এটি তার কয়েকটি চলচ্চিত্রের প্রথম চলচ্চিত্র, যা শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করে। ছবিটি শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য ও চিত্রসম্পাদনা বিভাগে অস্কার জয় করে। তার পরবর্তী চলচ্চিত্র নাট্যধর্মী ডেড পোয়েটস সোসাইটি (১৯৮৯) আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সফলতা লাভ করে। ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও পরিচালনা সহ চারটি বিভাগে অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে পুরস্কৃত হয়। ছবিটি বক্স অফিসে হিট হয় এবং মূলধারার দর্শকের কাছে এটি উইয়ারের অন্যতম পরিচিত চলচ্চিত্র।

উইয়ারের প্রথম প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র ছিল গিন কার্ড (১৯৯০)। উইয়ার এই চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী নির্বাচনে ঝুঁকি নেন এবং ফরাসি তারকা জেরার দেপার্দিওকে প্রধান চরিত্রে কাজের জন্য নির্বাচন করেন। এটি ছিল দেপার্দিওর প্রথম ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র। ছবিটি বক্স অফিসে হিট হলেও সমালোচনামূলকভাবে কম স্বীকৃতি লাভ করে। উইয়ার তার মৌলিক চিত্রনাট্যের জন্য একটি অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

তার সামাজিক বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী দ্য ট্রুম্যান শো (১৯৯৮) সে সময়ের অন্যতম হিট চলচ্চিত্র ছিল। ছবিটি বক্স অফিস ও সমালোচনামূলকভাবে সফল হয় এবং একাধিক পুরস্কার অর্জন করে। উইয়ার শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কারে মনোনীত হন এবং জিম ক্যারি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও এড হ্যারিস শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ২০০৩ সালে তিনি মহাকাব্যিক জীবনীমূলক নাট্যধর্মী মাস্টার অ্যান্ড কমান্ডার: দ্য ফার সাইড অব দ্য ওয়ার্ল্ড নির্মাণ করেন। ছবিটি প্যাট্রিক ওব্রায়ানের একটি রোমাঞ্চকর ধারাবাহিকের কয়েকটি পর্ব অবলম্বনে নির্মিত হয়। এটি সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয়, কিন্তু মূলধারার দর্শকদের কাছে মাঝারিমানের সাড়া পায়। ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য অস্কারের মনোনয়ন লাভ করে এবং শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ ও শব্দ সম্পাদনা বিভাগে দুটি পুরস্কার লাভ করে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Fear and Longing in the Outback: Peter Weir's Nostalgic Australian Cinema"Film School Rejects (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ আগস্ট ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]